hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে দাস বিধি

লেখকঃ আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান

১৯
শর‘য়ী দৃষ্টিভঙ্গি:
প্রত্যেক বিবেকবান ও বুদ্ধিমান ব্যক্তির নিকট এ কথা পরিষ্কার যে, ইসলামের শাসন ব্যবস্থায় দাসত্বের ব্যাপারটি এক লাফেই সমাধান হয়নি; আর তাকে নিষিদ্ধ করে আসমান থেকে কোনো অকাট্য বক্তব্যও অবতীর্ণ হয়নি ... বরং তার সমাধান হয় ক্রমান্নয়ে শর‘য়ী বিধানের মাধ্যমে এবং সময়ের বিবর্তনে, যা শেষ পর্যায়ে কোনো প্রকার গণ্ডগোলের উস্কানি অথবা সঙ্কট ছাড়াই বাতিল হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

কিভাবে এটা সম্ভব হলো?

আমরা পূর্বেই যখন দাসত্ব প্রথা বাতিল না করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনার উদ্যোগ গ্রহণ করি তখন আলোচনা করেছি যে, ইসলামের আগমন ঘটেছে এমতাবস্থায় যে বিশ্বের সকল শাসন ব্যবস্থায় দাসত্ব প্রথা স্বীকৃত; বরং তা ছিল অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং সামাজিকভাবে খুব জরুরি ও প্রয়োজনীয় ... আর আমরা দেখিয়েছিলাম যে, এই ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করা অথবা বিলুপ্ত করে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়; বরং তার জন্য প্রয়োজন সাধারণ ক্রমধারা অবলম্বন এবং দীর্ঘ সময় ...।

এই ক্রমধারা কেমন ছিল?

১. পূর্বে আলোচনা হয়েছে যে, ইসলাম বিশ্বের দেশে দেশে দাসত্বের একটি উৎস ছাড়া বাকি সকল উৎসকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে; আর সে একটি উৎস হলো যুদ্ধবন্দীদের দাসত্ব।

- (ইসলাম) যুদ্ধে দাস-দাসী বানানো ও জনগোষ্ঠীর রক্ত শোষণ করার লোভে দাস-দাসী বানানোর ধারা বন্ধ করে দিয়েছে।

- দরিদ্রতা অথবা ঋণ পরিশোধ করতে না পারার অজুহাতে দাস-দাসী বানানোর ধারাও বন্ধ করে দিয়েছে।

- একটা নির্দিষ্ট জাতি ও প্রকৃতির লোকজনের মধ্যে জন্মগত উত্তরাধিকারের কারণে দাস-দাসী বানানোর ধারাও বন্ধ করে দিয়েছে।

- অভিজাত ও অহঙ্কারী শ্রেণীর লোকজনের প্রতি দুর্ব্যবহার করার কারণে দাস-দাসী বানানোর ধারাও বন্ধ করে দিয়েছে।

ইত্যাদি ধরনের দাস-দাসী বানানোর উৎস ও ধারাগুলো ইসলাম বন্ধ করে দিয়েছে, যা ছিল বিশ্বের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকারী।

২. ইসলাম শর্ত করে দিয়েছে যে, ঐ যুদ্ধটি শরী‘য়তসম্মত যুদ্ধ হতে হবে, যা যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানোর দিকে নিয়ে যায়; পূর্বে আমরা এসব শরী‘য়তসম্মত যুদ্ধের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করেছি, যেসব যুদ্ধ যুদ্ধবন্দীকে দাস-দাসী বানানোর জন্য ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ।

৩. যুদ্ধের ভার (অস্ত্র) নামিয়ে ফেলার পর যুদ্ধবন্দীদের সাথে আচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইসলাম ইমাম বা সেনাপতিকে ব্যাপক ক্ষমতা দান করেছে, তিনি যা কল্যাণকর মনে করবেন তাই করতে পারবেন; বরং ইসলাম তাকে (যুদ্ধবন্দীদের ক্ষেত্রে) অনুকম্পা প্রদর্শন অথবা মুক্তিপণ গ্রহণ অথবা হত্যা করা অথবা দাস-দাসী বনানোর ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়েছে ! সুতরাং তিনি যদি রাষ্ট্রসমূহ কর্তৃক স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানো থেকে বিরত থাকবেন বলে মনে করেন, তবে তিনি তাই করবেন, যেমনটি করেছেন সুলতান মুহাম্মদ আল-ফাতেহ।

৪. দাসত্ব বিদ্যমান থাকা অবস্থায়ও ইসলাম দাস-দাসী মুক্ত করার মোহনাসমূহ খুলে দিয়েছে, যা সেই প্রথাটিকে বিলুপ্ত করার দায়িত্ব পালন করে একটি সময় কালের মধ্যে, যে সময়টি কখনও দীর্ঘ হয় অথবা কখনও সংক্ষিপ্ত হয়।

আর আমরা পরিপূর্ণ পদ্ধতি পূর্বে আলোচনা করেছি অথবা এমন বর্ণনা পেশ করেছি, যা ইসলামী শরী‘য়তের ছায়াতলে দাস-দাসী মুক্ত করার ব্যাপারে অনেক মোহনার (ধারার) কথা স্পষ্ট করেছে।

আর এর ফলে মানব সমাজে দাসত্ব প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল; আর ইসলাম দাস-দাসী মুক্ত করার পদ্ধতি প্রণয়নে রাষ্ট্রসমূহের জন্য একটি আদর্শ নমুনা পেশ করেছে, বরং তাকে মুক্ত করার ব্যাপারে সাত শতাব্দী পূর্বেই জাতিসমূকে পিছনে ফেলে দিয়েছে !!

সারকথা:

ইসলাম দাসত্ব প্রথাকে এক লাফেই অকাট্য ‘নস’ বা বক্তব্যের মাধ্যমে নিষেধ করে দেয়নি; বরং তার উৎস বা ধারাসমূহ বন্ধ করার মাধ্যমে তার চারপশের বেষ্টন সংকীর্ণ করে এনেছে এবং তা থেকে মুক্ত করার জন্য অনেক মোহনা খুলে দিয়েছে; অতঃপর ভবিষ্যতে তা শেষ করে দেওয়া বা বলবৎ রাখার লাগামটি ইমামের হাতে তুলে দিয়েছে, তিনি সমান আচরণ নীতি অথবা রাষ্ট্রীয় সন্ধি-চুক্তির ভিত্তিতে নির্দেশনা প্রদান করবেন ... শরী‘য়ত তার জন্য যতটুকু ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে, তিনি তার আলোকে যা কল্যাণকর মনে করবেন, তাই তিনি (বাস্তবায়ন) করবেন।

বস্তুত: দাসত্বের বিষয়টি বিলুপ্ত করার ক্ষেত্রে এই ক্রমধারা অবলম্বন বিবিধ সমস্যা সমাধান ও বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিবিধান করার ক্ষেত্রে ইসলামী শরী‘য়তের মহত্বই প্রকাশিত হয়; আর এ ক্রমধারা অবলম্বনের মাধ্যমে সময় ও কালের প্রসারতায় ইসলামের বৈশিষ্ট্যাবলী, ব্যাপকতা ও আন্তর্জাতিকতার ক্ষেত্রে আল্লাহ প্রদত্ত দীনের বৈশিষ্ট্যসমূহ খুব স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে!!

সুতরাং তারা এর পর আর কোন্ কথায় ঈমান আনবে?

হে আমার পাঠক ভাই! এই বর্ণনা ও বাস্তব চিত্র তুলে ধরার পর আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, ইসলাম যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী বানানোর ধারাকে বাতিল করেনি আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও শরী‘য়তের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে।

আর এসব দৃষ্টিভঙ্গি তাগিদ করে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মানবতার জন্য শাসনব্যবস্থা ও বিধিবিধান প্রবর্তন করেছেন, তিনি ব্যক্তির বাস্তব অবস্থা, সমাজের ক্রমবিকাশ, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, শরী‘য়তের তাৎপর্য এবং জাতিসমূহের অবস্থাদি ... সম্পর্কে খুব ভালভাবেই জ্ঞাত; আর তিনি সে অবস্থা সম্পর্কেও জানেন, যখন সমকালীন অবস্থা কিংবা তাৎক্ষণিক কোনো প্রয়োজন বা চাহিদার দোহাই দিয়ে সে এই ব্যবস্থাকে বাতিল করা কিংবা পরিবর্তন করার দাবী উঠবে!!

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা যদি জানতেন যে, মদপান হারাম করার ব্যাপারে একবারে বিধান জারি করলেই তা বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে, তাহলে তিনি তা হারাম করতে কয়েক বছর সময় নিতেন না; আর তিনি যদি জানতেন যে, দাসত্ব প্রথা বাতিল করার মাধ্যমে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে শেষ করে দেওয়ার জন্য একটা নির্দেশ জারি করলেই যথেষ্ট হয়ে যেত, তাহলে তিনি এই প্রথাকে শেষ করার ক্ষেত্রে সেখানে থেমে থাকতেন না !!

কিন্তু আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জান না।

আল-কুরআনের ভাষায়:

﴿ أَلَا يَعۡلَمُ مَنۡ خَلَقَ وَهُوَ ٱللَّطِيفُ ٱلۡخَبِيرُ ١٤ ﴾ [ الملك : ١٤ ]

“যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবহিত।” [সূরা আল-মুলক: ১৪]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন