hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহুবিবাহ

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মদ আলী সাবুনী

১৩
২য়ত: শরঈ তাৎপর্য
এখন আমরা শরঈ তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করব যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহের অন্যতম তাৎপর্যের অংশ। এ বিষয়টি খুব সহজেই উপলব্ধি করা সম্ভব।

এ সব বিবাহের পেছনে অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, তৎকালীন আরব সমাজের কিছু নিন্দনীয় রীতি-নীতির বিলোপ সাধন করা।

উদাহরণ স্বরূপ, পালক পুত্রকে ঔরসজাত পূত্রের মত মনে করা। এটি ইসলামপূর্ব যুগ থেকে আরবরা তাদের বাপ-দাদা থেকে প্রাপ্ত ধর্মীয় কুসংস্কার হিসেবে মেনে আসছিলো।

তারা নিজের ঔরসজাত সন্তান নয় এমন কাউকে পালকপুত্র বানিয়ে সম্পদের উত্তরাধিকার,বিবাহ, তালাক ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে প্রকৃত ঔরসজাত পুত্রের মনে করত। নিতান্ত অন্ধ অনুসরণের বশবর্তী হয়ে তারা এ কুপ্রথা পালন করে আসত। জাহেলী যুগে একজন আরেকজনের সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে ধরে নিয়ে বলত, “তুমি আমার ছেলে। আমি তোমার উত্তরাধিকার হব আর তুমি আমার উত্তরাধিকার হবে।”

ইসলাম তাদের এই অন্যায়ের স্বীকৃতি দিতে পারে না আবার বিষয়টিকে অন্ধকারের মধ্যেও ঘুরপাক খেতে দিতে চায় না। তাই আল্লাহর পক্ষ থেকে ইলহামের ভিত্তিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরবদের রীতি অনুযায়ী পোষ্যপুত্র গ্রহণ করলেন। এটা নবুওয়তের পূর্বের ঘটন। সেই পোষ্যপুত্রের নাম যায়েদ বিন হারেসা।

যায়েদ বিন হারেসাকে পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণের পেছনে একটি চমকপ্রদ ঘটনা রয়েছে যা মুফাসসিরগণ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সীরাত লেখকগণ আলোচনা করেছেন। পুস্তকের কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় এখানে তা উল্লেখ করা হল না।

যাহোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যায়েদ বিন হারেসাকে পালক পুত্র বানানোর পর থেকে মানুষ তাকে ‘মুহাম্মদের ছেলে’ বলে ডাকতে লাগলো।

প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা. হতে সহীহ বুখারী ও মুসলিম একটি হাদীস উল্লিখিত হয়েছে। সেটি হল:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোলাম যায়েদ বিন হারেসাকে যায়েদ বিন মুহাম্মদ বা মুহাম্মদের পুত্র যায়েদ বলে ডাকতাম। একপর্যায়ে কুরআনের আয়াত নাজিল হল,

ادْعُوهُمْ لِآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِندَ اللَّـهِ

“তোমারা তাদেরকে তাদের পিতৃ পরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায় সঙ্গত।” (সূরা আহযাব: ৫)

এই আয়াত নাজিলের পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যায়েদ রা. কে লক্ষ্য করে বললেন: “তুমি যায়েদ বিন হারেসা বিন শুরাহবিল।”

অতঃপর তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ফুফাতো বোন যয়নব বিনতে জাহাশ রা. এর সাথে বিয়ে দিলেন। বিয়ের পর তারা অল্প কিছু দিন ঘর-সংসার করলেন কিন্তু দাম্পত্য জীবন বেশী দিন টিকল না। উভয়ের মাঝে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠল। যয়নব রা. যায়েদ রা. কে কঠোর ভাষায় কথা বলতেন এবং নিজেকে তার চেয়ে সম্ভ্রান্ত ভাবতেন। কারণ যায়েদ ছিলেন কৃতদাস যাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছেন। পক্ষান্তরে তিনি (যয়নব রা.) ছিলেন সম্ভ্রান্ত বংশীয় নারী।

ফলে যায়েদ রা. তাকে তালাক প্রদান করলে মহান আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দিলেন যয়নবকে বিবাহ করার জন্য। উদ্দেশ্য হল, ‘পোষ্যপুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা যাবে না’ মর্মে জাহেলী যুগের কুপ্রথাকে ভেঙ্গে ইসলামে এর বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করা।

কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক শ্রেণীর লম্পট ও মুনাফিকদের ব্যাপারে আশঙ্কা করতেন যে,তারা এ ব্যাপারে সমালোচনার ঝড় তুলবে। তারা বলে বেড়াবে যে, মুহাম্মদ তার পুত্রবধূকে বিবাহ করেছে! তিনি এমন সংশয় এবং আশঙ্কার দোলায় দোল খাচ্ছিলেন এমন সময় আল্লাহ রব্বুল আলামীন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে লক্ষ্য করে কঠোর ভাষায় তিরস্কার করলেন এই বলে:

وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّـهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَاهُ ۖ فَلَمَّا قَضَىٰ زَيْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا لِكَيْ لَا يَكُونَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌ فِي أَزْوَاجِ أَدْعِيَائِهِمْ إِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا ۚ وَكَانَ أَمْرُ اللَّـهِ مَفْعُولًا

“আর আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিৎ। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সে সব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।” (সূরা আহযাব: ৩৭)

এ ভাবেই পোষ্যপুত্রের বিধানটির সমাপ্ত ঘটল এবং অজ্ঞতার যুগের এই কুপ্রথাটি বাতিল হল যা ছিল অন্ধভাবে পালিত তাদের একটি ধর্মীয় রীতি।

অত:পর নতুন এই শরীয়তের বিধানটিকে শক্তিশালী করার নিমিত্তে নাযিল হল এই আয়াতটি:

ماَ كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَـٰكِن رَّسُولَ اللَّـهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ ۗ وَكَانَ اللَّـهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا

“মুহাম্মদ তোমাদের কোন পুরুষ (প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ) এর পিতা নন;বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ পয়গম্বর। আল্লাহ সবকিছুই পরিজ্ঞাত।” (সূরা আহযাব: ৪০)

মোটকথা, এ বিবাহটি ছিল মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ ক্রমে। এর পেছনে কোন পার্থিব লোভ-লালসা বা প্রবৃত্তির তাড়না ছিল না যেমনটি আল্লাহর দুশমন মিথ্যুকেরা অভিযোগ করে থাকে। বরং এ বিবাহ ছিল এক মহৎ উদ্দেশ্যে। আর সেটি হল একটি জাহেলী কুপ্রথার বিলুপ্তি সাধন।

আল্লাহ তাআলা এ বিবাহের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন:

زَوَّجْنَاكَهَا لِكَيْ لَا يَكُونَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌ فِي أَزْوَاجِ أَدْعِيَائِهِمْ إِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا ۚ وَكَانَ أَمْرُ اللَّـهِ مَفْعُولًا

“যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সে সব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।” (সূরা আহযাব: ৩৭)

ইমাম বুখারী রা. তার সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন, যয়নব রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অন্যান্য পত্নীদের উপর গর্ব করে বলতেন,

زَوَّجَكُنَّ أَهَالِيكُنَّ وَزَوَّجَنِي اللَّهُ مِنْ فَوْقِ سَبْعِ سَمَوَاتٍ

“তোমাদের বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবারবর্গ কিন্তু আমার বিবাহ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের উপর থেকে।” (সহীহ বুখারী, কিতাবুত তাওহীদ)

এভাবেই ইসলামী শরীয়তের একটি বিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে মহাপ্রকৌশলী মহাজ্ঞানী আল্লাহর নির্দেশে এ বিবাহ সংঘটিত হয়েছিল।

সুতরাং পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই মহান সত্তার যার কৌশল অতি নিপুণ যা মানবিক জ্ঞান-বুদ্ধি দ্বারা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। আল্লাহ যথার্থই বলেছেন:

وَمَا أُوتِيتُم مِّنَ الْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا

“তোমাদেরকে খুব কম জ্ঞান দান করা হয়েছে।” (সূরা ইসরা: ৮৫)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন