মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“বলুন, ‘তোমরা কি তাঁর সাথেই কুফুরী করবে যিনি যমীন সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ তৈরি করছ? তিনি সৃষ্টিকুলের রব। আর তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে দিয়েছেন বরকত এবং চার দিনের মধ্যে এতে খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন সমভাবে যাচ্ঞাকারীদের জন্য। তারপর তিনি আসমানের প্রতি ইচ্ছে করলেন, যা (পূর্বে) ছিল ধোঁয়া। অতঃপর তিনি ওটাকে (আসমান) ও যমীনকে বললেন, ‘তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।’ তারা বলল, ‘আমরা আসলাম অনুগত হয়ে’। অতঃপর তিনি সেগুলোকে সাত আসমানে পরিণত করলেন দু’ দিনে এবং প্রত্যেক আসমানে তার নির্দেশ অহী করে পাঠালেন এবং আমরা নিকটবর্তী আসমানকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের ব্যবস্থাপনা।” [সূরা আল-ফুসসিলাত, আয়াত: ৯-১২] আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
“যারা কুফুরী করে তারা কি দেখে না যে, আসমানসমূহ ও যমীন মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে, তারপর আমরা উভয়কে পৃথক করে দিলাম; এবং প্রাণবান সবকিছু সৃষ্টি করলাম পানি থেকে; তবুও কি তারা ঈমান আনবে না? আর আমরা পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছি সুদৃঢ় পর্বত, যাতে যমীন তাদেরকে নিয়ে এদিক-ওদিক ঢলে না যায় এবং আমরা সেখানে করে দিয়েছি প্রশস্ত পথ, যাতে তারা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারে। আর আমরা আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ; কিন্তু তারা আকাশে অবস্থিত নিদর্শনাবলি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৩০-৩২] [আরও দেখুন, সূরা আর-রা‘দের প্রথমদিকের আয়াতগুলো। —অনুবাদক।]
এই বিশাল বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করার পিছনে মহান আল্লাহর অসংখ্য হিকমত-প্রজ্ঞাপূর্ণ কারণ নিহিত। যা বর্ণনা করে সীমাবদ্ধ করা সম্ভব নয়। এর প্রতিটি অংশই মহান হিকমতে ভরপুর। আপনি যদি এর যেকোনো একটি নিদর্শন নিয়ে ভাবেন, তাতেই অনেক অবাক করা বিষয় খুঁজে পাবেন। আপনি বৃক্ষলতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলার কারুকার্যতার দিকে দেখুন; যার একটি পাতা, শেকড় ও ফল উপকার থেকে খালি নয়। কিন্তু মানুষের চিন্তা শক্তি এগুলোর উপকারিতা ও বিস্তারিত দিক আয়ত্ব করতে সম্পূর্ণ অক্ষম। আর সেই নরম, ক্ষীণ ও দুর্বল শিকড় যেগুলোকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে না থাকলে দেখা যায় না, সেগুলোতে পানির গতিপথের দিকে তাকিয়ে দেখুন! কীভাবে সেগুলো নিচ থেকে উপরে পানি টেনে শক্তিশালী হচ্ছে। তারপর শিকড়গুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও ধারণক্ষমতা অনুসারে পানি স্থানান্তরিত হচ্ছে। এরপর শিকড়গুলো বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে এমন এক সীমায় পৌঁছে যে, দৃষ্টি দিয়ে তা দেখা সম্ভব হয় না। আপনি গাছের চারা গঠন ও এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে দেখুন! সেটা যেন দৃষ্টির আড়ালে লুকায়িত গর্ভস্থ ভ্রূণের অবস্থার পরিবর্তনের মতো। কখনও আপনি তাকে দেখবেন বস্ত্রহীন একটি জ্বালানী কাঠের মতো; তারপরই তার রব ও স্রষ্টা আল্লাহ তা‘আলা সেটাকে পাতা দ্বারা সুন্দরভাবে পোশাক দিয়ে আবৃত করে দেন। দুর্বল চারা সংরক্ষণের জন্য এবং অপরিপক্ব ফল-ফলাদির পোশাক হিসেবে পাতা বের করেন, যাতে করে সেগুলো পাতার মাধ্যমে গরম, ঠাণ্ডা ও বিভিন্ন প্রকার বিপদ থেকে রক্ষা পায়। অতঃপর ওর ভিতর থেকে দুর্বল ও ক্ষীণাকারে অঙ্কুর প্রস্ফুটিত করেন। তারপর ঐ সমস্ত ফল-ফলাদির খাদ্য-খোরাক তিনি গাছের শিকড় ও গতিপথে চালিয়ে দেন। ফলে সেখান থেকে তারা খাদ্য আহরণ করতে থাকে যেমনিভাবে শিশু তার মায়ের দুগ্ধ থেকে খাদ্য আহরণ করে। এভাবে মহান আল্লাহ সেটাকে প্রতিপালন ও বড় করতে থাকেন। অবশেষে যখন তা পরিপক্ব হয়ে খাবারের উপযোগী হয়, তখন তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সেই বোবা জড় কাঠ হতে টাটকা সুস্বাদু ফল রিযিক হিসেবে দান করেন।
আর আপনি যদি যমীনের দিকে তাকান, একে কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তাহলে দেখতে পাবেন যে সেটা মহান সৃষ্টিকর্তার এক বড় নিদর্শন। তিনি যমীনকে বিছানা ও বিশ্রামস্থল হিসেবে তৈরি করেছেন এবং বান্দাদের জন্য তা অনুগত করে দিয়েছেন। এর মাঝেই তিনি তাদের রিযিক, খাদ্য এবং জীবন ধারণের যাবতীয় উপকরণ রেখে দিয়েছেন। আর তাতে বানিয়েছেন অনেকগুলো পথ, যাতে করে তারা সব ধরনের প্রয়োজন পূরণের জন্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে সহজেই চলাফেরা করতে পারে। আর তাতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করে মজবুত করেছেন, যাতে করে তা নড়াচড়া করতে না পারে। যমীনের বক্ষকে করেছেন বিস্তৃত এবং যমীনকে বিছিয়ে প্রসারিত করেছেন। এর উপরিভাগকে করেছেন জীবিতদের মিলনমেলা এবং অভ্যন্তর ভাগকে মৃতদের জন্য একত্রিত হওয়ার জায়গা। অর্থাৎ উপরিভাগ হলো জীবিতদের এবং অভ্যন্তর ভাগ হলো মৃতদের বাসস্থান। তারপর খেয়াল করুন চলমান কক্ষপথের দিকে, কীভাবে সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিনিয়ত প্রদক্ষিণ করে চলেছে। এর ভাঁজেই আছে রাত-দিনের, ঋতুসমূহের এবং গরম-ঠাণ্ডার বিবর্তন। আর এর মধ্যে আছে যমীনের সকল জীব-জানোয়ার, পশু-পাখি, গাছ-পালা ও তৃণলতার নানা ধরনের উপকার।
তারপর আকাশ সৃষ্টি নিয়ে ভাবুন, বারবার দৃষ্টি ফেরান, তাহলে দেখতে পাবেন: তা উচ্চতায়, প্রশস্ততায় ও সুস্থিরতায় আল্লাহ তা‘আলার বড় একটি নিদর্শন। যার নিচে কোনো খুঁটি নেই এবং উপরের কোনো কিছুর সাথেও সম্পৃক্ততা নেই; বরং আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতায় তা ঝুলন্ত আছে। যিনি আসমানসমূহ ও যমীনকে ধরে রেখেছেন, যাতে করে তা বিলুপ্ত না হয়ে যায়।
আপনি যদি এই পৃথিবী এবং এর অংশগুলোর গঠন ও সুন্দর পন্থায় বিন্যাসের দিকে তাকিয়ে দেখেন, ‘‘যা তার সৃষ্টিকর্তার পরিপূর্ণ ক্ষমতা, পূর্ণজ্ঞান, সূক্ষ্ম হিকমতের প্রতীক’’, তাহলে আপনি এটিকে তৈরিকৃত একটি বাড়ির মতো পাবেন। যেখানে সব ধরনের যন্ত্রপাতি, উপকারী ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রয়েছে। আসমানসমূহ যেন এই পৃথিবী নামক গৃহের ছাদ, আর যমীন পৃথিবীতে বসবাসকারীদের জন্য বিছানা এবং বিশ্রামাগার ও বাসস্থান। সূর্য ও চন্দ্র দু’টি প্রদীপ হয়ে আলো দিচ্ছে, আর নক্ষত্ররাজি তার লাইট ও সৌন্দর্য বর্ধনের যন্ত্র। এগুলো এই আস্তানার পথিককে পথ দেখাচ্ছে। আর প্রস্তুতকৃত সম্পদের মতোই এর ভিতর লুকিয়ে আছে মণি মাণিক্য-জহরত ও খনিজ সম্পদ ধন-ভাণ্ডার। এসবের প্রত্যেকটি যে জন্য প্রযোজ্য সে জন্য রাখা আছে। বিভিন্ন ধরনের গাছ-পালা, তৃণলতা তার প্রয়োজন পূরণার্থে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং নানা জাতের জীব-জানোয়ার তার সার্বিক কল্যাণ সাধনের জন্য তৈরী করে রাখা। এগুলোর কিছু আছে আরোহণের জন্য, কিছু দুগ্ধ প্রদানকারী, কিছু গোশত খাওয়ার, কিছু আছে যার চামড়া দিয়ে পোশাক তৈরি হয় এবং কিছু আছে প্রহরীর কাজ করে। আর এ ক্ষেত্রে মানুষকে তিনি করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত মালিক এবং তাতে কর্ম ও হুকুম প্রদানের অধিকারী।
আপনি যদি সমগ্র জগত অথবা এর একটি অংশ নিয়ে ভাবেন, তাহলে এতে আশ্চর্য ধরনের সব জিনিস দেখতে পাবেন। পূর্ণ মনোযোগের সাথে যদি দেখেন, সুবিচার করেন এবং প্রবৃত্তি ও অন্ধ অনুকরণের জাল থেকে মুক্ত থাকেন, তবে সু-নিশ্চিতরূপে জানতে পারবেন; এই পৃথিবী হলো সৃষ্ট। মহা প্রজ্ঞাবান, ক্ষমতাধর, মহাজ্ঞানী এক সত্তা এর সৃষ্টিকর্তা। সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে তিনি একে তৈরি করেছেন। আরও বুঝতে পারবেন যে, সৃষ্টিকর্তা দু’জন হবে এটা অসম্ভব; বরং মা‘বুদ একজনই, তিনি ছাড়া সত্য কোনো মা‘বুদ নেই। যদি আসমানসমূহ ও যমীনে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মা‘বুদ থাকতো, তাহলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিত, নিয়ম-শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যেত, সব ধরনের কল্যাণমূলক কাজ থেমে যেত।
আর যদি অস্বীকার করে সৃষ্টিকে তার স্রষ্টা ছাড়া অন্যের দিকে সম্বন্ধযুক্ত করেন, তাহলে নদীতে রাখা এমন একটি সেচযন্ত্র সম্পর্কে কী বলবেন; যার যন্ত্রপাতিগুলো অত্যন্ত সুদৃঢ়, যন্ত্রগুলো সুন্দরভাবে যথাস্থানে স্থাপন করে অত্যন্ত মজবুত করে গঠন করা হয়েছে। কোনো দর্শক তার গঠনে ও আকৃতিতে কোনো ত্রুটি খুঁজে পায় না। এরপর তা বিশাল একটি বাগানের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে; যাতে নানা ধরনের ফলফলাদি রয়েছে। উক্ত সেচযন্ত্র তাতে প্রয়োজন অনুসারে পানি সরবরাহ করে। আর ঐ বাগানের সার্বিক দেখাশুনা, পরিচর্যা এবং যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজকর্ম করার জন্য লোক আছে। ফলে সেখানে কোনো ত্রুটি লক্ষ্য করা যায় না এবং তার ফলও নষ্ট হয় না। অতঃপর ফল কাটার সময় তার মূল্য প্রত্যেক উৎসের যা প্রয়োজন ও সমীচীন সে মোতাবেক বণ্টন করা হয়। সর্বদাই এভাবে বণ্টন করা হয়ে থাকে।
আপনি কি মনে করেন, এগুলো সব কোনো মালিক ও পরিচালক ছাড়াই হঠাৎ আপনা-আপনিই হয়েছে? বরং সেই সেচ যন্ত্র ও বাগানের অস্তিত্ব এবং অন্যান্য যা কিছু আছে সব কিছু কোনো কর্তা ও পরিচালক ছাড়া হঠাৎ ঘটেছে? আপনি কি ভেবে দেখেছেন; এ ক্ষেত্রে আপনার বিবেক আপনাকে কী বলে, যদি আপনার বিবেক থাকে? সেটা আপনাকে কী জানান দিচ্ছে? সেটা আপনাকে কিসের দিশা দিচ্ছে? [এই অংশটি ‘মিফতাহু দারুস সাআ’দাহ’ ১ম খণ্ডের ২৫১- ২৬৯ নং পৃষ্ঠার বিভিন্ন স্থান হতে চয়ন করা হয়েছে।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/14/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।