মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রশ্নগুলোতে এসেছে যে, ‘বাহ্যিকরূপে দেখা যাচ্ছে একাধিক স্বামী গ্রহণ নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও একাধিক স্ত্রী গ্রহণের বৈধতার দ্বারা এক শ্রেণীর মানুষকে অপর শ্রেণীর উপর স্থান দেয়া হয়েছে।’
মূলত: [ইসলামী শরী‘আতের] এ অবস্থানের ব্যাখ্যার দু’টি দিক রয়েছে:
প্রথমত:
পুরুষ ও নারী হিসেবে মানব জাতির ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে বিন্যস্ত হয়েছে তার স্বভাব-প্রকৃতি ও সামর্থ্যের ক্ষেত্রে ভিন্নতা; আর এই যে ভিন্নতা যাকে কেউ অস্বীকার করে না, সেটাকে এক শ্রেণীর মানুষকে অপর শ্রেণীর উপর স্থান দেয়ার ব্যাপারে দলিল হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়; যেমন আমরা তা সমানাধিকার নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি।
দ্বিতীয়ত:
ইসলামী শরী‘আত একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করাকে বৈধ করে দিয়েছে; কারণ, এটা শরী‘আতের সামগ্রিক শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অনুরূপভাবে তা পুরুষ ও নারী সকল মানুষের স্বভাব-প্রকৃতির সাথেও সঙ্গতিপূর্ণ।
আর একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করার বিষয়টি শরী‘আতের ব্যাপক শিক্ষার সাথেও সঙ্গতিপূর্ণ। কেননা শরী‘আত যিনা-ব্যভিচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং তা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে কঠোরতা আরোপ করেছে; অতঃপর অন্যভাবে খুলে দিয়েছে একটি শরী‘আত সম্মত দরজা; আর তা হল বিয়ে এবং শরী‘আত একাধিক বিয়েকে বৈধ করে দিয়েছে। আর তাতে সন্দেহ নেই যে, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ থেকে নিষেধ করা হলে, তা যিনা-ব্যভিচারের দিকে নিয়ে যাবে। কারণ, নারীদের সংখ্যা পুরুষদের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে এবং যখনই যুদ্ধ সংঘটিত হবে, তখন ব্যবধান বাড়তে থাকবে। আর আমাদের বর্তমান সময়ে বহু ধরনের অস্ত্র দেখা যায়, যার একবারের আক্রমনে অথবা কামানের একটি গোলা বর্ষণের দ্বারা শত শত যোদ্ধার প্রাণহানি ঘটে, বরং এর দ্বারা কোন কোন ক্ষেত্রে আর কোন যোদ্ধাই অবশিষ্ট থাকে না; ফলে একজন নারীর বিয়ের পথ সংকুচিত হয়ে যায় এবং এতে নারীদের একটি বিরাট অংশ অবিবাহিত অবস্থায় থেকে যায়। আর নারী বিবাহ থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং অবিবাহিত অবস্থায় জীবনযাপন করার দ্বারা মানসিক সংকীর্ণতা, মান-সম্মান বিক্রয়, যিনা-ব্যভিচারের ব্যাপক ছড়াছড়ি ও বংশধর বিনষ্ট হওয়ার মত বড় ধরনের নেতিবাচক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে মেলামেশার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির দৃষ্টিকোণ থেকে পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। কারণ, নারী যৌন চাহিদা পূরণার্থে সব সময় মেলামেশার জন্য প্রস্তুত নয়; কেননা মাসিক পিরিয়ড অবস্থায় এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে তার দশ দিন অথবা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং নেফাস অবস্থায় প্রতিবন্ধকতার সময়কাল যা বেশিরভাগ সময়ে চল্লিশ দিন পর্যন্ত গড়ায়; আর এই দুই সময়ের মধ্যে উভয়ের মেলামেশা শরী‘আতের বিধান অনুযায়ী নিষিদ্ধ। আর গর্ভকালীন অবস্থায় এই [মেলামেশার] ব্যাপারে প্রস্তুতি নেয়াটা নারীর জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আর পুরুষের প্রস্তুতি থাকে মাস ও বছরব্যাপী একই রকম। সুতরাং পুরুষ ব্যক্তিকে যখন একাধিক স্ত্রী গ্রহণে বাধা প্রদান করা হবে, তখন সে এই ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় যিনা-ব্যভিচারের আশ্রয় গ্রহণ করবে।
পূর্বের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, শরী‘আত স্বভাব-চরিত্রের যথাযথ মূল্যায়ণ করেছে, স্থান কাল পাত্রভেদে পুরুষের সংখ্যার ঘাটতি হয়, নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং সেসব পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রতিও দৃষ্টি দিয়েছে যা নারীর উপর আপতিত হয়; ফলে সে [স্বামীর আহ্বানের জন্য] প্রস্তুত থাকে না এবং স্বামীর আহ্বানে পূর্ণাঙ্গ সাড়া দিতে পারে না।
বিয়ের উদ্দেশ্যসমূহের মধ্যে অপর আরেকটি উদ্দেশ্য হল, মানব প্রজন্মকে রক্ষা করা, মানুষের বংশবিস্তার অব্যাহত রাখা এবং স্থায়ী পরিবার কাঠামো গঠন করা; সুতরাং যখন সে কোন বন্ধ্যা নারীকে বিয়ে করে এবং তার জন্য অপর কোন নারীকে বিয়ে করা বৈধ না হয়, তবে বিয়ের উদ্দেশ্য হাসিল করা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে; আর যখন বিষয়টি এমন হয় যে, তার প্রথম স্ত্রী তার সাথে বহাল তবিয়তে বিদ্যমান থাকবে এবং তার জন্য অপর নারীকে বিয়ের অনুমতি দেয়া হয় যাতে সে সন্তান লাভের আশায় তাকে বিয়ে করতে পারে, তবে তাকে তালাক দেয়ার চেয়ে তা অবশ্যই উত্তম হবে।
অতঃপর পুরুষের সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা নারীর ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। কারণ, পুরুষ ষাট বছর বয়সের পরেও সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম; আর নারীর বয়স চল্লিশের সীমানায় পৌঁছলেই সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা লোপ পায়। সুতরাং একাধিক স্ত্রী গ্রহণে যদি পুরুষের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তাহলে তার অর্ধেক বয়সেরও বেশি সময় ধরে বংশবিস্তারের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এটাই হচ্ছে শরী‘আত কর্তৃক একাধিক স্ত্রী গ্রহণের বৈধতা দানের অন্যতম প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি ও সূক্ষ্ম দর্শন; এটাকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে সম্ভাব্য ক্ষতি ও সংকট দূর করার জন্য এবং নারীদের মাঝে সমতা বিধান ও চরিত্রকে সমুন্নত করার জন্য।
আর আমরা শরী‘আতের অনুসারীগণ অবগত আছি যে, ইউরোপীয়গণ রচিত নিয়ম-কানুন এই ব্যবস্থার (একাধিক স্ত্রী গ্রহণের) স্বীকৃতি দেয়নি; বরং তারা এটাকে কৌতুহল ও ঘৃণার বিষয় এবং ইসলামের উপর অপবাদের ক্ষেত্র বানিয়েছে।
কিন্তু আমরা তাদের চিন্তাবিদ ও সংস্কারপন্থী প্রচারকগণের মনে তার কিছু দিক গ্রহণের ব্যাপারটি অনুভব করতে শুরু করেছি; বিশেষ করে বিধ্বংসী যুদ্ধ, নারীদের একটা বড় ধরনের সংখ্যা বিধবা হওয়া এবং পুরুষদের চেয়ে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে তাদের টনক নড়তে শুরু করেছে।
আর তাদের মধ্যে প্রেমিকা বা বান্ধবী গ্রহণের ছড়াছড়িই তাদের ব্যাপারে আমাদের জন্য দলিল-প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট; কেননা একজন পুরুষের জন্য একাধিক অন্তরঙ্গ বান্ধবী থাকে, যারা তার স্ত্রীর সাথে তার পুরুষত্ব, ভালবাসা ও সম্পদের অংশ ভোগ করে; বরং কোন কোন সময় তাদের কেউ কেউ তার এই সকল ক্ষেত্রে স্ত্রীর অংশের চেয়েও বেশি অংশ ভোগ করে।
এর সাথে আরও সংযুক্ত হল যিনা-ব্যভিচারের বিস্তার, তার উপর ভিত্তি করে সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি, অধিক পরিমাণে জারজ সন্তানের জন্ম এবং মায়েদের পেটের মধ্যস্থিত ভ্রূণ হত্যা।
বরং তারা তাদের জাতিগত সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছে এক ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার উপর; সুতরাং জারজ সন্তান ও অশ্লীলতার ফলে নিক্ষিপ্ত রাস্তায় পড়ে থাকা সন্তান কোন কোন দেশে বৈধ সন্তানদের সমপরিমান হয়ে গিয়েছে।
আর যে সময়ে তারা একাধিক স্ত্রী গ্রহণের বিষয়টিকে নিয়ে উচ্চবাচ্য করে, ঠিক সে মুহূর্তে তাদের পুরুষ ব্যক্তিগণ কর্তৃক হরেক রকম নারীর নিকট আসা-যাওয়া করাটা তাদের নিকৃষ্ট রুচিতে একটা সর্বজনবিদিত গ্রহণযোগ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট কেনেডির স্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, তার স্বামীর ২০০ থেকে ৩০০ বান্ধবী ছিল।
আর তাদের দরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা প্রত্যেকেই একশত নারীর উপর দখলদারিত্ব করার ক্ষমতা রাখে; সুতরাং তাদের উঁচু শ্রেণীর লোকদের অবস্থা কি হতে পারে!।
আর তাদের নিকট একজন পুরুষ নির্দ্বিধায় প্রেমিকাদের একটা বাহিনীর মাঝে আসা-যাওয়া করতে পারে; পক্ষান্তরে যখন সে বিষয়টি মজবুত চরিত্র ও সুন্দর জীবন-যাপন প্রণালীর মাধ্যমে কয়েকজন স্ত্রীর মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন তাদের দৃষ্টিতে সেটা হয়ে দাঁড়ায় মারাত্মক অপবাদ, বরং হারাম কাজ!!!
‘জর্জ কালমানসু’ তার সময়কার (১৮৪১ - ১৯৩৯ খ্রি.) ফ্রান্সের রাজনৈতিক ময়দানের বাঘ এবং ইউরোপের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচিত; তাদের মতে রাজনৈতিক ময়দানে তার শক্ত পদক্ষেপ ছিল। সে তার মত প্রসিদ্ধ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সমর্থ হয়েছিল, অথচ তার ব্যভিচার ও চারিত্রিক কলুষতা ছিল সর্বজন বিদিত ব্যাপার। এসব অপরাধ তাদের নিকট তার মহত্বে!!! বিন্দুমাত্রও ছেদ ঘটায়নি।
এ লোকটির ছিল আটশত বান্ধবী এবং চল্লিশ জন অবৈধ পুত্র সন্তান। আর বলা হয়: সে যখন জানতে পারল যে, তার আমেরিকান স্ত্রী তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তখন সে অর্ধেক রাত্রে জাগ্রত হল এবং সে মহিলাকে ঠিক-ঠিকানা বিহীন অবস্থায় রাতের অন্ধকারে রাস্তার মধ্যে নিক্ষেপ করল। আর তারা অবাক হয়ে গেল যে, এই ব্যক্তি কেন নিজের জন্য যা বৈধ করেছে, তা অপরের জন্য নিষিদ্ধ করল? আর এই কাহিনীর কোন কোন পর্যালোচনাকারী বলেন: কালমানসু (অনুরূপ প্রত্যেক মানুষ খেকো বাঘ), সে ছিল নারীদেরকে সবচেয়ে বেশী অপমানকারী, সে ক্রীড়া-কৌতুকের ছলে বলুক কিংবা রোগের শয্যায়, যে পরিমাণ মন্দ ও নিকৃষ্ট কথা নারীদের ব্যাপারে বলেছে, তা অন্য কেউ বলেনি। [আনিস মানসুর, সহীফাতুল আহরাম ( صحيفة اللأهرام ), ১৩/ ৯/ ১৯৭৯ খ্রি.]
অবশেষে আমরা এই আলোচনার উপসংহারে এই দিকে ইঙ্গিত দিতে চাই যে, শরী‘আত যখন একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করাকে বৈধ করেছে, তখন তাতে স্ত্রীদের মাঝে ভরণ-পোষণ, আবাসন ও সম্পর্কের সকল ক্ষেত্রে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতার শর্তারোপ করেছে; আর যখন ন্যায় বা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে না পারে অথবা যুলুম-নির্যাতনের আশঙ্কা করে, তখন তার জন্য অপর নারীকে বিয়ে করার পদক্ষেপ নেয়া বৈধ নয়।
যেমনিভাবে বৈধ নয় একজন পুরুষের জন্য চারের অধিক বিয়ে করা; আর এটা জাহেলী যুগের প্রভাব বিস্তারকারী অনেক স্ত্রী গ্রহণের অরাজক পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য পরিষ্কার সীমাবদ্ধকরণ। পরিশেষে বলা যায়, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায় বা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে, তার জন্য একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করা বৈধ; তবে বাধ্যতামূলক নয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/602/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।