hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের কিছু আলোচিত বিষয়ে অগ্রহণযোগ্য বিভ্রান্তি

লেখকঃ শাইখ সালেহ ইবন আবদুল্লাহ আল-হুমাইদ

২০
দণ্ডবিধি (হুদূদ) ও শারীরিক শাস্তিসমূহ
শারীরিক এবং শারীরিক নয় এমন সব হদ ও শাস্তিসমূহ কতগুলো বিধিবিধানের নাম, যেগুলোকে শরী‘আত আইন লংঘনকারীদের শাস্তি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছে। অনুরূপ শাস্তির বিধান পৃথিবীর সব আইনেই আছে।

এখন লক্ষ্য করতে হবে এই আইনপ্রয়োগ থেকে প্রাপ্ত উপকারিতা ও আইন প্রয়োগের প্রভাব ও ফলাফলের প্রতি; তা নিরাপত্তা রক্ষা করছে কিনা এবং তা মানুষের জীবন-যাপন, সফর ও চরিত্র সংরক্ষণে সক্ষম কিনা।

কোনো আইন থেকে একটি ধারা বা কোনো বিধিমালা থেকে একটি বিধান ছিনিয়ে বের করে তাকে ঐ আইন বা বিধিমালার দোষরূপে প্রকাশ করা সুবিচারের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং ইনসাফের দাবি হল গোটা বিধিমালা ও আইনকে সামগ্রিকভাবে দেখা— অপরাধের শর্ত ও তার সংঘটন, শাস্তিপ্রদানের শর্ত এবং কারণসমূহকে দেখা।

উদাহরণস্বরূপ, ইসলামের সুদীর্ঘ ইতিহাসে উল্লেখিত হাত কাটা ও পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার এই শাস্তিসমূহের বাস্তবায়নের অতি স্বল্প-সংখ্যক বাস্তব উদাহরণ আপনি পাবেন, যে সংখ্যা এক হাতের আঙুলের সংখ্যা অতিক্রম করবে না। এটা এ জন্য নয় যে, উল্লেখিত শাস্তির বিধানসমূহ অবাস্তব ও অকার্যকর; বরং এর কারণ হলো শাস্তির কঠোরতার মধ্য দিয়ে শরী‘আত কর্তৃক বাস্তবায়িত শান্তি ও নিরাপত্তা, আর তারপর শাস্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরোপিত শর্তসমূহ; কারণ, সন্দেহ-সংশয়ের কারণেই হদ্ রদ করা হয়।

ব্যাপারটি আরও বাস্তবিকভাবে বোঝার জন্য আমরা আধুনিক কালের আইন-কানুনের বাস্তবতা আলোচনা করব।

আধুনিক জাতিগুলো, বিশেষ করে পশ্চিমা রাষ্ট্রসমূহ বিধ্বংসী অস্ত্র, দ্রুত মৃত্যু কার্যকারী অস্ত্র, আধুনিক প্রযুক্তি, সুদক্ষ্ম উপকরণ এবং চমৎকার আবিষ্কার করতে পেরেছে, বিশেষ করে অপরাধের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, গবেষণা ও তৎসংশ্লিষ্ট পদ্ধতি, অপরাধীদের অনুসন্ধানের জন্য জনসচেতনতামূলক মিডিয়া এবং সংস্কৃতি, শিক্ষার অগ্রগতি ও সচেতনতা দ্বারা ব্যক্তি ও সংগঠন আলোকিত করা ইত্যাদিতে। আর এতসব সত্ত্বেও অন্যায়-অপরাধের মাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অপরাধীদের ঔদ্ধত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা বৃদ্ধিই পাচ্ছে। এটা হল একটা দিক।

অপরদিকে তাদের মনোযোগ অপরাধী ও তাদের কুকর্মকে সংস্কার ও সংশোধন। তারা চেয়েছে জেলখানাকে তারা সংশোধনের স্থান ও সংস্কার-কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করবে এবং অপরাধীদেরকে রোগী হিসেবে বিবেচনা করে তাদেরকে শাস্তির চাইতে চিকিৎসার বেশি উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আর তাদের অপরাধের দায় চাপিয়েছে উত্তরাধিকারগত, পরিবেশগত ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার উপর। এটি সঠিক, অস্বীকার করার উপায় নেই; কিন্তু বিষয়টি এই একটি দিকের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। কারণ, অসুস্থ অঙ্গ অনেক সময়ে কেটে ফেলার মধ্যেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে, যাতে তার রোগ গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে না পারে; আর তা যৌক্তিক ও বাস্তব বলেই স্বীকৃত।

আর সামাজিক বিশৃঙ্খলা তো সমাজের ব্যক্তিদের দুর্নীতি ও অন্যায়েরই সমষ্টি।

অন্যদিকে জেলখানায় অনেক অপরাধীর অন্তর আরও কঠোর হয়ে যায় এবং সেখান থেকে তারা তীব্র ক্ষোভ ও প্রচণ্ড দুঃখ নিয়ে বের হয়। সেখানে চোর, গুণ্ডা ও খুনীরা সহজেই তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে এবং তারা জেলখানাকে পারস্পরিক আলোচনা ও কাজ বণ্টনের অভয়ারণ্য বানিয়ে নিতে পারে। তাদের এই অপকর্মে তাদের বিভ্রান্ত ভাইয়েরা খাঁচার বাইরে থেকে এ ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে।

আর আপনি পর্যবেক্ষণ করে এবং বুঝে থাকবেন যে, অপরাধীদের সংশোধন-পরিকল্পনা ও নরম চিকিৎসার ধারণার উপর অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, তা সত্ত্বেও অপরাধ বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই পরিকল্পনাটি নিছক একটা কল্পনা ও মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

আধুনিক মানবসমাজ ও সভ্য জগতে বেপরোয়াভাব, বৈধকরণ এবং মানুষের জান, মাল ও ইয্‌যতকে সস্তা পণ্যরূপে গণ্য করার ক্ষেত্রে এমনভাবে শীর্ষে পৌঁছে গেছে; যার ফলে মানবরচিত আইন-কানুনে এসব ভয়ংকর অপরাধীদের কুকর্মের যে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, তা তাদের অপরাধের তুলনায় খুবই দুর্বল ও ক্ষীণ। এসব খুনী-হত্যাকারী ও রক্তপাতকারীদের কী করুণা বা ভদ্রতা প্রাপ্য হতে পারে? তাদের অপরাধের বলি নিরপরাধ মানুষদের ব্যাপারে কি তারা দয়া বা করুণার পরিচয় দিয়েছে? আর তারা কি সমগ্র সমাজের প্রতি দয়া দেখিয়েছে? বরং অপরাধ বিষয়ক পদক্ষেপের যত উন্নতি হচ্ছে, অপরাধীদের কৌশল ও উপায়-উপকরণেরও তত উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি তারা এমন বাহিনী গঠন করছে, যা কখনও কখনও সামর্থ্য, উপায়-উপকরণ ও প্রস্তুতির দিক থেকে রাষ্ট্র ও সরকারকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। মাদকব্যবসায়ীদের সংবাদ ও অপরাধের বৃদ্ধির খবর আমরা শুনে যাচ্ছি; তারা দৃষ্টির আড়াল থেকে বের হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এমনকি তারা সরকার ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সাথে প্রকাশ্যে দরদস্তুর করছে! আমি জানি না ঐ দরদ উথলে-পড়া ব্যক্তিরা তাদের ক্ষেত্রে কোন শাস্তি দিবেন??

পূর্বালোচনার উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, বর্তমান ধারার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতা মানুষকে বিপদ ও দুরাবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মানুষ এখন পৃথিবীর আকাশে, জলে, স্থলে, আপন গৃহে, অফিস-আদালতে, শিল্প-কারখানায় ও পথে-ঘাটে ভয়-ভীতি ও ত্রাসে জীবনযাপন করছে।

আর আজকের অপরাধীরা (যেমনটি ইতোপূর্বে বলেছি) শিক্ষা-দীক্ষায় পুরো প্রস্তুত; পুলিশ প্রশাসনের উন্নতি এবং সংশ্লিষ্ট উপায়-উপকরণসমূহের নতুনত্বের সাথে সাথে তারাও উন্নত হয়ে যায়; আর শান্তি ও নীরাপত্তারক্ষী বাহিনীদের পরিকল্পনা করার মতো তারাও পরিকল্পনা করে। উভয়ের মধ্যে সবসময়ে যুদ্ধাবস্থা— এই অবস্থা দূর করতে হলে সুবিচারপূর্ণ সতর্ককারী শাস্তির কোন বিকল্প নেই। তবুও কি তারা বুঝতে পারছে না...!

পরিশেষে বলা যায়, কিছু কিছু শারীরিক শাস্তির বিধান অনেক আধুনিক আইন-কানুনেও প্রয়োগ করা হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মৃত্যুদণ্ড। এই শাস্তিটি কোনো কোনো আইনে বিলুপ্তও হয়েছিল, কিন্তু তারপর তারা আবার ফিরেও এসেছে। আর আমাদের মুসলিমদের গ্রন্থে একটি ব্যাপক ও অকাট্য বক্তব্য রয়েছে—

﴿ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [ سورة المائدة : 50]

“নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধানদানে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর?” — (সূরা আল-মায়িদা: ৫০)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন