hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাক্বওয়া অর্জনের উপায়

লেখকঃ মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন কামরুল

১৯
তাক্বওয়া বিরোধী কর্মকান্ডসমূহ
যেসব কাজে তাক্বওয়া অর্জিত হয় এর বিপরীত কর্মকান্ডসমূহই হচ্ছে তাক্বওয়া বিরোধী কর্মকান্ড। নিম্নে এসব বিষয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্তরূপে আলোচনা করা হলো :

১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যাচরণ করা :

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য না করা এবং ইসলামী আইন-কানুন সমূহ মেনে না চলাটা তাক্বওয়া বিরোধী কর্মকান্ডসমূহের অন্যতম অংশ। যেমন- যথাযথভাবে সালাত আদায় না করা, সিয়াম পালন না করা, বিশৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করা, অবাধে পাপকর্ম করে বেড়ানো, যিনা করা, চুরি করা, ডাকাতি করা, আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন না করা ইত্যাদি।

২. বিজাতির অনুসরণ করা :

বিজাতি তথা অন্য কোন ধর্মাবলম্বী লোকের অনুসরণ করাটা হচ্ছে তাক্বওয়ার পথে আরো একটি বাধার কারণ। কেননা বিজাতিরা প্রতিটি মুসলিমের জন্য শত্রুসমতুল্য এবং শয়তানের বন্ধু বা অনুচর। তারা একজন মুসলিম থেকে ইসলামী কর্মকান্ডসমূহ প্রকাশ পাওয়াটা কোনভাবেই সমর্থন করে না। বরং তারা তাদের থেকে কেবল কুফরী কর্মকান্ডসমূহই কামনা করে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَدُّوْا لَوْ تَكْفُرُوْنَ كَمَا كَفَرُوْا فَتَكُوْنُوْنَ سَوَآءً﴾

তারা কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও। (সূরা নিসা- ৮৯)

উল্লেখ্য যে, বিজাতির অনুসরণ করার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে এই যে, তাদের মতো পোশাক পরিধান করা, বিজ্ঞানের সূত্রানুসারে তাদের মতো বিশ্বাস স্থাপন করা, সালাত থেকে দূরে থাকা, সওম পালন না করা, যাকাত না দেয়া, খেলাধুলা ও বিনোদনের প্রতি ঝুঁকে পড়া, পূজিবাদী চিন্তা-চেতনার অনুসরণ করা, তাদের তৈরি আইন অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করা ইত্যাদি।

৩. ইবাদাতে শিথিলতা প্রদর্শন করা :

ইসলামী ইবাদাতসমূহের মূলনীতি হচ্ছে, সেগুলোতে যথাসম্ভব একনিষ্ঠতা প্রদর্শন করা। কাজেই কোন একনিষ্ঠ মুসলিমকে পথভ্রষ্ট করার জন্য শয়তানের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে, তার অন্তরে বিভিন্ন ইবাদাত তথা সালাত, সিয়াম, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি পালনের ক্ষেত্রে শিথিলতা আনয়ন করা। অপরদিকে ইবাদাতে একনিষ্ঠতার উপস্থিতিই হচ্ছে তাক্বওয়ার বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং এ কর্মটিও তাক্বওয়া অর্জনের পথে বাধা হওয়ার অন্যতম কারণ।

৪. হারাম-হালাল বাছ-বিচার না করা :

কোন কোন মানুষ আধ্যাত্মিক জীবন ও বৈষয়িক জীবনকে আলাদা মনে করে। এজন্য আয়-রোজগারে হালাল-হারাম বাছ-বিচার করে না। সুদ-ঘুষ, মুনাফাখোরী, মজুদদারী, ধোঁকা-প্রবঞ্চনাসহ নানা অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে সম্পদ বৃদ্ধি করে। তাদের মানসিকতা যেন এমন যে, ইহকালের বিষয় এখন ভাবি; আর পরকালীন বিষয় পরে ভাবা যাবে। তাদের কাছে পার্থিব জীবনই মুখ্য, পরকালীন বিষয় নিতান্তই গৌণ। এ ধরনের আচরণ আল্লাহভীতির পরিপন্থী।

৫. অপরের অধিকার পূর্ণ না করা :

সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা অপরের অধিকারের ব্যাপারে উদাসীন। পিতামাতা, আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যের হকের প্রতি তারা ভ্রুক্ষেপ করে না। আবার উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করে, তাদের মধ্যে কোন একজনকে অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত সম্পদ দান করার মতো হীন কাজও করে থাকে। এ ধরনের কাজ তাক্বওয়ার খেলাফ।

৬. আমানতদারিতার অভাব :

আমানত রক্ষা করা ঈমানের অঙ্গ। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছে যাদের নিকট কোন কিছু গচ্ছিত রাখলে, তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে না। সম্পদের ক্ষেত্রে যেমন আমানত রক্ষা করে না, তেমনি মানুষের গোপনীয়তাও রক্ষা করে না। অথচ সম্পদের ক্ষেত্রে যেমন আমানতের খেয়ানত হয়, গোপনীয়তা প্রকাশ করে দেয়াতেও তেমনি আমানতের খেয়ানত হয়। এ ধরনের কর্মকান্ডে আমানত রক্ষা না করা তাক্বওয়াহীনতার পরিচায়ক।

৭. দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ন্ত্রণ না করা :

মানুষের হাত ও মুখ দ্বারা অন্য মানুষ নানাভাবে অত্যাচারিত হয়। আবার মুখ দ্বারা মিথ্যাচার করা হয়। আর লজ্জাস্থান দ্বারা যেনা-ব্যভিচার সংঘটিত হয়। এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে মাটির মানুষ পরিণত হয় সোনার মানুষে। তাক্বওয়াবানদের পক্ষেই কেবল এই অঙ্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই অঙ্গের যথেচ্ছা ব্যবহার তাক্বওয়া পরিপন্থী কাজ।

৮. আল্লাহ ও রাসূল ﷺ এর প্রতি মিথ্যাচার :

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ যা বলেননি, তাঁদের নামে তা বলা, তাঁদের হারামকৃত বস্তুকে হালাল বলা এবং তাঁদের হালালকৃত বস্তুকে হারাম সাব্যস্ত করা আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি মিথ্যারোপের শামিল। এক শ্রেণীর আলেম আছেন, যারা নিজেদের স্বার্থে কুরআন-হাদীসের অপব্যাখ্যা করেন। কোন কোন সময় নিজেদের মনগড়া কথাকে রাসূল ﷺ এর কথা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। সেসবই আল্লাহ ও রাসূল ﷺ এর উপর মিথ্যারোপের নামান্তর। এ সকল কাজ যেমন তাক্বওয়া পরিপন্থী; তেমনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হাদীস জেনে প্রচার না করা এবং তার উপর আমল না করাও তাক্বওয়ার খেলাফ কাজ। এহেন জঘন্য কাজ থেকে সবাইকে সর্বোতভাবে বিরত থাকতে হবে।

৯. হিংসা-বিদ্বেষ :

হিংসা-বিদ্বেষ, ঈর্ষা ও পরশ্রীকাতরতা মানুষের অত্যন্ত খারাপ একটি গুণ। কোন মানুষের মধ্যে এই ধরনের দোষ থাকলে সে অন্যের দুঃখে আনন্দিত এবং অন্যের সুখে ব্যথিত হয়। যা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। এগুলো কারো মাঝে থাকলে সে জীবনে শান্তি লাভ করতে পারে না। অপরের কল্যাণে সে জ্বলে-পুড়ে মরে। কোন কোন সময় সে মানুষের অকল্যাণ চিন্তা করে। এ ধরনের কাজ আল্লাহভীরুতার পরিচায়ক নয়। তাক্বওয়ার দাবি হচ্ছে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে সর্বোতভাবে বিরত থাকা।

১০. অহংকার :

অহংকার এমন বিষয়, যার কারণে মানুষ নিজেকে বড় বলে জ্ঞান করে এবং অন্যকে তুচ্ছ ও নিকৃষ্ট ভাবে। এ ধরনের মানুষ অন্যদের সাথে মিশতে দ্বিধা করে। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার জন্য সে হয় সচেষ্ট ও মরিয়া। গর্ব ও অহংকারে তাদের পা যেন মাটি স্পর্শ করে না। এ ধরনের কাজ শুধু তাক্বওয়া বিরোধীই নয়; বরং মুমিনের স্বভাববিরোধী। আল্লাহভীতির দাবি হচ্ছে নিজেকে আদমের সন্তান হিসেবে বিনয়ী ও নিরহংকারভাবে গড়ে তোলা।

১১. শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত থাকা :

আল্লাহ মানুষকে শিরক থেকে সর্বোতভাবে বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছেন। এরপরও মানুষ ভক্তির আতিশয্যে অনেককে আল্লাহর স্তরে পৌঁছে দিয়ে তাঁর সাথে শরীক স্থাপন করে বসে। মাজারপুজা, কবরপুজাসহ হাজারো শিরকে লিপ্ত হয়। পীর বাবার কাছে রোগ থেকে মুক্তি চাওয়া, বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি চাওয়া, সন্তান ও সম্পদ প্রার্থনা করা, পরকালীন মুক্তির জন্য অসীলা হিসেবে গ্রহণ করা জঘন্য শিরক। এর কারণে মানুষের জীবনের সমস্ত সৎ আমল বিনষ্ট হয়ে যায়। তওবা না করে মারা গেলে শিরককারী চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। তাই এটা তাক্বওয়া বিরোধী কাজ। এ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

মানুষের আমল কবুল হওয়ার জন্য আবশ্যিক পূর্বশর্ত হলো তা রাসূলের তরীকায় সম্পন্ন হতে হবে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর তরীকায় না হলে তা হবে বিদআত। এই বিদআতের কারণে মানুষ পরকালে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর শাফাআত থেকে বঞ্চিত হবে। নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামের অতল গহবরে। রাসূলুল্লাহ ﷺ যা করতে বলেছেন, তা না করা এবং যা করতে বলেননি তা করা তাঁর সাথে বেয়াদবী ও চরম ধৃষ্টতার শামিল। এ ধরনের কাজ তাক্বওয়ার পরিচায়ক নয়।

১২. কুফর ও নিফাকে লিপ্ত থাকা :

আল্লাহ ও রাসূলের বিধানকে প্রত্যাখ্যান করা কুফরী। অনুরূপভাবে আল্লাহ ও রাসূলের বিধানকে পাশ কাটিয়ে বৃহত্তর স্বার্থের দোহাই দিয়ে ভিন্নপথ অবলম্বন করাও কুফরীর শামিল। এটা আল্লাহভীতির বিপরীত কাজ। আবার মুখে এক কথা এবং কাজে ভিন্নতা থাকা নেফাকী বা কপটতার পরিচায়ক। এটা তাক্বওয়া বিরোধী কাজ। পক্ষান্তরে কথা ও কাজে মিল থাকা মুত্তাক্বী মুমিনের বৈশিষ্ট্য।

উল্লেখিত বিষয়গুলো তাক্বওয়াহীনতার কতিপয় নমুনামাত্র। এছাড়া আরো অনেক বিষয় আছে যা দেখে মানুষের অন্তরে আল্লাহভীতি না থাকার বিষয়টি পরিষ্ফুটিত হয়ে ওঠে। আল্লাহ এহেন কর্মকান্ড থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন