hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদা ও মানবপ্রকৃতি

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমাদ

১৫
ইসলামি আকিদার কিছু বৈশিষ্ট্য:
এক. ইসলামি আকিদার সার্বজনীনতা ও বিস্তৃত ব্যাপকতা: এ আকিদা বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ মানবীয় সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও ব্যঞ্জনা সমন্বিত। এ আকিদায় শরীর-বিবেক-আত্মা, আখলাক-চিন্তা-অনুভূতি ও দুনিয়া-আখেরাতের সকল বিষয় সন্নিবেশিত। মানবজগত ও তদীয় সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নেই, যা এ আকিদা থেকে বিচ্ছিন্ন অথবা আকিদা তার থেকে আলাদা। এ আকিদা মানব জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত, সম্পাদিত কর্ম ও অন্তরে বিচরণকৃত অনুভূতির সাথে জড়িত।

মানব জীবনের সর্বত্র সোচ্চার ও সক্রিয় এ আকিদা। বিভিন্ন আবর্তন ও পরিবর্তনের নিত্য সঙ্গী। পূর্বের আলোচনায় আমরা জেনেছি, ইসলামি আকিদা: আল্লাহ, শেষ দিবস, ফিরিশতা, নবী-রাসূল, আসমানি কিতাব এবং ভালো-মন্দের তাকদিরের বিশ্বাস; ইহকালীন-পরকালীন উভয় জগতের আমল; বাহ্যিক আচার-আচরণ, বিবেকের চিন্তা-গবেষণা, আত্মার উপলব্ধি; ব্যক্তি, সমাজ, জাতি, দেশ ও বিশ্বের মৌলিক নীতি ও আদর্শের সমন্বিত। স্রষ্টা আল্লাহ ও সৃষ্ট মানবের সেতু বন্ধন সমন্বিত। পারিবারিক, সামাজিক, মুসলিম মুসলিম ও মুসলিম অমুসলিম এবং মানবজাতি ও বিশ্ব স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক সমন্বিত।

মোদ্দাকথা: ইসলামি আকিদা অস্তিত্ববান প্রতিটি বস্তুর সমন্বিত আকিদা। ইসলামি আকিদার পরিধির মতো অন্য কোনো পরিধি নেই যা এত বিস্তৃত ও সর্বব্যপ্ত।

দুই. ইসলামি আকিদার একটি বিষয় অপর বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত ও একটি আরেকটির পরিপুরক: ইসলামি আকিদা শুধু উল্লেখিত ক্ষেত্র ও বিষয়ের সমন্বিত নয়, বরং আলোচিত ব্যাপকতার উর্ধ্বে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্তও। কারণ, এর একটি বিষয় অপর সকল বিষয়ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়েই একটি পরিপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিধানে রূপান্তরিত হয়েছে, যা মানবজাতির জীবনে সাফল্য বয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। আরেকটু সুক্ষ্মভাবে বলতে হয়, ইসলামি আকিদার প্রতিটি রুকন, প্রথম ও প্রধান রুকন তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। আল্লাহর প্রতি ঈমান এ আকিদার মূল ভিত্তি ও শেকড়। যেমন, পরকালের বিশ্বাস- আল্লাহর ইনসাফ, হেকমত, আসমান-জমিন ও জীবন-মৃত্যুর সৃষ্টি রহস্যের সাথে সম্পর্কিত। সেখানে প্রত্যেকের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে, প্রত্যেক বস্তু তার মূল স্বভাবে ও প্রকৃতিতে উপস্থিত হবে।

ফিরিশতাদের ওপর বিশ্বাস, মূলত আল্লাহর কুদরত তথা আরেকটি সিফাতের ওপরই বিশ্বাস। [আল্লাহ বলেন,“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও জমিনের স্রষ্টা এবং ফিরিশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টির ভিতর যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।” [সূরা ফাতির, আয়াত: ১]] এ বিশ্বাস আল্লাহর সেই জীবন বিধানের আরেকটি ধারা, যার ওপর তিনি আমাদের পরিচালিত করতে চান। কারণ, তাদের মাধ্যমেই তিনি তার মনোনীত বান্দা নবী-রাসূলদের নিকট বার্তা প্রেরণ করেন। তাই ফিরিশতাদের ওপর ঈমান মূলত আলাদা কোনো জিনিসের ওপর ঈমান নয় বরং আল্লাহর উপর ঈমানের সম্পূরক, অন্যান্য রুকনের সাথে সম্পৃক্ত।

এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ঈমানের একটি রুকন অপর রুকনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, আবার সবকটি রুকন আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। অতএব আসমানি কিতাবের উপর ঈমান আল্লাহর বিধানের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, যা তিনি মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্যের জন্য দিয়েছেন।

তদ্রূপ নবীদের ওপর ঈমানের সাথেও সম্পৃক্ত, কারণ তারাই ফিরিশতাদের মাধ্যমে প্রাপ্ত ওহীর দ্বারা আমাদের পর্যন্ত এ বিধান পৌঁছিয়েছেন।

তাকদীরের ওপর বিশ্বাসও আল্লাহর ওপর বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত, কারণ একমাত্র তিনিই এ বিশ্বপরিমণ্ডলের নিয়ন্ত্রক, পরিকল্পনাকারী। কল্যাণ-অকল্যাণ, নিষ্ট-অনিষ্ট একমাত্র তার থেকেই উৎসারিত হয়।

মোদ্দাকথা, এ আলোচনার দ্বারা বুঝতে পারলাম- ঈমানের বিষয়ে আরকানুল ঈমান তথা বিশ্বাসের একটি শাখার সাথে অপর শাখার সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গী।

এ আকিদা থেকে উৎসারিত আমলও ঠিক একই রকম। অর্থাৎ দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতের আমল সমন্বিত। এখানে বলতে চাই এ আকিদার বৈশিষ্ট্য, দুনিয়া-আখেরাতের আমলের মাঝে পাথর্ক্য না করা। এ আকিদায় কোনো আমল শুধু দুনিয়া কিংবা শুধু আখেরাতের জন্য নির্দিষ্ট নয়, বরং প্রত্যেকটি আমল এক বিবেচনায় আখেরাতের, অন্য বিবেচনায় দুনিয়ার কল্যাণে নিবেদিত।

সাধারণত আখেরাতের আমল হিসেবে যা কিছু বিবেচ্য, তাও পার্থিব জীবনের আবেদন কিংবা সম্পূরক। যেমন,

সালাত: এর দ্বারা পার্থিব জগত সুসজ্জিত, পরিমার্জিত ও অশ্লীলতা মুক্ত হয়। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “নিশ্চিত নামাজ অশ্লিল ও গর্হিত আমল হতে বিরত রাখে।” [সূরা আল-‘আনকাবুত, আয়াত: ৪৫]]

সাওম: এর দ্বারা ক্ষুধা ও দারিদ্রের দুঃখ অনুভূত হয়। অনাথ ও অভাবিদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহানুভূতির প্রেরণা সৃষ্টি হয়। যার বাস্তবায়নে এ দুনিয়া শ্রীহীনতা, পরস্পর সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় ভরে উঠে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা (এ দুনিয়াতেই) মুত্তাকি হতে পার।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩]] এমনিভাবে এ আকিদার সমস্ত ইবাদত, আখেরাতের জন্য যেমন কাম্য, তেমন দুনিয়াতেও তা কাম্য।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যে সমস্ত আমল বাহ্যত শুধু পার্থিব বলে মনে করি, যেমন পানাহার, বস্ত্র পরিধান, দাম্পত্য জীবন ও পৃথিবীর আবাদ। সেগুলোও অপার্থিব কিংবা আখেরাতের আমল। তবে এর সাথে কিছু শর্তের প্রয়োজন। অর্থাৎ এ আমল দ্বারা আখেরাতের প্রতিদান পাওয়ার জন্য হালাল-হারাম এবং আল্লাহর নির্দেশের অনুসরণ জরুরী। তাহলে এ সমস্ত আমল ইসলামের দৃষ্টিতে মূল ইবাদত বলে গণ্য হবে। যেহেতু এর ভিতর আল্লাহর নির্দেশ মান্য ও তার সন্তুষ্টির নিয়্যত করা হয়েছে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি- মানব ও জিন্ন জাতি।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬] তিনি আরো বলেন, “বলুন- আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য। তাঁর কোনো শরীক নেই।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৬২-১৬৩]] এভাবেই এ আকিদায় বিশ্বাসী মানব সম্প্রদায় হতে উৎসারিত সমস্ত আমল দুনিয়া আখেরাতের সাথে সংযুক্ত, ইসলামি আকিদার সাথে সম্পৃক্ত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন