মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানব প্রকৃতিতে আছে অনেক চাহিদা, প্রচুর আবেদন, বিচিত্র সখ ও বিনোদন ইচ্ছা। যা একমাত্র ইসলামি আকিদাই সমর্থন করে এবং এর মাধ্যমে তথা পরকালের আকিদার দ্বারাই তা পূর্ণ হয়। এখানে আমরা তার প্রকৃতির কয়েকটি নমুনা ও স্বভাব এবং ইসলামে তার সমর্থন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করছি:
১. মৃত্যু ও মানুষ: মানুষ স্থায়ী হতে চায়, মৃত্যুকে ঘৃণা করে। সুস্থ থাকতে চায়, অসুস্থতাকে অপছন্দ করে। তারপরেও সে অস্থায়ী, মৃত্যু নিশ্চিত। সাময়িক সুস্থতা ও অসুস্থতা ক্ষণিকের ব্যাপার। এ জন্য সে হাজারো চেষ্টা-তদবির গ্রহণ করে, সম্পদ ব্যয় করে; স্বভাবের বিরুদ্ধে, প্রকৃতির বিপরীতে। তবুও তাকে মরতে হয়, মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হয়। মৃত্যু নিশ্চিত। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “জীবন মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।” [সূরা আল-‘আনকাবুত, আয়াত: ৫৭; সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৩৫; সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫]] কিন্তু পরকালের আকিদা তাকে এমন জগতের আশ্বাস প্রদান করে, যেখানে মৃত্যু হবে না, অসুস্থ হবে না, যৌবন লোপ কিংবা ক্ষয় প্রাপ্ত হবে না; চিরকাল থাকবে। সেখানে তার প্রকৃতি নিজস্ব স্বাদ আস্বাদন করবে। [“তোমরা এখানে নিশ্চিত চিরঞ্জিব, কখনো মুত্যু মুখে পতিত হবে না। এখানে তোমরা চির সুস্থ, কখনো অসুস্থ হবে না। এখানে তোমরা চির যৌবনপ্রাপ্ত, কখনো বৃদ্ধ হবে না।” (সহীহ মুসলিম)]
২. মানুষ ও প্রতিদান: মানুষ স্বাভাবিকভাবেই কর্মের ফলাফল প্রত্যাশী। সে জন্য সে বরাবরই চেষ্টা-মেহনতে নিরত থাকে। সে আরো চায় শিষ্টের পোষণ, দুষ্টের দমন; যথাযথ মূল্যায়ন, উপযুক্ত শাস্তি। কিন্তু এর বাস্তবায়ন সে পায় না দুনিয়াতে, সম্ভবও নয়। কারণ, যে ব্যক্তি একশটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে; ইনসাফ হলো, তাকে একশ বার হত্যা করা। কিন্তু দুনিয়াতে একবারের বেশি হত্যা কল্পনাতীত। ইসলামি আকিদা তাকে এমন এক জগতের দিশা প্রদান করে, যেখানে অপরাধী উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দিব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হিকমতের অধিকারী।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৫৬]
“যে কেউ অনু পরিমাণ সৎকর্ম করবে, দেখতে পাবে। আবার কেউ অনু পরিমাণ অসৎকর্ম করলেও দেখতে পাবে।” [সূরা আল-যিলযাল, আয়াত: ৭-৮] সুতরাং ইসলামি আকিদা তথা পরকালের বিশ্বাস মানুষের প্রকৃতির সমর্থক ও সামঞ্জস্যশীল।
৩. মানুষ ও সৌন্দর্যপ্রীতি: মানুষের প্রকৃতির মজ্জাগত স্বভাব হচ্ছে, সৌন্দর্য প্রীতি, সুস্থ্য দেহ, সুন্দর বাড়ি, সুন্দর নারী, সুন্দর গাড়ি, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও হিংসা-বিদ্বেষহীন কলাহল বসতি। কিন্তু পার্থিব জগৎ একটির ভোগ, অপরটির আশা ও আরেকটির অপেক্ষায় নিঃশেষ হয়ে যায়। ইসলামি আকিদা তাকে এমন এক জগতের দিশা প্রদান করে যেখানে তার প্রকৃতির সমস্ত আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খুভাবে পূরণ হবে। সমস্ত সৌন্দর্য তার নখদর্পনে বিরাজ করবে। চিরসুখময় বাসস্থান জান্নাত লাভ করবে, যার সামান্য জায়গা দুনিয়া এবং তার ভিতরে যা আছে তা থেকে উত্তম। [মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের কারো চাবুক পরিমাণ জান্নাতের জায়গা দুনিয়া এবং তার ভিতরে যা আছে তা হতে উত্তম।” (সহীহ বুখারী)] এমন মনোরম দৃশ্য-শান্তিপূর্ণ আবাসন যা কোনো চক্ষু দর্শন করে নি, কোনো কর্ণ শ্রবণ করে নি এবং মানুষের অন্তরে যার কল্পনা পর্যন্ত হয় নি। [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চক্ষু দর্শন করে নি, কোনো কর্ণ শ্রবণ করে নি এবং মানুষের অন্তরে যার কল্পনা পর্যন্ত হয় নি। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)] পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “কেউ জানে না তার কৃতকর্মের কী কী নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুকায়িত আছে।” [আল্লাহ বলেন, “কেউ জানে না তার কৃতকর্মের কী কী নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুকায়িত আছে।” [সূরা আস-[সাজদাহ, আয়াত: ১৭]] আমল ও সাধনার তারতম্যের অনুপাতে প্রত্যেকে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কেউ পূর্ণিমা রাতের চাঁদের ন্যায় রূপ ও লাবণ্যে ষোলকানায় পূর্ণ অপরূপ আকৃতিতে, কেউ উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায়। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “জান্নাতবাসিদের প্রথম দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে, পূর্ণিমার রাতের চাদের আকৃতিতে, অতঃপর যারা যাবে উজ্জল নক্ষত্রের আকৃতিতে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)] কেউ আদম আলাইহিস সালামের ন্যায় ষাট হাত লম্বা আর সুস্থ শরীর নিয়ে প্রবেশ করবে জান্নাতে। [“জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের পিতা আদম আলাইহিস সালামের আকৃতিতে। ষাট হাত পর্যন্ত প্রত্যেকে লম্বা হবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)] কারো সাথে কারো কোনো বিবাদ-বিসম্বাদ থাকবে না, সকলের অন্তরসমূহ একটি অন্তরের নীতিতে পরিচালিত হবে। [আপোষে কোনো বিবাদ থাকবে না, তাদের অন্তরসমূহ একটি অন্তরের নীতিতে প্রতিষ্ঠিত থাকবে।” (সহীহ বুখারী)] আপোষে কোনো ক্রোধ থাকবে না, সবাই ভাই ভাই, সামনাসামনি উপবিষ্ট থাকবে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দিব। তারা ভাই ভাইয়ের মতো সামনা-সামনি বসবে।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৪৭]] দেহ ও শরীরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য প্রত্যেককে একশত ব্যক্তির পানাহার ও সহবাস ক্ষমতা প্রদান করা হবে। [“পানাহার, সহবাস ইত্যাদিতে প্রত্যেককে একশত ব্যক্তির শক্তি প্রদান করা হবে।” (তিরমিযী)] সৎকর্মশীলদের জন্য জান্নাতে ষাট মাইল বিস্তৃত মনি-মুক্তার তাবু হবে, তাদের পরিবার-পরিজন সেখানে অবস্থান করবে। তাদের পার্শ্ব দিয়ে আরো সৎকর্মশীলগণ ঘুরাফেরা করবে, কেউ কাউকে দেখবে না। [“মুমিনদের জন্য জান্নাতের ভিতর মনি-মোক্তার তাবু হবে যার শুন্যগর্ভ আসমানে ষাট মাইল পর্যন্ত লম্বা হবে। মুমিনদের পরিবার-পরিজন সেখানে অবস্থান করবে। যাদের পার্শ্ব দিয়ে অন্যান্য মুমিনরা ঘোরাফেরা করবে, কেউ কাউকে দেখবে না।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)] এভাবেই আখেরাত তথা পরকালে মানুষের প্রকৃতিগত সমস্ত বাসনা পূর্ণ হবে। শান্তি ও জীবনের নিশ্চয়তা লাভ করবে।
৪. মানুষ ও বাসনা: মানুষের মনে অনেক অনেক বাসনা। কিন্তু এ দুনিয়াতে তার বৃহৎ অংশই পূরণ হয় না, সম্ভবও নয়। ইসলামি আকিদা তাকে এমন জগতের দীক্ষা প্রদান করে যেখানে সমস্ত চাহিদা পূরণ হবে। আতিথেয়তাস্বরূপ ক্ষমাশীল, করুণাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে সকল দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা আছে। [আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “সেখানে তোমাদের মনের যাবতীয় চাহিদা বিদ্যমান আছে, তোমাদের সমস্ত দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা আছে। ক্ষমাশীল করুণাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে সাদর আপ্যায়নস্বরূপ।” [সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩১-৩২]] সবই তার প্রকৃতিগত চাহিদার বাস্তবায়ন, মননশীলতার পূর্ণ সমর্থন।
পার্থিব জগৎ এর কোনো একটি বাসনা পূরণের উপযুক্ত স্থান নয়। এ দুনিয়া একটি চাহিদা পূরণের জন্য সহায়কও নয়। প্রতিটি পদে বাধার আধার। নৈরাশ্য ও হতাশা ব্যতীত কিছুই অর্জন হয় না। যার ভিত্তিতে কোনো কোনো দার্শনিক দুনিয়াকে বিষাদ-তিক্ততা-দুঃখের আস্তানা বলেছেন। আরেকটি কারণ, দুনিয়া অস্থায়ী, পার্থিব জীবন ক্ষণ-ভঙ্গুর, এখানে সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ, আলো-আধাঁর, সত্য-মিথ্যা, রাত-দিন, সকাল-সন্ধ্যা, জীবন-মৃত্যুসহ দ্বৈত ও বিপরীতমুখী জিনিসের সহাবস্থান। এর মাঝেই মানব ও তার প্রকৃতির বিচরণ। কখনো জয়ী, কখনো পরাজিত, কখনো প্রসন্ন, কখনো অবসন্ন। তাই মানব প্রকৃতির আবেদন এমন একটি জগৎ, যেখানে তার সমস্ত বাসনা পূর্ণ হবে, অনন্ত জীবন লাভ হবে, দুঃখ চিরদিনের জন্য বিদায় নিবে। আর তা-ই হল পরকাল বা আখেরাত, বাস্তবিক পক্ষে পরকালের আকিদা ছাড়া মানুষের জীবন ও প্রকৃতি নিরর্থক। আখেরাত ভিন্ন দুনিয়া অসম্পূর্ণ। [উজুদে বারি তা‘আলা আওর তওহিদ, পৃষ্ঠা: ৮৬-৮৭, ডা. মালিক গোলাম মুর্তজা, প্রকাশক: ডা. গোলাম মুর্তজা এডুকেশনাল ট্রাস্ট লাহোর, প্রকাশকাল ২০০২ জুলাই।]
৫. মানুষ ও ত্বরাপ্রবণতা: মানুষ সব বিষয়ে, সর্বক্ষেত্রে ত্বরাপ্রবণশীল। আল্লাহ বলেন,
“সৃষ্টিগতভাবে মানুষ ত্বরাপ্রবণ।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৩৭]
অন্যত্র বলেন,
﴿وَكَانَ ٱلۡإِنسَٰنُ عَجُولٗا﴾ [ الاسراء : ١١ ]
“মানুষ তো খুবই দ্রুততা প্রিয়।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১১] কর্মের প্রতিদান দ্রুত পেতে চায়; ইসলাম তার এ প্রকৃতির অবমূল্যায়ন করে নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা মজদুরের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজদুরি পরিশোধ কর। [ইবন মাজাহ, অন্যত্র বলেন, তিন ব্যক্তির পক্ষে কিয়ামতের দিন আমি বাদী হব, তার ভেতর সে ব্যক্তিও আছে, যে তার কর্মপূর্ণ করল, অথচ প্রাপ্য মজুরি পেল না। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২৭০)] এ জন্যই হত্যা, ডাকাতি, মদ্যপান, যিনা ও চুরি জাতীয় বড় বড় অপরাধের শাস্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার নির্দেশ প্রদান করেছে। আফসোস মানুষ এ প্রকৃতির ধর্ম ত্যাগ করে মানব রচিত ধর্ম ও সংবিধানের কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে প্রবৃত্তির বিচার ব্যবস্থায় বাধ্য হচ্ছে। যার ফলে মানুষ তার প্রকৃতি বিরোধী এ ব্যবস্থায় আস্থা হারিয়ে নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে। শক্তি থাকলে নিজেরাই হন্তাকে হত্যা করছে, ডাকাত, চোরদের শাস্তি হাতেনাতে ধরেই দিয়ে দিচ্ছে। কখনো চোখ উপড়ে, কখনো হাত পা ভেঙ্গে, কখনো অক্কার মাধ্যমে, কখনো সন্দেহের বসে। লঘু অপরাধে বড় শাস্তি, বড় অপরাধে লঘু শাস্তি নিত্যদিনের ঘটনা। কথিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হাতে গোনা দুএকটি ঘটনাই সোপর্দ হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/11/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।