hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবীদের পেয়েছি, কিন্তু আহলে-বাইতকে হারাই নি

লেখকঃ আবু খলিফা আলি ইব্‌ন মুহাম্মদ আল-কুদাইবি

সাহাবীদের গালি দেয়া ও তাদের ওপর লানত করা
আমি সাহাবীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছি ঠিক, কারণ আমার বিশ্বাস ছিল তারা আহলে বাইতের হক আত্মসাৎ করেছেন, কিন্তু তাদের আমি গালি দিতাম না।

সাহাবীদের ব্যাপারে তখন আমার সিদ্ধান্ত কি ছিল, এ প্রশ্নের বাইরে বিষয়টা আমার নিকট ছিল ভদ্রতা ও সচ্চরিত্রের খেলাফ। এ জন্যই আমি তাদেরকে গালি দেয়নি।

আমি মনে করতাম কোন ধর্ম এ জাতীয় কর্ম-কাণ্ডের নির্দেশ দিতে পারে না। আমি এমন কোন ধর্ম সম্পর্কে শুনিনি, যে তার অনুসারীদের প্রাকৃতিক প্রয়োজন পেশাব-পায়খানার সময় মৃতদের গালি ও তাদের ওপর লানত করে আনন্দ উপভোগ করার নির্দেশ দিয়েছে। এসব ভণ্ডামি থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। যেমন শিয়াদের উমদাতুল মুহাক্কিকিন মুহাম্মদ তুসেরকানি নিজ কিতাব “লাআলিল আখবার” (৪/৯২) এ বলেছেন: “জেন রেখ তাদের ওপর লানত করার সবচেয়ে উত্তম স্থান, উত্তম সময় ও উপযুক্ত হালাত হচ্ছে যখন তুমি পেশাব করার স্থানে থাকো। -তাদের ওপর লানত- নির্জনে, পায়খানার মুহূর্তে ও নাপাকি দূর করার সময় প্রসন্ন চিত্তে বারবার বল: “হে আল্লাহ ওমরকে লানত কর, অতঃপর আবু বকর ও উমরকে, অতঃপর ওসমান ও ওমরকে, অতঃপর মুয়াবিয়া ও ওমরকে...। হে আল্লাহ লানত কর আয়েশা, হাফসা, হিন্দা ও উম্মুল হাকামকে। কিয়ামত পর্যন্ত যারা তাদের কর্মের ওপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করবে তাদের সবার ওপর লানত কর”!!!

আমি অবাক হলাম রাসূলুল্লাহর সাহাবীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার ফলে আমার অন্তরে শিয়াদের কর্ম-কাণ্ডের প্রতি ঘৃণার সৃষ্টি হয় ও আমি তার সমালোচনা শুরু করি।

সাহাবীদের গালি দেয়া ও তাদের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে লানত করার প্রতি আমাদের লিখনিগুলো স্পষ্টভাবে উদ্বুদ্ধ করে ও উৎসাহ দেয়। প্রথমে তাদের কাফের বলা, অতঃপর মুরতাদ বলা, অতঃপর তাদের ওপর লানত করা ও তাদের সাথে সম্পর্ক ছেদ করার তাগিদ দেয়। পুরাতন ও নতুন সব গ্রন্থে তার বর্ণনা রয়েছে, যা কম-বেশী সবার জানা।

একটি উদাহরণ: “রিজালুল কাশি” গ্রন্থে “হানান ইব্‌ন সাদির পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি আবু জাফর ‘আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর সবাই মুরতাদ হয়েছে শুধু তিনজন ব্যতীত। আমি বললাম: তিনজন কারা? তিনি বললেন: মিকদাদ ইব্‌ন আসওয়াদ, আবু যর গিফারি ও সালমান আল-ফারসি। তিনি বলেন: তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়, তারা বায়েত গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। অতঃপর যখন তাদেরকে জোরপূর্বক খলিফার নিকট নিয়ে আসা হয় তারা বায়েত করেন”। [আল-কাফি: (৮/২৪৫), দারাজাতুর রাফি‘আহ: (পৃ.২১৩)]

কতক বর্ণনায় এ তিনজনের সাথে আরো চারজন যোগ করা হয়, যেন সাহাবীদের সংখ্যা সাত পর্যন্ত পৌঁছে, সাহাবীদের ক্ষেত্রে তারা সাত সংখ্যা অতিক্রম করে না। তাদের ধারণায় এ সাত সাহাবীই মুসলিম।

কতক বর্ণনায় রয়েছে: “হারেস ইব্‌ন আল-মুগিরা আন-নাসরি বলেন: আমি আব্দুল মালিক ইব্‌ন আয়ূনকে শুনেছি, তিনি আবু আব্দুল্লাহকে প্রশ্ন করছিলেন, এক পর্যায়ে তিনি বলেন: তখন সব মানুষ ধ্বংস হল [অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর যখন সব সাহাবী আবু বকরের হাতে বায়ত করল।]! তিনি বলেন: হ্যাঁ, আল্লাহর কসম, হে ইব্‌ন আয়ূন! সবাই ধ্বংস হল। আমি বললাম: পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তে যে ছিল?! তিনি বলেন: ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর গোমরাহীর দার উন্মুক্ত হয়েছে। আল্লাহর শপথ তিনজন ব্যতীত সবাই ধ্বংস হল। অতঃপর তাদের সাথে আবু সাসান যোগ দিল”। [আরদুবিলি বলেছেন: আবু সাসানের নাম হাসিন ইব্‌ন মুনযির। তাকেই আবু সাসান বলা হয়। অতঃপর এ বর্ণনা কাশি থেকে বর্ণনা করেন। জামেউর রিওয়াইয়াত: (২/৩৮৭)]

শিয়ারা সাহাবীদের কাফের বলার মতবাদ থেকে আবু বকর ও ওমরকে কুরাইশের দু’টি মূর্তি আখ্যা দেয়, তাদের ওপর লানতের বর্ণনা সমৃদ্ধ বদ দোয়ার অজিফা পাঠ করে, তাদেরকে মূর্তি, জিবত ও তাগুতের সাথে তুলনা করে।

এসব দেখে আল্লাহর বাণীর সামনে দীর্ঘসময় চিন্তা করলাম:

﴿وَٱلسَّٰبِقُونَ ٱلۡأَوَّلُونَ مِنَ ٱلۡمُهَٰجِرِينَ وَٱلۡأَنصَارِ وَٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُم بِإِحۡسَٰنٖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُ وَأَعَدَّ لَهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي تَحۡتَهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ ١٠٠﴾ [ التوبة : 100]

“আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারাপ্রথম অগ্রগামী এবং যারা তাদেরকে অনুসরণকরেছে সুন্দরভাবে, আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি সন্তুষ্টহয়েছেন আর তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টহয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুতকরেছেন জান্নাতসমূহ, যার তলদেশে নদীপ্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। এটাইমহাসাফল্য”। [সূরা আত-তাওবা: (১০০)]

এখানে স্পষ্ট দেখলাম আল্লাহ তা‘আলা মুহাজির, আনসার ও ইমানে অগ্রজদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে বিশেষভাবে রয়েছেন: আবু বকর, ওমর, উসমান, তালহা, যুবায়ের, সাদ ইব্‌ন আবি ওয়াক্কাস, আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ ও সাদ ইব্‌ন মুয়ায প্রমুখগণ। শিয়ারা যাদের লানত করে এমন অনেকেই রয়েছেন এ কাতারে।

আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম: এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি সাহাবীদের ওপর সন্তুষ্ট, তাদের জন্য তিনি জান্নাত তৈরি করেছেন, এরপর একজন জ্ঞানী লোক কিভাবে বলে সাহাবীগণ আলির ওপর জুলম করেছে ও তার থেকে খিলাফত জবর দখল করেছে?!

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের ওপর সন্তুষ্টি নিয়ে ইন্তেকাল করেছেন, বিশেষ করে প্রথম তিন খলিফা আবু বকর, ওমর ও উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম প্রমুখ। তাদের সম্পর্কে এ আয়াত নাযিল হয়েছে, যা আমরা বারবার তিলাওয়াত করি। অতঃপর তারা যদি তার মৃত্যুর পর কুফরে ফিরে যায় ও ফেতনায় মগ্ন হয়, বরং শিয়ারা তাদের ওপর কুরআন বিকৃতি করা ও দীনের বিধান পরিবর্তন করার অপবাদ আরোপ করে, তবে আল্লাহ তা‘আলা তা জানতেন কি-না?! যদি আল্লাহ জানেন, সকল মুসলিমের আকিদাও তাই, তাহলে আমরা যে আয়াত তিলাওয়াত করি, যেখানে তাদের প্রশংসা রয়েছে তার হুকুম কি, অথচ তারা [শিয়াদের নিকট] মুনাফিক ও মুরতাদ?!

তাহলে আল্লাহ তাদের প্রশংসা করে, কুরআনে তাদের ওপর সন্তুষ্টির ঘোষণা দিয়ে কি রাসূলকে ধোঁকা দিয়েছেন! এরূপ কথা থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই, তিনি সকল দোষ মুক্ত। কিভাবে সম্ভব রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক করেন, যাদের ওপর আস্থা পোষণ করেন, তারা তার মৃত্যুর পর কুফরে ফিরে যাবে?!

এ জাতীয় মতবাদ কি তামাশা নয়, আল্লাহর সাথে শিয়াদের এ তামাশা করার মানে কি, যা সরাসরি কুফরি?!!

আল্লাহ কেন সাহাবীদের মুখোশ উন্মোচন করেননি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন তাদের থেকে সতর্ক করেননি?!

আমি এর কোন সদুত্তর পাইনি, আমার পক্ষে এ ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট, কুরআনে ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জবানীতে তাদের জান্নাতের সুসংবাদ দান করেছেন। কারণ তিনি জানতেন তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিদায়েত ও সুন্নতের ওপর জীবন পরিচালনা করবেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ لَّقَدۡ رَضِيَ ٱللَّهُ عَنِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ يُبَايِعُونَكَ تَحۡتَ ٱلشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمۡ فَأَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ عَلَيۡهِمۡ وَأَثَٰبَهُمۡ فَتۡحٗا قَرِيبٗا ١٨ ﴾ [ الفتح : ١٨ ]

“অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর সন্তুষ্টহয়েছেন, যখন তারা গাছের নিচে আপনারহাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিল; অতঃপরতিনি তাদের অন্তরে কি ছিল তা জেনেনিয়েছেন, ফলে তাদের উপর প্রশান্তি নাযিলকরলেন এবং তাদেরকে পুরস্কৃত করলেননিকটবর্তী বিজয় দিয়ে”। [সূরা আল-ফাতহ: (১৮)]

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন: তিনি সাহাবীদের অন্তরের অবস্থা জানেন, তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন ও তাদের ওপর সাকিনা নাযিল করেছেন। অতএব তাদের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকা বা সন্দেহ পোষণ করা জায়েজ নয়। [আল-ফাসল লি ইব্‌ন হাজম আল-উন্দুলুসী: (৪/২২৫)]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন