hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের মৌলিক নীতিমালা

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম

৩০
উপসংহার
হে মানুষ! আপনি তো অস্তিত্বহীন ছিলেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে অস্তিত্ব দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَوَ لَا يَذۡكُرُ ٱلۡإِنسَٰنُ أَنَّا خَلَقۡنَٰهُ مِن قَبۡلُ وَلَمۡ يَكُ شَيۡ‍ٔٗا﴾ [ مريم : ٦٧ ]

“মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমরা তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিল না?” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৬৭]

অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা এক ফোটা শুক্র-বিন্দু থেকে আপনাকে সৃষ্টি করেন, তারপর আপনাকে শ্রবণকারী ও দর্শনকারী করেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هَلۡ أَتَىٰ عَلَى ٱلۡإِنسَٰنِ حِينٞ مِّنَ ٱلدَّهۡرِ لَمۡ يَكُن شَيۡ‍ٔٗا مَّذۡكُورًا ١ إِنَّا خَلَقۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ مِن نُّطۡفَةٍ أَمۡشَاجٖ نَّبۡتَلِيهِ فَجَعَلۡنَٰهُ سَمِيعَۢا بَصِيرًا ٢﴾ [ الانسان : ١، ٢ ]

“মানুষের ওপর অন্তহীন মহাকালের এমন এক সময় কি আসেনি, যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না? আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি সংমিশ্রিত শুক্র বিন্দু থেকে, তাকে পরীক্ষা করবো এজন্য আমি তাকে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি দিয়েছি।” [সূরা আদ-দাহর, আয়াত: ১-২]

ক্রমান্বয়ে দুর্বল থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠেন, এরপর আবারও আপনার প্রত্যাবর্তন হয় দুর্বলতার দিকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿۞ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن ضَعۡفٖ ثُمَّ جَعَلَ مِنۢ بَعۡدِ ضَعۡفٖ قُوَّةٗ ثُمَّ جَعَلَ مِنۢ بَعۡدِ قُوَّةٖ ضَعۡفٗا وَشَيۡبَةٗۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيمُ ٱلۡقَدِيرُ ٥٤﴾ [ الروم : ٥٤ ]

“আল্লাহ, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন দূর্বলরূপে। অতঃপর দুর্বলতার পর তিনি দেন শক্তি, শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান।” [সূরা আর-রূম, আযাত: ৫৪]

অতঃপর সর্ব শেষে হয় মৃত্যু, যার মধ্যে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। আর আপনি (জীবনের) সেই স্তরগুলোর এক দুর্বলতা হতে আরেক দুর্বলতায় স্থানান্তরিত হন, কিন্তু আপনি আপনার নিজের ক্ষতিকে দূর করার সামর্থ্য রাখেন না, আর আপনি এ ব্যাপারে আপনার প্রতি আল্লাহর অসংখ্য নি‘আমত যেমন শক্তি, সামর্থ্য ও খাদ্য ইত্যাদির সাহায্য চাওয়া ব্যতীত আপনি আপনার নিজের কোনো উপকার করতে পারেন না। আর আপনি তো সৃষ্টি লগ্ন হতেই অভাবগ্রস্ত ও মুখাপেক্ষী। আপনার জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, আপনার হাতের নাগালে নয়, এমন কত জিনিসেরই না আপনার প্রয়োজন হয়, কিন্তু ওগুলি আপনি কখনও লাভ করেন আবার কখনও তা ছিনিয়ে নেন। এমন অনেক জিনিস রয়েছে যা আপনার উপকার করে, সেগুলো আপনি অর্জন করতে চান, ফলে কখনও এগুলো জয় করেন, আবার কখনও অকৃতকার্য হন। এমন অনেক জিনিস রয়েছে যা আপনার ক্ষতি করে, আপনার আশা আকাঙ্ক্ষাকে ব্যর্থ করে, আপনার প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে এবং আপনার ওপর বিপদ-আপদ ও কষ্ট নিয়ে আসে, আর আপনি তা বিদূরিত করতে চান, ফলে কখনও একে দূর করেন, আবার কখনও অপারগ হন। আপনি কি আল্লাহর প্রতি আপনার অভাব ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি অনুভব করেন না? আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلۡفُقَرَآءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡغَنِيُّ ٱلۡحَمِيدُ ١٥﴾ [ فاطر : ١٥ ]

“হে লোক সকল! তোমরা তো আল্লাহর মুখাপেক্ষী; কিন্তু আল্লাহ, তিনি অভাব-মুক্ত, প্রশংসিত।” [সূরা ফাতির, আয়াত: ১৫]

ক্ষুদ্র ভাইরাসে আপনি আক্রান্ত হন, যা খালি চোখে দেখা যায় না, ফলে তা আপনাকে কঠিন রোগে আক্রান্ত করে, কিন্তু আপনি তা দূর করতে সক্ষম হন না, আর তখন আপনি আপনার মত এক দুর্বল মানুষের নিকট গমন করেন এই আশা নিয়ে যে, সে আপনার চিকিৎসা করবে। সুতরাং কখনও ঔষধে কাজ করে (রোগ ভালো হয়), আবার কখনও ডাক্তার তা ভালো করতে অপারগ হয়। তখন রোগী ও ডাক্তার উভয়ই দিশেহারা হয়ে পড়ে।

হে আদম সন্তান, দেখুন আপনি কত দুর্বল! যদি একটি মাছি আপনার কোনো জিনিস ছিনিয়ে নেয় (যেমন শরীরের রক্ত), তাহলে আপনি তার থেকে তা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন না। আর আল্লাহ তো সত্যই বলেছেন; তিনি বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٞ فَٱسۡتَمِعُواْ لَهُۥٓۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ لَن يَخۡلُقُواْ ذُبَابٗا وَلَوِ ٱجۡتَمَعُواْ لَهُۥۖ وَإِن يَسۡلُبۡهُمُ ٱلذُّبَابُ شَيۡ‍ٔٗا لَّا يَسۡتَنقِذُوهُ مِنۡهُۚ ضَعُفَ ٱلطَّالِبُ وَٱلۡمَطۡلُوبُ ٧٣﴾ [ الحج : ٧٣ ]

“হে লোক সকল! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, অতএব তোমরা মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো তারা তো কখনো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারবে না, এই উদ্দেশ্যে তারা সবাই একত্রিত হলেও এবং মাছি যদি কোনো কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের নিকট থেকে, এটাও তারা তার নিকট থেকে উদ্ধার করতে পারবে না। পূজারী এবং দেবতা কতই না দুর্বল!” [সূরা আল-হজ্জ্ব, আয়াত: ৭৩]

সুতরাং সামান্য একটি মাছি যা আপনার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় তা যদি আপনি উদ্ধার করতে সক্ষম না হন, তাহলে আপনি আপনার কোন জিনিসের ক্ষমতা রাখেন? আপনার তাকদীর ও জীবন তো আল্লাহর হাতে, আর আপনার অন্তর তাঁর হাতের দুই আঙ্গুলের মাঝে, তিনি তা যেভাবে ইচ্ছা ওলট-পালট করেন। আপনার জীবন ও মৃত্যু এবং আপনার সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য তাঁরই হাতে। আপনার নড়াচড়া ও নীরবতা এবং আপনার সমস্ত কথাবার্তা তাঁর অনুমতি ও ইচ্ছাতেই হয়। সুতরাং তাঁর বিনা হুকুমে আপনি নড়েন না এবং তাঁর বিনা ইচ্ছাই কোনো কিছু করেন না। তিনি যদি আপনার ওপর আপনার নিজের দায়িত্ব অর্পণ করেন, তাহলে তো তিনি এক অক্ষম, দুর্বল, শিথিল, গুনাহ ও ভুলকারীর নিকট আপনার দায়িত্ব অর্পণ করলেন। আর যদি তিনি অন্যের নিকট আপনার দায়িত্ব অর্পণ করেন, তাহলে তো তিনি আপনার দায়িত্ব অর্পণ করলেন এমন এক ব্যক্তির নিকট, যে ব্যক্তি আপনার কোনো ক্ষতি, লাভ, মৃত্যু, জীবন এবং পুনরুত্থান করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং তাঁর নিকট হতে আপনার এক পলক অমুখাপেক্ষী হওয়ার কোনোই উপায় নেই। বরং গোপনে ও প্রকাশ্যে জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আপনি তাঁর নিকট নিরুপায়। যিনি আপনার ওপর সমস্ত নি‘আমত পূর্ণ করেন। পক্ষান্তরে প্রত্যেক দিক দিয়ে তাঁর নিকট আপনার তীব্র প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও, পাপাচার ও কুফুরী করার মাধ্যমে আপনি তার কাছে নিজেকে ঘৃণিত করেন। আপনি তাঁকে ভুলে রয়েছেন, অথচ আপনাকে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে এবং তাঁর সামনে আপনাকে বিচারের জন্য দাঁড়াতে হবে। [ইমাম ইবনুল কায়্যেম রাহিমাহুল্লাহ রচিত “আল-ফাওয়াইদ, পৃ. ৫৬ (কিছু পরিবর্তিত)।]

হে মানুষ ! আপনার গুনাহের বোঝা বহন করার অক্ষমতা ও দুর্বলতার দিকে লক্ষ্য রেখে তিনি,

﴿يُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُخَفِّفَ عَنكُمۡۚ وَخُلِقَ ٱلۡإِنسَٰنُ ضَعِيفٗا﴾ [ النساء : ٢٨ ]

“আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করতে চান, যেহেতু মানুষ দূর্বলরূপে সৃষ্ট হয়েছে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৮]

তাই তিনি রাসূল প্রেরণ করেন, কিতাব অবতীর্ণ করেন, বিধি-বিধান প্রবর্তন করেন, আপনার সামনে সঠিক পথ দাঁড় করান এবং যুক্তি, দলীল-প্রমাণাদি ও সাক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এমনকি তিনি আপনার জন্য প্রতিটি বিষয়ে এমন নিদর্শন স্থির করেন যা তাঁর একত্ববাদ, প্রভুত্ব ও উপাসনার প্রমাণ বহন করে। পক্ষান্তরে আপনি বাতিল দিয়ে হক বা মহা সত্যকে দূর করেন এবং আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেন ও বাতিলের সাহায্যে বিতর্কে লিপ্ত হন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَكَانَ ٱلۡإِنسَٰنُ أَكۡثَرَ شَيۡءٖ جَدَلٗا﴾ [ الكهف : ٥٤ ]

“আর মানুষেরা অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়।” [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৫৪]

আর আপনাকে আল্লাহর ঐ সমস্ত নি‘আমতের কথা ভুলিয়ে দেন, যার মধ্যে আপনি আপনার শুরু এবং শেষ অতিবাহিত করেন! আপনি কি স্মরণ করেন না, আপনাকে এক ফোটা শুক্র-বিন্দু থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে? তারপর আপনার প্রত্যাবর্তন হবে কবরে, অতঃপর সেখান হতে আপনার পুনরুত্থানের পর ঠিকানা হবে জান্নাতে অথবা জাহান্নামে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَوَ لَمۡ يَرَ ٱلۡإِنسَٰنُ أَنَّا خَلَقۡنَٰهُ مِن نُّطۡفَةٖ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٞ مُّبِينٞ ٧٧ وَضَرَبَ لَنَا مَثَلٗا وَنَسِيَ خَلۡقَهُۥۖ قَالَ مَن يُحۡيِ ٱلۡعِظَٰمَ وَهِيَ رَمِيمٞ ٧٨ قُلۡ يُحۡيِيهَا ٱلَّذِيٓ أَنشَأَهَآ أَوَّلَ مَرَّةٖۖ وَهُوَ بِكُلِّ خَلۡقٍ عَلِيمٌ ٧٩﴾ [ يس : ٧٧، ٧٩ ]

“মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্র-বিন্দু হতে? অথচ হঠাৎ করেই সে হয়ে পড়ে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী। আর সে আমার সম্বন্ধে উপমা পেশ করে অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায়; বলে: হাড্ডিতে প্রাণ সঞ্চার করবে কে, যখন তা পচে গলে যাবে? (হে রাসূল) আপনি তাদেরকে বলুন: এতে প্রাণ সঞ্চার করবেন তো তিনিই, যিনি এটা প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি প্রত্যেকটি সৃষ্টি সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত।” [সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ৭৭-৭৯]

তিনি আরও বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡإِنسَٰنُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ ٱلۡكَرِيمِ ٦ ٱلَّذِي خَلَقَكَ فَسَوَّىٰكَ فَعَدَلَكَ ٧ فِيٓ أَيِّ صُورَةٖ مَّا شَآءَ رَكَّبَكَ ٨﴾ [ الانفطار : ٦، ٨ ]

“হে মানুষ! কিসে তোমাকে তোমার মহান রবের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলেছে? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুঠাম করেছেন এবং তৎপর সুবিন্যস্ত করেছেন। যে আকৃতিতে চেয়েছেন, তিনি তোমাকে সংযোজিত করেছেন।” [সূরা আল-ইনফিতার, আয়াত: ৬-৮]

হে মানুষ! আপনি মহান আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে ডাকবেন এই আনন্দ থেকে নিজেকে কেন বঞ্চিত করছেন? যাতে করে তিনি আপনাকে অভাব-মুক্ত করেন, আপনাকে আরোগ্য দান করেন, আপনার বিপদ-আপদ দূর করেন, আপনাকে ক্ষমা করেন, আপনার অনিষ্টকে অপসারণ করেন, আপনার প্রতি যুলুম করা হলে সাহায্য করেন, আপনি দিশেহারা এবং পথভ্রষ্ট হলে পথ দেখান, আপনি অজ্ঞ হলে শিক্ষা দেন, ভয় পেলে নিরাপত্তা দেন, আপনার দুর্বলতার সময় দয়া করেন, আপনার শত্রুদেরকে আপনার নিকট থেকে নিবৃত্ত করেন এবং আপনাকে রিযিক দেন।

হে মানুষ! আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যে সব নি‘আমত দান করেছেন তার মধ্যে সত্য দীনের নি‘আমতের পর সব চাইতে বড় নি‘আমত হলো জ্ঞান বা বুদ্ধি। কারণ যা তার উপকার করে এবং যা ক্ষতি করে, সে এর মাধ্যমে পার্থক্য করে, আল্লাহর আদেশ ও নিষেধকে বুঝে এবং এর মাধ্যমেই সে জানতে পারে মানুষ সৃষ্টির মহান উদ্দেশ্যকে; আর তা হলো: একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত বন্দেগী করা, যার কোনো অংশীদার নেই। আল্লাহ পাক বলেন,

﴿وَمَا بِكُم مِّن نِّعۡمَةٖ فَمِنَ ٱللَّهِۖ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ ٱلضُّرُّ فَإِلَيۡهِ تَجۡ‍َٔرُونَ ٥٣ ثُمَّ إِذَا كَشَفَ ٱلضُّرَّ عَنكُمۡ إِذَا فَرِيقٞ مِّنكُم بِرَبِّهِمۡ يُشۡرِكُونَ ٥٤﴾ [ النحل : ٥٣، ٥٤ ]

“তোমরা যেসব নি‘আমত ভোগ কর, তা তো আল্লাহরই নিকট থেকে; আবার যখন দুঃখ-কষ্ট তোমাদেরকে স্পর্শ করে, তখন তোমরা তাঁকেই ব্যাকুলভাবে আহ্বান কর। এরপর যখন আবার আল্লাহ তোমাদের দুঃখ-কষ্টকে দূরীভূত করেন, তখন তোমাদের একদল তাদের রবের সাথে অংশীদার স্থির করে।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৫৩-৫৪]

হে মানবমণ্ডলী! নিশ্চয় জ্ঞানবান ব্যক্তি মহত্তর কর্মসমূহ পছন্দ করে এবং নিকৃষ্ট ও নীচু কর্মসমূহকে ঘৃণা করে, আর প্রত্যেক সম্মানিত নবী ও সৎ ব্যক্তিদের অনুসরণ করা ভালোবাসে এবং সে তাদের নাগাল না পেলেও তার মন সব সময় তাদের সাথে মিলিত হতে চায়। আর সে পথ পাওয়ার রাস্তা তো হলো এটাই; মহান আল্লাহ তাঁর বাণীতে যে পথনির্দেশ করেছেন:

﴿قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ﴾ [ ال عمران : ٣١ ]

“যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসা তবে আমার অনুসরণ কর , তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১]

সুতরাং সে যদি এই বাণী মান্য করে চলে, তবে আল্লাহ তাকে নবী, রাসূল, শহীদ ও সৎ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّٰلِحِينَۚ وَحَسُنَ أُوْلَٰٓئِكَ رَفِيقٗا ٦٩﴾ [ النساء : ٦٩ ]

“আর কেউ আল্লাহ্ এবং রাসূলের আনুগত্য করলে সে নবী, সিদ্দীক (সত্যনিষ্ঠ), শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ- যাদের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন- তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৯]

হে মানুষ! আমি আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, আপনি একটি নির্জন স্থানে একাকী হন, অতঃপর চিন্তা করুন; আপনার নিকট সত্য কি এসেছে? আপনি তার দলীল দেখুন এবং তার যুক্তি ও প্রমাণাদি নিয়ে গবেষণা করুন। ফলে আপনি যদি দেখেন যে তা সত্য, তাহলে তার অনুসরণ করুন। কখনও পরিচিত অভ্যাস ও দেশ প্রথার নিকট বন্দী হবেন না। জেনে রাখবেন! নিশ্চয় আপনার জীবন আপনার নিকট, আপনার বন্ধু-বান্ধব, জমি-জমা এবং বাপ-দাদার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির চেয়েও অধিক সম্মানিত। আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে এর উপদেশ দেন এবং তিনি বলেন,

﴿قُلۡ إِنَّمَآ أَعِظُكُم بِوَٰحِدَةٍۖ أَن تَقُومُواْ لِلَّهِ مَثۡنَىٰ وَفُرَٰدَىٰ ثُمَّ تَتَفَكَّرُواْۚ مَا بِصَاحِبِكُم مِّن جِنَّةٍۚ إِنۡ هُوَ إِلَّا نَذِيرٞ لَّكُم بَيۡنَ يَدَيۡ عَذَابٖ شَدِيدٖ ٤٦﴾ [ سبا : ٤٦ ]

“(হে রাসূল!) আপনি বলুন: আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি; তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই দুই জন অথবা এক এক জন করে দাঁড়াও, অতঃপর তোমরা চিন্তা করে দেখো, তোমাদের সাথী আদৌ পাগল নয়। সে তো আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র।” [সূরা সাবা, আয়াত:৪৬]

হে মানুষ! আপনি ইসলাম গ্রহণ করলে আপনার কোনো কিছুই হারানোর নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَاذَا عَلَيۡهِمۡ لَوۡ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقَهُمُ ٱللَّهُۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِهِمۡ عَلِيمًا ٣٩﴾ [ النساء : ٣٩ ]

“আর এতে তাদের কী হতো, যদি তারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনয়ন করতো এবং আল্লাহ তাদেরকে যে রিযিক প্রদান করেছেন তা থেকে ব্যয় করতো? আর আল্লাহ তাদের বিষয়ে মহাজ্ঞানী।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত:৩৯]

ইমাম ইবন কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন: তারা যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে এবং ভালো পথে চলে তবে তাদেরকে কোনো জিনিস ক্ষতি করবে? বরং তারা যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে এবং আল্লাহ তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তা হতে ঐ খাতে ব্যয় করে যা তিনি ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন; তাহলে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কিয়ামত দিবসে সৎ আমলকারীদের সাথে যেমন আচরণ করবেন, তাদের সাথেও তেমনই আচরণ করবেন। আর তিনি তো তাদের সৎ ও বাতিল নিয়ত এবং তাদের মধ্যে কে আল্লাহর তাওফীক পাওয়ার হকদার সে সম্পর্কে পূর্ণ অবগত রয়েছেন। ফলে তিনি তাকে তাওফীক দান করেন এবং তার অন্তরকে হিদায়াতের দিকে চলতে ইলহাম (গোপন নির্দেশ প্রদান) করেন। আর তিনি তাকে এমন সৎ কাজের জন্য নিয়োজিত করেন যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট থাকেন। আর মহান আল্লাহর নৈকট্য থেকে কে ব্যর্থ ও বিতাড়নের হকদার তাও তিনি অবগত আছেন। আর যে ব্যক্তি তাঁর নিকট থেকে বিতাড়িত সে তো দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিশ্চয় আপনার ইসলাম গ্রহণ করা, তা আপনার মাঝে এবং আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন এমন যে কোনো কাজ করার মাঝে, কখনও বাধা সৃষ্টি করে না। বরং আল্লাহ আপনাকে প্রত্যেক আমলের বিনিময়ে সাওয়াব দিবেন যা আপনি একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির জন্য করেন। যদিও তা আপনার দুনিয়ার কাজে লাগে এবং আপনার সম্পদ, মর্যাদা ও গৌরব বৃদ্ধি করে। এমনকি আপনি যে সমস্ত মুবাহ বা বৈধ কোনো কিছু গ্রহণ করেন, সে ক্ষেত্রে যদি হারাম থেকে বাঁচার জন্য হালালের ওপর তৃপ্ত থাকার সাওয়াব কামনা করেন, তাহলেও এর মধ্যে আপনার জন্য সাওয়াব আছে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ، أَيَأتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ؟ قَالَ : «أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ؟ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلَالِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ»

“তোমাদের কারোও স্ত্রী সহবাসেও সদকার সাওয়াব রয়েছে। সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! এটা কীভাবে হয় যে, আমরা যৌনতৃপ্তি অর্জন করবো আর তাতে সাওয়াবও রয়েছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমরা বল তো দেখি, যদি কেউ ব্যভিচার করে তাহলে তার কি গুনাহ হবে না? অতএব, সে যদি তা না করে হালালভাবে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তাহলে অবশ্যই সাওয়াব হবে।” [সহীহ মুসলিম, কিতাবুয যাকাত, হাদীস নং ১০০৬।]

হে মানুষেরা! নিশ্চয় রাসূলগণ সত্য সহকারে আগমন করেন এবং আল্লাহর উদ্দেশ্য প্রচার করেন। আর মানুষ তাঁর শরী‘আতকে জানার ব্যাপারে মুখাপেক্ষী, যাতে করে সে এই পার্থিব জীবনে বুদ্ধিমত্তার সাথে চলতে এবং আখেরাতে কামিয়াব হতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَآءَكُمُ ٱلرَّسُولُ بِٱلۡحَقِّ مِن رَّبِّكُمۡ فَ‍َٔامِنُواْ خَيۡرٗا لَّكُمۡۚ وَإِن تَكۡفُرُواْ فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمٗا ١٧٠﴾ [ النساء : ١٧٠ ]

“হে মানুষেরা! নিশ্চয় তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সত্যসহ রাসূল আগমন করেন। অতএব তোমরা ঈমান আনয়ন কর, তাহলে তোমাদের কল্যাণ হবে, আর যদি অবিশ্বাস কর তবে নভোমণ্ডলে ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু আছে তা আল্লাহর জন্য। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৭০]

মহান আল্লাহ আরও বলেন,

﴿قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ قَدۡ جَآءَكُمُ ٱلۡحَقُّ مِن رَّبِّكُمۡۖ فَمَنِ ٱهۡتَدَىٰ فَإِنَّمَا يَهۡتَدِي لِنَفۡسِهِۦۖ وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيۡهَاۖ وَمَآ أَنَا۠ عَلَيۡكُم بِوَكِيلٖ ١٠٨﴾ [ يونس : ١٠٨ ]

“(হে রাসূল!) আপনি বলে দিন: হে মানুষেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য (দীন) এসেছে। অতএব যে ব্যক্তি সঠিক পথে আসবে, বস্তুত সে নিজের জন্যেই সঠিক পথে আসবে, আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট থাকবে, তার পথভ্রষ্টতা তারই ওপর বর্তাবে, আর আমাকে তোমাদের ওপর দায়বদ্ধ করা হয়নি।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৮]

হে মানুষ! আপনি যদি ইসলাম গ্রহণ করেন তাতে আপনার নিজেরই লাভ। আর যদি আপনি কুফরি করেন তবে তাতে আপনার নিজেরই ক্ষতি। মহান আল্লাহ তো তাঁর বান্দা থেকে অমুখাপেক্ষী। সুতরাং অবাধ্যদের অবাধ্যতা তাঁর কোনো ক্ষতিই করতে পারে না। আর আনুগত্যকারীর আনুগত্যও তাঁর কোনো উপকার করতে পারে না। ফলে তাঁর অজান্তে কেউ পাপ কার্য করতে এবং তাঁর বিনা হুকুমে কেউ আনুগত্য করতে পারে না। যেমন- নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ সম্পর্কে সংবাদ দেন যে তিনি বলেন:

«يَا عِبَادِي إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي، وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا، فَلَا تَظَالَمُوا، يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلَّا مَنْ هَدَيْتُهُ، فَاسْتَهْدُونِي أَهْدِكُمْ، يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ جَائِعٌ، إِلَّا مَنْ أَطْعَمْتُهُ، فَاسْتَطْعِمُونِي أُطْعِمْكُمْ، يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ عَارٍ، إِلَّا مَنْ كَسَوْتُهُ، فَاسْتَكْسُونِي أَكْسُكُمْ، يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا، فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ، يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ لَنْ تَبْلُغُوا ضَرِّي فَتَضُرُّونِي وَلَنْ تَبْلُغُوا نَفْعِي، فَتَنْفَعُونِي، يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَتْقَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ مِنْكُمْ، مَا زَادَ ذَلِكَ فِي مُلْكِي شَيْئًا، يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ كَانُوا عَلَى أَفْجَرِ قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِنْ مُلْكِي شَيْئًا، يَا عِبَادِي لَوْ أَنَّ أَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجِنَّكُمْ قَامُوا فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَأَلُونِي فَأَعْطَيْتُ كُلَّ إِنْسَانٍ مَسْأَلَتَهُ، مَا نَقَصَ ذَلِكَ مِمَّا عِنْدِي إِلَّا كَمَا يَنْقُصُ الْمِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ الْبَحْرَ، يَا عِبَادِي إِنَّمَا هِيَ أَعْمَالُكُمْ أُحْصِيهَا لَكُمْ، ثُمَّ أُوَفِّيكُمْ إِيَّاهَا، فَمَنْ وَجَدَ خَيْرًا، فَلْيَحْمَدِ اللهَ وَمَنْ وَجَدَ غَيْرَ ذَلِكَ، فَلَا يَلُومَنَّ إِلَّا نَفْسَهُ»

“হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুমকে আমার জন্য হারাম করেছি; আর তা তোমাদের মধ্যেও হারাম করে দিলাম। অতএব তোমরা একে অপরের ওপর যুলুম করো না। হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে হিদায়াত দান করি সে ছাড়া তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট। সুতরাং আমার কাছে হিদায়াত চাও, আমি তোমাদেরকে হিদায়াত দান করব। হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে খাদ্য দান করি, সে ছাড়া সবাই ক্ষুধার্ত। সুতরাং তোমরা আমার কাছে খাদ্য চাও, আমি তোমাদেরকে খাদ্য দান করব। হে আমার বান্দাগণ! আমি যাকে কাপড় পরিয়েছি সে ব্যতীত, তোমরা সবাই বিবস্ত্র। সুতরাং তোমরা আমার কাছে বস্ত্র চাও, আমি তোমাদেরকে বস্ত্র দান করব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাত-দিন গুনাহ করছ, আর আমি তোমাদের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিব। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা কখনই আমার ক্ষতি করার সামর্থ্য রাখ না যে, আমার ক্ষতি করবে; আর তোমরা কখনই আমার ভালো করার সামর্থ্য রাখ না যে, আমার ভালো করবে। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের পূর্বের ও পরের সকল মানুষ ও জিন্ন যদি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মুত্তাকী ও পরহেজগার ব্যক্তির হৃদয় হয়ে যায়, তবে তা আমার রাজত্বে কিছুই বাড়াতে পারবে না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের পূর্বের ও পরের সকল মানুষ ও জিন্ন যদি তোমাদের মধ্যে একজন সবচেয়ে পাপী ব্যক্তির হৃদয় হয়ে যায়, তবে তা আমার রাজত্বে কিছুই কমাতে পারবে না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের পূর্বের ও পরের সকল মানুষ ও জিন্ন যদি একই ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায় এবং আমি সকলের চাওয়া পূরণ করে দেই, তবে আমার কাছে যা আছে তাতে সমুদ্রে একটি সুই ডুবালে যতটা কম হয়ে যায় তা ব্যতীত আর কিছুই কম হতে পারে না। হে আমার বান্দাগণ! আমি তোমাদের আমলকে (কাজকে) তোমাদের জন্যে গণনা করে রাখি, আর আমি তার পুরোপুরি প্রতিফল দেব। সুতরাং যে ব্যক্তি উত্তম প্রতিফল পাবে তার জন্য আল্লাহর প্রশংসা করা উচিৎ, আর যে এর বিপরীত পাবে তার শুধু নিজেকেই ধিক্কার দেয়া উচিৎ।” [সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বিররি ওয়াস সিলাতি, অনুচ্ছেদ: তাহরীমুয যুলমি, হাদীস নং ২৫৭৭।]

والحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين .

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সমগ্র বিশ্ব জাহানের রব। দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক সমস্ত নবী ও রাসূলগণের সর্বোত্তম ব্যক্তি আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সকল সহচরবৃন্দের ওপর।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন