hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে দাস বিধি

লেখকঃ আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান

১০
লিখিত চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি দান:
এটা দাস-দাসীর জন্য মুক্তি পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ, যখন সে নিজেই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হবে এবং সেই অর্থের ব্যাপারে গোলাম ও মনিব ঐক্যমত পোষণ করবে যে, গোলাম কিস্তিতে তা মনিবকে পরিশোধ করে দেবে; অতঃপর যখন সে তা পরিশোধ করবে, তখন সে স্বাধীন হয়ে যাবে; আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ ... وَٱلَّذِينَ يَبۡتَغُونَ ٱلۡكِتَٰبَ مِمَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُمۡ فَكَاتِبُوهُمۡ إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيهِمۡ خَيۡرٗاۖ وَءَاتُوهُم مِّن مَّالِ ٱللَّهِ ٱلَّذِيٓ ءَاتَىٰكُمۡۚ ... [ النور : ٣٣ ]

“... আর তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে কেউ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি চাইলে, তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার। আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে দান কর।” [সূরা আন-নূর: ৩৩]

ফকীহগণের দু’টি অভিমত:

গোলাম কর্তৃক মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তির আবেদনে সাড়া দেওয়া মনিবের উপর ওয়াজিব (আবশ্যক) হবে কি?

প্রথম অভিমত: এই ধরনের আবেদনে সাড়া দেওয়া ওয়াজিব নয়, বরং মুস্তাহাব; আর এটাই হলো বিভিন্ন নগর ও শহরের আলেমদের মধ্য থেকে অধিকাংশ ফকীহ’র অভিমত।

তাঁদের দলীল: আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ﴿ إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيهِمۡ خَيۡرٗاۖ ﴾ [যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার] [সূরা আন-নূর: ৩৩] সুতরাং " إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيهِمۡ خَيۡرٗاۖ " বাক্যটি স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে যে, আল্লাহ তা‘আলার বাণী: " فَكَاتِبُوهُمۡ ..." [তবে তোমরা তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও ...] আয়াতের মধ্যকার ‘আমর’ বা নির্দেশটি ওয়াজিব থেকে মুস্তাহাবে রূপান্তরিত হয়েছে। সুতরাং যখন গোলাম তার মনিবকে বলবে: এই পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে আপনি আমাকে মুক্ত করে দেওয়ার চুক্তিপত্রে সই করে দিন, আর মনিব যখন বলবে: তোমার মাঝে কোনো কল্যাণ আছে বলে আমার জানা নেই, তখন মনিবের কথাই গ্রহণযোগ্য হবে; কারণ, আমানতদারীতা ও সততার দিক থেকে তার গোলামের ব্যাপারে তিনিই সবচেয়ে বেশি ভাল জানেন।

দ্বিতীয় অভিমত: মনিবের উপর আবশ্যক হলো গোলাম কর্তৃক তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তির আবেদন করলে তা গ্রহণ করা এবং তার উপর ওয়াজিব হলো যখন সে উভয়ের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্ধারিত অর্থ আদায় করে দিবে তখন তাকে মুক্ত করে দেওয়া।

আর কুরতুবী’র বক্তব্য অনুযায়ী যাঁরা এই অভিমতের প্রবক্তা, তাঁরা হলেন: ‘ইকরিমা, ‘আতা, মাসরুক, ‘আমর ইবন দিনার, দাহ্হাক ইবন মুযাহেম এবং আহলে যাওয়াহের মধ্য থেকে একদল আলেম।

আর তাঁরা ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র কর্মকাণ্ডকে যুক্তি হিসেবে পেশ করেছেন; আর তা হলো সিরীন আবূ মুহাম্মদ ইবন সিরীন আনাস ইবন মালেক রা. এর নিকট তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তির আবেদন করেছিলেন, আর তিনি (আনাস রা.) ছিলেন তার মনিব (মাওলা); অতঃপর আনাস রা. অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছিলেন, ফলে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু দোররা উত্তোলন করে তাঁকে সতর্ক করলেন এবং আল্লাহ তা‘আলা’র বাণী তিলাওয়াত করলেন:

﴿ فَكَاتِبُوهُمۡ إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيهِمۡ خَيۡرٗاۖ ﴾ [ النور : ٣٣ ]

“তাহলে তোমরা তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার।” [সূরা আন-নূর: ৩৩]

অতঃপর আনাস রা. চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন; আর ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আনাস রা. এর উপর তাঁর উপর ওয়াজিব না হওয়া কেবল কোনো বৈধ কর্মের ব্যাপারে দোররা উত্তোলন করেন নি।

আর ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টিকে আরও মজবুত করে নিম্নোক্ত আয়াতের শানে নুযুল (আয়াত নাযিলের কারণ)।

﴿وَٱلَّذِينَ يَبۡتَغُونَ ٱلۡكِتَٰبَ مِمَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُمۡ ...

[মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে কেউ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি চাইলে ...] [সূরা আন-নূর: ৩৩]

কুরতুবী’র বর্ণনা অনুযায়ী আয়াতটি হুয়াইতিবের ‘সবীহ’ নামক গোলামের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে; সে তার মনিবের নিকট তাকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য লিখিত চুক্তির আবেদন করে, কিন্তু ‘হুয়াইতিব’ সে আবেদন নামঞ্জুর করে; অতঃপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এই আয়াতটি নাযিল করেন; তারপর হুয়াইতিব তাকে একশত দিনারের বিনিময়ে মুক্ত করে দেওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন এবং তাকে বিশ দিনার দান করলেন; অতঃপর ‘সবীহ’ তা পরিশোধ করলে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।

ইসলাম কর্তৃক প্রবর্তিত কতগুলো বিধি-বিধানের মাধ্যমে গোলামের উপর ‘মুকাতাবা’ চুক্তিকে সহজ করে দেওয়া হয়েছে; তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিয়মনীতি হল:

১. ইসলাম যাকাতের মাল থেকে ‘মুকাতিব’ গোলামকে মুক্ত করার সুযোগ করে দিয়েছে; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা সাধারণভাবে বলেছেন:

﴿ إِنَّمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ ... وَفِي ٱلرِّقَابِ ... [ التوبة : ٦٠ ]

“সদকা তো শুধু ফকীরদের জন্য ... এবং দাসমুক্তিতে ...।” [সূরা আত-তাওবা: ৬০]

২. গোলাম যে অর্থ মনিবকে প্রদান করবে, তা বিভিন্ন কিস্তিতে পরিশোধ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে; কেননা, ইমাম বুখারী ও আবূ দাউদ র. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন:

« جاءتني بريرة فقالت كاتبت أهلي على تسع أواق في كل عام أوقية فأعينيني ... » . ( رواه البخاري و أبو داود ) .

“বারীরা রা. আমার কাছে এসে বলল, আমি আমার মালিক পক্ষের সাথে নয় উকিয়া দেওয়ার শর্তে ‘মুকাতাবা’ নামক দাস-দাসী আযাদ করার লিখিত চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছি— প্রতি বছর যা থেকে এক উকিয়া করে দেওয়া হবে; সুতরাং আপনি আমাকে (এই ব্যাপারে) সাহায্য করুন।” - [ বুখারী ও আবূ দাউদ ]।

৩. মনিবের উপর কর্তব্য হলো তার গোলামের মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি বাস্তবায়নের অর্থের যোগান দানে সহযোগিতা করা, যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা আল-কুরআনের মধ্যে তাকে এই ব্যাপারে নির্দেশ করেছেন; আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ ... فَكَاتِبُوهُمۡ إِنۡ عَلِمۡتُمۡ فِيهِمۡ خَيۡرٗاۖ وَءَاتُوهُم مِّن مَّالِ ٱللَّهِ ٱلَّذِيٓ ءَاتَىٰكُمۡۚ ﴾ [ النور : ٣٣ ]

“... তাহলে তোমরা তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে কল্যাণ আছে বলে জানতে পার। আর আল্লাহ্ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা থেকে তোমরা তাদেরকে দান কর।” [সূরা আন-নূর: ৩৩]

সহযোগিতার দু’টি পর্যায়:

- হয় সে (মনিব) তাকে তার হাতে যা আছে, তা থেকে কিছু প্রদান করবে।

- নতুবা সে চুক্তি মোতাবেক গোলাম কর্তৃক প্রদেয় অর্থ থেকে অংশবিশেষ ছাড় দিয়ে দেবে।

আর আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু চুক্তি মোতাবেক অর্থের এক-চতুর্থাংশ ছাড় দেওয়াকে উত্তম মনে করেছেন; আর আবদুল্লাহ ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার এক-তৃতীয়াংশ ছাড় দেওয়াকে উত্তম মনে করেছেন; আর এই ধরনের সহযোগিতাকে কেউ কেউ ওয়াজিব মনে করেন।

ইমাম শাফে‘য়ী র. বলেন: সহযোগিতার জন্য মনিবকে বাধ্য করা হবে; আর মনিব যদি মারা যায় এবং সে তার ‘মুকাতিব’ গোলামকে অর্থিক সহযোগিতা না করে থাকে, তাহলে বিচারক তার ওয়ারিসদেরকে তাকে সহযোগিতার জন্য নির্দেশ প্রদান করবে।

৪. যখন গোলাম চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত অর্থ তার মনিবকে পরিশোধ করে দিবে, তখন সে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্ত হয়ে যাবে এবং মনিব কর্তৃক আযাদ বা মুক্ত করার অর্থবোধক কোনো শব্দ উচ্চারণের প্রয়োজন হবে না।

৫. কুরতুবী র. তাঁর তাফসীরের মধ্যে পূর্ববর্তী কোনো কোনো আলেমের নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন: যখন গোলামের মুক্তির জন্য তার ও মনিবের মধ্যকার চুক্তি সম্পাদনের কাজ সম্পন্ন হবে, তখন এই চুক্তির কারণে সে মুক্ত হয়ে যাবে এবং সে আর কখনও দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হবে না; আর এই অবস্থায় সে তার মনিবের নিকট আর্থিকভাবে ঋণী হবে, যেই পরিমাণ অর্থের ব্যাপারে তাদের উভয়ের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

এসব বিধিবিধানকে ইসলাম ‘মুকাতিব’ গোলামের জন্য তার মুক্তির ব্যাপারে অপরাপর শরীয়তসম্মত উপায় হিসেবে প্রণয়ন করেছে; বরং এগুলো মুক্তির দরজা উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির জন্য বড় ধরনের উপায়সমূহের অন্তর্ভুক্ত, দাস-দাসীদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি তার মনের ভিতরে মুক্তির আগ্রহ অনুভব করে; আর সে তার মনিব কর্তৃক অদূর ভবিষ্যতে স্বেচ্ছায় তাকে মুক্ত করার সুযোগ দিবে কি দিবে না, সেই অপেক্ষা করবে না; কারণ, গোলাম যখন মনিবের নিকট তাকে মুক্তি দানের চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার জন্য আবেদন করবে, তখন মনিব কর্তৃক সেই চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া আবশ্যক হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন