hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদা ও মানবপ্রকৃতি

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমাদ

১. মানব বা মানুষ:
দু’টি জিনিসের সমন্বিত বস্তুর নাম।

এক. শরীর, অবয়ব, বা কায়া।

দুই. আত্মা। অর্থাৎ দেহে ব্যাপৃত চৈতন্যময় সত্তা বা প্রাণ। উভয়টির সমন্বয়ে মানুষ বা মানব।

শরীরের মূল উপাদান হচ্ছে মাটি: প্রত্যক্ষ যেমন প্রথম মানব আদম আলাইহিস সালাম। [আল্লাহ বলেন, “আমি মানবকে পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ২৬] অন্যত্র বলেন, “তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির ন্যায় শুষ্ক মৃত্তিকা থেকে।” [সূরা আর-রহমান, আয়াত: ১৪]] পরোক্ষ যেমন আমরা। অর্থাৎ আদম পরবর্তী প্রজন্ম মাটি থেকে উৎপাদিত খাদ্য, পানীয় থেকে তৈরি বীর্য দ্বারা সৃষ্ট। [আল্লাহ বলেন, “অতএব, মানুষের দেখা উচিৎ যে, কী বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদণ্ড ও বক্ষপাজরের মধ্য থেকে।” [সূরা আত-তারিক, আয়াত: ৫-৬]] মাটির এ সারাংশ থেকেই মানুষ সৃষ্টির সূচনা। অতঃপর পর্যায়ক্রমে প্রথমে সে শুক্র বিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপিত হয়; এরপর জমাট রক্ত; জমাট রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করা হয়; মাংসপিণ্ড থেকে অস্থি অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করা হয়; অবশেষে এক নতুন আকৃতি ধারণ করে। [আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর আমি তাকে এক শুক্র বিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি, এরপর আমি শুক্র বিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিণ্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে এক নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। আল্লাহ অনেক কল্যাণময় নিপুনতম সৃষ্টিকর্তা।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১২-১৪]]

রূহ আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে আগত তাঁর সরাসরি নির্দেশ। [আল্লাহ বলেন, “আর তারা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ আমার রবের আদেশ থেকে, আর তোমাদেরকে জ্ঞান থেকে অতি সামান্যই দেওয়া হয়েছে।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৮৫]] শরীরের জন্য যেমন খাদ্য-পানীয়ের প্রয়োজন, তদ্রূপ আত্মারও খাদ্য-পানীয়ের প্রয়োজন। তবে উভয়ের পানাহার ও জীবিকা নির্বাহ আলাদা ও স্বতন্ত্র। শরীর বা দেহের উৎস মাটি, তাই মাটিতেই এর জীবন উপকরণ ও জীবন ধারণের সমস্ত আয়োজন।

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿فَلۡيَنظُرِ ٱلۡإِنسَٰنُ إِلَىٰ طَعَامِهِۦٓ ٢٤ أَنَّا صَبَبۡنَا ٱلۡمَآءَ صَبّٗا ٢٥ ثُمَّ شَقَقۡنَا ٱلۡأَرۡضَ شَقّٗا ٢٦ فَأَنۢبَتۡنَا فِيهَا حَبّٗا ٢٧ وَعِنَبٗا وَقَضۡبٗا ٢٨ وَزَيۡتُونٗا وَنَخۡلٗا ٢٩ وَحَدَآئِقَ غُلۡبٗا ٣٠ وَفَٰكِهَةٗ وَأَبّٗا ٣١ مَّتَٰعٗا لَّكُمۡ وَلِأَنۡعَٰمِكُمۡ ٣٢ ﴾ [ عبس : ٢٤، ٣٢ ]

“মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক, আমরা আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি, এরপর আমরা ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি, অতঃপর তোমাদের এবং তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের জীবিকা নির্বাহের স্বার্থে তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য, আঙ্গুর, শাক-সবজি, যয়তুন, খর্জুর এবং ঘন উদ্যান, ফল ও ঘাস ।” [সূরা আবাসা, আয়াত: ২৪-৩২]

আর “এ মাটিতেই রয়েছে চতুষ্পদ জন্তু, যা আমাদের বিত্ত বৈভবের আলামত, শীত বস্ত্রের উপকরণ এবং কিছু আহার্যে ব্যবহৃত খাদ্য, এর মাধ্যমে আমরা খুব সহজে মালামাল স্থানান্তর করি, আরো আছে এতে আভিজাত্য, সৌন্দর্য, শোভা ও আরোহণের ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা।” [আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন, এতে তোমাদের শীত বস্ত্রের উপকরণসহ আরো অনেক উপকার রয়েছে। এবং এর কতককে তোমরা আহার্যে ব্যবহার কর। এবং এ গুলো তোমাদের বিত্ত বৈভবের সৌন্দর্য বৃদ্ধি কারকও। যে সৌন্দর্য তোমরা সকাল-সন্ধ্যায় উপলব্দি কর, যখন চারণভুমি থেকে এগুলো বাড়ি নিয়ে আস, এবং যখন চারণভুমিতে নিয়ে যাও। এরা তোমাদের বোঝা খুব সহজে এমন শহর পর্যন্ত নিয়ে যায়, যেখানে তোমরা প্রাণান্তকর পরিশ্রম ব্যতীত পৌছতে পারতে না। তোমাদের প্রভু পরম দয়ালু, অসীম মেহেরবান। তোমাদের আভিজাত্য, সৌন্দর্য, শোভা ও আরোহণের জন্য তিনি ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা সৃষ্টি করেছেন। আরো এমন কিছু সৃষ্টি করছেন ও করবেন; যা তোমরা জান না। সরল পথ আল্লাহ পর্যন্ত নিয়ে যায়, তবে বক্র পথও অনেক আছে। আল্লাহ ইচ্ছে করলে সকলকে জোরপূর্বক সরল পথে পরিচালিত করতেন। (কিন্তু না, তিনি প্রকৃতি, বিবেচনা ও বিবেকের ওপর সোপর্দ করেছেন।)” [সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ৫-৯]]

রূহ ঊর্ধ্বজগত থেকে আগত ঊর্ধ্বজগতেই তার আহার্য। নবী-রাসূলগণ সেখান থেকেই তার আহার্য নিয়ে এসেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ﴾ [ الرعد : ٢٨ ]

“জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ ও যিকিরের মাধ্যমে অন্তরাত্মা প্রশান্ত।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৮]

অর্থাৎ প্রকৃতিলব্ধ পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ জ্ঞান। তবে জ্ঞানার্জন ইন্দ্রিয়ের সীমাবদ্ধতা, সামর্থহীনতা ও জ্ঞানের স্বল্পতার দরুন একটি পর্যায়ে পৌঁছে মানুষ ধাঁধাচ্ছন্ন হয়ে যায়, পৌছেও পৌছতে পারে না। প্রয়োজন হয় ঐশী বাণীর। স্রষ্টার সরাসরি সমর্থন ও নির্দেশপ্রাপ্ত দূত তথা নবী ও রাসূলগণের। এদের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত, যথাযথ জ্ঞানার্জনের পথ সুগম হয়। তা-ই ওহী বা কুরআন রূহের আহার্য। [আল্লাহ বলেন, “তিনিই মূর্খদের মাঝে রাসূল প্রেরণ করেছেন, যে তাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শুনায়, আত্মশুদ্ধ করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়।” [সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ২]]

মোদ্দাকথা: শরীর মাটির তৈরি, মাটিতেই তার খাদ্য। রূহ উর্ধ্বজগত থেকে আগত উর্ধ্বজগতেই তার আহার্য।

রূহ ও শরীরের মধ্যে মূল হচ্ছে রূহ। এ জন্যই প্রবাদ-প্রবচনে ‘পাপাত্মা, পুণ্যাত্মা’ ইত্যাদি বলা হয়। শরীরের সাথে ভালো-মন্দ সম্পৃক্ত করা হয় না, যদিও ভালো-মন্দ দু-ই সম্পন্ন হয় শরীর ও আত্মার সমন্বয়ে। হাদীসেও এ বিষয়টিকে সমর্থন করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أَلاَ وَإِنَّ فِي الجَسَدِ مُضْغَةً : إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الجَسَدُ كُلُّهُ، وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الجَسَدُ كُلُّهُ، أَلاَ وَهِيَ القَلْبُ» .

“জেনে রাখ, শরীরের অভ্যন্তরে গোশতের একটি টুকরা আছে, সে যদি সুস্থ্য ও সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, পুরা শরীরই সুস্থ্য ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। আর সে অসুস্থ্য ও রুগ্ন হলে, পুরা শরীরই অসুস্থ্য ও রুগ্ন হয়ে যায়। জেনে রাখ, তার নাম-ই কলব।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৯৯; তিরমিযী, হাদীস নং ১২০৫; নাসাঈ, হাদীস নং ৪৪৫৩; আবূ দাউদ , হাদীস নং ৩৩২৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৯৮৪; আহমদ (৪/২৭০); দারেমী, হাদীস নং ২৫৩১।]

রূহ ও আত্মার সমন্বয়ে-ই একজন সক্রিয় ও জীবন্তমানুষ। [আল্লাহ বলেন, “আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব ফিরিশতাদের বললেন, ‘আমি একজন মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি শুকনো ঠনঠনে কালচে মাটি থেকে’। অতএব, যখন আমি তাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিব এবং তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দিব, তখন তোমরা তার জন্য সাজদাবনত হও।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ২৮-২৯]] একটি ব্যতীত অপরটি নিথর, মৃতদেহ কিংবা স্রেফ অস্পৃশ্য একটি প্রাণ। [আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ জীবসমূহের প্রাণ হরণ করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যারা মরে নি তাদের নিদ্রার সময়। তারপর যার জন্য তিনি মৃত্যুর ফয়সালা করেন তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অন্যগুলো ফিরিয়ে দেন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল কাওমের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৪২]]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন