মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
লেখকঃ ড. মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম
২২
ইসলাম পরিচিতি
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/14/22
এক্ষণে আমরা এসে পৌঁছেছি ইসলামের সংক্ষিপ্ত কিছু পরিচয় এবং তার হাকীকত, উৎস, রোকন ও স্তরসমূহের বর্ণনায়।
ইসলাম শব্দের অর্থ:
আপনি যদি ভাষার অভিধানসমূহ পর্যালোচনা করেন, তাহলে জানতে পারবেন, ইসলাম শব্দের অর্থ হলো: আনুগত্য, বিনয়, বশ্যতা, আত্মসমর্পণ এবং আদেশ দাতার আদেশ ও নিষেধকারীর নিষেধকে বিনা আপত্তিতে পালন করা। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সত্য দীনের নাম রেখেছেন ‘ইসলাম’। কারণ তা বিনা আপত্তিতে আল্লাহর আনুগত্য এবং তাঁর আদেশের কাছে আত্মসমর্পণ, যাবতীয় ইবাদাতকে একমাত্র তাঁর জন্যই নির্ধারণ এবং তাঁর সংবাদকে সত্যায়ন ও তার ওপর ঈমান আনয়ন করাকে বুঝায়। এভাবে ‘ইসলাম’ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দীন এসেছেন তার নাম হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়ে যায়।
ইসলামের পরিচয়:
দীনের নামকরণ ইসলাম কেন করা হয়েছে? সমগ্র পৃথিবীতে যেসব দীন রয়েছে তার নামকরণ, হয় এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির নামের দিকে সম্বন্ধ করে অথবা নির্দিষ্ট কোনো জাতির দিকে সম্বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সুতরাং নাসারা ধমের (খ্রীষ্টধর্ম) নামকরণ হয়েছে “আন্ নাসারা” শব্দ হতে। বৌদ্ধধর্মের নামকরণ করা হয়েছে তার প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধের নামের ওপর ভিত্তি করে। আর যরথস্তুবাদ এই নামে প্রসিদ্ধতা লাভ করেছে, কারণ তার প্রতিষ্ঠাতা ও ঝাণ্ডা বহনকারী হলো যরথস্তু। এমনিভাবে ইয়াহূদী ধর্ম আত্মপ্রকাশ করে “ইয়াহুদা”নামক এক পরিচিত গোত্রের মাঝে, ফলে তা ইয়াহূদী ধর্ম নামকরণ হয়। এমনিভাবে অন্যান্য ধর্মগুলোর নামকরণও এভাবে হয়, কিন্তু ইসলাম সম্পূর্ণ আলাদা, কারণ তাকে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির দিকে অথবা নির্দিষ্ট কোনো জাতির সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা হয়নি। বরং এর নাম এমন একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ বহন করে যা ইসলাম শব্দের অর্থকে শামিল করে। আর এই নাম থেকে যা স্পষ্ট হয় তা হলো, এই দীন আবিষ্কার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনো মানুষের প্রচেষ্টা কাজ করেনি এবং তা সকল জাতি বাদ দিয়ে কোনো নির্ধারিত জাতির জন্য নির্দিষ্টও নয়। বরং এ নাম দাবী করে যে, “ইসলাম” নামের বৈশিষ্ট্যে যেন সবাই সুসজ্জিত হয়। সুতরাং অতীত ও বর্তমান মানুষের প্রত্যেকে যারাই এই গুণে গুণান্বিত হবে, সেই মুসলিম। আর ভবিষ্যতেও যারা এই গুণে সুসজ্জিত হবে সেও মুসলিম হবে।
ইসলামের হাকীকত বা তাৎপর্য:
এ কথা সবার জানা যে, এই পৃথিবীর সবকিছু নির্ধারিত নিয়ম-নীতি মেনে নিজ নিজ গতিতে চলছে। যেমন- সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র ও ভূমণ্ডল প্রচলিত সাধারণ নিয়মের অধীনে চলছে। এই নিয়ম-নীতি থেকে এক চুল পরিমাণ নড়াচড়া করা এবং তা থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। এমনকি স্বয়ং মানুষ যদি তার নিজের বিষয় নিয়ে ভাবে, তাহলে তার কাছে স্পষ্ট হবে যে, সে আল্লাহর নিয়ম-নীতির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অনুগত। তাই সে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী নিঃশ্বাস গ্রহণ করে এবং পানি, খাদ্য, আলো ও বাতাসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। তার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এই নির্ধারিত নীতি অনুযায়ী চলছে। সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই এই অঙ্গগুলো কাজ করে থাকে।
আল্লাহর এই ব্যাপক নির্ধারণ বা নিরূপণ, যার কাছে আত্মসমর্পণ করে চলেছে এ জগতের সবকিছু বরং এ বিশ্বজগতের কোনো কিছুই তার আনুগত্য হতে বের হতে পারছে না। আকাশের সবচেয়ে বড় নক্ষত্র হতে যমীনের ক্ষুদ্র বালু কণা পর্যন্ত ক্ষমতাবান মহান আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলছে। সুতরাং আকাশ, যমীন ও এতদুভয়ের মাঝের সবকিছু যখন এই নিয়ম মেনে চলছে, তখন বলতে পারি পুরো পৃথিবীই এই মহান শক্তিধর মালিকের আনুগত্য করছে, যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে স্পষ্ট হয় যে, নিশ্চয় ইসলামই বিশ্বজগতের উপযুক্ত ধর্ম। কারণ ইসলাম অর্থ হলো, কোনো আপত্তি ছাড়াই নির্দেশদাতার নির্দেশ মান্য ও আনুগত্য করা এবং নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকা, যেমন কিছু আগেই আপনি জানতে পেরেছেন। সুতরাং সূর্য, চন্দ্র, যমীন, বাতাস, পানি, আলো, অন্ধকার, উত্তাপ, গাছপালা, পাথর, জীব-জন্তু সবই অনুগত। বরং এমন মানুষ যে তার রবকে চেনে না, তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, তাঁর নিদর্শনাবলিকে অমান্য করে অথবা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদাত করে এবং তাঁর সঙ্গে অন্যকে অংশীদার করে, সে ব্যক্তিও ফিতরাতের দিক থেকে তাঁর অনুগত, যার ওপর তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
পৃথিবীর সবকিছু যখন অনুগত হয়ে চলছে, তখন আসুন আমরা মানুষের ব্যাপারটি নিয়ে ভেবে দেখি, তাহলে দেখতে পাব দু’টি বিষয় মানুষের সাথে নিরন্তর ঝগড়ায় লিপ্ত রয়েছে:
প্রথমত: ফিত্বরাত বা মানব মনের স্বাভাবিক প্রকৃতি।
মহান আল্লাহ যে ফিতরাত দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তা হলো, আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা। তাঁর ইবাদাত ও নৈকট্য অর্জনকে ভালোবাসা। আল্লাহ যে হক, কল্যাণ ও সত্যকে ভালোবাসেন তা ভালোবাসা এবং তিনি যে অসত্য, অমূলক, অন্যায় অত্যাচার অপছন্দ করেন তা অপছন্দ করা। এগুলোর সাথে যুক্ত হবে ফিতরাতের আরও অনেক চাহিদা, যেমন- সম্পদ, পরিবার, সন্তান সন্ততির মোহ, খাদ্য-পানীয় ও বিবাহের প্রতি দুর্বলতা এবং শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-পতঙ্গের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে চাহিদার প্রয়োজন অনুভব করে তাও।
দ্বিতীয়ত: মানুষের ইচ্ছা ও পছন্দের স্বাধীনতা। আল্লাহ তা‘আলা তার নিকট বহু সংখ্যক নবী ও রসূল পাঠিয়েছেন, আসমানি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যাতে করে সে সত্য ও অসত্য, হিদায়াত ও ভ্রষ্টতা এবং কল্যাণ ও অকল্যাণের মাঝে পার্থক্য করতে পারে। তারপর বিবেক ও বুঝ শক্তি দিয়ে তাকে শক্তিশালী করেছেন, যাতে করে কোনো কিছু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। সুতরাং যদি সে কল্যাণের পথে চলতে ইচ্ছা করে, তবে তা তাকে ন্যায় ও হিদায়াতের পথে পরিচালিত করবে। আর যদি অকল্যাণের পথের পথিক হতে চায়, তবে তা তাকে অনিষ্ট ও পাপাচারের দিকে নিয়ে যাবে।
অতএব, আপনি যদি মানুষের ক্ষেত্রে প্রথম বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেন, তাহলে আপনি তাকে আত্মসমর্পণের ওপর উন্মুক্ত এবং তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে জন্মগত স্বভাব বিশিষ্ট হিসেবে পাবেন। আসলে এক্ষেত্রে তার অবস্থা অন্যান্য সৃষ্টিকুলের মতোই।
আর যদি দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেন, তাহলে আপনি তাকে স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী হিসেবে পাবেন। সে তার ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো কিছু নির্বাচন করতে পারে। চাইলে মুসলিম অথবা কাফির হতে পারে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।” [সূরা আল-ইনসান, আয়াত: ৩]
মূলত এ কারণেই আপনি এই পৃথিবীতে দু’রকম মানুষ পাবেন:
এক প্রকার মানুষ তার সৃষ্টিকর্তার পরিচয় জানে, তাঁকে রব, শাসনকর্তা মা‘বুদ মেনে তাঁর প্রতি ঈমান আনে। ঐচ্ছিক জীবনে সে তাঁর বিধি-বিধানকে অনুসরণ করে চলে, যেমনিভাবে তার রবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যা থেকে পিছনে ফেরার বিকল্প কোনো পথ নেই এবং তাকদীরকে মেনে চলে থাকে। এই ব্যক্তিই হলো প্রকৃত মুসলিম, যে তার ইসলামকে পরিপূর্ণ করেছে এবং তার জানা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। কারণ সে তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে জানতে পেরেছে, যিনি তার নিকট অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন এবং তাকে বিদ্যা অর্জনের শক্তি দান করেছেন। এ ধরনের ব্যক্তির বিবেক ও বিবেচনা শক্তি বিশুদ্ধ হয়েছে। কেননা সে তার চিন্তা-চেতনার সঠিক মূল্যায়ন করেছে এবং ঘোষণা করেছে যে, সে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদাত করবে না; যিনি সকল বিষয়ে বুঝ ও বিবেচনা শক্তি দান করে তাকে সম্মানিত করেছেন। আর তার জিহ্বা শুধু সঠিক ও সত্য কথা বলতে শেখায়; কেননা সে আল্লাহকেই রব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যিনি তাকে কথা বলার শক্তি দিয়ে ধন্য করেছেন। আসলে এমতাবস্থায় তার পুরো জীবন শুধু সত্যের ওপর বিচরণ করে; কারণ সে আল্লাহর বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে অনুগত, যার মধ্যে তার কল্যাণ নিহিত আছে। আর তার মাঝে এবং পৃথিবীর সমগ্র সৃষ্টিকুলের মাঝে পারস্পরিক পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতার বন্ধন সম্প্রসারিত হয়; কেননা সে মহাজ্ঞানী, ক্ষমতাবান আল্লাহর দাসত্ব করে, যার দাসত্ব, নির্দেশ এবং তাকদীর বা নির্ধারণের অনুগত হয়ে চলছে সমস্ত সৃষ্ট জীব। আর হে মানুষ! আর এগুলোকে তো আপনার কল্যাণের জন্যই অনুগত করে তিনি সৃষ্টি করেছেন।
কুফরের প্রকৃত অবস্থা:
অপর দিকে আরেক ধরনের মানুষ আছে, যারা পরাজিত আত্মসমর্পণকারী রূপে জন্ম গ্রহণ করে আজীবন পরাজিতরূপে আত্মসমর্পণ করতঃ জীবন অতিবাহিত করে; কিন্তু সে নিজের আত্মসমর্পণবোধকে অনুধাবন করতে পারে না, বুঝতেও সক্ষম হয় না। সে তার রবকে চিনে না, তাঁর শরী‘আতের ওপর ঈমান আনে না, তাঁর রাসূলগণের অনুসরণ করে না, মহান আল্লাহ যে তাকে জ্ঞান ও বিবেক শক্তি দান করেছেন এবং তাকে শ্রবণ ও দর্শন শক্তি দান করেছেন তার সৃষ্টিকর্তাকে চেনার জন্য, সেটাও সে সঠিকভাবে প্রয়োগ করে না। বরং সে তার রবের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, তাঁর দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে এবং তার সার্বিক জীবনের যে বিষয়ে তাকে গ্রহণ করা বা না করার পূর্ণ ক্ষমতা ও স্বাধীনতার অধিকার দেয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে সে আল্লাহর শরী‘আত পালনকে অস্বীকার করে অথবা তার প্রভুর সাথে অন্যকে অংশীদার করে এবং তাঁর একত্ববাদের নিদর্শনকে মানতে অস্বীকার করে। এ ব্যক্তিই হলো প্রকৃত কাফের। কারণ কুফরের অর্থ হলো: গোপন করা, ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা। আসলে এই ধরনের লোককে কাফের বলা হয়; কারণ সে তার ফিতরাত তথা স্বাভাবিক প্রকৃতিকে মূর্খতা ও নির্বুদ্ধিতা দিয়ে ঢেকে রেখেছে। একটু আগে জানতে পেরেছেন যে, সে ইসলামের ফিতরাতের ওপর জন্ম গ্রহণ করেছে। আর তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এই ফিতরাত অনুসারেই কাজ করে থাকে। তার আশে পাশে সবকিছু আত্মসমর্পণের ভিত্তিতে চলছে। কিন্তু সে তার মূর্খতা ও নির্বুদ্ধিতার গোপন পর্দায় আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এতে করে তার দৃষ্টিশক্তি থেকে তার ও দুনিয়ার ফিতরাতের কার্যকারিতা অদৃশ্য হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আপনি তাকে দেখবেন, সে তার চিন্তা ও জ্ঞান শক্তি তার ফিতরাতের বিপক্ষে ব্যবহার করছে। এর বিপরীত দিকগুলোই শুধু সে দেখতে পায় এবং এ ফিত্বরাতকে উচ্ছেদ করতেই সে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।
এখন আপনি আপনার বিবেক শক্তি দিয়ে চিন্তা করে দেখুন, একজন কাফের কতটা ভ্রষ্টতা ও অন্ধকারে ডুবে আছে। [মাবাদিউল ইসলাম, পৃ. ৩ ও ৪।]
ইসলামকে পরিপূর্ণরূপে আপনি মেনে চলবেন এটাই ইসলামের দাবী। এটা খুব কঠিন কাজ নয়। বরং আল্লাহ যার জন্য সহজ করেছেন তার জন্য অতি সহজ। সমস্ত জগত ইসলামের দিক-নির্দেশনা মেনে চলছে। মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় ইসলাম আল্লাহর একমাত্র মনোনীত দীন।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯] আর তা হচ্ছে, চেহারা ও সত্তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টির কাছে সমর্পণ করা। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনার অন্তরকে সোপর্দ করা এবং আপনার জিহ্বা হাতের অনিষ্টতা হতে সকল মুসলিমের নিরাপত্তা লাভ করা। এরপর লোকটি জিজ্ঞেস করল: ইসলামের কোন কাজটি সর্বোত্তম? তখন তিনি বলেন, ঈমান আনয়ন করা। লোকটি বলল: ঈমান কী? তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর ফিরিশতাগণ, আসমানী কিতাবসমূহ, রাসূলগণ ও মৃত্যুর পর পুনরুত্থান দিবসকে দৃঢ়ভাবে স্বীকার করে নেওয়া।” [মুসনাদে আহমাদ, ৪র্থ খণ্ড, ১৪৪ নং পৃষ্ঠা। ইমাম হাইসামি রচিত আল-মাজমা‘ ১ম খণ্ড, ৫৯ নং পৃষ্ঠা। ইমাম আহমাদ ও ইমাম ত্বাবারানী আল-জামেউল কাবীরে অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং তার সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। আরও দেখুন, দেখুন: ইমাম মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওহহাব রচিত “ফাদ্বলুল ইসলাম” ৮ নং পৃষ্ঠা।]
এমনিভাবে তিনি এর পরিচয়ে অন্যত্র বলেন,
«الإسلام أن تشهد أن لا إله إلا الله ، وأن محمدا رسول الله ، وتقيم الصلاة ، وتؤتي الزكاة ، وتصوم رمضان ، وتحج البيت إن استطعت إليه سبيلا»
“ইসলাম হলো এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মা‘বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রেরিত রাসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত আদায় করা, রমযান মাসের সাওম পালন করা এবং সামর্থ থাকলে আল্লাহর ঘর (কা‘বার) হজ পালন করা।” [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদীস নং ৮।]
“প্রকৃত মুসলিম তো সেই যার জিহ্বা ও হাতের অনিষ্টতা থেকে অন্য মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০, ৬৪৮৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৯।]
আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র দীন ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কারো নিকট থেকে গ্রহণ করবেন না। কারণ সমস্ত নবী ও রাসূলগণ ছিলেন দীন ইসলামের ওপর। আল্লাহ তা‘আলা নূহ ‘আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন,
“আর তাদেরকে নূহ-এর বৃত্তান্ত শোনান। তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি ও আল্লাহ আয়াতসমূহ দ্বারা আমার উপদেশ প্রদান তোমাদের কাছে যদি দুঃসহ হয় তবে আমি তো আল্লাহ ওপর নির্ভর করি। সুতরাং তোমরা তোমাদের কর্তব্য স্থির করে নাও এবং তোমারা যাদেরকে শরীক করেছ তাদেরকেও ডাক, পরে যেন কর্তব্য বিষয়ে তোমাদের কোন অস্পষ্টতা না থাকে। তারপর আমার সম্বন্ধে তোমাদের কাজ শেষ করে ফেল এবং আমাকে অবকাশ দিও না। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তোমাদের কাছে আমি তো কোনো পারিশ্রমিক চাইনি, আমার পারিশ্রমিক আছে তো কেবল আল্লাহ কাছে, আর আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হতে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি’।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৭১-৭২]
“যখন তার প্রভু তাকে বললেন, তুমি আনুগত্য স্বীকার কর (মুসলিম হও) তখন তিনি বললেন, আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৩১]
“আর যখন আমি হাওয়ারিদেরকে আদেশ করলাম, আমার প্রতি এবং আমার রাসূলের প্রতি ঈমান স্থাপন কর, তখন তারা বলল, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলিম।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ১১১] [ইবন তাইমিয়্যাহ, আত-তাদমুরিয়্যহ ১০৯-১১০।]
ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধান, আকীদাহ-বিশ্বাস সবকিছু আল্লাহ কর্তৃক নাযিল কৃত অহী অর্থাৎ কুরআন ও সুন্নাহ হতে গ্রহণ করা হয়। আমি এখন এ দু’টি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোকপাত করব, ইনশাআল্লাহ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/14/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।