HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য কাজ ও কথায় নিয়্যত করা এবং ইখলাছ অবলম্বন করা
লেখকঃ আবু যাকারিয়া মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া বিন শরফ আন-নববী রহ.
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ ( البينة :5)
‘‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে (ইখলাছের সাথে) একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে, এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম।’’ সূরা আল-বাইয়েনা : ৫
لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ . ( الحج :37)
‘‘আল্লাহর কাছে পৌঁছে না ওগুলোর গোশ্ত এবং রক্ত বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।’’ সূরা আল-হজ : ৩৭
قُلْ إِنْ تُخْفُوا مَا فِي صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ اللَّهُ . آل عمران : 29
‘‘তুমি বল : তোমাদের অন্তরসমূহে যা রয়েছে তা যদি তোমরা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা অবগত আছেন।’’ সূরা আলে ইমরান : ২৯
‘‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে (ইখলাছের সাথে) একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে, এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম।’’ সূরা আল-বাইয়েনা : ৫
لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ . ( الحج :37)
‘‘আল্লাহর কাছে পৌঁছে না ওগুলোর গোশ্ত এবং রক্ত বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।’’ সূরা আল-হজ : ৩৭
قُلْ إِنْ تُخْفُوا مَا فِي صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ اللَّهُ . آل عمران : 29
‘‘তুমি বল : তোমাদের অন্তরসমূহে যা রয়েছে তা যদি তোমরা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা অবগত আছেন।’’ সূরা আলে ইমরান : ২৯
১- আল্লাহ রাববুল আলামীন সকল মানুষকে ইখলাছের সাথে সর্ব প্রকার ইবাদত বন্দেগী করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইখলাছ হল, ইবাদত-বন্দেগীর সকল কিছু করতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে। এতে অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারবে না।
২- যে কোন ইবাদত-বন্দেগী করার শুরুতে আল্লাহ রাববুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যত করে নিতে হবে।
৩- আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ইবাদত- বন্দেগী করা হল ধর্মের মূল, যাকে বলা হয়েছে দীনুল কায়্যিমাহ।
৪-নামায ও যাকাতের নির্দেশ পূর্ববর্তী আসমানী ধর্মেও ছিল।
৫-সকল ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে আল্লাহ মানুষের আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও নিয়্যতের প্রতি দৃষ্টি দেন। নিয়্যত সঠিক থাকলে এগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
৬-নিয়্যত অন্তরের বিষয়। মুখে প্রকাশ জরুরি নয়। তাই তা মুখে প্রকাশ না করলেও আল্লাহ বুঝে নেন। অন্তরে এক নিয়্যত লালন করে মুখে অন্য কিছু বললে বা প্রকাশ করলেও তিনি বুঝতে পারেন।
৭-অন্তরের নিয়্যত হল আসল ও গ্রহণযোগ্য নিয়্যত।
২- যে কোন ইবাদত-বন্দেগী করার শুরুতে আল্লাহ রাববুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যত করে নিতে হবে।
৩- আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ইবাদত- বন্দেগী করা হল ধর্মের মূল, যাকে বলা হয়েছে দীনুল কায়্যিমাহ।
৪-নামায ও যাকাতের নির্দেশ পূর্ববর্তী আসমানী ধর্মেও ছিল।
৫-সকল ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে আল্লাহ মানুষের আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও নিয়্যতের প্রতি দৃষ্টি দেন। নিয়্যত সঠিক থাকলে এগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
৬-নিয়্যত অন্তরের বিষয়। মুখে প্রকাশ জরুরি নয়। তাই তা মুখে প্রকাশ না করলেও আল্লাহ বুঝে নেন। অন্তরে এক নিয়্যত লালন করে মুখে অন্য কিছু বললে বা প্রকাশ করলেও তিনি বুঝতে পারেন।
৭-অন্তরের নিয়্যত হল আসল ও গ্রহণযোগ্য নিয়্যত।
১ - عَنْ أمِيْرِ المؤمُنِيْنَ عُمَر بن الخطاب رضي الله عنه قال : سَمِعْتُ رسولَ الله صلى الله عليه وسلم يقول : إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنيَّاتِ، وَإنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُه إلى اللهِ وَرًسُوْلِه فَهِجْرَتُه إلى اللهِ وَرَسُوْلِه، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُه لِدُنْيَا يُصِيْبُها، أوْ امرَأةٍ يَنْكِحُها فَهِجْرَتُه إلى مَا هَاجَرَ إلَيْهِ . متفق عليه
হাদীস-১. আমীরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কর্মসমূহ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়্যত করবে তা তার জন্য গ্রহণযোগ্য। অতএব যে আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে হিজরত করে, তার হিজরত আল্লাহ ও রাসূলের দিকে বলেই গণ্য হবে। আর যে হিজরত করবে পার্থিব কোন বিষয় অর্জনের জন্য কিংবা কোন মেয়েকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে, তার হিজরত সে রকমই গণ্য হবে।
হাদীসটি ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী ও ইমাম আবুল হাসান মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশাইরী নিজ নিজ সহীহ (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম) নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। হাদীস শাস্ত্রে যাদের গ্রন্থ বিশুদ্ধতম।
হাদীস-১. আমীরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কর্মসমূহ নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়্যত করবে তা তার জন্য গ্রহণযোগ্য। অতএব যে আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে হিজরত করে, তার হিজরত আল্লাহ ও রাসূলের দিকে বলেই গণ্য হবে। আর যে হিজরত করবে পার্থিব কোন বিষয় অর্জনের জন্য কিংবা কোন মেয়েকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে, তার হিজরত সে রকমই গণ্য হবে।
হাদীসটি ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী ও ইমাম আবুল হাসান মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশাইরী নিজ নিজ সহীহ (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম) নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। হাদীস শাস্ত্রে যাদের গ্রন্থ বিশুদ্ধতম।
১- নিয়্যত অনুযায়ী সকল কাজ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
২- যে কোন কাজে কর্তা যা নিয়্যত করবে সে অনুযায়ী সে ফল পাবে।
৩- কোন মহৎ বা ভাল কাজ করে যদি কেহ ক্ষুদ্র বা তুচ্ছ কিছু অর্জনের নিয়্যত করে, তবে তা সেই ক্ষুদ্র কাজের জন্যই করা হয়েছে বলে আল্লাহর কাছে গণ্য হবে।
৪- ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল বৈধ ও ভাল কাজ করা ও অন্যায়, পাপাচার পরিহার করা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে করতে হবে।
৫- ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল বৈধ ও ভাল কাজ ও অন্যায়, পাপাচার পরিহার আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যত ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে করলে তার সওয়াব ও পুরস্কার আল্লাহর কাছে পাওয়া যাবে না। যেমন হাদীসের শেষে বলা হয়েছে, যে কোন মেয়েকে বিবাহ করার জন্য হিজরতের মত মহৎ কাজ করল, তার হিজরত সেই মেয়ের জন্যই ধরা হবে। আল্লাহর জন্য নয়।
২- যে কোন কাজে কর্তা যা নিয়্যত করবে সে অনুযায়ী সে ফল পাবে।
৩- কোন মহৎ বা ভাল কাজ করে যদি কেহ ক্ষুদ্র বা তুচ্ছ কিছু অর্জনের নিয়্যত করে, তবে তা সেই ক্ষুদ্র কাজের জন্যই করা হয়েছে বলে আল্লাহর কাছে গণ্য হবে।
৪- ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল বৈধ ও ভাল কাজ করা ও অন্যায়, পাপাচার পরিহার করা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে করতে হবে।
৫- ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল বৈধ ও ভাল কাজ ও অন্যায়, পাপাচার পরিহার আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যত ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে করলে তার সওয়াব ও পুরস্কার আল্লাহর কাছে পাওয়া যাবে না। যেমন হাদীসের শেষে বলা হয়েছে, যে কোন মেয়েকে বিবাহ করার জন্য হিজরতের মত মহৎ কাজ করল, তার হিজরত সেই মেয়ের জন্যই ধরা হবে। আল্লাহর জন্য নয়।
২ - عَنْ أُمِّ المُؤمِنِيْنَ عَائِشَةَ- رَضِيَ الله عَنْهَا- قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : يَغْزُ جَيْشٌ الكَعْبَةَ فَإذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنَ الأرْضِ يُخْسَفُ بِأوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ . قَالَتْ : قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ ! كَيْفَ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ وَفِيْهِمْ أَسْوَاقُهُمْ وَمَنْ لَيْسَ مِنْهُمْ؟ قَالَ : يُخْسَفُ بِأوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ ثُمَّ يُبْعَثُوْنَ على نِيَّاتِهِمْ . متفق عليه
হাদীস-২. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘একটি বাহিনী কাবা শরীফের উপর হামলা করতে আসবে। যখন তারা জনমানবহীন সমতল ভূমিতে পৌঁছোবে, তখন তাদের সামনের ও পিছনের লোকজনসহ সকলকে ধসিয়ে দেয়া হবে।’ আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম ‘হে রাসূল! কীভাবে তাদের সামনের ও পিছনের সকল মানুষকে ধসিয়ে দেয়া হবে? অথচ তাদের মধ্যে বেচা-কেনায় নিয়োজিত বাজারে বহু এমন লোক আছে যারা হামলাকারী নয়।’ তিনি বললেন: ‘তাদের সামনের ও পিছনের সকলকেই ধসিয়ে দেয়া হবে। অতপর তাদের নিয়্যত অনুসারে পরকালে উপস্থিত করা হবে।’
হাদীস-২. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘একটি বাহিনী কাবা শরীফের উপর হামলা করতে আসবে। যখন তারা জনমানবহীন সমতল ভূমিতে পৌঁছোবে, তখন তাদের সামনের ও পিছনের লোকজনসহ সকলকে ধসিয়ে দেয়া হবে।’ আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম ‘হে রাসূল! কীভাবে তাদের সামনের ও পিছনের সকল মানুষকে ধসিয়ে দেয়া হবে? অথচ তাদের মধ্যে বেচা-কেনায় নিয়োজিত বাজারে বহু এমন লোক আছে যারা হামলাকারী নয়।’ তিনি বললেন: ‘তাদের সামনের ও পিছনের সকলকেই ধসিয়ে দেয়া হবে। অতপর তাদের নিয়্যত অনুসারে পরকালে উপস্থিত করা হবে।’
১- যখন দুনিয়ার কোথাও আল্লাহর শাস্তি বা গজব আপতিত হয়, তখন অপরাধী ও নিরপরাধ সকলেই এর শিকার হয়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ ( الأنفال :25)
‘‘তোমরা এমন ফেতনা (বিপর্যয়) কে ভয় কর যা শুধু অপরাধীদেরকেই গ্রাস করবে না। জেনে রাখ নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।’’ সূরা আল-আনফাল : ২৫
অবশ্য নিরাপরাধ লোকদের পরকালে আল্লাহ তাআলা নাজাত দিয়ে দেবেন।
২- একটি বাহিনী কাবা শরীফে আক্রমণ করতে আসবে ও তারা ধ্বংস হবে বলে আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যতবাণী।
৩- হামলাকারী বাহিনী হবে বিশাল আকারের। তাদের সাথে বাজার থাকবে, সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য হবে।
৪- নিয়্যত যদি সঠিক থাকে তাহলে দুনিয়াতে কোন আজাব-গজব দুর্যোগের শিকার হলেও পরকালে মুক্তি পাওয়া যাবে। আর নিয়্যত সঠিক না থাকলে কোথাও মুক্তি নেই।
৫- নিয়্যত সঠিক করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৬- অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। অসৎ লোকের সাথে থাকলে তাদের প্রতি আপতিত আযাব-গজবের অংশ নিরাপরাধ সঙ্গীকে ভোগ করতে হবে।
وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ ( الأنفال :25)
‘‘তোমরা এমন ফেতনা (বিপর্যয়) কে ভয় কর যা শুধু অপরাধীদেরকেই গ্রাস করবে না। জেনে রাখ নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।’’ সূরা আল-আনফাল : ২৫
অবশ্য নিরাপরাধ লোকদের পরকালে আল্লাহ তাআলা নাজাত দিয়ে দেবেন।
২- একটি বাহিনী কাবা শরীফে আক্রমণ করতে আসবে ও তারা ধ্বংস হবে বলে আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যতবাণী।
৩- হামলাকারী বাহিনী হবে বিশাল আকারের। তাদের সাথে বাজার থাকবে, সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য হবে।
৪- নিয়্যত যদি সঠিক থাকে তাহলে দুনিয়াতে কোন আজাব-গজব দুর্যোগের শিকার হলেও পরকালে মুক্তি পাওয়া যাবে। আর নিয়্যত সঠিক না থাকলে কোথাও মুক্তি নেই।
৫- নিয়্যত সঠিক করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৬- অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। অসৎ লোকের সাথে থাকলে তাদের প্রতি আপতিত আযাব-গজবের অংশ নিরাপরাধ সঙ্গীকে ভোগ করতে হবে।
৩ - عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ الله ُعَنْهَا قَالَتْ : قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : لاَ هِجْرَةَ بَعْدَ الفَتْحِ، وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ، فَإذَا اسْتُنْفِرتُمْ فَانْفِرُوْا . متفق عليه .
হাদীস-৩. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘মক্কা বিজয়ের পর কোন হিজরত নেই। কিন্তু জিহাদ ও নিয়্যত থেকে যাবে। যখনই তোমাদের জিহাদে বের হওয়ার জন্য আহবান করা হবে তখনই তোমরা তাতে সাড়া দিয়ে বেড়িয়ে পড়বে।’’ বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
হাদীস-৩. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘মক্কা বিজয়ের পর কোন হিজরত নেই। কিন্তু জিহাদ ও নিয়্যত থেকে যাবে। যখনই তোমাদের জিহাদে বের হওয়ার জন্য আহবান করা হবে তখনই তোমরা তাতে সাড়া দিয়ে বেড়িয়ে পড়বে।’’ বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
১- পবিত্র মক্কা নগরী যখন কাফেরদের দখলে ছিল তখন সেখান থেকে হিজরত করে যাওয়ার নির্দেশ ছিল। যখন মক্কা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক বিজিত হল তখন সেখান থেকে আর কখনো হিজরত করতে হবে না।
২- এ হাদীসে সাধারণ ভাবে হিজরতকে রহিত করা হয়নি। বরং শুধু মক্কা থেকে হিজরতকে রহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন হলে যে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে হিজরত করতে হবে। যেমন এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لاَ تَنْقَطِعُ الهِجْرَةُ حَتَّى تَنْقَطِعَ التَّوْبَةُ وَلا تَنْقَطِعُ التَّوبَةُ حَتَّى تَخْرُجُ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِها .
‘‘হিজরত কখনো বন্ধ হবে না যতক্ষণ না তাওবার দরজা বন্ধ হয়। আর তাওবার দরজা বন্ধ হবে না যতক্ষণ না সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে উদিত হয়।’’ বর্ণনায় : আবু দাউদ-২৪৭৯ ও আহমদ-৯৯/৪
অর্থাৎ হিজরতের নির্দেশ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। যখন ইসলাম অনুসরণ করার কারণে নিজ দেশে জীবন ও সম্পদ হুমকির সম্মুখীন হয় তখন ইসলামের স্বার্থে দেশ ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার নাম হল হিজরত।
৩- জিহাদ কখনো বন্ধ হবে না। কখনো রহিত হবে না জিহাদের নির্দেশ।
৪- হিজরত ও জিহাদ বর্তমান না থাকলেও তাতে অংশ গ্রহণের নিয়্যত সর্বদা পোষণ করতে হবে। বিষয় শিরোনামের সাথে হাদীসটির সম্পর্ক এখানেই।
৪- যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে যখনই জিহাদের আহবান আসবে তখনই জিহাদে বের হয়ে যেতে হবে। এটা ইসলামের কঠোর নির্দেশ।
৫- কেয়ামতের চূড়ান্ত আলামত হল সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে উদিত হওয়া। যখন এটা প্রকাশ পাবে, তখন কোন তাওবা কবুল হবে না।
২- এ হাদীসে সাধারণ ভাবে হিজরতকে রহিত করা হয়নি। বরং শুধু মক্কা থেকে হিজরতকে রহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন হলে যে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে হিজরত করতে হবে। যেমন এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لاَ تَنْقَطِعُ الهِجْرَةُ حَتَّى تَنْقَطِعَ التَّوْبَةُ وَلا تَنْقَطِعُ التَّوبَةُ حَتَّى تَخْرُجُ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِها .
‘‘হিজরত কখনো বন্ধ হবে না যতক্ষণ না তাওবার দরজা বন্ধ হয়। আর তাওবার দরজা বন্ধ হবে না যতক্ষণ না সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে উদিত হয়।’’ বর্ণনায় : আবু দাউদ-২৪৭৯ ও আহমদ-৯৯/৪
অর্থাৎ হিজরতের নির্দেশ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। যখন ইসলাম অনুসরণ করার কারণে নিজ দেশে জীবন ও সম্পদ হুমকির সম্মুখীন হয় তখন ইসলামের স্বার্থে দেশ ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়ার নাম হল হিজরত।
৩- জিহাদ কখনো বন্ধ হবে না। কখনো রহিত হবে না জিহাদের নির্দেশ।
৪- হিজরত ও জিহাদ বর্তমান না থাকলেও তাতে অংশ গ্রহণের নিয়্যত সর্বদা পোষণ করতে হবে। বিষয় শিরোনামের সাথে হাদীসটির সম্পর্ক এখানেই।
৪- যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে যখনই জিহাদের আহবান আসবে তখনই জিহাদে বের হয়ে যেতে হবে। এটা ইসলামের কঠোর নির্দেশ।
৫- কেয়ামতের চূড়ান্ত আলামত হল সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে উদিত হওয়া। যখন এটা প্রকাশ পাবে, তখন কোন তাওবা কবুল হবে না।
৪ -عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِي- رَضِيَ الله ُ عَنْهُمَا- قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ فَقَالَ : إنَّ بِالمَدِيْنَةِ لَرِجَالاً مَا سِرتُم مَسِيْرًا، وَلا قَطَعْتُمْ وَادِياً إلاَّ كَانُوا مَعَكُمْ حَبَسَهُم الـمَرَضُ . وَفِي رِوَايَةٍ : إلاَّ شَرَكُوكُمْ فِي الأَجْرِ . رواه مسلم
وَ رَوَاهُ البُخَارِي عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ الله ُ عَنْهُ قَالَ : رَجَعْنَا مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ : إنَّ أقْوَاماً خَلْفَنَا بِالمَدِيْنَةِ مَا سَلَكْنَا شِعْباً وَلاَ وَادِياً إلاَّ وَهُمْ مَعَنَا، حَبَسَهُمْ العُذْرُ .
হাদীস-৪. জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আল-আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক যুদ্ধে আমরা অংশ নেয়া অবস্থায় তিনি আমাদের বললেন : ‘‘মদীনায় এমন কিছু সংখ্যক লোক রয়ে গেছে যারা এ যুদ্ধে অংশ নেয়নি, তা সত্ত্বেও তোমরা যে সকল স্থান অতিক্রম করেছ, যে সকল ঘাটিতে প্রবেশ করেছ, তারা যেন তোমাদের সাথেই ছিল। কারণ রোগ-ব্যাধি তাদের আটকে রেখেছে।’’ বর্ণনায়: মুসলিম
এ হাদীসটি ইমাম বুখারী আনাস রা. থেকে বর্ণনা করেছেন এভাবে যে, তিনি বলেছেন, আমরা তাবুক অভিযান থেকে ফিরে আসলাম। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘‘আমরা মদীনায় এমন কিছু লোককে রেখে গেছি, আমরা যে সকল গিরিপথ ও উপত্যকা অতিক্রম করেছি, তারা যেন তাতে আমাদের সাথেই ছিল। কারণ বিশেষ অসুবিধা তাদের যুদ্ধে যেতে আটকে দিয়েছে।
وَ رَوَاهُ البُخَارِي عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ الله ُ عَنْهُ قَالَ : رَجَعْنَا مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ : إنَّ أقْوَاماً خَلْفَنَا بِالمَدِيْنَةِ مَا سَلَكْنَا شِعْباً وَلاَ وَادِياً إلاَّ وَهُمْ مَعَنَا، حَبَسَهُمْ العُذْرُ .
হাদীস-৪. জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আল-আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক যুদ্ধে আমরা অংশ নেয়া অবস্থায় তিনি আমাদের বললেন : ‘‘মদীনায় এমন কিছু সংখ্যক লোক রয়ে গেছে যারা এ যুদ্ধে অংশ নেয়নি, তা সত্ত্বেও তোমরা যে সকল স্থান অতিক্রম করেছ, যে সকল ঘাটিতে প্রবেশ করেছ, তারা যেন তোমাদের সাথেই ছিল। কারণ রোগ-ব্যাধি তাদের আটকে রেখেছে।’’ বর্ণনায়: মুসলিম
এ হাদীসটি ইমাম বুখারী আনাস রা. থেকে বর্ণনা করেছেন এভাবে যে, তিনি বলেছেন, আমরা তাবুক অভিযান থেকে ফিরে আসলাম। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘‘আমরা মদীনায় এমন কিছু লোককে রেখে গেছি, আমরা যে সকল গিরিপথ ও উপত্যকা অতিক্রম করেছি, তারা যেন তাতে আমাদের সাথেই ছিল। কারণ বিশেষ অসুবিধা তাদের যুদ্ধে যেতে আটকে দিয়েছে।
১- ‘তারা তোমাদের সাথে ছিল’ এ কথার অর্থ হল তারা যদিও স্বশরীরে তোমাদের সাথে থাকতে পারেনি কিন্তু তাদের নিয়্যত ছিল অংশ নেয়ার, এবং মন ও হৃদয় তোমাদের সাথে ছিল, ফলে আমরা যারা অভিযানে অংশ নিয়েছি তাদের মতই তারা মর্যাদা ও সওয়াব লাভ করবে।
২- কোন ভাল কাজের নিয়্যত করলে যদি কোন কারণ বশত সে কাজে অংশ নেয়া সম্ভব নাও হয়, তবুও তাতে সওয়াব ও প্রতিদান পাওয়া যায়। এ হাদীসে মদীনায় থেকে যাওয়া সে সকল সাহাবীদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে তাদের যুদ্ধে অংশ গ্রহণের নিয়্যত ছিল বলেই তাদের অংশ গ্রহণকারী বলে ধরা হয়েছে।
৩- যাদের জিহাদের অংশ গ্রহণের নিয়্যত ছিল না বলে মদীনাতে রয়ে গেছে তারা কিন্তু এ মর্যাদা লাভ করেনি।
৪- কাজ শুরু করার আগেই সঠিক নিয়্যত করে নিতে হবে।
২- কোন ভাল কাজের নিয়্যত করলে যদি কোন কারণ বশত সে কাজে অংশ নেয়া সম্ভব নাও হয়, তবুও তাতে সওয়াব ও প্রতিদান পাওয়া যায়। এ হাদীসে মদীনায় থেকে যাওয়া সে সকল সাহাবীদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে তাদের যুদ্ধে অংশ গ্রহণের নিয়্যত ছিল বলেই তাদের অংশ গ্রহণকারী বলে ধরা হয়েছে।
৩- যাদের জিহাদের অংশ গ্রহণের নিয়্যত ছিল না বলে মদীনাতে রয়ে গেছে তারা কিন্তু এ মর্যাদা লাভ করেনি।
৪- কাজ শুরু করার আগেই সঠিক নিয়্যত করে নিতে হবে।
৫ - عَنْ أَبِي يَزِيْدَ مَعْنِ بْنِ يَزِيْدَ بْنِ الأَخْنَسِ-رَضِي الله ُعَنْهُمْ- وَهُوَ وَأَبُوْهُ وَجَدُّهُ صَحَابِيُّونَ- قَالَ : كَانَ أَبِيْ يَزِيْدُ أَخْرَجَ دَنَانِيْرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَجُلٍ فِي المَسْجِدَ، فَجِئْتُ فَأَخَذْتُهَا فَأَتَيْتَهُ بِهَا، فَقَالَ وَاللهِ مَا إِيَّاكَ أَرَدْتُ، فَخَاصَمْتَهُ إِلى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ : لَكَ مَا نَوَيْتَ يَا يَزِيْدُ، وَلَكَ مَا أخَذْتَ يَا مَعْنُ . رواه البخاري
হাদীস-৫. মাআন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাছ রা. থেকে বর্ণিত - তিনি, তার পিতা ও তার দাদা সাহাবী ছিলেন- তিনি বলেন, আমার পিতা ইয়াযীদ কিছু দীনার সদকা করার জন্য বের হয়ে মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে রেখে দিলেন। আমি গিয়ে তা নিয়ে এলাম। এতে আমার পিতা বললেন, আল্লাহর কসম আমি তা তোমাকে দেয়ার ইচ্ছায় রেখে আসিনি। আমি তখন বিষয়টা ফয়সালা করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে উপস্থাপন করলাম। তিনি বললেন : হে ইয়াযীদ! তুমি যা নিয়্যত করেছ তা তোমার (নিয়্যত অনুসারে তোমার সদকা আদায় হয়ে গেছে) আর হে মাআন! তুমি যা নিয়েছ তাও তোমার।
বর্ণনায় : বুখারী
হাদীস-৫. মাআন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাছ রা. থেকে বর্ণিত - তিনি, তার পিতা ও তার দাদা সাহাবী ছিলেন- তিনি বলেন, আমার পিতা ইয়াযীদ কিছু দীনার সদকা করার জন্য বের হয়ে মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে রেখে দিলেন। আমি গিয়ে তা নিয়ে এলাম। এতে আমার পিতা বললেন, আল্লাহর কসম আমি তা তোমাকে দেয়ার ইচ্ছায় রেখে আসিনি। আমি তখন বিষয়টা ফয়সালা করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে উপস্থাপন করলাম। তিনি বললেন : হে ইয়াযীদ! তুমি যা নিয়্যত করেছ তা তোমার (নিয়্যত অনুসারে তোমার সদকা আদায় হয়ে গেছে) আর হে মাআন! তুমি যা নিয়েছ তাও তোমার।
বর্ণনায় : বুখারী
১- সদকা দেয়ার জন্য অন্যকে দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।
২- মাআনের পিতা ইয়াযীদের যুক্তি ছিল, নিজ সন্তানকে যাকাত দেয়া যায় না। আমি সদকা দিয়েছি কোন এক অভাবী ব্যক্তিকে দেয়ার জন্য, নিজের ছেলেকে দেয়ার জন্য নয়। কিন্তু তা আমার ছেলের হাতে এসেছে, তাই আমার সদকা সম্ভবত আদায় হয়নি। এ কারণে সে ছেলের সদকা গ্রহণে আপত্তি করেছে।
৩- সঠিক নিয়্যতে কোন কাজ করলে তা যদি নিজের অনিচ্ছায় অপাত্রে পড়ে যায় তাতে অসুবিধা হয় না। যেহেতু মাআনের পিতার নিয়্যত সঠিক ছিল, তাই তার সদকা তার ছেলের হাতে এসে যাওয়ায় কোন ক্ষতি হয়নি। সদকা আদায় হয়ে গেছে। কিন্তু তার নিয়্যত যদি এমন থাকত যে, আমার কৌশলে আমার ছেলেই আমার এ সদকাটা পেয়ে যাবে, তাহলে বিষয়টা অন্য রকম হত।
৪- যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কুরআন ও সুন্নাহর কাছে পেশ করা হল ইসলামের দাবি।
৫- সত্য অনুসন্ধান বা প্রমাণের জন্য পিতা-মাতার সাথে শিষ্টচার বজায় রেখে বাদ-বিবাদে লিপ্ত হওয়া বা শরয়ী আদালতে তাদের সম্পর্কে মুকাদ্দমা দায়ের করার বৈধতা প্রমাণ হল।
২- মাআনের পিতা ইয়াযীদের যুক্তি ছিল, নিজ সন্তানকে যাকাত দেয়া যায় না। আমি সদকা দিয়েছি কোন এক অভাবী ব্যক্তিকে দেয়ার জন্য, নিজের ছেলেকে দেয়ার জন্য নয়। কিন্তু তা আমার ছেলের হাতে এসেছে, তাই আমার সদকা সম্ভবত আদায় হয়নি। এ কারণে সে ছেলের সদকা গ্রহণে আপত্তি করেছে।
৩- সঠিক নিয়্যতে কোন কাজ করলে তা যদি নিজের অনিচ্ছায় অপাত্রে পড়ে যায় তাতে অসুবিধা হয় না। যেহেতু মাআনের পিতার নিয়্যত সঠিক ছিল, তাই তার সদকা তার ছেলের হাতে এসে যাওয়ায় কোন ক্ষতি হয়নি। সদকা আদায় হয়ে গেছে। কিন্তু তার নিয়্যত যদি এমন থাকত যে, আমার কৌশলে আমার ছেলেই আমার এ সদকাটা পেয়ে যাবে, তাহলে বিষয়টা অন্য রকম হত।
৪- যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কুরআন ও সুন্নাহর কাছে পেশ করা হল ইসলামের দাবি।
৫- সত্য অনুসন্ধান বা প্রমাণের জন্য পিতা-মাতার সাথে শিষ্টচার বজায় রেখে বাদ-বিবাদে লিপ্ত হওয়া বা শরয়ী আদালতে তাদের সম্পর্কে মুকাদ্দমা দায়ের করার বৈধতা প্রমাণ হল।
৬ - عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ سَعَدِ بْنِ أَبِي وَقَّاص رَضِيَ الله ُعَنْهُ ু أَحَدِ العَشَرَةِ اَلْمَشْهُوْدِ لَهُمْ بِاْلجَنَّةِ، قَالَ : جَاءَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعُوْدُنِيْ عَامَ حَجَّةِ الوِدَاعِ مِنْ وَجَعٍ اِشْتَدَّ بِيْ، فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ قَدْ بَلَغَ بِي مِنَ الوَجَعِ مَا تَرَى، وَأَنَا ذُوْ مَالٍ وَلَا يَرِثُنِي إِلَّا اِبْنَةٌ لِي، أَفَاَتَصَدَّقُ بِثُلُثَي مَالِي؟ قَالَ : لاَ، قُلْتُ فَالشَّطْرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ فَقَالَ : لاَ، قُلْتُ : فَالثٌّلُثُ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ : الثُّلُثُ، وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ থ أو كَبِيْرٌ থ إنَّكَ أنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أغْنِيَاءَ خَْيرٌ مِنْ أنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ، وَإنَّكَ لَنْ تُنْفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغِي بِهَا وَجْهَ اللهِ إلاَّ وُجِرْتَ عَلَيْهَا حَتىَّ مَا تَجْعَلُ فِي فَمِ امْرأَتِكَ . قَالَ : فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِي؟ قَالَ : إنَّكَ لَنْ تُخَلّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلاً تَبْتَغِي بِه وَجْهَ اللهِ إلاَّ ازْدَدْتَ بِه دَرَجَةً ورِفعةً وَلَعَلَّكَ أنْ تُخَلَّفَ حَتىَّ يَنْتَفِعَ بكَ أقْوَامٌ وَيُضَرَّبِكَ آخَرُوْنَ . أللَّهُمَّ أمْضِ لأصْحَابِي هِجْرَتَهُمْ وَلاَ تَرُدَّهُمْ عَلى أعْقَابِهِمْ، لَكَنَّ البَائِسُ سَعْدُ بْنِ خَوَلَةَ . يَرْثِي لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنْ مَاتَ بِمَكَّةَ . متفق عليه
হাদীস-৬. আবু ইসহাক সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত- তিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশ জনের একজন- তিনি বলেন: আমি বিদায় হজের বছর রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। আমি তখন বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার রোগের অবস্থাতো আপনি দেখছেন। আর আমি একজন সম্পদশালী মানুষ। আমার এক কন্যা ব্যতীত আর কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমি কি আমার সম্পদের দু তৃতীয়াংশ দান করে দেব? তিনি বললেন, ‘না।’ আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ তাহলে অর্ধেকটা দান করে দেই? তিনি বললেন, ‘না।’ আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে এক তৃতীয়াংশ দান করি? তিনি বললেন, ‘হা, এক তৃতীয়াংশ। এক তৃতীয়াংশ অনেক বেশি বা অনেক বড়। তুমি সন্তানদের এমন নিঃস্ব অবস্থায় রেখে যাবে যে তারা মানুষের কাছে হাত পাতবে, এর চেয়ে তাদেরকে ধনবান করে রেখে যাওয়া উত্তম। তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু খরচ করবে তার প্রতিদান পাবেই। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দেবে তার প্রতিদানও তোমাকে দেয়া হবে।’ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি আমার সাথীদের পর মক্কায় থেকে যাব? তিনি বললেন, ‘তুমি মক্কায় থেকে গিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে কাজই করবে তাতে তোমার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। সম্ভবত তুমি মক্কায় থেকে যাবে। তখন তোমার দ্বারা অনেকে উপকৃত হবে আবার অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ আপনি আমার সাথীদের হিজরত পূর্ণ করুন, তাদেরকে পিছনে দিকে ফিরিয়ে দেবেন না।’ কিন্তু সাদ বিন খাওলার জন্য করুণা। মক্কায় তার মৃত্যুতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
হাদীস-৬. আবু ইসহাক সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত- তিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশ জনের একজন- তিনি বলেন: আমি বিদায় হজের বছর রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। আমি তখন বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার রোগের অবস্থাতো আপনি দেখছেন। আর আমি একজন সম্পদশালী মানুষ। আমার এক কন্যা ব্যতীত আর কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমি কি আমার সম্পদের দু তৃতীয়াংশ দান করে দেব? তিনি বললেন, ‘না।’ আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ তাহলে অর্ধেকটা দান করে দেই? তিনি বললেন, ‘না।’ আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে এক তৃতীয়াংশ দান করি? তিনি বললেন, ‘হা, এক তৃতীয়াংশ। এক তৃতীয়াংশ অনেক বেশি বা অনেক বড়। তুমি সন্তানদের এমন নিঃস্ব অবস্থায় রেখে যাবে যে তারা মানুষের কাছে হাত পাতবে, এর চেয়ে তাদেরকে ধনবান করে রেখে যাওয়া উত্তম। তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু খরচ করবে তার প্রতিদান পাবেই। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দেবে তার প্রতিদানও তোমাকে দেয়া হবে।’ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি আমার সাথীদের পর মক্কায় থেকে যাব? তিনি বললেন, ‘তুমি মক্কায় থেকে গিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে কাজই করবে তাতে তোমার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। সম্ভবত তুমি মক্কায় থেকে যাবে। তখন তোমার দ্বারা অনেকে উপকৃত হবে আবার অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ আপনি আমার সাথীদের হিজরত পূর্ণ করুন, তাদেরকে পিছনে দিকে ফিরিয়ে দেবেন না।’ কিন্তু সাদ বিন খাওলার জন্য করুণা। মক্কায় তার মৃত্যুতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
১- অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখার জন্য যাওয়ার গুরুত্ব। অসুস্থ ব্যক্তিকে সেবা করার লক্ষ্যে দেখতে যাওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমন উম্মাতকে নির্দেশ দিয়েছেন তেমনি তিনি নিজেও সর্বদা আমল করেছেন। এটি মুসলমানদের একটি কর্তব্যও বটে। কোন মুসলমান অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে সে অন্য মুসলমান থেকে সেবা পাওয়ার অধিকার রাখে।
২- আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করতে সাহাবায়ে কেরামের গভীর আগ্রহ।
৩- মৃত্যুকালে এক তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদ দান বা দানের অসীয়ত করা যাবে না। যদি কেহ করে তবে তা শুধু এক তৃতীয়াংশের মধ্যে কার্যকর হবে।
৪- নিজের সম্পদ থেকে উত্তরাধিকারীদের কোনভাবে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।
৫- নিজের সন্তান যেন সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উৎসাহ প্রদান।
৬- পরিবার পরিজনের জন্য যাবতীয় খরচা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে করা হয় তবে তাতেও সওয়াব অর্জিত হয়।
৭- সকল প্রকার খরচ বা সম্পদ ব্যয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের দিক লক্ষ্য রাখতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিক-নির্দেশনা।
৮- মক্কা থেকে হিজরত করার পর আবার মক্কায় বসবাস করে সেখানে মৃত্যু বরণ করাকে সাহাবায়ে কেরাম অপছন্দ করেছেন।
৯- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে কোন সৎকর্ম সম্পাদন করা হলে তাতে সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
১০- যে কোন বিষয় ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দৃষ্টি ভংগি নিয়ে বিবেচনা করা দরকার। এমনিভাবে কেহ পরামর্শ চাইলে উভয় দিকে বিবেচনা করে পরামর্শ দেয়া উচিত।
১১- সাহাবায়ে কেরামের দৃঢ়তার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করেছেন।
১২- কারো অনাকাঙ্ক্ষিত কোন বিষয় ঘটে গেলে তার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করা একটি মহৎ চরিত্র।
১৩- হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. সে যাত্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি সতের জন ছেলে ও বার জন মেয়ের পিতা হয়েছিলেন। তিনি মুআবিয়া রা. এর খেলাফতকাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি বহু অভিযানে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
২- আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করতে সাহাবায়ে কেরামের গভীর আগ্রহ।
৩- মৃত্যুকালে এক তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদ দান বা দানের অসীয়ত করা যাবে না। যদি কেহ করে তবে তা শুধু এক তৃতীয়াংশের মধ্যে কার্যকর হবে।
৪- নিজের সম্পদ থেকে উত্তরাধিকারীদের কোনভাবে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।
৫- নিজের সন্তান যেন সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উৎসাহ প্রদান।
৬- পরিবার পরিজনের জন্য যাবতীয় খরচা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়্যতে করা হয় তবে তাতেও সওয়াব অর্জিত হয়।
৭- সকল প্রকার খরচ বা সম্পদ ব্যয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের দিক লক্ষ্য রাখতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিক-নির্দেশনা।
৮- মক্কা থেকে হিজরত করার পর আবার মক্কায় বসবাস করে সেখানে মৃত্যু বরণ করাকে সাহাবায়ে কেরাম অপছন্দ করেছেন।
৯- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে কোন সৎকর্ম সম্পাদন করা হলে তাতে সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
১০- যে কোন বিষয় ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দৃষ্টি ভংগি নিয়ে বিবেচনা করা দরকার। এমনিভাবে কেহ পরামর্শ চাইলে উভয় দিকে বিবেচনা করে পরামর্শ দেয়া উচিত।
১১- সাহাবায়ে কেরামের দৃঢ়তার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করেছেন।
১২- কারো অনাকাঙ্ক্ষিত কোন বিষয় ঘটে গেলে তার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করা একটি মহৎ চরিত্র।
১৩- হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. সে যাত্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি সতের জন ছেলে ও বার জন মেয়ের পিতা হয়েছিলেন। তিনি মুআবিয়া রা. এর খেলাফতকাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি বহু অভিযানে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
৭ - عن أبي هريرة ু رضي الله عنه-قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إنَّ الله لا يَنْظُرُ إلى أجْسَامِكُمْ، ولاَ إلى صُوَرِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إلى قُلُوْبِكُمْ . رواه مسلم
হাদীস-৭. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘মহান আল্লাহ তোমাদের দেহের দিকে তাকান না, নজর দেন না তোমাদের চেহারার দিকেও। বরং তিনি তোমাদের অন্তরের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।’’
হাদীস-৭. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘মহান আল্লাহ তোমাদের দেহের দিকে তাকান না, নজর দেন না তোমাদের চেহারার দিকেও। বরং তিনি তোমাদের অন্তরের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।’’
১- ‘আল্লাহ তোমাদের শরীর ও চেহারার প্রতি তাকান না’ এর অর্থ হল, তিনি শরীর ও চেহারার কারণে কাউকে সওয়াব দেন না বা শাস্তি দেন না।
২- অন্তরের আন্তরিকতা, নির্ভেজাল নিয়্যত ও ইখলাছের প্রতি লক্ষ্য করে আল্লাহ মানুষের আমলের প্রতিদান দিয়ে থাকেন। তার চেহারা ও শরীরের অবস্থা এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার কাছে কোন বিবেচ্য বিষয় নয়।
৩- অন্তরাত্মাকে পরিশুদ্ধ করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৪- বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে আমল শুরু করার পূর্বে অন্তর দিয়ে কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঠিক করে নিতে হবে।
৫- মানুষ অন্য মানুষকে তার বাহ্যিক কাজ-কর্ম দিয়ে বিচার করবে। তার অন্তরের বিষয়টা কি ছিল, এটা আল্লাহর উপর সোপর্দ করবে।
২- অন্তরের আন্তরিকতা, নির্ভেজাল নিয়্যত ও ইখলাছের প্রতি লক্ষ্য করে আল্লাহ মানুষের আমলের প্রতিদান দিয়ে থাকেন। তার চেহারা ও শরীরের অবস্থা এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার কাছে কোন বিবেচ্য বিষয় নয়।
৩- অন্তরাত্মাকে পরিশুদ্ধ করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৪- বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে আমল শুরু করার পূর্বে অন্তর দিয়ে কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঠিক করে নিতে হবে।
৫- মানুষ অন্য মানুষকে তার বাহ্যিক কাজ-কর্ম দিয়ে বিচার করবে। তার অন্তরের বিষয়টা কি ছিল, এটা আল্লাহর উপর সোপর্দ করবে।
৮ -عن أبي موسى الأشعري-رضي الله عنه- قال : سئل رسول الله e عن الرجل يقاتل شجاعةً، ويقاتل حميةً، ويقاتل رياءً أي ذلك في سبيل الله؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللهِ هِي الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيْلِ اللهِ . رواه مسلم
ولفظ البخاري : جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال : الرجل يقاتل للمغنم والرجل يقاتل للذكر، والرجل يقاتل ليرى مكانه، فمن في سبيل الله ؟ قال : مَنْ قَاتَلَ لِتَكُوْنَ كَلِمَةُ اللهِ هِي الْعُلْيا فَهُوَ فِي سَبِيْلِ اللهِ .
হাদীস-৮. আবু মূছা আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, যে যুদ্ধ করে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য অথবা আত্ন-সম্মান বোধের জন্য যুদ্ধ করে, কিংবা যুদ্ধ করে মানুষকে দেখানোর জন্য। কোন উদ্দেশ্যটি আল্লাহর পথে জিহাদ বলে ধরা হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার নিয়্যতে লড়াই করছে সে-ই আল্লাহর পথ জিহাদ করছে।’’ বর্ণনায় : মুসলিম
সহীহ বুখারীর বর্ণনার ভাষা হল : এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, জনৈক ব্যক্তি জিহাদ করছে যুদ্ধ-লব্ধ সম্পদ পাওয়ার জন্য, আরেক ব্যক্তি জিহাদ করছে লোকেরা তাকে স্মরণ করবে এ জন্য, অন্য এক ব্যক্তি জিহাদ করছে তার মর্যাদা বেড়ে যাবে, সে জন্য। এর মধ্যে কে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে ? রাসূলুলহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার নিয়্যতে লড়াই করছে সে-ই আল্লাহর পথে জিহাদ করছে।’’ বর্ণনায় : বুখারী।
ولفظ البخاري : جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال : الرجل يقاتل للمغنم والرجل يقاتل للذكر، والرجل يقاتل ليرى مكانه، فمن في سبيل الله ؟ قال : مَنْ قَاتَلَ لِتَكُوْنَ كَلِمَةُ اللهِ هِي الْعُلْيا فَهُوَ فِي سَبِيْلِ اللهِ .
হাদীস-৮. আবু মূছা আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল, যে যুদ্ধ করে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য অথবা আত্ন-সম্মান বোধের জন্য যুদ্ধ করে, কিংবা যুদ্ধ করে মানুষকে দেখানোর জন্য। কোন উদ্দেশ্যটি আল্লাহর পথে জিহাদ বলে ধরা হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার নিয়্যতে লড়াই করছে সে-ই আল্লাহর পথ জিহাদ করছে।’’ বর্ণনায় : মুসলিম
সহীহ বুখারীর বর্ণনার ভাষা হল : এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, জনৈক ব্যক্তি জিহাদ করছে যুদ্ধ-লব্ধ সম্পদ পাওয়ার জন্য, আরেক ব্যক্তি জিহাদ করছে লোকেরা তাকে স্মরণ করবে এ জন্য, অন্য এক ব্যক্তি জিহাদ করছে তার মর্যাদা বেড়ে যাবে, সে জন্য। এর মধ্যে কে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে ? রাসূলুলহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার নিয়্যতে লড়াই করছে সে-ই আল্লাহর পথে জিহাদ করছে।’’ বর্ণনায় : বুখারী।
১- বীরত্ব প্রদর্শন, আত্মসম্মান বা জাতীয়তাবোধ, প্রচারণা, সম্পদ অর্জনের জন্য বা মর্যাদা উন্নত করার জন্য যুদ্ধ করা আল্লাহর পথে জিহাদ বলে গণ্য নয়।
২- জিহাদের সংজ্ঞা : আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা, সংগ্রাম-সাধনা, লড়াই-যুদ্ধ করার নাম হল আল্লাহর পথে জিহাদ।
৩- ইখলাছ ও সঠিক নিয়্যত না থাকলে জিহাদের মত গুরুত্বপূর্ণ আমলও নিষ্ফল হয়ে যায়।
২- জিহাদের সংজ্ঞা : আল্লাহর বাণীকে সর্বশীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা, সংগ্রাম-সাধনা, লড়াই-যুদ্ধ করার নাম হল আল্লাহর পথে জিহাদ।
৩- ইখলাছ ও সঠিক নিয়্যত না থাকলে জিহাদের মত গুরুত্বপূর্ণ আমলও নিষ্ফল হয়ে যায়।
৯ - عن أبي بكرة نفيع بن الحارث الثقفي رضي الله عنه أن النبي e قال : إِذَا التَقَى الْمُسْلِمانِ بِسَيْفِهِمَا فالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُوْلُ فِي النَّار . قلتُ يا رسول الله ! هذا القاتل فما بال المقتول؟ قال : إِنَّهُ كَانَ حَرِيْصاً عَلىَ قَتْلِ صَاحِبَيْهِ . متفق عليه
হাদীস-৯. আবু বাকরাহ নুফাই ইবনে হারিস আস-সাকাফী রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘দুই জন মুসলিম যখন তাদের তরবারি নিয়ে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত উভয়ের স্থান জাহান্নাম হয়ে যায়।’’ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! হত্যাকারীর অপরাধ তো স্পষ্ট, কিন্তু নিহত ব্যক্তির অপরাধ কি? তিনি বললেন, ‘‘সে তার প্রতিপক্ষকে হত্যা করার সংকল্প (নিয়্যত) লালন করেছিল।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
হাদীস-৯. আবু বাকরাহ নুফাই ইবনে হারিস আস-সাকাফী রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘‘দুই জন মুসলিম যখন তাদের তরবারি নিয়ে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত উভয়ের স্থান জাহান্নাম হয়ে যায়।’’ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! হত্যাকারীর অপরাধ তো স্পষ্ট, কিন্তু নিহত ব্যক্তির অপরাধ কি? তিনি বললেন, ‘‘সে তার প্রতিপক্ষকে হত্যা করার সংকল্প (নিয়্যত) লালন করেছিল।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
১- কোন অপরাধ সংঘটনের পরিকল্পনা করা একটি অপরাধ।
২- যে নিহত হল তাকে শুধু অন্যকে হত্যা করার নিয়্যত ও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়ার কারণে শাস্তি দেয়া হবে।
৩- অন্তরের নিয়্যতের প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৪- ভাল কাজের নিয়্যত করা একটি ভাল কাজ। তেমনি খারাপ কাজের নিয়্যত করে কোন তৎপরতা চালালে লক্ষ্য পূরণ না হলেও তা অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। যদি এ তৎপরতা দ্বারা কেহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তার শাস্তিও ভোগ করতে হবে।
৫- মুসলমানদের পরস্পর মারামারি, হানাহানি ও লড়াই একটি মারাত্মক অপরাধ। এ থেকে বেচে থাকার জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন।
৬- মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতি রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ।
২- যে নিহত হল তাকে শুধু অন্যকে হত্যা করার নিয়্যত ও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়ার কারণে শাস্তি দেয়া হবে।
৩- অন্তরের নিয়্যতের প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৪- ভাল কাজের নিয়্যত করা একটি ভাল কাজ। তেমনি খারাপ কাজের নিয়্যত করে কোন তৎপরতা চালালে লক্ষ্য পূরণ না হলেও তা অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। যদি এ তৎপরতা দ্বারা কেহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তার শাস্তিও ভোগ করতে হবে।
৫- মুসলমানদের পরস্পর মারামারি, হানাহানি ও লড়াই একটি মারাত্মক অপরাধ। এ থেকে বেচে থাকার জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন।
৬- মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতি রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ।
১০ - عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صَلاةُ الرَّجُلِ فِي جَمَاعَةٍ تَزِيْدُ عَلى صَلاتِه فِي بَيْتِه وصَلاتِه فِي سُوقِه بِضْعاَ وَعِشْرِيْنَ دَرَجَة، وَذَلِكَ أنَّ أحَدَهُمْ إذَا تَوَضّأ فأحْسَنَ الْوَضُوءَ، ثُمَّ أتَى الْمَسْجِدَ لا يُريْدُ إلا الصلاةُ، ولا يَنْهَزُه إلا الصلاةُ، لَمْ يَخطُ خَطْوَةً إلا رُفِعَ لَه بِهاَ دَرَجَةً وَحُطَّ عَنْهُ بِها خَطِيئةٌ حَتَّى يَدْخُلَ المَسْجِدَ، فإذا دَخَلَ المَسْجِدَ كَانَ فِي الصَلاَةِ ما كانَتِ الصَلاةُ هِيَ تَحْبسُهُ، وَالمَلائِكَةُ يُصَلُّونَ على أحَدِكُمْ ما دامَ فِي مَجْلِسِه الذِي صَلى فِيه، يَقُولُونَ : اللّهُمَّ ارْحَمْهُ، أللّهُمَّ اغْفِرلَه، أللَّهُمَّ تُبْ عَلَيْه، ما لَم يُؤذِ فِيه، ما لَم يُحدِثْ فِيه . متفق عليه، وهذا لفظ مسلم
হাদীস- ১০. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘‘পুরুষের জামাতের সাথে নামাজ আদায় করার সওয়াব তার বাজার বা ঘরে নামাজ আদায়ের চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি। যখন কোন ব্যক্তি ভালভাবে অজু করে, অতঃপর মসজিদে আসে শুধু নামাজ আদায়ের জন্য। এবং নামাজ আদায় ব্যতীত অন্য কোন নিয়্যত তাকে উদ্বুদ্ধ করেনি। সে মসজিদে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার প্রতিটি পদক্ষেপে তার এক একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ও একেকটি করে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এরপর সে যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে নামাজ আটকে রাখবে ততক্ষণ সে নামাজ আদায়ে লিপ্ত বলে গণ্য হবে। তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যখন নামাজের মজলিসে বসে থাকে তখন ফেরেশতাগন তার জন্য দুআ করে বলতে থাকে, ‘হে আল্লাহ! তার প্রতি দয়া করুন! তাকে ক্ষমা করুন! তার তাওবা কবুল করুন!’ এ অবস্থা অব্যাহত থাকে যতক্ষণ না সে কাউকে কষ্ট দেয় বা অজু ভেঙে যায়।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
হাদীস- ১০. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘‘পুরুষের জামাতের সাথে নামাজ আদায় করার সওয়াব তার বাজার বা ঘরে নামাজ আদায়ের চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি। যখন কোন ব্যক্তি ভালভাবে অজু করে, অতঃপর মসজিদে আসে শুধু নামাজ আদায়ের জন্য। এবং নামাজ আদায় ব্যতীত অন্য কোন নিয়্যত তাকে উদ্বুদ্ধ করেনি। সে মসজিদে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার প্রতিটি পদক্ষেপে তার এক একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ও একেকটি করে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এরপর সে যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে নামাজ আটকে রাখবে ততক্ষণ সে নামাজ আদায়ে লিপ্ত বলে গণ্য হবে। তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যখন নামাজের মজলিসে বসে থাকে তখন ফেরেশতাগন তার জন্য দুআ করে বলতে থাকে, ‘হে আল্লাহ! তার প্রতি দয়া করুন! তাকে ক্ষমা করুন! তার তাওবা কবুল করুন!’ এ অবস্থা অব্যাহত থাকে যতক্ষণ না সে কাউকে কষ্ট দেয় বা অজু ভেঙে যায়।’’
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
১- জামাতের নামাজ আদায়ের ফজিলত
২- যথাযথ সওয়াব পেতে হলে নিয়্যতের পরিশুদ্ধতা ও একনিষ্ঠতা অনুসরণ প্রয়োজন। যেমন হাদীসটিতে বলা হয়েছে ‘নামাজ ব্যতীত অন্য কোন কিছুর নিয়্যত তাকে উদ্বুদ্ধ করেনি।’
৩- নামাজ আদায়ে অপেক্ষমাণদের ফজিলত ও তাদের জন্য ফেরেশতাদের দুআ।
৪- নামাজ আদায়ের পর নামাজের স্থানে অবস্থান একটি সওয়াবের কাজ।
৫-মসজিদে অজু ভঙ্গ করে বা অন্যকে কষ্ট দেয় এমন কিছু না করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৬- নামাজের দিকে আসার পদক্ষেপগুলির বিনিময়ে সওয়াব ও মর্যাদা লাভ।
৭- ফেরেশতাগন আল্লাহর ইচ্ছায় মুমিনদের জন্য দুআ করে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :
الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آَمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ . ( الغافر : 7)
‘‘যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চতুস্পার্শে ঘিরে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সাথে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী, অতএব যারা তাওবা করে ও আপনার পথ অবলম্বন করে আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’’
(সূরা আল-মুমিন : ৭)
২- যথাযথ সওয়াব পেতে হলে নিয়্যতের পরিশুদ্ধতা ও একনিষ্ঠতা অনুসরণ প্রয়োজন। যেমন হাদীসটিতে বলা হয়েছে ‘নামাজ ব্যতীত অন্য কোন কিছুর নিয়্যত তাকে উদ্বুদ্ধ করেনি।’
৩- নামাজ আদায়ে অপেক্ষমাণদের ফজিলত ও তাদের জন্য ফেরেশতাদের দুআ।
৪- নামাজ আদায়ের পর নামাজের স্থানে অবস্থান একটি সওয়াবের কাজ।
৫-মসজিদে অজু ভঙ্গ করে বা অন্যকে কষ্ট দেয় এমন কিছু না করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান।
৬- নামাজের দিকে আসার পদক্ষেপগুলির বিনিময়ে সওয়াব ও মর্যাদা লাভ।
৭- ফেরেশতাগন আল্লাহর ইচ্ছায় মুমিনদের জন্য দুআ করে। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :
الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آَمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ . ( الغافر : 7)
‘‘যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চতুস্পার্শে ঘিরে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সাথে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী, অতএব যারা তাওবা করে ও আপনার পথ অবলম্বন করে আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’’
(সূরা আল-মুমিন : ৭)
১১ - عن أبي العباس عبد الله بن عباس رضي الله عنهما عن رسول الله صلى الله عليه وسلم فيما يروي عن ربه تبارك وتعالى قال : إنَّ اللهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئاتِ، ثم بين ذلك : فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا الله تَبَارَكَ وَتَعالى عِنْدَه حَسَنَةً كَامِلَةً، وإنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا الله عَشْرَةَ حَسَنَاتٍ إلى سَبْعِمِائةِ ضِعْفٍ إلى أضْعَافٍ كَثِيرَة، وإنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا الله عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وإنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَها كَتَبَهَا الله ُ سَيِّئَةً وَاحِدةَ . متفق عليه
হাদীস-১১. আবুল আববাস আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মহান প্রভুর পক্ষ থেকে বর্ণনা করতে যেয়ে বলেছেন : ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কাজ ও মন্দ কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এরপর তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজ করার নিয়্যত করল, কিন্তু বাস্তবায়ন করল না, আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ সৎ কাজ করার সওয়াব লিখে দেন। আর যদি নিয়্যত করার পর সৎ কাজটি বাস্তবায়ন করে তাহলে আল্লাহ তাকে দশ থেকে সাত শত গুন বা তার চেয়েও অধিক হারে সৎ কাজ সম্পন্ন করার সওয়াব দিয়ে দেন। আর যদি কোন খারাপ কাজ করার নিয়্যত করে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করল না, তাহলে আল্লাহ তাকে একটি পরিপূর্ণ সৎ কাজ করার সওয়াব দিয়ে দেন। যদি সে খারাপ কাজের নিয়্যত করে তা বাস্তবায়ন করেই ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার জন্য মাত্র একটি খারাপ কাজ করার গুনাহ লিখে রাখেন।
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
হাদীস-১১. আবুল আববাস আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মহান প্রভুর পক্ষ থেকে বর্ণনা করতে যেয়ে বলেছেন : ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কাজ ও মন্দ কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এরপর তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজ করার নিয়্যত করল, কিন্তু বাস্তবায়ন করল না, আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ সৎ কাজ করার সওয়াব লিখে দেন। আর যদি নিয়্যত করার পর সৎ কাজটি বাস্তবায়ন করে তাহলে আল্লাহ তাকে দশ থেকে সাত শত গুন বা তার চেয়েও অধিক হারে সৎ কাজ সম্পন্ন করার সওয়াব দিয়ে দেন। আর যদি কোন খারাপ কাজ করার নিয়্যত করে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করল না, তাহলে আল্লাহ তাকে একটি পরিপূর্ণ সৎ কাজ করার সওয়াব দিয়ে দেন। যদি সে খারাপ কাজের নিয়্যত করে তা বাস্তবায়ন করেই ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার জন্য মাত্র একটি খারাপ কাজ করার গুনাহ লিখে রাখেন।
বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম
১- যদি কেহ কোন নেক কাজের নিয়্যত করে, তবে তাতে সওয়াব লাভ হয়, যদিও সে তা বাস্তবায়ন করতে না পারে।
২- সর্বদা সৎকাজের নিয়্যত ও সংকল্প করতে উৎসাহ প্রদান।
৩- প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশগুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত দেয়ার ঘোষণা। বরং তার চেয়ে বেশি প্রতিদান দেয়া হয়। তবে এর কোন সীমা বা সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি।
৪- যদি খারাপ কাজ করার নিয়্যত করে তা থেকে ফিরে থাকা হয়, তাহলে এটি একটি সৎ কাজ বলে গণ্য হয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রতিদান পাওয়া যায়।
৫- মানুষের প্রতি আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত কত বেশি যে, তিনি একটি খারাপ করাজ করলে সে পরিমাণই প্রতিফল দেবেন। এর বেশি মোটেও নয়।
৬- আল্লাহ তাআলা চান মানুষ সর্বদা ভাল ও সৎকর্ম করবে ও খারাপ-মন্দ কাজ থেকে ফিরে থাকবে।
২- সর্বদা সৎকাজের নিয়্যত ও সংকল্প করতে উৎসাহ প্রদান।
৩- প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশগুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত দেয়ার ঘোষণা। বরং তার চেয়ে বেশি প্রতিদান দেয়া হয়। তবে এর কোন সীমা বা সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি।
৪- যদি খারাপ কাজ করার নিয়্যত করে তা থেকে ফিরে থাকা হয়, তাহলে এটি একটি সৎ কাজ বলে গণ্য হয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রতিদান পাওয়া যায়।
৫- মানুষের প্রতি আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত কত বেশি যে, তিনি একটি খারাপ করাজ করলে সে পরিমাণই প্রতিফল দেবেন। এর বেশি মোটেও নয়।
৬- আল্লাহ তাআলা চান মানুষ সর্বদা ভাল ও সৎকর্ম করবে ও খারাপ-মন্দ কাজ থেকে ফিরে থাকবে।
১২ - عن عبد الله بن عمر بن الخطاب رضي الله عنهما قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : اِنطَلَقَ ثَلاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتى آوَاهُمْ المَبِيْتُ إلى غَارٍ فَدَخَلُوْهُ، فانحَدَرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الجَبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيهِمُ الغَارَ . فَقَالُوا : إنَّهُ لا يُنْجِيكُمْ مِنْ هَذِه الصَّخْرَةِ إلا أنْ تَدْعُوا الله َ بِصَالِحِ أعْمَالِكُمْ . قَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ : اللّهُمَّ كَانَ لِي أبَوَانَ شَيْخَانِ كَبِيْرَانِ، وَكُنْتُ لا أغْبِقُ قَبْلَهُما أهْلاً وَلا مَالاً . فَنَأَى بِي طَلَبُ الشَّجَرِ يوْماً فَلَمْ أرِحْ عَلَيْهِما حَتى نَامَا فَحَلَّبْتُ لَهُمَا غَبُوقَهُمَا فَوَجَدتُهُمَا نَائِمَيْنِ، فَكَرِهْتُ أنْ أُوقِظَهُمَا وَأن أغْبِقَ قَبْلَهُمَا أهْلاً أو مَالاً، فَلَبِثْتُ ু وَالقَدْحُ على يَدي- انْتَظِرُ اسْتِيقَاظَهُمَا حَتَّى بَرَقَ الفَجْرُ وَالصِّبْيَةُ يَتَضَاغَوْنَ عِنْدَ قَدَمَي- فاستَيْقَظا فَشَرِبَ غَبُوقَهُمَا . أللهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هذِه الصَّخْرَةِ، فانْفَرَجَتْ شَيئاً لا يَستَطِيْعُونَ الخُرُوجُ مِنْهُ .
قَالَ الآخَرُ : أللهُمَّ إنَّهُ كَانَتْ لِي ابْنَةُ عَمِّ كَانَتْ أحَبُّ النَّاسِ إلَيَّ، وفي رواية : كُنْتُ أُحِبُّهَا كَأشَدِّ مَا يُحِبُّ الرِّجَالُ النّسَاءَ، فَارَدتُ على نَفْسِهَا مِنِّي حَتَى ألَمَّتْ بِهَا سَنَةٌ مِنَ السِّنِيْنَ، فَجَاءتْنِي فَأَعْتَيْتُهَا عِشْرِيْنَ وَ مائَةَ دِيْنَارٍ عَلى أنْ تُخَلِّي بَيْنِي وَبَيْنَ نَفْسِهَا فَفَعَلَتْ، حَتَّى إذَا قَدَرْتُ عَلَيهَا وفي رواية : فَلَمَّا قَعَدتُ بَيْنَ رِجْلَيْهَا، قَالَتْ : اتَّقِ الله َ وَلا تَفُضَّ الخَاتَمَ إلا بِحَقِّهِ، فَانصَرَفْتُ عَنْهَا وَهِي أحَبُّ النَّاسِ إليَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الذي أعْطَيْتُهَا، أللهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هذِه الصَّخْرَةِ، فانْفَرَجَتْ شَيئاً غَيرَ أنَّهُم لا يَستَطِيْعُونَ الخُرُوجُ مِنْهَا .
وقَالَ الثَّالِثُ : أللهُمَّ استَأجَرْتُ أُجَراءَ وَأعْطَيْتُهُمْ أجْرَهُمْ غَيرَ رَجُلِ واحِدٍ تَرَكَ الذي لَهُ وَذَهَبَ، فَثَمََرتُ له أَجْرَهُ حَتّى كَثُرَتْ مِنهُ الأمْوَالُ، فَجَاءتْنِي بَعْدَ حِيْن فقال : يا عَبْدَ الله أدِّ إليَّ أجْري، فَقُلتُ : كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أجْرِكَ : مِنَ الإبِلِ وَالبَقَرِ وَالغَنَمِ وَالرَّقِيقِ . فقال : يا عَبْدَ الله لا تَسْتَهْزئُ بِي ! فَقُلتُ : لا اَسْتَهْزئُ بِكَ، فَأخَذَهُ كُلَّهُ فاسْتاقَهُ فَلَمْ يَتْرُكْ مِنْهُ شَيئاً، أللهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ فَانْفجَرَتِ الصَّخْرَةُ، فَخَرَجُوا يَمْشُوْنَ . متفق عليه
হাদীস-১২. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন : ‘‘অতীতকালে এক সময় তিন ব্যক্তি পথ চলতে চলতে রাত কাটাবার জন্য পর্বতের একটি গুহাতে আশ্রয় নিল। একটি পাথর পর্বতের উপর থেকে পতিত হলে গুহার মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে তারা তিন জনই আটকা পড়ে। তারা বলল, এ বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হলে আল্লাহর কাছে! তোমাদের সৎ কাজের উসীলা দিয়ে দুআ করতে হবে। (তারা এক এক জন করে তাদের নেক আমলের উসীলা দিয়ে দুআ করা শুরু করল) একজন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমার মাতা-পিতা ছিলেন খুবই বৃদ্ধ। আর আমি আমার সন্তানাদি-পরিবার পরিজনের আগেই তাদের দুধ পান করিয়ে দিতাম। একদিন জ্বালানী কাঠের জন্য আমার বহু দুর যেতে হল, সময় মত ঘরে ফিরে আসতে পারলাম না। তারা উভয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি তাদের রাতে খাবারের জন্য দুধ দোহন করে এনে দেখি তাঁরা নিদ্রা গেছেন। তাদের ঘুম ভাঙানো এবং পরিবার পরিজনকে তাদের আগে খেতে দেয়া আমি পছন্দ করলাম না। আমি দুধের পেয়ালা হাতে নিয়ে তাদের জাগ্রত হওয়ার অপেক্ষায় জেগে থাকলাম, অপরদিকে আমার সন্তানগুলো ক্ষুধায় আমার পায়ের নিকট গড়াগড়ি খাচ্ছিল। এ অবস্থায় ভোর হয়ে গেল। তারপর তারা জেগে উঠে দুধ পান করলেন। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে এ পাথরের কারণে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন।’ এ দুআর কারণে পাথর কিছুটা সরে গেল, কিন্তু তারা বের হতে পারল না।
আরেক জন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমার এক চাঁচাত বোন ছিল। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম। পুরুষ নারীকে যত ভালোবাসতে পারে আমি তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। আমি একদিন তার সাথে মিলনের আগ্রহ প্রকাশ করলাম। কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করল। এক দুর্ভিক্ষের সময় সে আমার কাছে আসল। সে আমার নিকট নিজেকে একান্তে অর্পণ করবে এ শর্তে আমি তাকে একশত বিশ দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) দিলাম। শর্তে সে রাজী হল। আমি যখন তাকে একান্তে পেয়ে গেলাম- অন্য বর্ণনায় এসেছে আমি যখন তার দু পায়ের মাঝে বসলাম- তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় কর। যথাযথ অধিকার অর্জন ব্যতীত আমার কুমারীত্ব নষ্ট করো না। তখনই আমি তার থেকে ফিরে আসলাম। অথচ সে ছিল সকল মানুষের চেয়ে আমার কাছে প্রিয়। আমি তাকে যে স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলাম তার দাবি ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি, তাহলে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন। এ দুআর কারণে পাথর কিছুটা সরে গেল, কিন্তু তারা বের হতে পারল না। তৃতীয় জন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমি কয়েকজন শ্রমিক কাজে রেখেছিলাম। তাদের সকলকে পারিশ্রমিক দিয়ে দিলাম। কিন্তু একজন পারিশ্রমিক না নিয়ে চলে গেল। আমি তার পারিশ্রমিক ব্যবসায় লাগালাম। এতে তার সম্পদ অনেক বেড়ে গেল। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর সে ব্যক্তি আমার নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা আমার পাওনা দিয়ে দিন।’ আমি বললাম, ‘এই উট, গরু, ছাগল ও চাকর-বাকর যা কিছু দেখছ তা সবই তোমার পারিশ্রমিক।’ সে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা! আমার সাথে ঠাট্টা করো না।’ আমি বললাম, ‘আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। এরপর সে সকল কিছুই নিয়ে চলে গেল, কিছুই রেখে গেল না। আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন।’ এরপর পাথরটি সরে গেল তারা সকলে মুক্ত হল। বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম।
قَالَ الآخَرُ : أللهُمَّ إنَّهُ كَانَتْ لِي ابْنَةُ عَمِّ كَانَتْ أحَبُّ النَّاسِ إلَيَّ، وفي رواية : كُنْتُ أُحِبُّهَا كَأشَدِّ مَا يُحِبُّ الرِّجَالُ النّسَاءَ، فَارَدتُ على نَفْسِهَا مِنِّي حَتَى ألَمَّتْ بِهَا سَنَةٌ مِنَ السِّنِيْنَ، فَجَاءتْنِي فَأَعْتَيْتُهَا عِشْرِيْنَ وَ مائَةَ دِيْنَارٍ عَلى أنْ تُخَلِّي بَيْنِي وَبَيْنَ نَفْسِهَا فَفَعَلَتْ، حَتَّى إذَا قَدَرْتُ عَلَيهَا وفي رواية : فَلَمَّا قَعَدتُ بَيْنَ رِجْلَيْهَا، قَالَتْ : اتَّقِ الله َ وَلا تَفُضَّ الخَاتَمَ إلا بِحَقِّهِ، فَانصَرَفْتُ عَنْهَا وَهِي أحَبُّ النَّاسِ إليَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الذي أعْطَيْتُهَا، أللهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هذِه الصَّخْرَةِ، فانْفَرَجَتْ شَيئاً غَيرَ أنَّهُم لا يَستَطِيْعُونَ الخُرُوجُ مِنْهَا .
وقَالَ الثَّالِثُ : أللهُمَّ استَأجَرْتُ أُجَراءَ وَأعْطَيْتُهُمْ أجْرَهُمْ غَيرَ رَجُلِ واحِدٍ تَرَكَ الذي لَهُ وَذَهَبَ، فَثَمََرتُ له أَجْرَهُ حَتّى كَثُرَتْ مِنهُ الأمْوَالُ، فَجَاءتْنِي بَعْدَ حِيْن فقال : يا عَبْدَ الله أدِّ إليَّ أجْري، فَقُلتُ : كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أجْرِكَ : مِنَ الإبِلِ وَالبَقَرِ وَالغَنَمِ وَالرَّقِيقِ . فقال : يا عَبْدَ الله لا تَسْتَهْزئُ بِي ! فَقُلتُ : لا اَسْتَهْزئُ بِكَ، فَأخَذَهُ كُلَّهُ فاسْتاقَهُ فَلَمْ يَتْرُكْ مِنْهُ شَيئاً، أللهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ فَانْفجَرَتِ الصَّخْرَةُ، فَخَرَجُوا يَمْشُوْنَ . متفق عليه
হাদীস-১২. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন : ‘‘অতীতকালে এক সময় তিন ব্যক্তি পথ চলতে চলতে রাত কাটাবার জন্য পর্বতের একটি গুহাতে আশ্রয় নিল। একটি পাথর পর্বতের উপর থেকে পতিত হলে গুহার মুখ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে তারা তিন জনই আটকা পড়ে। তারা বলল, এ বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হলে আল্লাহর কাছে! তোমাদের সৎ কাজের উসীলা দিয়ে দুআ করতে হবে। (তারা এক এক জন করে তাদের নেক আমলের উসীলা দিয়ে দুআ করা শুরু করল) একজন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমার মাতা-পিতা ছিলেন খুবই বৃদ্ধ। আর আমি আমার সন্তানাদি-পরিবার পরিজনের আগেই তাদের দুধ পান করিয়ে দিতাম। একদিন জ্বালানী কাঠের জন্য আমার বহু দুর যেতে হল, সময় মত ঘরে ফিরে আসতে পারলাম না। তারা উভয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি তাদের রাতে খাবারের জন্য দুধ দোহন করে এনে দেখি তাঁরা নিদ্রা গেছেন। তাদের ঘুম ভাঙানো এবং পরিবার পরিজনকে তাদের আগে খেতে দেয়া আমি পছন্দ করলাম না। আমি দুধের পেয়ালা হাতে নিয়ে তাদের জাগ্রত হওয়ার অপেক্ষায় জেগে থাকলাম, অপরদিকে আমার সন্তানগুলো ক্ষুধায় আমার পায়ের নিকট গড়াগড়ি খাচ্ছিল। এ অবস্থায় ভোর হয়ে গেল। তারপর তারা জেগে উঠে দুধ পান করলেন। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে এ পাথরের কারণে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন।’ এ দুআর কারণে পাথর কিছুটা সরে গেল, কিন্তু তারা বের হতে পারল না।
আরেক জন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমার এক চাঁচাত বোন ছিল। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম। পুরুষ নারীকে যত ভালোবাসতে পারে আমি তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। আমি একদিন তার সাথে মিলনের আগ্রহ প্রকাশ করলাম। কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করল। এক দুর্ভিক্ষের সময় সে আমার কাছে আসল। সে আমার নিকট নিজেকে একান্তে অর্পণ করবে এ শর্তে আমি তাকে একশত বিশ দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) দিলাম। শর্তে সে রাজী হল। আমি যখন তাকে একান্তে পেয়ে গেলাম- অন্য বর্ণনায় এসেছে আমি যখন তার দু পায়ের মাঝে বসলাম- তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় কর। যথাযথ অধিকার অর্জন ব্যতীত আমার কুমারীত্ব নষ্ট করো না। তখনই আমি তার থেকে ফিরে আসলাম। অথচ সে ছিল সকল মানুষের চেয়ে আমার কাছে প্রিয়। আমি তাকে যে স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলাম তার দাবি ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি, তাহলে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন। এ দুআর কারণে পাথর কিছুটা সরে গেল, কিন্তু তারা বের হতে পারল না। তৃতীয় জন বলল, ‘হে আল্লাহ! আমি কয়েকজন শ্রমিক কাজে রেখেছিলাম। তাদের সকলকে পারিশ্রমিক দিয়ে দিলাম। কিন্তু একজন পারিশ্রমিক না নিয়ে চলে গেল। আমি তার পারিশ্রমিক ব্যবসায় লাগালাম। এতে তার সম্পদ অনেক বেড়ে গেল। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর সে ব্যক্তি আমার নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা আমার পাওনা দিয়ে দিন।’ আমি বললাম, ‘এই উট, গরু, ছাগল ও চাকর-বাকর যা কিছু দেখছ তা সবই তোমার পারিশ্রমিক।’ সে বলল, ‘হে আল্লাহর বান্দা! আমার সাথে ঠাট্টা করো না।’ আমি বললাম, ‘আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। এরপর সে সকল কিছুই নিয়ে চলে গেল, কিছুই রেখে গেল না। আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে আমরা যে বিপদে পড়েছি তা থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন।’ এরপর পাথরটি সরে গেল তারা সকলে মুক্ত হল। বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম।
১- বিপদ-মুসীবতে পড়লে তা থেকে উদ্ধার লাভের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করা মুস্তাহাব।
২- নিজের কৃত নেক আমল বা সৎ কর্মের উসীলা দিয়ে দুআ করার বৈধতা প্রমাণিত।
৩- মাতা-পিতার সেবা তাদের সাথে সদাচরণ করা ও নিজের সন্তানাদির চেয়ে তাদের সেবা-যত্নকে অগ্রাধিকার দেয়ার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত।
৪- যেনা ব্যভিচার করার সামর্থ্য ও সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকা বিশাল নেক কাজ বলে প্রমাণিত।
৫- অন্যের সম্পদ তার অনুমতি ছাড়া তারই উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করার বৈধতা ও তাতে সম্পদের মালিকের অধিকার প্রমাণিত।
৬- উক্ত তিন ব্যক্তি তাদের এ সৎকাজগুলো শুধু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিমিত্তে করেছিল বলে তা আল্লাহর কাছে কবুল হয়েছিল। যেমন তারা প্রত্যেকে বলেছে, ‘হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে . . ।’ এর নামই হল ইখলাছ।
সমাপ্ত
২- নিজের কৃত নেক আমল বা সৎ কর্মের উসীলা দিয়ে দুআ করার বৈধতা প্রমাণিত।
৩- মাতা-পিতার সেবা তাদের সাথে সদাচরণ করা ও নিজের সন্তানাদির চেয়ে তাদের সেবা-যত্নকে অগ্রাধিকার দেয়ার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত।
৪- যেনা ব্যভিচার করার সামর্থ্য ও সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকা বিশাল নেক কাজ বলে প্রমাণিত।
৫- অন্যের সম্পদ তার অনুমতি ছাড়া তারই উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করার বৈধতা ও তাতে সম্পদের মালিকের অধিকার প্রমাণিত।
৬- উক্ত তিন ব্যক্তি তাদের এ সৎকাজগুলো শুধু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিমিত্তে করেছিল বলে তা আল্লাহর কাছে কবুল হয়েছিল। যেমন তারা প্রত্যেকে বলেছে, ‘হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজটি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে করে থাকি তাহলে . . ।’ এর নামই হল ইখলাছ।
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন