hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্তর বিধ্বংসী বিষয় আসক্তি

লেখকঃ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জেদ

১৩
চোখের হেফাজতকে লজ্জা স্থানের হেফাজতের পূর্বে উল্লেখ করার কারণ
চোখের হেফাজতকে লজ্জা স্থানের হেফাজতের পূর্বে উল্লেখ করার কারণ হল, মানুষের দৃষ্টি যিনা, ব্যভিচার ও অপকর্মের বার্তা বাহক ও প্রারম্ভিকতা। এ কারণেই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন করীমে তাকে প্রথমে উল্লেখ করেন।

ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, মানুষ যত ধরনের অন্যায়, যিনা, ব্যভিচার ও অপরাধ করে থাকে, সব কিছুর মূল কারণ হল মানুষের দৃষ্টি। দৃষ্টি মানুষের অন্তরে প্রথমে উদ্রেককে জাগ্রত করে, আর যখন কোন কিছুর উদ্রেক হয় তা রূপান্তরিত হয় চিন্তায়, চিন্তা থেকে জাগ্রত হয় চাহিদা বা আসক্তি। আর আসক্তি হতে জাগ্রত হয় ইচ্ছা তারপর ইচ্ছাটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে তা রূপ নেয় প্রত্যয়ে তারপর তা সংঘটিত হয় ব্যভিচারে; যদি কোন বাধাদানকারী বাধা না দেয়। এ বিষয়ে আরও বলা হয়ে থাকে চোখের হেফাজতের উপর ধৈর্য ধরা তার পরবর্তী কর্মের শাস্তির উপর ধৈর্য ধারণ হতে সহজ।

এ কারণেই কোন এক কবি বলেন,

كلُّ الحَوَادِثِ مَبْدَاهَا مِنَ النظََّرِ

وَمُعْظَمُ الناَّرِ مِنْ مُسْتَصْغَرِ الشَّرَرِ

كمْ نظَْرٍة بَلغَتْ في قلبِ صَاحِبِهَا

كَمَبْلَغِ السَّهْمِ بَيْنَ القَوْسِ وَالوَتَرِ

والعَبْدُ مَا دَامَ ذَا طَرْفٍ يُقَلِّبُهُ

فِي أَعْيُنِ الغِيدِ مَوْقُوفٌ عَلَى الخطََرِ

يسُّر مْقَلَتُه ما ضَرَّ مُهْجَتَهُ

لَا مَرْحَباً بِسُرُورٍ عَادَ باِلضّرََرِ

“সব ধরনের অপকর্মের মুলে কারণ হল, দৃষ্টি। বড় বড় আগুনের মূল হচ্ছে কোন অগ্নিস্ফুলিঙ্গকে ছোট জ্ঞান করা। এমন বহু দৃষ্টি রয়েছে, যা সে দৃষ্টিপ্রদানকারীর অন্তরে এমনভাবে নাড়া দেয়; যেমন কোন তীর তার বাঁকা ধনুক ও সুতার মাঝে নাড়া দেয়। আর কোন মানুষ যতক্ষণ চক্ষুপালক বিশিষ্ট হবে, এবং তা সুন্দরীদের চোখের সামনে নাড়াচাড়া করবে ততক্ষণ সে সর্বদা বিপদে থাকবে। তার চোখের পালক এমন কিছু গোপন করবে যা তার সম্মান হানি করবে, সুতরাং এমন আনন্দের জন্য কোন শুভেচ্ছা নেই, যে আনন্দ ক্ষতি নিয়েই ফিরে আসে।

আর এ দৃষ্টির একটি বড় বিপদ হচ্ছে, এটি আফসোস এবং বড় বড় দীর্ঘশ্বাসের উদ্রেক করে, তখন বান্দা এমন কিছু দেখে যা করতে সে সক্ষম নয় আর তা থেকে ধৈর্য ধারণ করতেও সে অপারগ।” [আল-জাওয়াবুল কাফী (১০৬)।]

ঐসব লোকেরা বাজারে গিয়ে সুন্দর সুন্দর নারীদের বেপর্দা অবস্থায় দেখে, তাদের অন্তর আফসোস করতে থাকে এবং তারা তাদের অন্তরে না পাওয়ার ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করে।

কউ কেউ বলতে পারে যে, অধিকাংশ দৃষ্টিই ব্যভিচার পর্যন্ত গড়ায় না এবং তার সাথে নিষিদ্ধ কাজ পর্যন্ত যায় না।

আমরা বলব, বরং দৃষ্টির শেষ পরিণতি হল, আফসোস, ব্যথা ও কষ্ট। কারণ, সে তার সামনে এমন একটি ফেতনা দেখতে পায়, যা সে লাভ করতে সক্ষম হয় না। ফলে সে আফসোস এবং ব্যথা অনুভব করতে থাকে। অনেক সময় সে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়, তখন তার আফসোস, গ্লানি ও দুশ্চিন্তা আরও বৃদ্ধি পায়”।

তারপর আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, “এটি একটি বড় আযাব, তুমি একটি বিষয় হাসিল করতে চাইলে তা না পাওয়ার কষ্টের উপর ধৈর্য ধারণ করতে পারলে না, আবার তা লাভ করার ক্ষমতাও তুমি রাখ না। এর চেয়ে বড় আযাব আর কী হতে পারে? কোন এক কবি বলেন,

وَُكنتَْ مَتَى أَرَْسْلَت طْرفَك رَائِداً

لقَلْبكَِ يَوْماً أَتْعَبَتْكَ المَناَظِرُ

رَأَيَت الَّذِي لَا كُلّهُ أَنْتَ قَادِرٌ

عَلَيْهِ وَلَا عَنْ بَعْضِهِ أَنْتَ صَابِرُ

যখন তুমি কোন দিন তোমার চক্ষুদ্বয়কে তোমার মনের পরিচালক হিসেবে অনুসন্ধানকারী হিসেবে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দিলে, তখন সে দৃষ্টিসমূহের দৃশ্য তোমাকে ব্যথিত করবে। তুমি যা দেখলে তার পুরোটা লাভ করতে তুমি সক্ষম নও, আর না তুমি আংশিকের উপরও ধৈর্যশীল।

যারা তাদের চক্ষুকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়, তারা তা হতে বিরত থাকতে পারে না। সে অপকর্মের মধ্যেই হাবুডুবু খেতে থাকে। যেমন, কোন এক কবি বলেন,

يَا نَاظرِاً مَا أَقْلَعَتْ لحَظَاتُهُ

حَتّىَ تَشَحَّطَ بَيْنَهُنَّ قَتِيلَا

“হে দর্শক তুমি তোমার দৃষ্টিকে বিরত রাখলে না। তুমি তোমার চোখের অপকর্মেই জীবনকে ব্যয় করলে”।

এর চেয়েও বড় আশ্চর্য হল, দৃষ্টি মানুষের অন্তরকে আহত করে তখন ব্যথার উপর ব্যথা তাকে আরও অধিক কষ্ট দিতে থাকে। তারপর তার ক্ষতের ব্যথা বার বার আহত করা হতে তাকে কেউ বারণ করে না। কবি বলেন,

مَا زِلْت تُتْبِعُ نَظْرَةً فِي نَظْرَةٍ

فِي إثْرِ كُلِّ مَلِيحَةٍ وَمَلِيحِ

وَتُظُّن ذَاكَ دَوَاءَ جُرْحِكَ وَهْوَ فِي الت

تَحْقِيقِ تَجْرِيحٌ عَلَى تَجْرِيحِ

فَذَبَحَت طرْفَكَ بِاللِّحَاظِ وَباِلبُكا

فَالقَلْبُ مِنكَْ ذَبيِحٌ ايُّ ذَبِيحِ

‘তুমি প্রতি সুন্দর পুরুষ ও নারীর প্রতি একের পর এক দৃষ্টি দিয়েই যাচ্ছ, আর তুমি মনে করছ যে এটা বোধ হয় তোমার ক্ষতের ঔষধ, প্রকৃতপক্ষে তা ক্ষতের উপর ক্ষতই বাড়িয়ে দেয়; এভাবে তুমি তোমার দৃষ্টিশক্তিকে দেখা ও কান্নার মধ্যে যবাই করে দিলে, সুতরাং তোমার অন্তর ও মন তোমার দ্বারা শুধু যবাই হতে থাকল, সেটা যে কোন ধরনের যবাই তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’

আর এ জন্যই বলা হয়ে থাকে, “দৃষ্টিকে ক্ষণিকের জন্য বিরত রাখতে সচেষ্ট হওয়া আজীবন আফসোস করা থেকে উত্তম। [আল-জাওয়াবুল কাফী (১০৬-১০৭)]”

যে ব্যক্তি হারামের দিকে তাকিয়ে থাকে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ঐ ব্যক্তির মত যে, সাগরের পানি পান করে তৃপ্তি পেতে চায়, তুমি কি তার পিপাসা নিবারিত হতে দেখেছ? কখনও তার পিপাসা নিবারণ হয় না বরং সে পানি পান করার কারণে তার পানির পিপাসা আরও বৃদ্ধি পায়। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি হারামের দিকে তাকায় সেও আসক্তির চাহিদা মিটাতে না পারার কারণ তার চাহিদা আরও চাঙ্গা হতে থাকে”।

ঐ হাদীসটির বিষয়ে চিন্তা করে দেখুন, যেখানে অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া ও চোখের খিয়ানত বা চোখের হেফাজত না করার মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« إِنَّ الله كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظهَُّ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلكَِ لَا مَحَالةََ، فَزِنَا العَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانُ المَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ أَوْ يُكَذِّبُهُ »

“আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আদম সন্তানের উপর যিনার কিছু অংশ নির্ধারণ করে রেখেছেন। জীবদ্দশায় তাতে সে আক্রান্ত হবেই। যেমন- চোখের যিনা হল দৃষ্টি, মুখের যিনা হল কথা, আর আত্মা কামনা করে ও আসক্তি তৈরী করে। আর লজ্জাস্থান তার আশার সত্যায়ন করে বা মিথ্যায় পরিণত করে” [বুখারি ৬২৫৭ মুসলিম ২৬৫৭]।

চিন্তা করে দেখ! দৃষ্টি কত মারাত্মক! এ হাদিসে দৃষ্টিকে ব্যভিচার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একজন মুমিন অবশ্যই ব্যভিচারকে ঘৃণা করে এবং তা হতে দূরে থাকে।

আল্লামা ইবনুল জাওযী রহ. বলেন, “হে বন্ধু! – আল্লাহ তোমাকে তাওফিক দান করুন- তুমি দৃষ্টির অনিষ্টতা থেকে নিজেকে বাঁচাও! এ দৃষ্টি বহু ইবাদতকারীকেই ধ্বংস করেছে! কত পরহেজগার মুত্তাকীকে দ্বীন থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে! তুমি দৃষ্টির হেফাজত কর! কারণ, দৃষ্টিই হল সব বিপদের মূল কারণ। তবে শুরুতে তার চিকিৎসা করা সহজ। কিন্তু যদি তা বার বার হয়ে থাকে, তখন তা শক্তিশালী ব্যাধিতে পরিণত হয়; তার চিকিৎসা আর সহজ হয় না, তখন তার চিকিৎসা খুবই কষ্টকর।” [যাম্মুল হাওয়া (৯৪)]

দৃষ্টি নেশার পাত্র, আর তার নেশা হল, প্রেম। আর প্রেমের নেশা মদের নেশা হতেও মারাত্মক। কারণ, মদ পানে নেশাগ্রস্থ মাতাল, তাদের আবার জ্ঞান ফিরে আসে, আর প্রেমের নেশায় যারা মাতাল, তাদের কখনোই জ্ঞান ফিরে আসে না।

আর দৃষ্টি ও আসক্তি উভয় মানুষকে প্রেমের দিকে টেনে নিয়ে যায়। আর অন্তরসমূহ ধ্বংসের জন্য এ হল, সর্বাধিক ক্ষতিকর ও মারাত্মক ব্যাধি। তুমি এ ভয়ানক ও ক্ষতিকর তীরের আঘাত থেকে সতর্ক থাক। কারণ, তার আঘাতে যদি তুমি হত্যা না হও, তোমাকে তা অবশ্যই যখমী করে দিবে। আর যখন যখমী বা আঘাত অধিক হবে, তখন তোমার ধ্বংস অনিবার্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন