hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদা ও মানবপ্রকৃতি

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমাদ

১০
৬. ইসলামি আকিদা:
মৌলিক কয়েকটি বিষয়ের ওপর ঈমান ও বিশ্বাসের সমন্বয় ইসলামি আকিদা: যথা-

১. আল্লাহর প্রতি ঈমান: আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, রাত-দিন, মানব-জিন্ন, ফিরিশতা যাবৎ কিছু তার পরিকল্পনা এবং তার সৃষ্টি, তিনিই এর একক মালিক। মেঘমালার স্থানান্তকরণ, বৃষ্টি বর্ষণ, কল্যাণ-কল্যাণের মালিক তিনি। তার সৃষ্টি ও রাজত্বে কারো অংশিদারিত্ব নেই। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “নিশ্চয় তোমাদের প্রভু আসমান-জমিন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর ‘আরশের উপর উঠেন। তিনি এমনভাবে রাতের উপর পরিয়ে দেন দিন, যে দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পেছনে আসে। তিনি স্বীয় আদেশের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন, চন্দ্র, সূর্য ও নক্ষত্র। শুনে রেখ, তারই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দেওয়া।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪]] ইবাদতের মালিক তিনি। কোনো ধরনের ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে উৎসর্গ কিংবা নিবেদন করা অবৈধ। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “নিবিষ্ট চিত্তে আল্লাহর ইবাদত কর। জেনে রেখ, আল্লাহর জন্যই এখলাস পূর্ণ ইবাদত।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ২-৩]]

কিছু বিশেষ ইবাদত যেমন দো‘আ, সালাত, যাকাত, সাওম, হজ, কুরবানি, ফরিয়াদ ও সাহায্য প্রার্থনা ইত্যাদি। তিনি সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণের মালিক। তার সাদৃশ্য কোনো জিনিস নেই।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮০; সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ১১।]

২. ফিরিশতাদের প্রতি ঈমান: তারা আল্লাহর অনেক বড় মাখলুক, নূরের তৈরি। তারা দুই-দুই, তিন-তিন, চার-চার পাখা বিশিষ্ট। কেউ এর চেয়ে বেশি পাখার অধিকারী। তারা আল্লাহর সম্মানিত বান্দা, রাত-দিন আল্লাহর প্রশংসা করে, ক্লান্ত হয় না, কখনো আল্লাহর নাফরমানি করে না, সর্বদা তাঁর নির্দেশ পালন করে। [দেখুন: সূরা ফাতির, আয়াত: ১; সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৬; সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২০; সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৬।]

বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত বিশিষ্ট কয়েকজন ফিরিশতা: জিবরীল, মিকাইল, ইসরাফীল, মালাকুল মাউত ও মুনকার-নাকির।

৩. আসমানি কিতাবের প্রতি ঈমান: (ক) তওরাত, (খ) ইঞ্জিল, (গ) যাবুর, (ঘ) কুরআন এবং মুসা ও ইবরাহীমের সহিফার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত মানবজাতির জীবন বিধান। পূর্বের সবগুলো কিতাবে মানুষ পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন ও সংস্করণ করেছে। এদের মৌল ও মৌলিকত্ব অবশিষ্ট নেই। কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর এদের মেয়াদও শেষ। কুরআন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সংরক্ষিত, কিয়ামত পর্যন্ত এর ভেতর কোনো ধরনের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সম্ভব নয়। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আমি এ উপদেশ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯]] কেউ অপচেষ্টার প্রায়াসে লিপ্ত হলে, মুখ থুবড়ে পড়বে, দিবালোকের ন্যায় সহসা উন্মুক্ত হবে তার মুখোশ। শিষ্টের পোষণ ও দুষ্টের দমনের জন্য কুরআনের ফয়সালা একমাত্র ন্যয়সঙ্গত, ইনসাফপূর্ণ। যে কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে এর শরনাপন্ন হওয়া, এর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ঈমানের পরিচয়, এর থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করা, এর ফয়সালায় সন্তুষ্ট না হওয়া মুনাফিকের আলামত। কুরআন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনাকারী মুমিন, অন্যথায় অবস্থাভেদে সে কাফের, ফাসেক এবং ইনসাফ প্রত্যাখ্যানকারী জালেম।

৪. নবী ও রাসূলগণের প্রতি ঈমান: তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির পথপ্রদর্শক, দূত। সর্বপ্রথম রাসূল নূহ আলাইহিস সালাম। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। [দেখুন: সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫; সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৩ ও সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “মুহাম্মাদ তোমাদের কারো পিতা নন, তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ নবী।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪০]]

৫. পরকাল দিবসের প্রতি ঈমান: পরকাল দিবস তথা কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট একটি দিন। যা অনেক দীর্ঘ। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “সে দিনের পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।” [সূরা আল-মা‘আরিজ, আয়াত: ৪]] সে দিন সমস্ত মানুষ উত্থিত হবে, মৃতদের করা হবে জীবিত। ছোট-বড় সমস্ত আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হবে। অত্যাচারীদের থেকে প্রতিশোধ নেওয়া হবে, সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দেওয়া হবে। কাফের, মুনাফিক, পাপীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে। সে দিন সারা পৃথিবীর অবস্থা পাল্টে যাবে। মীযান, হাওযে কাউসার, পুলসিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম, নবী-রাসূল, ফিরিশতা, নেককার লোকদের সুপারিশ এবং আল্লাহর দর্শন ও কথপোকথন অনুষ্ঠিত হবে।

৬. তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান, এর চারটি স্তর রয়েছে:

(এক) আল্লাহ তা‘আলার শাশ্বত, অবিনশ্বর, চিরন্তন ও চিরস্থায়ী ইলম বা জ্ঞানের আকিদা: আসমান-জমিন সৃষ্টির পূর্ব থেকে প্রতিটি বস্তু ও জিনিস সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সম্যক জ্ঞাত। ছোট-বড়, দৃশ্য-অদৃশ্য, অস্তি-নাস্তি, যে নাস্তি কোনো দিন অস্তিত্ব পাবে না, পেলে কীভাবে পেত, পুঙ্খানুপুঙ্খুভাবে তিনি সেটা সম্পর্কে অবগত। একটি জিনিসও তার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হয় না। সবকিছুই তিনি স্বীয় জ্ঞান দ্বারা আবৃত করে রেখেছেন। [দেখুন: সূরা আল-মুজাদালা, আয়াত: ৭; সূরা আত-আলাক, আয়াত: ১২।]

(দুই) যাবৎ কিছু চিরন্তন ও স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ হওয়ার আকিদা: পার্থিব জগতে যা ঘটছে ভালো-মন্দ, ছোট-বড় সবকিছু আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক লিপিবদ্ধ। সে লিখানুযায়ী সবকিছু সংঘটিত হচ্ছে, অস্তিত্ব পাচ্ছে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপদাপদ আসে, তা সবই আমি কিতাবে অর্থাৎ লওহে-মাহফুজে জগৎ সৃষ্টির পূর্বেই লিখে দিয়েছি।” [সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ২২]] কোন্ মৃত দেহ কতটুকু মাটি ভক্ষণ করেছে সে ব্যাপারেও আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত আছেন। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তাদের কতটুকু অংশ মাটি ভক্ষণ করেছ, আমি সে বিষয়ে অবগত আছি। আমাদের কাছে সংরক্ষণকারী কিতাবও বিদ্যমান আছে।” [সূরা ক্বাফ, আয়াত:৪]]

(তিন) আল্লাহর ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের আকিদা: দুনিয়াতে বিদ্যমান সবকিছুই আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় অস্তিত্ববান। অর্থাৎ তার সৃষ্টি ক্ষমতার ইচ্ছা, যার দ্বারা তিনি এ জগৎ সৃষ্টি করেছেন, যে ইচ্ছার বাস্তবায়ন অবশ্যম্ভাবী। ভালো-মন্দ, মানুষের যাবতীয় কর্ম ও প্রতিটি জিনিস এর আওতাভুক্ত। তিনি যা চাননি তা হয় নি, যদিও সারা পৃথিবীর মানুষ চেয়েছে, চেষ্টা করেছে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা যা চান তা বাস্তবায়ন করেন।” [সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ১৮]] এমনকি মানুষের পরস্পর ঝগড়া-বিবাদও এ ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আল্লাহ যদি তাদের মাঝে জগড়া বিবাদ না চাইতেন, তারা জগড়া বিবাদ করত না। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা যা চান তাই করেন।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত:২৫৩]]

(চার) সৃষ্টি ও অস্তিত্ব দানের আকিদা: আল্লাহ তা‘আলার নাম, সিফাত ও তার কর্ম ব্যতীত যা কিছু আছে, সব আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট, মাখলুক। আল্লাহ-ই তাদের একমাত্র স্রষ্টা। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আল্লাহ সমস্ত জিনিসের স্রষ্টা।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৬২]] আল্লাহ সৃষ্টি করলেই কোনো জিনিস সৃষ্ট হয় ও অস্তিত্ব লাভ করে। এমনকি মানুষের ভালো-মন্দ কর্মও স্বীয় বিবেচ্য ও বিশেষ হিকমতের কারণে তিনিই সৃষ্টি করেছেন, মানুষ সৃষ্টি করেনি। যদিও বাহ্যত মানুষ-ই ইচ্ছা করে, সে-ই সম্পাদন করে। কারণ, এ আকিদা না রাখলে বলতে হবে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো স্রষ্টা আছেন। অথচ আল্লাহ-ই মানুষ ও তার কর্ম ও ইচ্ছার স্রষ্টা। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আল্লাহ তোমাদের এবং তোমাদের কর্মসমূহ সৃষ্টি করেছেন।” [সূরা সাফ্‌ফাত, আয়াত: ৯৬] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক সম্পাদনকারী এবং তার সম্পাদিত কর্ম উভয় সৃষ্টি করেছেন।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৩২)]

তাকদীরের আকীদা গ্রহণীয় হওয়ার জন্য বর্ণিত চারটি স্তরের ওপর ঈমান আবশ্যক। অন্যথায় তাকদীরের আকিদা শুদ্ধ নয়। তাকদীরের ওপর ঈমান শুদ্ধ না হলে, ইসলামও গ্রহণযোগ্য নয়। ইসলাম ছাড়া আমলের মূল্য নেই, পরিশ্রমের ফল নেই।

একটি বিষয় স্পষ্ট করা প্রয়োজন, আল্লাহর ইচ্ছা দু’ধরনের:

(এক) আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের প্রয়োজন ও স্বার্থে ধর্মীয় তথা শর‘ঈ ইচ্ছা।

(দুই) আল্লাহর সৃষ্টিকৃত পার্থিব জগতের স্বার্থ ও প্রয়োজনে পার্থিব ইচ্ছা।

প্রথমটি বাস্তবায়নের ফলে আল্লাহর মহব্বত ও সন্তুষ্টি অর্জন হয়। এরই নির্দেশ আল্লাহ কুরআনের মাধ্যমে ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসের দ্বারা দিয়েছেন। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর ওপর এবং তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান আন।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৩৬] অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তোমরা যদি কুফুরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ তোমাদের থেকে অমুখাপেক্ষী; আর তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফুরী পছন্দ করেন না এবং তোমরা যদি শোকর কর তবে তোমাদের জন্য তিনি তা পছন্দ করেন।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৭]] শরী‘আত কর্তৃক প্রত্যেকটি আদেশ ও নিষেধ এই ইচ্ছার-ই অন্তর্ভুক্ত।

দ্বিতীয়টির দ্বারা আল্লাহর মহব্বত ও সন্তুষ্টি অর্জন হয় না। এ ইচ্ছার সম্পর্ক শুধু আল্লাহর সৃষ্টির সাথেই। আর এদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে, নিম্নোক্ত আয়াতে,

﴿مَن يَشَإِ ٱللَّهُ يُضۡلِلۡهُ وَمَن يَشَأۡ يَجۡعَلۡهُ عَلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ﴾ [ الانعام : ٣٩ ]

“আল্লাহ যাকে ইচ্ছে পথভ্রষ্ট করেন, আর যাকে ইচ্ছে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত রাখেন।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৩৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন