hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদা ও মানবপ্রকৃতি

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমাদ

১৮
ইসলামি আকিদা ও পারস্পরিক সম্পর্ক:
ইতোপূর্বে আমরা বলে এসেছি ইসলামি আকিদা মানুষের আত্মা ও আল্লাহর সেতু বন্ধন। এখানে বলে রাখি এ সকল সম্পর্ক এক লক্ষ্যে এসে একত্রিত ও সংযুক্ত হয়, অর্থাৎ আল্লাহর উপর ঈমান আনা ও তার ইবাদত করা। আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্কের অর্থ তার ওপর ঈমান আনা, তার ইবাদত করা। নিজ আত্মার সাথে সম্পর্কের অর্থ তাকে সংশোধন করা। আর তা সম্ভব হয় আল্লাহর উপর ঈমান, ইবাদত এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী চলার মাধ্যমে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্কও পূর্ণতা পায়। সমস্ত সম্পর্ক এভাবেই এক-ই গ্রন্থিতে স্থাপিত হয়, যার নীতি নির্ধারক একমাত্র ইসলামি আকিদা তথা ঈমান। আর এভাবেই ঈমানের একটি শাখা আরেকটি শাখার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

তিন. ভারসাম্য: এই আকিদা দৈহিক-মানসিক, ইহকালীন-পরকালীন, ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্র যাবৎ কিছুর সমন্বিত আকিদা। অধিকন্তু এটি সামগ্রিক বিবেচনায় ভারসাম্যপূর্ণও বটে। যা বিকশিত হয় বিভিন্ন ক্ষেত্র ও বিভিন্ন স্তরে। যেমন,

১- শরীর-আত্মা বা বাহ্যিক-অভ্যন্তরীণ জগতদ্বয়ের মাঝে ভারসাম্য।

২- দৃশ্য-অদৃশ্য জগতের মাঝে ভারসাম্য।

৩- তাকদীরের ওপর বিশ্বাস এবং আসবাব নির্ভরতার মাঝে ভারসাম্য।

৪- রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবনের মাঝে ভারসাম্য।

এসব ক্ষেত্র ও তার বিষয়াদি নিয়ে আমরা সামান্য আলোকপাত করছি।

১- মানুষ একমুষ্টি মাটি ও আল্লাহর নির্দেশ তথা আত্মার সমষ্টি। উভয়ের মাঝখানে ইসলামি আকিদা ভারসাম্য রক্ষা করেছে। আমরা যদি একের প্রতি অপরের তুলনায় বেশি গুরুত্বারোপ করি তাহলে ভুল করব। জাহিলিয়্যাত তথা মূর্খতা সব সময় এক পক্ষ অবলম্বন করে, ভারসাম্য রক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। যেমন, হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় আধ্যাত্মিকতার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করে। সমসাময়িক কালের পাশ্চাত্য সমাজ কায়িক ও দৈহিকতার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করে। ফলে একদল দুনিয়াতে বসবাসের অযোগ্য, অপর দলটি মনুষ্য জীবন-যাপনের অনুপযুক্ত- পশুত্বের মতো জীবন-যাপন ও যৌনতায় লিপ্ত।

এ ক্ষেত্রে ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্য উভয়ের মাঝখানে সঠিক ও নির্ভুল ভারসাম্য রক্ষা করা। একদিক থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা কর্মের ও ইবাদতের ময়দানে দৈহিক জগত ও আত্মিক জগত উভয়কে সুষমভাবে সমন্বিত করে রেখেছে। অপর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা উভয়কে পৃথক পৃথক ন্যায্য প্রাপ্যও প্রদান করেছে। মানবজাতিকে দৈহিকতায় ব্যস্ত রেখে আধ্যাতিকতা শূন্য করে দেয় নি- যেমন সমসাময়িক জাহিলিয়্যত ও মূর্খতা। আবার আধ্যাত্মিকতায় ব্যস্ত রেখে দৈহিক আবেদন নিঃশেষ করে দেয় নি- যেমন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:

أَمَا وَاللَّهِ إِنِّي لَأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ، لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ، وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي»

“জেনে রেখো, আমি তোমাদের ভেতর আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং অধিক মান্য করি। তা সত্ত্বেও আমি সাওম পালন করি, সালাত আদায় করি, ঘুমাই, বিবাহ করি। (এ হলো আমার সুন্নত) যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার পক্ষের নয়।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৩; সহী মুসলিম, হাদীস নং ১৪০১।] এভাবেই ইসলামি সংস্কৃতি-সভ্যতা এ আকিদা কেন্দ্রিক কায়িক ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে গড়ে উঠে।

২- ইসলামের একটি আবেদন অদৃশ্যের উপর ঈমান। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান। তাই বলে পার্থিব জগত নিষ্ক্রিয় রাখতে বলে নি। বরং এ আকিদার মৌলিক বিষয়াদি শক্তভাবে আকড়ে ধরার জন্য পার্থিব জগতে আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি গভীর দৃষ্টি প্রদানের আহ্বান করে। যার ফলে আল্লাহর প্রতি ঈমান হয় আরো দৃঢ়, আরো মজবুত। এ নীতির ফলেই ইসলাম সে সমস্ত কট্টরপন্থীদের নীতি ও আদর্শ থেকে ভিন্ন যারা বলে আমরা আল্লাহর দর্শনে নিমগ্ন, আল্লাহর সৃষ্ট প্রকৃতির দর্শন আমাদের প্রয়োজন নেই। তদ্রূপ ইসলাম এমন আবেদনও করে না যে, অদৃশ্য জগত অগ্রাহ্য করে, দৃশ্য জগত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাও। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাত থেকে বিমুখ হয়ে যাও। যেমন আধুনিক কালের সমসাময়িক মূর্খতা।

৩- ইসলাম দুনিয়া-আখেরাতের মাঝখানে কোনো পার্থক্য তৈরি করে না। বরং সে উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন এবং উভয়কে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত করে। অন্যথায় মানবীয় উপলব্ধিতে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হবে। যার ফলশ্রুতিতে হয়তো দুনিয়ার কর্মব্যস্তায় ব্যাপৃত হবে কিংবা শুধু আখেরাতের আমলে আত্মনিয়োগ করবে। তখনই দেখা দিবে বিশৃঙ্খলা। রিযিক ও বিত্ত-বৈভবের সন্ধানে আস্তে আস্তে আখেরাত ভুলে দুনিয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়বে কিংবা দুনিয়ার সামগ্রী ও তার আবাদ থেকে বিমুখ হয়ে আখেরাত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। যা ইসলামের দৃষ্টিতে পরিত্যাজ্য, আল্লাহর বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আল্লাহর বিধান: নি‘আমত দ্বারা আখেরাত অন্বেষণ করার সাথে সাথে দুনিয়ার হিস্যা পরিত্যাগ না করা। [আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ তোমাকে যে নি‘আমত দান করেছেন, তার দ্বারা তুমি আখেরাত অন্বেষণ কর। তবে দুনিয়ার স্বীয় হিস্যা ভুলে যেও না।” [সূরা আল-কাসাস, আয়াত: ১৭৭]] এ বিধান মতেই ইসলাম প্রতিটি ক্ষেত্রে দুনিয়া-আখেরাতের সমন্বয় নিশ্চিত করে সামনে অগ্রসর হয়। ইবাদত কিংবা দুনিয়ার আবাদ কোনোটিই অগ্রাহ্য বা মূল্যহীন জ্ঞান করে না।

৪- তাকদীরের ওপর বিশ্বাস মুসলিম উপলব্ধিতে আসবাব নির্ভরতা ও তাকদীরের মাঝখানে ভারসাম্য তৈরি করে। অধিকন্তু তাকদির ইসলামি আকিদার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্যও। তথাকথিত আল্লাহর ওপর ভরসাকারীরা দুনিয়ার উপায়-উপকরণ ত্যাগ করে অভাব-অনটন, রোগ-ব্যধি, অজ্ঞতা-মূর্খতা, অক্ষমতা ও অমর্যাদার সম্মুখীন হয়। পক্ষান্তরে পাশ্চাত্য (জাহিলিয়াত পূর্ণ) সমাজ আল্লাহ ও তাকদীর বিমুখ হয়ে সম্পূর্ণ উপকরণ নির্ভর। যার ফলে বস্ত্তবাদী, চরিত্রশূন্যতা ও মানুষ্যত্বহীন হয়ে উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ, অস্থিরতা, স্বার্থপরতা, স্বদলপ্রীতি, স্বজাতপ্রীতি, অন্ধত্ব, হত্যা সর্বব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞে পর্যবসিত। কারণ, এ সমাজ আল্লাহর স্মরণ এবং তাকদিরের বিশ্বাস জনিত শান্তি ও নিরাপত্তা বঞ্চিত।

ইসলাম বিপরীতমুখী দুই মেরুর মাঝখানে সুষম ভারসাম্য নিশ্চিত করে। সে জানে পার্থিব জগত এবং মানবীয় জীবন আল্লাহর নির্ধারিত বিধান মুতাবিক চালিত। তাই শুধু দুনিয়াবী উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলে, সে উপকরণ নির্ভর হয়ে পড়বে। কিন্তু না- তাকে এর সাথে সাথে আল্লাহ নির্ভর হতে হবে, স্বীয় উদ্দেশ্য ও স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তার নিকট প্রার্থনা করতে হবে। তবেই ভারসাম্য সৃষ্টি হবে, অর্থাৎ কাজও করবে-উপকরণও ধরবে এবং তাকদিরের উপর বিশ্বাসও রাখবে।

মোদ্দাকথা: মানবীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্র ও পরিধির মাঝখানে ভারসাম্য সৃষ্টিকারী একমাত্র ইসলামি আকিদা। এখানে দৈহিক বিবেচনা আত্মিক বিবেচনার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। রাজনৈতিক চিন্তাধারা অর্থনৈতিক চিন্তাধারার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। তদ্রূপ অর্থনৈতিক চিন্তাধারা চারিত্রিক বিবেচনাকে বির্সজন দিতে পারে না। বরং সবাইকে আল্লাহ এবং তার নাজিলকৃত বিধানের অক্ষ ও গণ্ডির আওতায় এনে সবার মাঝে সমতার বিধান নিশ্চিত করে। ফলে মানবীয় সমস্ত আবেদন সমানভাবে সহবাস্থান করার সুযোগ লাভ করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন