১
কিতাবের নাম/ লেখক/ অনুবাদক/ সম্পাদক
২
কভার পেইজ থেকে
৩
আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে
৪
তোমরা হলে সর্বোত্তম জাতি। মানুষের কল্যাণের জন্য যাদের বের করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে আর মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে
৫
তুমি ক্ষমা প্রদর্শন করো ও সৎ কাজের আদেশ দাও
৬
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু। তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় আর মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে
৭
বনী ইসরাইলের মধ্যে যারা কুফুরী করেছে তাদেরকে দাউদ ও মারইয়ামপুত্র ঈসার মুখে (ভাষায়) অভিশাপ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তারা অবাধ্য হয়েছে এবং সীমালঙ্ঘন করত। তারা পরস্পরকে মন্দ থেকে নিষেধ করত না, যা তারা করত তা থেকে। তারা যা করত তা কতই না মন্দ!
৮
বল, সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে। সুতরাং যার ইচ্ছা সে যেন ঈমান আনে আর যার মনে চায় সে যেন কুফুরী করে
৯
সুতরাং তোমাকে যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তা ব্যাপকভাবে প্রচার কর
১০
তখন আমরা মুক্তি দিলাম তাদেরকে যারা মন্দ হতে নিষেধ করে। আর যারা যুলুম করেছে তাদেরকে কঠিন আযাব দ্বারা পাকড়াও করলাম। কারণ, তারা পাপাচারে লিপ্ত হত
১১
হাদীস: ১. তোমাদের কেউ যখন কোনো খারাপ কাজ হতে দেখবে তখন সে যেন তা হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয় (অর্থাৎ নিষেধ করবে) যদি সে এ সামর্থ না রাখে তাহলে তার মুখ দিয়ে। যদি এ সামর্থও না থাকে তাহলে অন্তর দিয়ে। আর এটা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতর স্তর
১২
হাদীস: ২. আমার পূর্বে আল্লাহ তা‘আলা কোনো জাতির কাছে যে নবীই পাঠিয়েছেন, তাঁর সহযোগিতার জন্য তাদের মধ্য হতে কিছু সাথী থাকত। তারা তাঁর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরত এবং তাঁর নির্দেশের অনুসরণ করত। কিন্তু এদের পর এমন কিছু লোকের অভ্যূদয় ঘটল, তারা যা বলত নিজেরা তা করত না। আর এমন সব কাজ করত যার নির্দেশ তাদের দেওয়া হয়নি। অতএব, তাদের বিপক্ষে যে ব্যক্তি হাত দিয়ে জিহাদ করবে, সে ঈমানদার। যে তাদের সাথে অন্তর দিয়ে জিহাদ করবে সে ঈমানদার। আর যে তাদের সাথে মুখ দিয়ে জিহাদ করবে সে ঈমানদার। এ তিন অবস্থা ব্যতীত সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও নেই
১৩
হাদীস: ৩. আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বাইয়াত (শপথ) নিলাম দুঃখে-সুখে, শান্তিতে-বিপদে সর্বাবস্থায় নেতার কথা শোনা ও তার আনুগত্য করার, আমাদের ওপর তাদের প্রাধান্য দেওয়ার। আরো শপথ নিলাম, নেতাদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আমরা করব না, যতক্ষণ না তোমরা তাদের থেকে স্পষ্ট কুফুরী দেখতে পাবে যার সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে প্রমাণ আছে। আমরা আরো শপথ নিলাম, আমরা যেখানেই থাকি না কেন সর্বাবস্থায় সত্য ও ন্যায়ের কথা বলব। আমরা আল্লাহর ব্যাপারে কোনো নিন্দুকের নিন্দার ভয় করব না
১৪
হাদীস: ৪. আল্লাহ তা‘আলার সীমার মধ্যে অবস্থানকারী ও সীমা লঙ্ঘনকারীর দৃষ্টান্ত হলো, একদল লোক জাহাজে আরোহণ করল, লটারীর মাধ্যমে কেউ উপর তলায় আবার কেউ নিচ তলায় স্থান পেল। নিচের তলার লোকদের পানির প্রয়োজন হলে উপরের তলা দিয়ে পানি আনতে যায়। ফলে নিচ তলার লোকেরা বলল, আমরা যদি জাহাজে আমাদের অংশে একটি ছিদ্র করে নেই, তাহলে উপর তলার লোকদের কষ্ট দেওয়া লাগত না। এখন যদি উপর তলার লোকেরা তাদের (জাহাজ ছিদ্র করার) কাজে ছেড়ে দেয় এবং কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তারা তাদের কাজে বাধা দেয় তাহলে তারা নিজেরাও বেঁচে যাবে আর তারাও বাঁচাবে
১৫
হাদীস: ৫. তোমাদের ওপর এমন কতিপয় শাসক নিযুক্ত করা হবে তোমরা তাদের কিছু কাজকর্ম পছন্দ করবে আর কিছু অপছন্দ করবে। সুতরাং যে অপছন্দ করবে সে দায়মুক্ত হয়ে যাবে। যে প্রতিবাদ করবে সে নিরাপদ থাকবে। কিন্তু (সে দায়মুক্ত নয়) যে সস্তুষ্টি প্রকাশ করবে ও অনুসরণ করবে। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি তাদের সাথে লড়াই করব না? তিনি বললেন: না. যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে সালাত কায়েম রাখে। (ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই নয়)
১৬
হাদীস: ৬. লা ইলাহা ইল্লাল্লহ, আরব ধ্বংস হয়ে যাক, যে মন্দ কাজ তারা করেছে যার কারণে (ধ্বংস) নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আজ ইয়াযুয মাজুযের দেওয়াল এতটা খুলে দেওয়া হয়েছে, এ কথা বলে তিনি তাঁর বৃদ্ধা আঙ্গুলি ও তর্জনী বৃত্তাকার করে দেখালেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে সৎ লোক থাকা সত্ত্বেও আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি বললেন: হ্যাঁ, যখন পাপাচার ও নোংরামী বেশি হয়ে যাবে
১৭
হাদীস: ৭. তোমরা রাস্তাসমূহের উপর বসে থাকা থেকে বিরত থাক। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাস্তায় বসা ব্যতীত আমাদের কোনো উপায় নেই। আমরা সেখানে বসে কথা-বার্তা বলে থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: রাস্তায় যদি বসতেই হয় তাহলে তোমরা রাস্তার হক (অধিকার) আদায় কর। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাস্তার হক কী? তিনি বললেন: রাস্তার হক হচ্ছে, দৃষ্টি অবনত রাখা, কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তা থেকে অপসারণ করা, সালামের উত্তর দেওয়া আর সৎ কাজের আদেশ করা ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা
১৮
হাদীস: ৮. একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির হাতে একটি সোনার আংটি দেখতে পেলেন। তিনি আংটি টি তার হাত থেকে খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললেন, “তোমাদের কেউ যদি নিজের হাতে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখতে ইচ্ছা করে সে নিজ হাতে আংটি রাখতে পারে”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে যাবার পর লোকটিকে কেউ বলল, আংটিটি উঠিয়ে নিয়ে অন্য কোনো কাজে লাগাও। সে বলল, আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা ছুঁড়ে ফেলেছেন, আমি তা কখনো ধরব না
১৯
হাদীস: ৯. আয়েজ ইবন আমর একদিন উবাইদুল্লাহ ইবন যিয়াদের কাছে গেলেন। তিনি তাকে বললেন, হে বৎস! আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “খারাপ প্রশাসক খর-কুটা মাত্র। তুমি সাবধান থেকো, যেন এর অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যাও”। ইবন যিয়াদ তাকে বলল, বসুন! আপনি তো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে একজন অপদার্থ। তিনি উত্তরে বললেন: তাদের জন্য কি অপদার্থ কথাটা প্রযোজ্য? অপদার্থ হলো, তাদের পরে যারা এসেছে ও যারা সাহাবী নয় তাদের মধ্য থেকে
২০
হাদীস: ১০. সেই সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জীবন, তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে আর মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে। যদি না কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের উপর শাস্তি পাঠাবেন। অতঃপর তোমরা তাকে ডাকবে আর তোমাদের ডাকের সাড়া দেওয়া হবে না
২১
হাদীস: ১১. যালিম শাসকের সামনে ইনসাফের কথা বলা উত্তম জিহাদ
২২
হাদীস: ১২. এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এমন সময় প্রশ্ন করল যখন তিনি বাহনের পা-দানিতে পা রাখছিলেন, ‘সর্বোত্তম জিহাদ কোনটি?’ তিনি বললেন: যালিম শাসকের সামনে হক কথা বলা
২৩
হাদীস: ১৩. বনী ইসরাইলের মধ্যে প্রথম ত্রুটি-বিচ্যূতি অনুপ্রবেশ করে এভাবে যে, এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করত এবং তাকে বলত, হে অমুক! আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর আর যা করছ তা বর্জন কর। কেননা এ কাজ তোমার জন্য বৈধ নয়। তারপর সে পরদিন তার সাথে দেখা করলে তাকে পূর্বের অবস্থায়ই দেখতে পেত। কিন্তু তার ঐ অবস্থা তাকে তার সাথে পানাহার, উঠা-বসায় অংশ নিতে বারণ করে নি। যখন তারা এমন করল আল্লাহ একজনের অন্তরের কালিমা দ্বারা অপরের অন্তরকে অন্ধকার করে দিলেন।’ এ কথা বলার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন: যার অর্থ হলো : বনী ইসরাইলের মধ্যে যারা কুফুরী করেছে তাদেরকে দাউদ ও মারইয়ামপুত্র ঈসার মুখে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তারা অবাধ্য হয়েছে এবং সীমা লঙ্ঘন করত। তারা পরস্পরকে মন্দ থেকে নিষেধ করত না, যা তারা করত তা থেকে। তারা যা করত তা কতই না মন্দ! তাদের মধ্যে অনেককে তুমি দেখতে পাবে, যারা কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা যা নিজেদের জন্য পেশ করেছে তা কত মন্দ যে, আল্লাহ তাদের ওপর ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তারা আযাবেই স্থায়ী হবে। আর যদি তারা আল্লাহ ও নবীর প্রতি এবং যা তার প্রতি নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান রাখত, তবে তাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করত না, কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে পাপাচারী [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭৮-৮১] এরপর তিনি বলেন, কখনো না, আল্লাহর কসম! তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করতে থাকো এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো। জালিম-অত্যাচরীর হাত ধরে তাকে হক পথে টেনে আনবে। সত্য ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের পরস্পরের অন্তরকে বিবাদ-বিচ্ছেদে লিপ্ত করে দেবেন। ফলে তোমরা তাদের অভিশাপ দেবে যেমন তারা অপরকে অভিশাপ দিত
২৪
হাদীস: ১৪. হে মানব সকল! তোমরা তো এ আয়াত পাঠ করে থাক: হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখ। অপর কারোর পথভ্রষ্ট হওয়ায় তোমাদের কোনো ক্ষতি হবে না, যদি তোমরা নিজেরা সঠিক পথে থাক। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ১০৫] আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, মানুষেরা যখন দেখে অত্যাচারীরা অত্যাচার করছে, কিন্তু তারা এর প্রতিরোধ করল না, এরূপ লোকদের ওপর আল্লাহ অচিরেই মহামারী আকারে শাস্তি পাঠাবেন