hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের মৌলিক নীতিমালা

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম

১০
মানব সৃষ্টির হিকমত
মানুষ সৃষ্টির পিছনে মহান আল্লাহর এমন সব হিকমত কাজ করেছে যা জানতে বিবেকসমূহ অপারগ হয়ে গেছে। যা বর্ণনা করতে মানুষের ভাষা অসমর্থ হয়ে গেছে। তবে আমরা এখানে বেশ কিছু বিশেষ অবস্থান উল্লেখ করব, যার মাধ্যমে এ সৃষ্টিরহস্যের কিছু ধারণা পেশ করা যাবে; যেমন,

১- মহান আল্লাহর অনেক সুন্দর নাম রয়েছে যেমন- ক্ষমাশীল, দয়াবান, মার্জনাকারী, সহিষ্ণু ইত্যাদি। এ সকল নামের প্রভাব প্রকাশ হওয়া একান্ত জরুরী। অতএব, আল্লাহর হিকমত চায় যে, আদম ‘আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সন্তানরা এমন এক আবাসস্থলে অবতরণ করুক, যেখানে তাদের মাঝে আল্লাহর সুন্দর নামের প্রভাবসমূহ প্রকাশ পাবে। ফলে তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা তিনি দয়া করবেন, যাকে ইচ্ছা মাফ করে দিবেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা সহিষ্ণু হবেন। এভাবে তিনি চাইলেন তাঁর নাম ও গুণাবলির প্রভাব প্রকাশ করবেন।

২- মহান আল্লাহ, তিনি হচ্ছেন স্পষ্ট মহাসত্য অধিপতি বা সম্রাট। আর মহাঅধিপতি তো তিনিই, যিনি আদেশ দেন, নিষেধ করেন, সাওয়াব দেন, শাস্তি দেন, অপমানিত করেন, সম্মানিত করেন, মর্যাদা দেন এবং লাঞ্ছিত করেন। সুতরাং তাঁর মহান আধিপত্য চেয়েছে আদম ‘আলাইহিস সালাম এবং তার সন্তানদেরকে এমন এক আবাসস্থলে অবতরণ করাতে, যেখানে তাদের ওপর তাঁর হুকুম-আহকাম চলবে। অতঃপর তিনি তাদেরকে এমন এক আবাসস্থলে স্থানান্তরিত করবেন, যেখানে তাদের স্বীয় কর্মের প্রতিদান সম্পন্ন হবে।

৩- আল্লাহ তা‘আলা চেয়েছেন আদম সন্তানদের মধ্য থেকে এমন কিছু নবী, রাসূল, ওলী ও শহীদ বানাতে, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালোবাসবে। তাই তিনি তাদেরকে তাদের ও তাদের শত্রুদের মাঝে ছেড়ে দেন এবং শত্রুদের মাধ্যমে তাদেরকে পরীক্ষা করেন। ফলে যখন দেখা যাবে যে, তারা মহান আল্লাহকেই প্রাধান্য দিবে এবং তাদের জীবন ও যাবতীয় সম্পদ একমাত্র তাঁরই সন্তুষ্টি ও ভালোবাসায় ব্যয় করবে, তখন তারা তাঁর ভালোবাসা, সন্তুষ্টি এবং নৈকট্য লাভ করতে পারবে; যা মূলত এছাড়া অন্য কোনো ভাবে অর্জন করা সম্ভব নয়। বস্তুত রিসালাত, নবুওয়াত এবং শাহাদাতের মর্যাদা আল্লাহর নিকট একটি শ্রেষ্ঠতম মর্যাদা। আর আদম ‘আলাইহিস সালাম এবং তার সন্তানদেরকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়ার যে ফয়সালা তিনি দিয়েছেন তা ব্যতীত এ মর্যাদাপূর্ণ জিনিস অর্জন আর কোনো কিছু দ্বারা হতো না।

৪– আল্লাহ তা‘আলা আদম ‘আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সন্তানদেরকে এমন এক ফর্মুলায় সৃষ্টি করেছেন, যা ভালো ও মন্দ গ্রহণের উপযুক্ত, যাতে রয়েছে প্রবৃত্তি ও ফিতনার প্রতি আহ্বান, বুদ্ধি ও জ্ঞানের প্রতি সাড়া দান করার প্রবণতা। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তাদের মধ্যে বুদ্ধি ও প্রবৃত্তি দু’টিই সৃষ্টি করেছেন, সাথে সাথে এ দু’টিকে করেছেন আহ্বানকারীরূপে; যাতে করে তাঁর উদ্দেশ্য পূরণ হয়। আর তাঁর বান্দাদের মাঝে তাঁর ইয্যত-সম্মান প্রকাশ করবেন হিকমত ও দাপটের ক্ষেত্রে, রহমত প্রকাশ করবেন, দয়া প্রদর্শন করাবেন, করুনা দেখাবেন তাঁর কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্বে। অতএব, তাঁর হিকমত চায় যে, তিনি আদম ও তাঁর সন্তানদেরকে পৃথিবীতে অবতরণ করান; যাতে করে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আর মানুষের মধ্যে থাকা এসব আহ্বানের প্রতি সাড়াদান ও গ্রহণ করার প্রস্তুতির প্রভাব প্রকাশ পেয়ে যায়, আর সেটা অনুযায়ী তিনি তাদের সম্মান ও অসম্মান এর নির্ধারণ করেন।

৫- মহান আল্লাহ জগত সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদাতের জন্য, আর এটাই হচ্ছে তাদেরকে সৃষ্টি করার মূল উদ্দেশ্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]

“আমি জিন্ন এবং মানুষকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদাত করার জন্য।” [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬] আর জানা কথা যে, সৃষ্টির কাছ থেকে যে দাসত্ব তিনি চান তা স্থায়ী নেয়ামতভূমি ও চিরস্থায়ী আবাসভূমিতে অবস্থান করে করা কখনো সম্ভব নয়। এটা তো শুধু অর্জিত হতে পারে কেবল অস্থায়ী দুঃখ-কষ্ট এবং বিপদাপদের আবাসস্থলে। চিরস্থায়ী আবাসস্থল তো সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ উপভোগের স্থান, পরীক্ষা ও কষ্টের নিবাস নয়। [তাই তাদেরকে দুনিয়াতে অবতরণ করানো হয়েছে]

৬- গায়েব বা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনয়ন করাই তো কল্যাণকর বিশ্বাস। পক্ষান্তরে প্রত্যক্ষ জিনিসের প্রতি ঈমান আনয়ন করা, তা তো প্রত্যেক ব্যক্তিই কিয়ামতের দিন করবে। অতএব, মানুষদেরকে যদি সুখ ও আরামের আবাসস্থল জান্নাতেই সৃষ্টি করা হতো, তাহলে তারা গায়েব বা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান স্থাপন করার মর্যাদা লাভ করতো না, যার পরে আসবে আনন্দ ও সম্মান, যা অর্জিত হবে অদৃশ্যের প্রতি ঈমান রাখার কারণে। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে এমন এক আবাসস্থলে অবতরণ করান, যেখানে অদৃশ্যের প্রতি তাদের বিশ্বাস স্থাপনের অবকাশ থাকে।

৭- আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র যমীন থেকে একমুষ্টি মাটি নিয়ে আদম ‘আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেন। আর যমীনের মধ্যে ভালো ও মন্দ, বিষণ্ণতা ও কোমলতা রয়েছে। সুতরাং তিনি জানেন যে, আদম সন্তানের মধ্যে এমন কিছু রয়েছে যারা তাঁর আবাসস্থলের (জান্নাতের) বাসিন্দা হওয়ার উপযুক্ত নয়। অতএব, তিনি তাকে এমন আবাসস্থলে অবতরণ করান, যেখানে ভালো ও মন্দ উভয়ই বের করে ছাড়েন। অতঃপর মহান আল্লাহ তাদেরকে দু’টি আবাসস্থলে পৃথক পৃথক করে দেন। সুতরাং ভালো লোকদেরকে তিনি তাঁর আবাসস্থল ও নৈকট্যের অধিবাসী করেন। আর খারাপ লোকদেরকে দুঃখ ও কষ্টের নিবাস অর্থাৎ দুষ্টদের আবাসস্থলের অধিবাসী করেন।

৮- মহান আল্লাহ আদম সন্তানদেরকে এ দুনিয়ায় পাঠানোর মাধ্যমে এটা চেয়েছেন যে, তিনি তাঁর স্বীয় বান্দাদের, যাদের ওপর তিনি অনুগ্রহ করেছেন, তাদের ওপর তিনি যে নি‘আমত দান করেছেন সেটার পূর্ণতা জানাতে এবং সেটার মর্যাদা বুঝাতে। যাতে করে তারা সবচেয়ে বড় ভালোবাসা ও শোকর আদায়কারীতে পরিণত হয় আর যে নি‘আমত তিনি তাদেরকে দান করেছেন সেটার স্বাদ বিশদভাবে উপভোগকারী হয়। তাই তিনি তাঁর শত্রুদের সাথে কিরূপ আচরণ করেন এবং তাদের জন্য কী শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন তা তাদেরকে দেখান এবং নির্দিষ্ট করে তিনি তাদেরকে যে সর্বোচ্চ নি‘আমত দান করেন তা প্রত্যক্ষ করান। যাতে করে তাদের খুশি বেড়ে যায়, অন্যের ন্যায় সুখ কামনা পুরা হয় এবং আনন্দ বৃহৎ হয়। আর এটা তাদের প্রতি পূর্ণাঙ্গ নি‘আমত ও ভালোবাসার একটি অংশ। এ জন্য পৃথিবীতে অবতরণ করানো, পরীক্ষায় নিপতিত করা ও নীরিক্ষা সম্পন্ন করার কোনো বিকল্প ছিল না; আর তাদের মধ্যকার যাকে ইচ্ছা তৌফিক প্রদান করা তাঁরই একান্ত রহমত ও অনুগ্রহে এবং যাকে ইচ্ছা ব্যর্থ করা তাঁরই হিকমত ও ইনসাফের দাবী অনুযায়ী, আর তিনি তো সর্বজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ।

৯- আল্লাহ তা‘আলা চেয়েছেন, আদম ‘আলাইহিস সালাম ও তার সন্তানেরা সুন্দরতম অবস্থায় জান্নাতে ফিরে আসুক। তাই তিনি তাদেরকে এর পূর্বেই দুনিয়ার কষ্ট, এবং তার দুঃখ ও বেদনার স্বাদ উপভোগ করান। আর তাদেরকে ঐসব জিনিসের আদেশ দেন যার মাধ্যমে পরকালের আবাসস্থল জান্নাতে প্রবেশ করার মর্যাদা তাদের নিকট বড় হবে, কারণ বিপরীতের সৌন্দর্য বিপরীত জিনিস দ্বারাই প্রকাশ পায়। [দেখুন: মিফতাহু দারিস্ সা‘আদাহ; খণ্ড ১, পৃ. ৬-১১।]

মানুষ সৃষ্টির সূচনা বিশ্লেষণ করার পর ভালো মনে করছি যে, তাদের সঠিক দীনের চাহিদা আলোচনা করব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন