hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে দাস বিধি

লেখকঃ আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান

উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে মুক্তি দান:
আর তা হলো, পুরস্কার ও সাওয়াব অর্জনের নিয়তে মনিবদের পক্ষ থেকে তাদের অধীনে থাকা দাস-দাসীদের মুক্ত করে দেওয়া, যাতে মুক্তি দানকারী ব্যক্তি জান্নাত পাওয়ার মাধ্যমে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে পারে; যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ فِي مَقۡعَدِ صِدۡقٍ عِندَ مَلِيكٖ مُّقۡتَدِرِۢ ٥٥ ﴾ [ القمر : ٥٥ ]

“যথাযোগ্য আসনে, সর্বশক্তিমান মহাঅধিপতি (আল্লাহ)র সান্নিধ্যে।” [সূরা আল-কামার: ৫৫]

আর ইসলাম মনিবদেরকে দাস-দাসী মুক্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে প্রচণ্ডভাবে এবং যথেষ্ট পরিমাণে মনিবদেরকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছে; আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ فَلَا ٱقۡتَحَمَ ٱلۡعَقَبَةَ ١١ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا ٱلۡعَقَبَةُ ١٢ فَكُّ رَقَبَةٍ ١٣ ... [ البلد : ١١، ١٣ ]

“তবে সে তো বন্ধুর গিরিপথে প্রবেশ করেনি। আর কিসে আপনাকে জানাবে যে, বন্ধুর গিরিপথ কী? এটা হচ্ছে দাসমুক্তি ...।” [সূরা আল-বালাদ: ১১ - ১৩]

অন্যদিকে যেসব হাদিসে দাস-দাসী মুক্ত করার ফযিলত ও মর্যাদা বর্ণনা এসেছে এবং দাস-দাসী মুক্তিদানকারী ব্যক্তির জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে, সেগুলোর সংখ্যা অনেক বেশি, গণনার বাইরে; আমরা উদাহরণস্বরূপ তন্মধ্য থেকে সাধ্যমত কিছু উপস্থাপন করেছি:

— ইবনু জারির রহ. আবূ নাজীহ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

« أَيُّمَا رَجُلٍ مُسْلِمٍ أَعْتَقَ رَجُلًا مُسْلِمًا فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ جَاعِلٌ وَفَاءَ كُلِّ عَظْمٍ مِنْ عِظَامِهِ عَظْمًا مِنْ عِظَامِ مُحَرَّرِهِ مِنْ النَّارِ ؛ وَأَيُّمَا امْرَأَةٍ مُسْلِمَةٍ أَعْتَقَتْ امْرَأَةً مُسْلِمَةً فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ جَاعِلٌ وَفَاءَ كُلِّ عَظْمٍ مِنْ عِظَامِهَا عَظْمًا مِنْ عِظَامِ مُحَرَّرِهَا مِنْ النَّارِ» . ( رواه أحمد ) .

“যে কোনো মুসলিম পুরুষ কোনো মুসলিম পুরুষ (গোলাম) কে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার প্রত্যেকটি অস্থির বিনিময়ে তার এক একটি অস্থিকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন। আর যে কোনো মুসলিম নারী কোনো মুসলিম দাসীকে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার প্রত্যেকটি অস্থির বিনিময়ে তার এক একটি অস্থিকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন।” - [মুসনাদে আহমদ]।

— ইমাম আহমদ র. ‘আমর ইবন ‘আনবাসা রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি তাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করে বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« من بنى لله مسجدا ليذكر الله عز و جل فيه بنى الله له بيتا في الجنة , ومن أعتق نفسا مسلمة كانت فديته من جهنم , ومن شاب شيبة في سبيل الله عز و جل كانت له نورا يوم القيامة » . ( رواه أحمد ) .

“যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি মাসজিদ নির্মাণ করবে যাতে আল্লাহ তা‘আলার যিকির (স্মরণ) করা হবে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো একজন মুসলিম গোলামকে আযাদ করবে, তা জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য তার মুক্তিপণ হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার পথে শুভ্রকেশী (বৃদ্ধ) হবে, তা তার জন্য কিয়ামতের দিনে আলো হবে।” - [মুসনাদে আহমদ]

— ইমাম আবূ দাউদ ও নাসায়ী র. ‘আমর ইবন ‘আনবাসা রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

« من أعتق رقبة مؤمنة أعتق الله بكل عضو منها عضوا منه من النار » . ( رواه أبو داود و النسائي ) .

“যে ব্যক্তি একজন মুমিন গোলামকে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সেই গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন থেকে তার প্রতিটি অঙ্গকে মুক্ত করবেন।” - [আবূ দাউদ ও নাসায়ী]।

— ইমাম আহমদ র. বারা ইবন ‘আযেব রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:

« جاء أعرابي إلى النبي صلى الله عليه و سلم فقال : يا رسول الله ! علمني عملا يدخلني الجنة , فقال صلى الله عليه و سلم : أعتق النسمة , وفك الرقبة . فقال : يا رسول الله ! أو ليستا بواحدة ؟ قال : لا , إن عتق النسمة أن تفرد بعتقها , وفك الرقبة أن تعين في عتقها » . ( رواه أحمد ) .

“জনৈক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আগমন করল এবং তারপর বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের প্রশিক্ষণ দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে; তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি দাস-দাসী আযাদ কর এবং দাস মুক্ত কর। তারপর সে বলল: এই দু’টি কাজই কি এক জাতীয় কাজ নয়? জবাবে তিনি বললেন: না। দাস-দাসী আযাদ করা মানে হল, তুমি তাকে মুক্ত করার মাধ্যমে পৃথক করে দেবে; আর দাস মুক্ত করা মানে হল, তুমি তার মুক্তির ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।” - [মুসনাদে আহমদ]।

— ইমাম বুখারী ও মুসলিম র. প্রমূখ সা‘ঈদ ইবন মারজানা র. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً أَعْتَقَ اللَّهُ بِكُلِّ إِرْبٍ مِنْهَا إِرْبًا مِنْهُ مِنَ النَّارِ , حتى ليعتق باليد اليد , بالرجل الرجل , والفرج الفرج ... » . ( رواه البخاري و مسلم و غيرهما ) .

“যে ব্যক্তি একজন মুমিন গোলামকে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সেই গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন থেকে তার প্রতিটি অঙ্গকে মুক্ত করবেন; এমন কি তিনি হাতের বিনিময়ে হাত, পায়ের বিনিময়ে পা এবং গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে গুপ্তাঙ্গকে মুক্ত করবেন ...।” [বুখারী ও মুসলিম প্রমূখ]।

আলী ইবন হাসান র. হাদিসের বর্ণনাকারী সা‘ঈদ ইবন মারজানা র. কে উদ্দেশ্য করে বললেন: তুমি কি এই হাদিসটি আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র নিকট থেকে শুনেছ?

জবাবে সা‘ঈদ ইবন মারজানা র. বললেন: হ্যাঁ।

অতঃপর আলী তাঁর এক গোলামকে লক্ষ্য করে বললেন: তুমি ‘মাতরাফ’ (তাঁর গোলামদের একজন) –কে ডাক, অতঃপর সে যখন তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালো, তখন তিনি বললেন: যাও, তুমি আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত।

আর দাস-দাসী মুক্তি দাতাদের মর্যাদা প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্ণিত এসব দৃষ্টিভঙ্গির ফলে মুসলিমগণ দাস-দাসীদের মুক্ত করার বিষয়টিকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের মনের আনন্দ দানকারী এবং চোখের প্রশান্তি দাতা হিসেবে গ্রহণ করেছে, যাতে তারা ঐ দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর জান্নাতের অধিকারী হতে পারে, যেই দিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি কোনো উপকারে আসবে না।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে অতি উত্তম নমুনা বা আদর্শ পেশ করেছেন, যেহেতু তিনি তাঁর মালিকানায় থাকা সকল গোলামকে মুক্ত করে দিয়েছেন। আর এই ক্ষেত্রে তাঁর অনুসরণ করছেন তাঁর সাহাবীগণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে।

আর আবূ বকর সিদ্দিক রা. মক্কার কুরাইশ নেতাদের নিকট থেকে গোলামদের ক্রয় করার জন্য অনেক সম্পদ খরচ করেছেন, যাতে তিনি তাদেরকে মুক্ত করে দিতে পারেন এবং তাদেরকে দিতে পারেন পূর্ণ স্বাধীনতা।

আর ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একটি বিরাট সংখ্যক দাস-দাসীকে মুক্ত করা হয়েছে ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে আল্লাহর নিকট থেকে পুরস্কার লাভের আশায় স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে মুক্ত করার পদ্ধতিতে।

আর ইসলামের আগে ও পরে এই বিরাট সংখ্যক দাস-দাসীকে মুক্ত করার কোনো দৃষ্টান্ত মানবতার ইতিহাসে নেই, যেমনিভাবে তাদের মুক্তি দানের কার্যক্রম ছিল নিরেট ও নির্ভেজাল মানবতার প্রতীক, যা মানুষের হৃদয় ও ঈমান থেকে বেরিয়ে এসেছে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও তাঁর জান্নাত ব্যতীত অন্য কিছু অর্জনের উদ্দেশ্যে নয় ! !

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন