hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুমিন নারীদের বিশেষ বিধান

লেখকঃ ড. সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান

২৬
৫. নারীদের মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া বৈধ:
মসজিদে পুরুষদের সাথে সালাত আদায়ের জন্য নারীদের ঘর থেকে বের হওয়া বৈধ, তবে তাদের সালাত তাদের ঘরেই উত্তম। ইমাম মুসলিম তার সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

» لا تمنعوا إماء الله مساجد الله « 

“তোমরা আল্লাহর বান্দিদেরকে আল্লাহর মসজিদ থেকে নিষেধ করো না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৫৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৪২; তিরমিযী, হাদীস নং ৫৭০; নাসাঈ, হাদীস নং ৭০৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬; আহমদ: (২/৩৬); দারেমী, হাদীস নং ৪৪২]

অপর হাদীসে তিনি বলেন:

» لا تمنعوا النساء أن يخرجن إلى المساجد، وبيوتهن خير لهن « 

“নারীরা মসজিদে যাবে তোমরা নিষেধ করো না, তবে তাদের জন্য তাদের ঘরই উত্তম”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬৭]

উল্লেখ্য পর্দার জন্য নারীদের ঘরে অবস্থান ও তাতে সালাত আদায় করাই তাদের জন্য উত্তম।

সালাতের জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় নিম্নোক্ত আদবগুলো মেনে চলবে:

নারী স্বীয় কাপড় ও পরিপূর্ণ পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকবে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন:

» كان النساء يصلين مع رسول الله   صلى الله عليه وسلم ثم ينصرفن متلفعات بمروطهن ما يعرفن من الغلس « 

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে নারীরা সালাত পড়ত, অতঃপর তারা তাদের চাদর দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে ফিরে যেত, অন্ধকারের জন্য তাদেরকে চেনা যেত না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮২৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৪৫; তিরমিযী, হাদীস নং ১৫৩; নাসাঈ, হাদীস নং৫৪৫; আাবু দাউদ , হাদীস নং ৪২৩; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৬৯; আহমদ: (৬/২৫৯), মালিক: (৪), দারেমী, হাদীস নং ১২১৬]

সুগন্ধি ব্যবহার করবে না: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

» لا تمنعوا إماء الله مساجد الله، وليخرجن تفلات « 

“আল্লাহর বান্দিদের আল্লাহর মসজিদে নিষেধ করো না, আর অবশ্যই তারা সুগন্ধি ত্যাগ করে বের হবে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬৫; আহমদ: (২/৪৩৮), দারেমী, হাদীস নং ১২৭৯]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

» أيما امرأة أصابت بخورا فلا تشهدن معنا العشاء الآخرة « 

“যে নারী সুগন্ধি স্পর্শ করেছে, সে আমাদের সাথে এশায় উপস্থিত হবে না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৪৪; নাসাঈ, হাদীস নং ৫১২৮; আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৭৫; আহমদ: (২/২০৪)]

ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন, ইবন মাস‘উদের স্ত্রী যায়নাব বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন:

» إذا شهدت إحداكن المسجد فلا تمس طيبا « 

“তোমাদের কেউ যখন মসজিদে উপস্থিত হয়, সুগন্ধি স্পর্শ করবে না”। [সহীহ মসুলম, হাদীস নং ৪৪৩; নাসাঈ, হাদীস নং ৫১৩৩; আহমদ: (৬/৩৬৩)]

ইমাম শাওকানী রহ. ‘নাইলুল আওতার’: (৩/১৪০ ও ১৪১) গ্রন্থে বলেন: এসব দলীল প্রমাণ করে, নারীদের মসজিদে যাওয়া বৈধ যদি তার সাথে ফিতনা ও ফিতনাকে জাগ্রতকারী বস্তু না থাকে, যেমন সুগন্ধি জাতীয় বস্তু ইত্যাদি। তিনি আরো বলেন: হাদীস প্রমাণ করে যে, পুরুষরা নারীদেরকে তখন অনুমতি দিবে যখন তাদের বের হওয়ার মধ্যে ফিতনার আশঙ্কা নেই। যেমন সুগন্ধি অথবা অলঙ্কার অথবা সৌন্দর্যহীন অবস্থায়”। সমাপ্ত।

নারীরা কাপড় ও অলঙ্কার দ্বারা সুসজ্জিত হয়ে বের হবে না: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন:

«لَوْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى مِنَ النِّسَاءِ مَا رَأَيْنَا، لَمَنَعَهُنَّ مِنَ الْمَسَاجِدِ، كَمَا مَنَعَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ نِسَاءَهَا»

“নারীরা যা আবিস্কার করেছে বলে আমরা দেখছি তা যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতে পেতেন তাহলে অবশ্যই তাদেরকে মসজিদ থেকে নিষেধ করতেন। যেমন বনু ইসরাইলরা তাদের নারীদের নিষেধ করেছে”। [বুখারি ও মুসলিম।] [বুখারী ও মুসলিম তবে এটি মুসনাদে আহমাদের শব্দ]

ইমাম শাওকানী রহ. ‘নাইলুল আওতার’ গ্রন্থে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কথা (নারীরা যা আবিস্কার করেছে বলে আমরা দেখছি তা যদি রাসূলুল্লহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতে পেতেন) প্রসঙ্গে বলেন: অর্থাৎ সুন্দর পোশাক, সুগন্ধি, সৌন্দর্য চর্চা ও বেপর্দা। বস্তুত নবী যুগে নারীরা বের হত উড়না, কাপড় ও মোটা চাদর পেঁচিয়ে”।

ইমাম ইবনুল জাওযী রহ. বলেন: “নারীদের উচিত যথাসম্ভব ঘর থেকে বের না হওয়া, যদিও সে নিজের ব্যাপারে নিরাপদ হয়, কিন্তু মানুষেরা তার থেকে নিরাপদ নয়। যদি বের হওয়ার একান্ত প্রয়োজন হয়, তাহলে স্বামীর অনুমতি নিয়ে অপরিচ্ছন্ন পোশাকে বের হবে। আর খালি জায়গা দিয়ে হাঁটবে, প্রধান সড়ক ও বাজার দিয়ে হাঁটবে না, কণ্ঠস্বর যেন কেউ না শুনে সতর্ক থাকবে, রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটবে মাঝখান দিয়ে নয়”। [আহকামুন নিসা (পৃ. ৩৯)] সমাপ্ত।

৬. কাতারে নারীর অবস্থান ও অন্যান্য মাসআলা:

নারী একা হলে পুরুষদের পিছনে একাই কাতার করবে। কারণ, আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিয়ে সালাত পড়লেন, তিনি বলেন: আমি এবং এক ইয়াতীম তার পিছনে দাঁড়ালাম, আর বৃদ্ধা আমাদের পিছনে দাঁড়িয়েছে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৫৮; তিরমিযী, হাদীস নং ২৩৪; নাসাঈ, হাদীস নং ৮০১; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬১২; আহমদ: (৩/১৩১; মালিক, হাদীস নং ৩৬২; দারেমী, হাদীস নং ১২৮৭]

তার থেকে আরো বর্ণিত, আমাদের বাড়িতে আমি ও ইয়াতীম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত পড়েছি, আর আমার মা উম্মে সুলাইম আমাদের পিছনে ছিল”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬০; তিরমিযী, হাদীস নং ২৩৪; নাসাঈ, হাদীস নং ৮০১; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬১২; মালিক, হাদীস নং ৩৬২; দারেমী, হাদীস নং ১২৮৭]

যদি উপস্থিত নারীদের সংখ্যা বেশি হয়, তাহলে তারা পুরুষদের পিছনে এক বা একাধিক কাতার করে দাঁড়াবে। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাচ্চাদের সম্মুখে পুরুষদের দাঁড় করাতেন, বাচ্চারা পুরুষদের পিছনে দাঁড়াত, আর নারীরা দাঁড়াত বাচ্চাদের পিছনে। এ জাতীয় হাদীস ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

» خير صفوف الرجال أولها، وشرها آخرها، وخير صفوف النساء آخرها، وشرها أولها « 

“পুরুষদের সর্বোত্তম কাতার প্রথম কাতার, নিম্নমানের কাতার শেষেরটা, আর নারীদের সর্বোত্তম কাতার শেষেরটা, নিম্নমানের কাতার শুরুরটা”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৪০; তিরমিযী, হাদীস নং ২২৪; নাসাঈ, হাদীস নং৮২০’ আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৭৮; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১০০০; আহমদ: (২/৪৮৫); দারেমী, হাদীস নং ১২৬৮]

এ দু’টি হাদীস প্রমাণ করে নারীরা পুরুষদের পিছনে কাতারবদ্ধ দাঁড়াবে, তাদের পিছনে বিচ্ছিন্নভাবে সালাত পড়বে না, হোক সেটা ফরয সালাত অথবা তারাবীহের সালাত।

ইমাম সালাতে ভুল করলে নারীরা তাকে সতর্ক করবে ডান হাতের কব্জি দিয়ে বাম হাতের পৃষ্ঠদেশে থাপ্পড় মেরে বা আঘাত করে। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

» إذا نابكم في الصلاة شيء فليسبح الرجال، وليصفق النساء « 

“যখন সালাতে তোমাদের কোনো সমস্যা হয়, তখন পুরুষরা যেন তাসবীহ বলে এবং নারীরা যেন তাসফীক করে (হাতকে হাতের উপর মারে)”। সালাতে কোনো সমস্যা হলে নারীদের জন্য তাসফীক করা বৈধ। সমস্যার এক উদাহরণ: ইমামের ভুল করা, কারণ নারীর শব্দ পুরুষের জন্য ফিতনার কারণ হয়, তাই তাকে হাতে তাসফীক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কথা বলার নয়।

ইমাম সালাম ফিরালে নারীরা দ্রুত মসজিদ ত্যাগ করবে, পুরুষরা বসে থাকবে, যেন পুরুষরা তাদের সাক্ষাত না পায়। কারণ, উম্মে সালামাহ বর্ণনা করেন,

«أَنَّ النِّسَاءَ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنَّ إِذَا سَلَّمْنَ مِنَ المَكْتُوبَةِ، قُمْنَ وَثَبَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَنْ صَلَّى مِنَ الرِّجَالِ مَا شَاءَ اللَّهُ، فَإِذَا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ الرِّجَالُ» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ফরযের সালাম শেষে নারীরা দাঁড়িয়ে যেত আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যেসব পুরুষ তার সাথে সালাত পড়েছে বসে থাকত, যতক্ষণ আল্লাহ চাইতেন। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠতেন তারাও উঠত।” [বুখারী, হাদীস নং ৮৬৬]

ইমাম যুহরী রহ. বলেন: “আল্লাহ ভালো জানেন, তবে আমরা তার কারণ হিসেবে মনে করি নারীরা যাতে বাড়ি চলে যেতে সক্ষম হয়”। [সহীহ বুখারী, দেখুন: আশ-শারহুল কাবীর আলাল মুকনি‘: (১/৪২২)]

আর ইমাম শাওকানী তাঁর নাইলুল আওত্বার গ্রন্থে (২/৩২৬) বলেন, এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, ইমামের জন্য মুস্তাহাব হচ্ছে মুক্তাদীদের অবস্থা খেয়াল রাখা, অন্যায় বা হারামে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তা থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা, সন্দেহমূলক কিছু ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা থেকে দূরে থাকা, ঘর তো দূরের কথা রাস্তা-ঘাটেও নারী-পুরুষের মধ্যে মেলামেশা হওয়ার বিষয়টি অপছন্দনীয় হিসেবে বিবেচনা করা।

ইমাম নাওয়াওয়ী তাঁর আল-মাজমূ‘ গ্রন্থে (৩/৪৫৫) বলেন, আর মহিলারা জামাতে সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে পুরুষদের থেকে ভিন্ন:

এক. পুরুষদের মত জামাতে সালাত আদায় করা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।

দুই. তাদের মহিলা ইমাম তাদের মাঝ বরাবর দাঁড়াবে (সামনে নয়)

তিন. মহিলা যদি একজন হয় তবে সে পুরুষের পিছনে দাঁড়াবে, পুরুষের পাশে নয়, যা পুরুষের বিধান থেকে ভিন্নতর।

চার. যখন মহিলারা পুরুষদের সাথে সালাত আদায় করবে তখন তাদের শেষ কাতার প্রথম কাতার থেকে উত্তম।’... শেষ।

এ সব কিছু থেকে জানা গেল যে, নারী-পুরুষদের মেলামেশা হারাম।

৭. ঈদের সালাতে নারীদের বের হওয়ার বিধান:

উম্মে ‘আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

» أمرنا رسول الله   صلى الله عليه وسلم أن نخرجهن في الفطر والأضحى : العواتق، والحيض، وذوات الخدور، فأما الحيض فيعتزلن الصلاة - وفي لفظ : المصلى - ويشهدن الخير، ودعوة المسلمين « 

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন, যেন আমরা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় ঋতুমতী, যুবতী ও অবিবাহিতা নারীদের বের করি, তবে ঋতুমতী নারীরা সালাত থেকে বিরত থাকবে, অপর বর্ণনায় আছে: মুসল্লীদের থেকে দূরে থাকবে এবং কল্যাণ ও মুসলিমদের দো‘আয় অংশ গ্রহণ করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৯০; তিরমিযী, হাদীস নং ৫৩৯; নাসাঈ, হাদীস নং ১৫৫৮; আবু দাউদ, হাদীস নং ১১৩৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৩০৭; আহমদ (৫/৮৪); দারেমী, হাদীস নং ১৬০৯]

শাওকানী রহ. বলেন: “এ হাদীস ও এ জাতীয় অন্যান্য হাদীস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, দুই ঈদের দিন নারীদের ঈদগাহ যাওয়া বৈধ, এতে কুমারী, বিধবা, যুবতী, বৃদ্ধা, ঋতুমতী ও অন্যদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই, তবে যদি সে যদি ইদ্দত পালনকারী হয় অথবা তার বের হওয়ায় ফেতনার আশঙ্কা থাকে অথবা কোনো সমস্যা হলে বের হবে না”। [নাইলুল আওতার: (৩/৩০৬)] সমাপ্ত।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া ‘মাজমু‘ ফাতাওয়ায়’: (৬/৪৫৮ ও ৪৫৯) বলেন: “মুমিন নারীদের বলা হয়েছে যে, জামা‘আত ও জুমআয় উপস্থিত হওয়া অপেক্ষা ঘরে সালাত পড়াই তাদের জন্য অধিক উত্তম তবে ঈদ ব্যতীত। ঈদে তাদের উপস্থিতির আদেশ রয়েছে, কয়েকটি কারণে, আল্লাহ ভালো জানেন:

এক. ঈদ বছরে মাত্র দু’বার, তাই তাদের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য পক্ষান্তরে জুমু‘আ ও জামা‘আত এরূপ নয়।

দুই. ঈদের সালাতের কোনো বিকল্প নেই, পক্ষান্তরে জুমু‘আ ও জামা‘আতের বিকল্প আছে, কারণ ঘরে জোহর আদায় করাই নারীর জন্য জুমু‘আ আদায় করা।

তিন. ঈদের সালাতের জন্য বের হওয়া মূলত আল্লাহর যিকিরের জন্য ময়দানে বের হওয়া, যা কয়েক বিবেচনায় হজের সাথে মিল রাখে। এ জন্য হাজীদের সাথে মিল রেখে হজের মৌসুমেই বড় ঈদ হয়। সমাপ্ত।

শাফে‘ঈগণ বলেন: সাধারণ নারীরা যাবে, বিশেষ মর্যাদার অধিকারী নারীরা যাবে না।

ইমাম নাওয়াওয়ী ‘আল-মাজমু’: (৫/১৩) গ্রন্থে বলেন: শাফে‘ঈ ও তার সাথীগণ বলেছেন: সাধারণ নারীদের ঈদের সালাতে হাযির হওয়া মুস্তাহাব, সম্ভ্রান্ত ও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী নারীদের সালাতে বের হওয়া মাকরূহ... অতঃপর বলেন: তারা যখন বের হবে নিম্নমানের কাপড় পরিধান করে বের হবে, আবেদনময়ী কাপড় পরিধান করে বের হবে না, তাদের জন্য পানি দ্বারা পরিচ্ছন্ন হওয়া মুস্তাহাব, তবে সুগন্ধি ব্যবহার করা মাকরূহ। এ বিধান বৃদ্ধা ও তাদের ন্যায় নারীদের জন্য যারা বিবাহের ইচ্ছা রাখে না, তবে যুবতী, সুন্দরী এবং বিবাহের ইচ্ছা রাখে এরূপ নারীদের উপস্থিত হওয়া মাকরূহ। কারণ, এতে তাদের ওপর ও তাদের দ্বারা অন্যদের ফিতনার আশঙ্কা থাকে। যদি বলা হয়, এ বিধান উল্লিখিত উম্মে আতিয়্যার হাদীসের বিপরীত, আমরা বলব: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, তিনি বলেছেন: “নারীরা যা করছে তা যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতেন অবশ্যই তাদেরকে নিষেধ করতেন, যেরূপ বনু ইসরাঈলের নারীদের নিষেধ করা হয়েছে।” দ্বিতীয়ত প্রথম যুগের তুলনায় বর্তমান যুগে ফিতনার উপকরণ অনেক বেশি। আল্লাহ তা‘আলা ভালো জানেন। সমাপ্ত

আমি বলি: আমাদের যুগে ফিতনা আরো মারাত্মক।

ইমাম ইবনুল জাওযী ‘আহকামুন নিসা’: (পৃ. ৩৮) গ্রন্থে বলেন: আমরা বর্ণনা করেছি যে, নারীদের বের হওয়া বৈধ; কিন্তু যদি তাদের নিজেদের কিংবা তাদের দ্বারা অন্যদের ফিতনার আশঙ্কা হয় তাহলে বের না হওয়াই উত্তম। কারণ, প্রথম যুগের নারীরা যেভাবে লালিত-পালিত হয়েছে সেভাবে এ যুগের নারীরা হয় নি, পুরুষদের অবস্থাও তথৈবচ”। সমাপ্ত। অর্থাৎ তারা অনেক তাকওয়ার ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল।

হে মুসলিম বোন, এসব উদ্ধৃতি থেকে জান যে, ঈদের সালাতের জন্য তোমার বের হওয়া শরী‘আতের দৃষ্টিতে বৈধ, তবে শর্ত হচ্ছে পর্দা ও সম্ভ্রমকে সংরক্ষণ করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ, মুসলিমদের দো‘আয় অংশ গ্রহণ ও ইসলামের নিদর্শনকে বুলন্দ করার ইচ্ছায়, তার উদ্দেশ্য কখনো সৌন্দর্য চর্চা ও ফিতনার মুখোমুখি হওয়া নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন