মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
যখন একজন মুসলিমের আসক্তি বা খারাপ কোন কামনা-বাসনা জাগ্রত হয়, আর তার সামনে হারাম ও নিষিদ্ধ বিষয়গুলোকেই সুশোভিত করা হয়, তার জন্য অশ্লীল ও অপকর্ম করার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং খারাপ কাজটি করার জন্য যা দরকার তার সবকিছু তার হাতের নাগালে থাকে, তখন সে কি করবে? এ অবস্থায় তার জন্য দুটি পথ খোলা থাকে, এক- সে ঐ খারাপ কাজটিতে জড়িয়ে পড়া, অপরটি হল, খারাপ কাজে জড়িত না হওয়া। এ অবস্থায় সে তার কামনা-বাসনা ও আসক্তির সাথে কি ধরনের আচরণ করবে?! বা তার করণীয় কী হবে?
এ সময় তার জন্য তিনটি পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা যেতে পারে, যা তাকে এ ধরনের গুনাহ হতে বাচার জন্য সহযোগিতা করবে এবং তাকে মারাত্মক বিপদ নিশ্চিত ধ্বংস থেকে মুক্তি দেবে।
প্রথমত: তুমি বলবে, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তুমি আমাকে হেফাজত কর! কারণ; আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি ঈমান আনা ও আল্লাহকে ভয় করা, সব নিরাপত্তার একমাত্র গ্যারান্টি। তিনিই বান্দাকে হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে রক্ষাকারী এবং যৌনাচারের পিছনে দৌড়-ঝাপ দেয়া, পাপাচারে নিয়োজিত হওয়া থেকে মুক্তি দাতা।
ইউসুফ আ. যখন এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হলেন, তখন তিনি সাথে সাথে বললেন, ( معاذ الله ) হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় কামনা করছি। তার এ কথা বলার কারণেই, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে হেফাজত করেন এবং তার থেকে নারীদের সব ধরনের ষড়যন্ত্রকে রুখে দেন। আর ঐ ব্যক্তিকেও আল্লাহ তা‘আলা হেফাজত করবে যে কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া লাভের প্রত্যাশায় এ কথা বলবে, হে আল্লাহ! আমি তোমাকে ভয় করি। কারণ, হাদিসে বর্ণিত আছে, যে দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন আল্লাহ তা‘আলা সাত ব্যক্তিকে তার আরশের ছায়ার তলে ছায়া দেবেন। তার মধ্যে এক ব্যক্তি সে, যাকে কোন সুন্দর ও সম্ভ্রান্ত রমণী তার সাথে অপকর্মের দাওয়াত দিল, কিন্তু সে বলল, আমি অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করি [বুখারি ৬৬০, মুসলিম ১০৩১]।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন
« سَبْعَةٌ يُظلُهُمُ الله في ظِِّلهِ، ومنهم ... وَرَجُلٌ طَلَبْتُه امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ : إنِّي أَخَافُ الله »
আল্লামা ইবন হাজার রহ. বলেন, এ কথাটি কেবল মুখে বলবে যাতে সে অন্যায় ও অশ্লীল থেকে বিরত থাকতে পারে। অথবা অন্তর থেকে বলবে, আর এটি তার জন্য আরো অধিক নিরাপদ।
আল্লামা ইবন হাজার রহ. আরো বলেন, “বাক্যটি সে মুখে উচ্চারণ করবে, যাতে তার মন ও আসক্তি চাহিদা পুরণ ও অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে সতর্ক থাকে এবং অন্তর থেকে বলারও অবকাশ আছে। এ অবস্থার মধ্যে অন্তর ও মুখ উভয়ের একযোগে এ ধরনের বাক্য উচ্চারণ করা একটি বড় বিষয় এবং এর প্রভাব খুবই বৃহৎ। এ ধরনের প্রেক্ষাপট এমন কথা একমাত্র তার থেকে প্রকাশ পেতে পারে, যাকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজেই হেফাজত করেন এবং যার ভিতর ও বাহিরে কোন পার্থক্য নাই। যার ফলে সে গোপনে আল্লাহকে তেমন ভয় করে, যেমনটি ভয় করে প্রকাশ্যে।
একজন মুমিন যখন বাস্তবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হেফাজতে লালিত হয় এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নামসমূহের অনুশীলন করতে থাকে, তখন সে অবশ্যই তার কামনা-বাসনা ও আসক্তির চাহিদার ক্ষেত্রে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আদেশ নিষেধের উপর অটল ও অবিচল থাকে এবং আসক্তির কু-মন্ত্রণা ও পূজা করা হতে নাজাত পাবে।
তারপর যারা গোপনে আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য জান্নাতকে সহজ করা হয়েছে, আখেরাতে সে জান্নাত লাভে ধন্য হবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের অদূরে, কাছেই আনা হবে। এটাই, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল। প্রত্যেক আল্লাহ অভিমুখী অধিক সংরক্ষণশীলদের জন্য। যে না দেখেই রহমানকে ভয় করত এবং বিনীত হৃদয়ে উপস্থিত হত। [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ৩১-৩৩]
অর্থাৎ যখন লোক চক্ষুর আড়াল হয়, তখনও সে আল্লাহকে ভয় করে। কোন এক কবি বলেছিলেন,
“যখন তুমি গভীর অন্ধকারে একা থাক বা তোমাকে কেউ দেখে না আর তোমার অন্তর তোমাকে খারাপ কাজের প্রতি আহ্বান করে, তখন তুমি তোমার প্রভুর দৃষ্টির প্রতি মনোযোগ দাও আর তুমি তোমার আত্মাকে বল, যে সত্ত্বা অন্ধকারকে সৃষ্টি করেছন, তিনি অবশ্যই আমাকে দেখছেন”।
ইমাম শাফে‘য়ী রহ. বলেন,
إذَِا ما خَلْوتَ الدَّهْرَ يَوْماً فَلَا تَقُلْ
خَلَوْتُ وَلَكِنْ قُلْ عَلَيَّ رَقِيبُ
وَلا تْحَسَبنَّ الله يَغْفَلُ سَاعَةً
وَلَا أَنَّ مَا تُخْفِي عَلَيْهِ يَغِيبُ
“তুমি যখন একা থাক তখন তুমি এ কথা বল না, আমি একা, আমাকে কেউ দেখছে না। বরং তুমি বল, অবশ্যই আমার উপর পাহারাদার নিযুক্ত আছে। আর তুমি এ কথা মনে করো না যে, আল্লাহ ক্ষণিকের জন্যও বেখবর, কিংবা তুমি যা তার কাছে গোপন রাখ তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে গায়েব থাকবে”।
একজন মুমিন যখন উল্লেখিত মানসিকতা ও ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী জীবন যাপন করবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে, তখন সে অবশ্যই একজন চরিত্রবান ও উন্নত মানুষ বলে বিবেচিত হবে। সে একজন মুত্তাকী হিসেবে পরিগণিত হবে; তাকে দুনিয়ার কোন বস্তু বা চাহিদা পরাভূত করতে পারবে না এবং আসক্তি তাকে গোলাম বানাতে পারবে না। শয়তান শত চেষ্টা করেও তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারবে না। তার কু-আসক্তি তাকে কোন খারাপ কাজের দিকে নিয়ে যেতে পারবে না। বরং যখন তাকে তার আসক্তি কোন খারাপ, অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে আহ্বান করবে তখন সে এ বলে চিৎকার দেবে নিশ্চয় আমি আল্লাহকে ভয় করি। আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট শয়তানের কু-মন্ত্রণা থেকে আশ্রয় চাই। আর শয়তান যখন তাকে প্রতারণা দিতে চায়, তখন সে শয়তানকে বলবে, আমার উপর তোমার কোন কর্তৃত্ব চলবে না।
আর যখন তোমার খারাপ ও অসৎ সঙ্গীরা তার জন্য অশ্লীল ও খারাপ কাজগুলোকে সুশোভিত করবে, তখন তুমি তাদের এ বলে চুপ করে দেবে, আমি জাহিলদের বন্ধু বানাতে চাই না। মনে রাখবে যখন কোন বান্দা এ ধরনের ধ্যান-ধারণা ও মানসিকতা নিয়ে জীবন যাপন করবে, তখন অবশ্যই তার মধ্যে এ কথার একটি প্রভাব দেখা যাবে। অর্থাৎ তুমি একজন আল্লাহওয়ালা লোক ও তোমার মধ্যে আল্লাহর ভয় আছে।
এ ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে তুমি একটু চিন্তা করে দেখ, সে তাদের তিন জনের একজন হবে, যাদের মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের নেক আমলের কারণে গুহা হতে নাজাত দিয়েছিলেন। যখন তারা গুহাভ্যন্তরে আটকে গিয়েছিলে এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে তাদের নিজেদের নেক আমলের মাধ্যমে দো‘আ করেছিলেন।
“তাদের একজন বলল, হে আল্লাহ! আমার একজন চাচাতো বোন ছিল সে আমার নিকট দুনিয়ার সব কিছু থেকে প্রিয় ছিল এবং আমি তাকে সবার চেয়ে অধিক ভালোবাসতাম। আমি তার সাথে অপকর্ম করতে চাইলে সে আমাকে বাধা দেয়। অথচ আমি সুদীর্ঘ কাল পর্যন্ত তার প্রতীক্ষায় ছিলাম। তার সাথে মেলামেশা করার জন্য সে আমাকে একশত বিশ দিনার যোগান দেয়ার শর্ত দিলে, দীর্ঘ সাধনার পর আমি আমি একশত বিশ দিনার তার হাতে তুলে দিই। তারপর সে আমার সাথে মেলামেশা করতে বাধ্য হয়ে সম্মতি দেয়। তারপর যখন আমি তার উপর সামর্থ্য লাভ করি, সে আমাকে বলে, আমি তোমার জন্য আংটি খোলাকে তার হক আদায় করা ছাড়া হালাল মনে করি না। অপর বর্ণনায় আছে সে বলে, আল্লাহকে ভয় কর, তুমি এ সীলটি অন্যায্যভাবে খুলবে না। তার কথা শোনে তার সাথে মেলামেশা করতে সংকোচ বোধ করি এবং সাথে সাথে তার থেকে দূরে সরে যাই। অথচ, সে দুনিয়ার সব মানুষের চেয়ে প্রিয় ছিল। আর তাকে আমি যে স্বর্ণ-মুদ্রা দিয়েছিলাম তা তার নিকট রেখে আসি। লোকটি তার জীবনের এ মহৎ কাজটির কথা স্মরণ করে বলে, হে আল্লাহ এ কাজটি যদি আমি তোমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করে থাকি, তাহলে তুমি আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার কর। তারপর পাথরটি সরে গেল” [বুখারি ২২৭২]।
এ বান্দার অবস্থার দিকে একটু চিন্তা করে দেখ, সে কীভাবে একটি নিষিদ্ধ কাজের দিকে ধাবিত হল এবং জীবনের সব চেষ্টা তার দিকে ব্যয় করল। কিন্তু যখন সে তার প্রেমিকার উপর উঠে বসল, যেভাবে একজন পুরুষ তার স্ত্রীর উপর উঠে বসে। তারপর যখন তাকে বলা হল, তুমি আল্লাহকে ভয় কর! তখন সে তা হতে বিরত থাকল এবং সাথে সাথে উঠে দাঁড়াল, অথচ সে হল, তার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি।
একেই বলা হয় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি সত্যিকার ঈমান, যে ঈমান বান্দার অন্তরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ভয় সৃষ্টি করে, প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে সামনে রাখে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/714/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।