hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে দাস বিধি

লেখকঃ আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান

১৩
নির্যাতনমূলক প্রহারের কারণে মুক্তি দান:
আর কোনো ফকীহ তথা ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞের মতে এটাও দাস-দাসী মুক্ত করার উপায়সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি উপায়; আর তাদের মধ্যে হাম্বলী মাযহাবের আলেমগণও রয়েছেন। আর আমরা পূর্বে এমন নিয়মনীতি আলোচনা করেছি, যা দাস-দাসীর সাথে আচার-ব্যবহারের পদ্ধতি হিসেবে ইসলাম প্রণয়ন করেছে; সুতরাং মনিবের জন্য তার ও তার দাস-দাসীর মাঝে সুন্দর সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এই মজবুত নিয়মনীতি থেকে বের হয়ে যাওয়া বৈধ হবে না; বরং এই সম্পর্কটি ভালবাসা, অনুকম্পা ও পারস্পরিক সম্প্রীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক হবে ... যাতে দাস-দাসী তার নিজস্ব অস্তিত্ব ও মানবতাকে অনুভব করতে পারে এবং সে জানতে পারে যে, সে অন্যান্য মানুষের মতই সৃষ্ট মানুষ, তার সম্মান পাওয়া ও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের কাউকে যখন তার গোলামকে নির্যাতন ও প্রহার করতে এবং তাকে অপমান-অপদস্থ করতে দেখতেন, তখন তিনি তার প্রতিবাদ করতেন; সহীহ হাদিসের মধ্যে রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আবূ মাস‘উদ রা. কর্তৃক তার গোলামকে প্রহার করতে দেখলেন, তারপর তিনি তাকে নিন্দা করে বললেন:

« اعلم يا أبا مسعود أن الله عز و جل أقدر عليك من هذا الغلام » .

“হে আবূ মাস‘উদ! জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এই গোলামের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নিতে তোমার উপর সর্বশক্তিমান।”

আর যখন ইসলাম গোলাম খারাপ কাজ করলে তার মনিব কর্তৃক তাকে শিক্ষামূলক শাস্তি দেওয়ার বিষয়টিকে বৈধ করে দিয়েছে, তখন ইসলামের দৃষ্টিতে এই শাস্তির জন্য একটা নির্ধারিত সীমারেখা রয়েছে; সুতরাং মনিবের জন্য সেই সীমা অতিক্রম করা বৈধ হবে না; আর যখন সে তা লংঘন করবে, যেমন: মনিব কর্তৃক তার গালে চপোটাঘাত করা, অথবা তার শরীরের সংবেদনশীল কোনো স্থানে আঘাত করা ... তখন এই সীমালংঘনটি দাসত্ব থেকে তার মুক্তির জন্য শরী‘য়ত সম্মত ও ন্যায়সঙ্গত কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বায়হাকী র. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের মধ্যে আছে:

« كُنَّا بَنِي مُقَرِّنٍ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ لَنَا خَادِمٌ إِلَّا وَاحِدَةٌ , فَلَطَمَهَا أَحَدُنَا , فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : أَعْتِقُوهَا . قَالُوا : لَيْسَ لَهُمْ خَادِمٌ غَيْرُهَا , قَالَ : فَلْيَسْتَخْدِمُوهَا , فَإِذَا اسْتَغْنَوْا عَنْهَا فَلْيُخَلُّوا سَبِيلَهَا » .

“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে বনী মুকাররিন গোত্রের লোক ছিলাম, একজন দাসী ছাড়া আমাদের আর কোনো খাদেম ছিল না; সুতরাং ঐ দাসীকে আমাদের একজন চপোটাঘাত করল, তারপর এই বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পৌঁছলে তিনি বললেন: তোমরা তাকে মুক্ত করে দাও। তারা বললেন যে, সে ব্যতীত তাদের আর অন্য কোনো খাদেম নেই; তখন তিনি বললেন: (এই অবস্থায়) তারা যেন তার সেবা গ্রহণ করে; তারপর যখন তাদের নিকট তার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়, তখন তারা যেন তাকে মুক্ত করে দেয়।”

আর ইমাম মুসলিম র. তাঁর সনদে শো‘বা র. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ফারাস র. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:

«سَمِعْتُ ذَكْوَانَ يُحَدِّثُ عَنْ زَاذَانَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ دَعَا بِغُلاَمٍ لَهُ , فَرَأَى بِظَهْرِهِ أَثَرًا , فَقَالَ لَهُ : أَوْجَعْتُكَ ؟ قَالَ : لاَ , قَالَ : فَأَنْتَ عَتِيقٌ . قَالَ : ثُمَّ أَخَذَ شَيْئًا مِنَ الأَرْضِ , فَقَالَ : مَا لِى فِيهِ مِنَ الأَجْرِ مَا يَزِنُ هَذَا ؛ إِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : « مَنْ ضَرَبَ غُلاَمًا لَهُ حَدًّا لَمْ يَأْتِهِ , أَوْ لَطَمَهُ ؛ فَإِنَّ كَفَّارَتَهُ أَنْ يُعْتِقَهُ » .

“আমি যাকওয়ান র. কে যাযান র. এর নিকট থেকে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি যে, আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু তাঁর এক গোলামকে ডাকালেন; এরপর তার পৃষ্ঠদেশে (প্রহারের) দাগ দেখতে পেলেন। অতঃপর তিনি তাকে বললেন: আমি কি তোমাকে ব্যথা দিয়েছি? সে বলল: না। তখন তিনি বললেন: তুমি মুক্ত। বর্ণনাকারী বললেন: অতঃপর তিনি মাটি থেকে কোনো বস্তু হাতে নিয়ে বললেন: তাকে আযাদ করার মধ্যে এতটুকু পুণ্যও মিলেনি। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “যে ব্যক্তি আপন গোলামকে বিনা অপরাধে প্রহার করল কিংবা চপোটাঘাত করল, তাহলে তার কাফ্ফারা হলো তাকে মুক্ত করে দেওয়া।”

জেনে রাখুন, ইসলামের শরী‘য়ত তথা আইনকানুন দাস-দাসীর প্রতি সদয় হওয়ার নির্দেশ প্রদানে এবং তাকে সম্মান দান ও তার সাথে সদ্ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ প্রদানে কত মহান? আর তা কত উচ্চমানসম্পন্ন, যখন তা অত্যাচারীর (গোলামের উপর) সীমালংঘন করাটাকে দাসত্বের শৃঙ্খল ও গোলামীর জিল্লতি থেকে তার মুক্তির জন্য শরী‘য়ত সম্মত ও ন্যায়সঙ্গত কারণ বলে ঠিক করেছে? !!

এটাই হলো দাস-দাসীদের মুক্ত করার ব্যাপারে ইসলাম কর্তৃক প্রনীত মূলনীতির শ্রেষ্ঠত্ব ও অন্যতম বৈশিষ্ট্য ...।

আর অধিকাংশের মূল্যায়নে দেখা যায় যে, ইসলাম যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তার মত করে গোটা বিশ্বের মধ্যে (প্রচলিত) সামাজিক শাসননীতিসমূহের মধ্য থেকে কোনো একটি শাসনতন্ত্রও পাওয়া যাবে না, যা ইতিবাচক ও বাস্তবসম্মত উপায়ে দাস-দাসী মুক্ত করার দিকে আহ্বান করে ! !

আমার পাঠক ভাই ! আপনি লক্ষ্য করেছেন যে,

এই পদ্ধতির অন্যতম মূলনীতি হল: উৎসাহ বা অনুপ্রেরণার মাধ্যমে (গোলাম) আযাদ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা।

তার আরেকটি মূলনীতি হল: গুনাহ ও ভুলত্রুটি থেকে মাফ পাওয়ার উদ্দেশ্যে (গোলাম) আযাদ করা।

তার অপর আরেকটি মূলনীতি হল: গোলাম কর্তৃক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার জন্য তার মনিবের সাথে ঐক্যমতের ভিত্তিতে লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার দ্বারা মুক্তি লাভ করা।

অন্যতম আরেকটি মূলনীতি হল: যাকাতের অর্থ ব্যয় করার মাধ্যমে এবং রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে (গোলাম) আযাদ করা।

অপর আরেকটি মূলনীতি হল: স্বাধীন ব্যক্তির অধীনস্থ দাসী কর্তৃক সন্তান জন্ম দেওয়ার মাধ্যমে মুক্তি লাভ করা।

আরও একটি মূলনীতি হল: (মনিব কর্তৃক গোলামকে) প্রহার করা ও নির্যাতনমূলক সীমালংঘন করার কারণে (গোলাম) আযাদ করা।

দাস-দাসীদেরকে মুক্ত করার ব্যাপারে যখন ইসলাম এসব মূলনীতি প্রণয়ন করে, তখন ইসলামী ভূ-খণ্ডের উপর একজন দাস-দাসীও কি অবশিষ্ট থাকবে বলে মনে হয়?

আর আমরা যখন দাসত্ব প্রথাকে এমন একটি নদীর সাথে তুলনা করি, যার একটি দুর্বল উৎস রয়েছে এবং একই সময়ে এখানে সেখানে যার একাধিক শক্তিশালী প্রবল স্রোতসম্পন্ন মোহনা বা মুখ রয়েছে; সুতরাং কোনো মানুষ কি কল্পনা করতে পারে যে, সেই নদীর পানি থেকে এতটুকুন পানি অবশিষ্ট থাকবে?

ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় দাসত্বের বিষয়টিও এমনই; কারণ, তারও একটি দুর্বল উৎস [আমরা যুদ্ধবন্দীদের দাস-দাসী বানানোর উৎসকে দুর্বল উৎস বলে বর্ণনা করেছি দু’টি কারণে:প্রথমত: স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধের স্বল্পতা।দ্বিতীয়ত: ইসলাম কর্তৃক ইমাম বা নেতাকে যুদ্ধবন্দীদের সাথে আচার-আচরণ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে চারটি বিষয়ে (ক্ষমতা প্রয়োগে) স্বাধীনতা দান: অনুকম্পা প্রদর্শন অথবা মুক্তিপণ গ্রহণ অথবা হত্যা করা অথবা দাস-দাসী বানানো; আর অধিকাংশ সময় দাস-দাসী বানানোর বিষয়টিকে বাদ রেখে বাকি অন্যান্য ক্ষেত্রে তার স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ হয়।] রয়েছে; আর তা হলো শুধু যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বনানো, যখন ইমাম এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন।

আর (দাস-দাসী) মুক্ত করার স্রোতধারা অনকেগুলো এবং বহু রকমের, যার বর্ণনা ইতিপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে।

আর এসব স্রোতধারা, যেগুলো শরী‘য়ত সম্মত প্রবাহ সৃষ্টি করেছে, তার ফলে যুগ যুগ ধরে চূড়ান্তভাবে দাসত্ব প্রথার পরিসমাপ্তি ঘটেছে; আর তার উৎসস্থল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এবং তার মোহনার সংখ্যাধিক্যের ফলে ইসলামী সমাজে তার কোনো চিহ্ন অবিশিষ্ট নেই ...। আর এটাই আল্লাহর বিধান; সুতরাং আপনারা আমাকে দেখান তো, যারা তাঁকে বাদ দিয়ে নিয়মনীতি প্রণয়ন করেছে, (তাদের পরিণতি); কিন্তু যালিমগণ আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করে ! !

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন