মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানুষের মধ্যে সাম্য ও সমানাধিকার মানে সৃষ্টিগত ও চরিত্রগতভাবে একরকম ও সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়া। সুতরাং যখনই এই গুণাবলী একরকম হবে অথবা কাছাকাছি পর্যায়ের হবে, তখন সমতা ও সমানাধিকারের বিষয়টি যথার্থ ও কাছাকাছি পর্যায়ের হবে; আর যখন এই গুণাবলী ভিন্নরকম হবে, তখন তার প্রভাবের মধ্যেও ভিন্নতা আবশ্যক হয়ে উঠবে।
আর এই প্রস্তাবনা বা ভূমিকাকে অবলম্বন করে বলা যায় যে, মানব সন্তানদের মধ্যে চুড়ান্ত সাম্য ও সমানাধিকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা একেবারেই অসম্ভব। তবে আমরা বলি যে, এই ক্ষেত্রে মূল বিষয় হল অধিকার ও দায়িত্ব-কর্তব্যের ক্ষেত্রে সমতা। আইন-কানুন ও বিধি-বিধান অনুধাবন, আয়ত্তকরণ, বাস্তবায়ন, সাড়াদান এবং বিচার করার সক্ষমতাসম্পন্ন ন্যূনতম শারীরিক সক্ষমতা ও মানসিক যোগ্যতার সমতা সবার মধ্যে বিদ্যমান থাকার কারণেই তা সম্ভব। কিন্তু জেনে রাখা দরকার যে, মানব সৃষ্টির মূলেই মেধা ও চরিত্রের ব্যবধান রয়েছে। যার ফলে সৃষ্টি হয় কিছু স্বভাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবধান ও প্রতিবন্ধকতা, যেমনটি প্রশ্নে উত্থাপিত হয়েছে।
আর এসব প্রতিবন্ধকতার কিছু কিছু সাময়িক হতে পারে; আর কিছু স্থায়ী হতে পারে। আবার কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যা কমই ঘটে থাকে; আবার কিছু প্রতিবন্ধকতা প্রায়ই ঘটে। তবে প্রত্যেক প্রতিবন্ধকতার প্রভাব তার নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই এই প্রতিবন্ধকতা অন্যান্য অধিকারের ক্ষেত্রে সমতাবিধানে বাধা হবে না।
চরিত্রের ক্ষেত্রে উত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি ও হীন চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি সমান নয়; কিন্তু সে অন্য অধিকারের ক্ষেত্রে তার সমান হতে কোন বাধা নেই। বুদ্ধিমান ব্যক্তি আর নির্বোধ ব্যক্তি সমান নয়; আর নারী তার গুণাবলী, মেধা ও শক্তি-সামর্থ্যে পুরুষের মতো নয় (নারী বিষয়ে স্বতন্ত্র জায়গায় বিস্তারিত আলোচনা আসবে ইনশাআল্লাহ)।
এগুলো হল স্বভাবগত ও সৃষ্টিগত কিছু প্রতিবন্ধকতা।
আর সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মানে হল, অভিজ্ঞতা ও জীবন অনুশীলনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে যেসব প্রতিবন্ধকতার ব্যাপারে সমাজ একমত হয়েছে। মূলত এই ঐকমত্য সৃষ্টি হয় এসব গুণাবলীর পারস্পরিক ব্যবধানের বিষয়ে বুদ্ধিগত নিশ্চিন্তা ও পরিতুষ্টতা থেকে। এরূপ সামাজিক প্রতিবন্ধকতার দৃষ্টান্ত: জ্ঞানী ব্যক্তি ও মূর্খের মাঝে সমতা প্রদানে অস্বীকৃতি। কেননা, সকল মানুষ একমত যে, মূর্খ ব্যক্তি দায়-দায়িত্ব গ্রহণে নেতৃত্বের উপযুক্ত নয় এবং জাতির সমস্যা সমাধান ও সমাজিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে তার উপর নির্ভর করা যায় না।
আর রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা হল রাজনৈতিক অথবা সামরিক কারণে শাসক ও প্রশাসক শ্রেণি কর্তৃক ঐক্যবদ্ধভাবে কোন কোন গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় কিছু গুরুদায়িত্ব প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি। আর এই বিষয়টি কোন প্রকার বাকবিতণ্ডা ছাড়াই সকল জাতির মধ্যে স্বীকৃত।
এর দৃষ্টান্ত: ভিনদেশিকে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক দায়িত্বগ্রহণ থেকে বিরত রাখা। সাধারণত এই প্রশাসনিক দায়িত্ব ও চাকুরি সেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
অনুরূপভাবে নির্বাচনের অধিকার; কোন কোন পেশা গ্রহণ ও বিনিয়োগ নিষিদ্ধকরণ; সামরিক ও কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গের বিশেষ প্রটোকল ও বিধি-বিধান; তাদের ক্ষেত্রে বিদেশি নারী বিবাহে প্রতিবন্ধকতাসহ আরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।
আর এগুলোর মধ্যে আরও অন্তর্ভুক্ত: ইসলামী রাষ্ট্রের কোন কোন প্রশাসনিক পদে যিম্মীদের দায়িত্ব গ্রহণে বাধা প্রদান। আরও একটি উদাহরণ: মুসলিম নারীদের সাথে যিম্মীদের বিয়ে-শাদীতে বাধা দান। এই প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিত বিবরণ অচিরেই আসছে।
আর শেষ দু টি উদাহরণকে শর‘য়ী প্রতিবন্ধকতা হিসেবেও বিবেচ্য। কারণ, এই বিধানসমূহ ইসলামী শরী‘আতে স্বীকৃত। আর এগুলো যৌক্তিক বিষয় ও সঠিক সামাজিক প্রথা থেকে উৎসারিত, যেমনটি পাঠক অবলোকন করে থাকবেন।
এই হচ্ছে কিছু দৃষ্টান্ত, যার মাধ্যমে নিয়ম-নীতি বুঝতে পারা যায় এবং এই মর্মে তুষ্ট হওয়া যায় যে, মানুষের মাঝে চূড়ান্তভাবে সমতা বিধান করা অসম্ভব। বরং যদি সাধারণ সাম্যের কথা বলা হয়, তবে এর উপর ভিত্তি করে এমন কতগুলো বিষয়ের উদ্ভব হবে যা সমাধান করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হবে না এবং তার ফলে মানুষের মেধার অবমুল্যায়ন অবশ্যম্ভাবী হবে এবং তাদের শক্তি-সামর্থ্যের অযথা খরচ হবে। এ কাজটি স্পষ্টত জঘন্য বিশৃঙ্খলা। এই শ্রেষ্ঠত্ব ও অধিকারই বিশ্বব্যবস্থাকে গঠন, সংস্কার, উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে নিয়ে যায়। তা বাতিল করতে গেলে বিশ্বের শাসনব্যবস্থা নৈরাজ্যের দিকে চলে যাবে। আজকের এই দিনে সমাজতন্ত্রের পতনের যে করুণ অবস্থা আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা বুদ্ধিমান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক প্রমাণ।
প্রকৃত বিষয়টি যদি এ রকমই হয়, তবে মেধার বিভিন্নতা এবং তাকে কাজে লাগানো ও তা থেকে উপকৃত হওয়ার পদ্ধতিতে তারতম্যের উপর ভিত্তি করে বস্তুগত তারতম্যের সৃষ্টি হয়; প্রত্যেক মেধার অধিকারী তার মেধা অনুযায়ী সে বস্তুর উপযুক্ত হবে যা থেকে তার পরিবার ও সমাজ উপকৃত হবে। আর এ জন্যই বিভিন্ন বিভাগ ও দফতরের প্রধান, ব্যবস্থাপক ও তাদের নিম্নস্তরের ব্যক্তিবর্গের ক্ষেত্রে দায়িত্বের স্তর বিন্যস্ত করা হয়।
ইসলামী শরী‘আত সুস্থ বিবেক-বুদ্ধির সাথে সংগতি রেখেই সেই সমতার দিকে আহ্বান করতে পারে না, যাতে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র, ব্যক্তিগত মেধাসমূহ এবং মানবসন্তানদের মাঝে বিদ্যমান পার্থক্যকে বাতিল করে দেয়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে এ পার্থক্যের প্রভাব রয়েছে। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংস্কার সাধনই হল শরী‘আতের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
সুতরাং এটাই হচ্ছে সমতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ।
অন্যদিকে জাতি, বর্ণ কিংবা ভাষার ভিত্তিতে পার্থক্যের কোন প্রভাব ইসলামী শরী‘আতে নেই। কিন্তু শরী‘আতে এই দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এ ধরনের পার্থক্য আল্লাহ তা‘আলার নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম নিদর্শন যা তাঁর বড়ত্ব, শক্তির পরিপূর্ণতা এবং তাঁর ইবাদতের উপযুক্ততার উপর জ্বলন্ত প্রমাণ স্বরূপ।
আর এই প্রকারের ব্যবধানের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, যে দিকে ইসলাম ইঙ্গিত করেছে। আর তা হচ্ছে পারস্পরিক পরিচিতি ও আন্তরিক বন্ধন সৃষ্টি। আল-কুরআনুল কারীমের বক্তব্য:
“হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার।” — (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)
এ বিষয়টিকে দ্বীনে ইসলামের যা দ্বারা জোর দেওয়া যায় তা হচ্ছে, মুসলিমদের নিকট এটি স্বীকৃত বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলা সব জাতির উপরে কোনো জাতিকে মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেন নি, আর তিনি কোনো কওমের উপর অন্য কওমকে শ্রেষ্ঠত্বও দেন নি। আল্লাহ তা‘আলা এবং জনগণের নিকট মানুষের মূল্যায়ন হবে তার উত্তম আচরণ, সৎ আমল এবং আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর নির্দেশ অনুসরণের ক্ষেত্রে যথাযথ চেষ্টা-সাধনার দ্বারা। শরী‘আতের পরিভাষায় এর নাম ‘তাকওয়া’ বা আল্লাহভীতি। আল-কুরআনের ভাষায়:
“তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সে ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী।” — (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)
আর ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মানুষের মর্যাদার মাপকাঠি হিসেবে) এই নীতিরই পুনরাবৃত্তি করেছেন তাঁর বক্তব্যের দ্বারা:
« يا أيها الناس ! إن ربكم واحد , وإن أباكم واحد , كلكم لآدم و آدم من تراب , إن أكرمكم عند الله أتقاكم , و ليس لعربي على أعجمي ولا لعجمي على عربي ولا لأحمر على أبيض ولا أبيض على أحمرفضل إلا بالتقوى ...» ( أخرجه أحمد و الترمذي عن أبي نضرة و قال الهيثمي : رجاله رجال الصحيح ).
“হে মানুষ সকল! নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক এক, তোমাদের পিতা এক, তোমরা সকলেই এক আদমের সন্তান, আর আদম মাটি থেকে তৈরি। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, যিনি আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি তাকওয়ার অধিকারী। অনারবের উপর আরবের, আরবের উপর অনারবের, সাদার উপর লালের এবং লালের উপর সাদার তাকওয়া ব্যতীত অন্য কোন মর্যাদা নেই ...” — (হাদিসটি ইমাম আহমদ ও তিরমিযী আবূ নযর থেকে বর্ণনা করেন; হাইসামী বলেন: তার বর্ণনাকারীগণ সহীহের বর্ণনাকারী)।
আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল:
« أي الناس أحب إلى الله؟ قال : « أنفع الناس للناس» ( أخرجه التبراني و غيره بألفاظ متقاربة , و هذا لفظ التبراني من حديث ابن عمر ).
“কোন মানুষ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়? তিনি বললেন: মানুষের মধ্য থেকে যে মানুষ অন্য মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকারকারী।” — (হাদিসটি তাবারানী বর্ণনা করেন এবং অন্যরাও কাছাকাছি শব্দে বর্ণনা করেছেন। এখানে এটি ইবনু ওমর রা. এর হাদিস, যা তাবারানীর শব্দে বর্ণিত)। [দেখুন: আল-মাকাসেদুল হাসানা ( المقاصد الحسنة ), পৃ. ২০০ - ২০১]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/602/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।