মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
লেখকঃ ড. মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম
২৪
দীনের স্তরসমূহ
দীনের প্রথম স্তর: ইসলাম* [এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য দেখা যেতে পারে, শাইখুল ইসলাম, মুজাদ্দিদ, আল-ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব এর আত-তাওহীদ, আল-উসূলুস সালাসা, আদাবুল মাশই ইলাস সালাত। অনুরূপ আব্দুর রহমান আল-উমরের দীন আল-হক। মুহাম্মাদ ইবন আলী ‘আরফাজ এর ‘মা লাবুদ্দা মা‘রিফাতুহু ‘আনিল ইসলাম। শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন জারুল্লাহ আলে জারুল্লাহ রাহিমাহুল্লাহ্ এর ‘আরকানুল ইসলাম। একদল তালেবে ইলম রচিত ‘শারহু আরকানুল ইসলাম ওয়াল ঈমান, যা পুনর্পাঠ করেছেন শাইখ আব্দুল্লাহ আল-জিবরীন।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/14/24
ইসলাম: এর পাঁচটি রুকন যথা: দু’টি সাক্ষ্য দেয়া (কালেমায়ে শাহাদাত), সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, সাওম পালন করা ও হজ করা।
প্রথমত: (কালেমায়ে শাহাদাত) এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।
“আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই” সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ হলো: আসমান ও যমীনে একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো সত্য উপাস্য নেই, তিনিই সত্য উপাস্য, তিনি ব্যতীত আর সব বাতিল বা অসত্য। [দীন আল-হক্ব পৃ. ৩৮।] এর দাবী হচ্ছে যাবতীয় ইবাদাত-বন্দেগীর একনিষ্ঠতাকে একমাত্র আল্লাহর জন্য স্থির করা। আর তিনি ব্যতীত অন্য সকলের জন্য তা নাকচ করা। এ কালেমার সাক্ষ্যদাতা যতক্ষণ পর্যন্ত এ ব্যাপারে দু’টি বিষয় সাব্যস্ত না করবে ততক্ষণ সে লাভবান হতে পারবে না।
এক- [এর অর্থ ও দাবী] জানা ও বুঝা, [এটার ওপর] বিশ্বাস স্থাপন, দৃঢ়তা অর্জন, সত্যায়ন, [নিষ্ঠা, মনে-প্রাণে গ্রহণ করা] এবং ভালোবাসার সাথে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা।
দুই- আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য যাদের উপাসনা করা হয় তাদেরকে অস্বীকার করা। সুতরাং যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দেয় কিন্তু আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য যাদের উপাসনা করা হয় তাদেরকে অস্বীকার করে না, তবে এই সাক্ষ্য তার কোনোই উপকারে আসবে না। [কুওয়াতু উয়ূনুল মুওয়াহহিদীন, পৃ. ৬০।]
আর “মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল” বা দূত এই সাক্ষ্যদানের অর্থ হলো,
*তিনি যা আদেশ করেছেন তা পালন করা,
*যে বিষয়ে খবর দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা,
*যা থেকে নিষেধ করেছেন ও সতর্ক করেছেন তা পরিহার করা এবং
*তাঁর তরীকা অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদাত করা।
আর একথা জেনে রাখা ও বিশ্বাস পোষণ করা যে,
*মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানুষের জন্য আল্লাহর রাসূল।
আরও বিশ্বাস করা যে,
*তিনি দাস, তাঁর ইবাদাত করা যাবে না।
*তিনি রাসূল, তার ওপর মিথ্যারোপ করা যাবে না। বরং তাঁর আনুগত্য করা হবে ও অনুসরণ করা হবে।
*যে কেউ তার আনগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে,
*আর যে কেউ তার অবাধ্য হবে জাহান্নামে যাবে।
আরও বিশ্বাস স্থাপন করা যে,
*আকীদাহ বিষয়ে হোক, আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশিত ইবাদাত সম্পর্কিত হোক, বিচার ও আইন বিষয়ক হোক, আখলাক সম্পর্কিত হোক অথবা সমাজ ও পরিবার গঠন বিষয়ে হোক অথবা হালাল ও হারাম সম্পর্কিত হোক না কেন, আপনি কোনো বিষয়ই একমাত্র এই সম্মানিত রাসূল বা দূত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করতে পারবে না। কারণ তিনি আল্লাহর রাসূল বা দূত, তাঁর পক্ষ থেকে শরী‘আত প্রচারক। [দীন আল-হক্ব পৃ. ৫১-৫২।]
দ্বিতীয়ত: সালাত [আরো দেখুন: শাইখ আবদুল্লাহ ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ লিখিত “কাইফিয়্যাতু সালাতিন্নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম”।]: সালাত হচ্ছে, ইসলামের দ্বিতীয় রোকন বা স্তম্ভ। বরং ইসলামের মেরুদণ্ড। বান্দা ও রবের মাঝে নিবিড় সম্পর্ক গড়ার মাধ্যম। আল্লাহর বান্দাগণ প্রত্যেক দিন তা পাঁচবার আদায় করে থাকে। এর মাধ্যমে সে তার ঈমানকে নবায়ন করে এবং স্বীয় আত্মাকে পাপের ময়লা-আবর্জনা থেকে পবিত্র করে, অন্যায়-পাপাচার ও অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করে। সুতরাং আল্লাহর বান্দা যখন ভোরে ঘুম হতে জাগ্রত হয় এবং তুচ্ছ পার্থিব দুনিয়ার কাজ কর্ম আরম্ভ করার পূর্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হয়ে তাঁর রবের সামনে দণ্ডায়মান হয়। অতঃপর “আল্লাহু আকবার” বলে তার প্রভুর বড়ত্ব ঘোষণা করে এবং তাঁর দাসত্বের স্বীকৃতি দেয় ও তাঁর নিকট সাহায্য ও হিদায়াত চায়। সাজদাহ, কিয়াম ও রুকুকারীর অবস্থায় তার ও তার রবের মাঝে দাসত্ব ও আনুগত্যের যে অঙ্গীকার রয়েছে তা নবায়ন করে, প্রত্যেক দিন পাঁচবার তা আদায় করে। আর এই সালাত আদায়ের জন্য তার সালাতের জায়গা, কাপড়, শরীর, অন্তর পবিত্র হওয়া আবশ্যক। মুসলিম ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইদের সাথে জামা‘আতের সাথে তা আদায় করবে, যারা সবাই আন্তরিকভাবে তাদের রবের অভিমুখী এবং যাদের চেহারা আল্লাহর ঘর কা‘বা পানে ফিরানো। সুতরাং এভাবে সালাত আদায় করলে সালাতকে তার পরিপূর্ণ ও সর্বোত্তম পন্থায় স্থাপন করা হবে, যেমনিভাবে আল্লাহর বন্দাগণ আল্লাহর ইবাদাত করে। যে ব্যক্তি এই ইবাদাতে আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণার জন্য দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে শামিল করল যেমন: মুখের কথা, দুই হাত, দুই পা ও মাথার কাজ-কর্ম, তাদের অনুভূতি এবং শরীরের সমস্ত অঙ্গ, প্রত্যেকেই এই মহান ইবাদাত থেকে তার অংশ (নেকী) পাবে।
সুতরাং অনুভূতি ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তারাও তাদের এ থেকে নেকীর ভাগ পাবে। অন্তরও তার নেকীর ভাগ পাবে। আর সালাত যেসব বিষয়কে শামিল করেছে তা হলো: আল্লাহর গুণ, প্রশংসা, মহিমা, তাসবীহ, তাকবীর, সত্যের সাক্ষ্য, কুরআন তিলাওয়াত, মহাপরিচালক আল্লাহর সামনে অনুগত ও বিনয়ী বান্দার ন্যায় দাঁড়ানো, তারপর এই স্থানে তাঁর উদ্দেশ্যে হীন ও বিনয়ী হওয়া, তাঁর নৈকট্য অর্জন করা, আবার রুকু, সাজদাহ, বিনয়-নম্রতার সাথে বসা ইত্যাদি। তাঁর বড়ত্বের কাছে নতি স্বীকার ও তাঁর মর্যাদার কাছে নতি স্বীকার করার কারণে কখনও কখনও বান্দার অন্তর ভেঙ্গে পড়ে, তার শরীর তাঁর জন্য নীচ হয়ে যায়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ বিনয়ী হয়। অতঃপর আল্লাহর প্রশংসা এবং তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ পাঠ, এরপর তার প্রভুর নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে সে তার সালাত সমাপ্ত করে। [দেখুন, মিফতাহু দারুস সা‘আদাহ ২য় খণ্ড ৩৮৪ পৃ.]
তৃতীয়ত: যাকাত [আরো দেখুন: শাইখ আবদুল্লাহ ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ লিখিত “রিসালাতানে ফিয যাকাত ওয়াস সিয়াম”।]: যাকাত হচ্ছে, ইসলামের তৃতীয় রোকন বা স্তম্ভ। ধনী মুসলিম ব্যক্তির ওপর তার মালের যাকাত আদায় করা ওয়াজিব। এটা খুব সহজ একটি বিষয়। অতঃপর ফকীর, মিসকীন ও অন্যান্য যাদেরকে যাকাত দেয়া জায়েয তাদেরকে প্রদান করবে। যাকাতের যারা হকদার তাদেরকে খুশি মনে যাকাত প্রদান করা মুসলিম ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব। এর মাধ্যমে সে তার হকদারদের খোটা দিবে না এবং কোন প্রকার কষ্টও দিবে না। অনুরূপ ওয়াজিব হলো, মুসলিম ব্যক্তি এটা প্রদান করবে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। এর মাধ্যমে কোনো সৃষ্টজীবের নিকট থেকে কোনো প্রকার কৃতজ্ঞতা বা প্রতিদান পাওয়ার ইচ্ছা করবে না। বরং তা প্রদান করবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে, যাতে সুখ্যাতি অর্জন ও প্রদর্শনের কোনো চিহ্ন থাকবে না।
যাকাত প্রদানের উদ্দেশ্য হচ্ছে: মালের বরকত লাভ। ফকীর, মিসকীন, ও অভাবীদের আত্মপ্রশান্তি এবং ভিক্ষার লাঞ্ছনা থেকে তাদেরকে অমুখাপেক্ষী করা। আর ধনীরা যদি তাদেরকে পরিত্যাগ করে তবে তারা ক্ষতি ও অভাবের মধ্যে পড়ে যাবে, এ থেকে তাদের প্রতি দয়া করা। যাকাত প্রদানের আরও উপকারিতা হলো, এর মাধ্যমে বদান্যতা, দানশীলতা, স্বার্থত্যাগ, ব্যয় ও অনুগ্রহ ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত হওয়া যায় এবং কৃপণ, লোভী ও নীচ ইত্যাদি জাতীয় দোষনীয় চরিত্র থেকে বাঁচা যায়। এর মাধ্যমে মুসলিমদের মাঝে সম্পর্ক জোরদার হয়। ধনীরা গরীবদের অনুগ্রহ করে। সুতরাং, যদি এই পর্বটি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে সমাজের মাঝে কোনো প্রকার নিঃস্ব ফকীর, নুয়ে পড়া ঋণগ্রস্ত এবং সম্বল-হারা বিপদগ্রস্ত মুসাফির রাস্তায় আটকা পড়ে থাকবে না।
চতুর্থত: সিয়াম: অর্থাৎ রমযান মাসের সিয়াম, যা ফজর উদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রাখা হয়। এ সময়ের মধ্যে রোযাদার পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও এতদুভয়ের হুকুমে যা পড়ে তা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত পালনার্থে বর্জন করে এবং স্বীয় আত্মাকে তার কু-প্রবৃত্তির আমল থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহ তা‘আলা সিয়ামকে অসুস্থ, মুসাফির, গর্ভবতী, স্তন্যদানকারিনী, ঋতুবতী ও প্রসূতি নারীর ওপর হালকা করে দিয়েছেন। ফলে তাদের প্রত্যেকের জন্য ঐ হুকুমই প্রযোজ্য হবে যা তাদের জন্য সঙ্গত হবে। এই মাসে মুসলিম তার আত্মাকে তার কু-প্রবৃত্তি থেকে দূরে রাখে, যার ফলে এই মহান ইবাদাত পালনের মাধ্যমে তার আত্মাকে পশুর সাদৃশ্য থেকে বের করে আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত ফিরিশতাদের সাদৃশ্যের দিকে নিয়ে যায়। অবশেষে সাওম পালনকারী এমন এক চিত্রের কথা চিন্তা-ভাবনা করতে থাকে যে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ব্যতীত পৃথিবীতে তার আর কোনো প্রয়োজন নেই।
সিয়াম অন্তরকে পুনর্জীবিত করে। আর দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত সৃষ্টি ও আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা পাওয়ার উৎসাহ দেয়। ধনীদেরকে ফকীর-মিসকীন এবং তাদের অবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, ফলে তাদের অন্তর তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে। তারা আল্লাহর যেসব নি‘আমত ভোগ করছে তা উপলব্ধি করতে পারে। ফলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সিয়াম আত্মাকে পবিত্র করে এবং তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখে। ব্যক্তি ও সমাজ সকলে এই ধারণা পোষণ করতে আরম্ভ করে যে, সুখে-দুঃখে, প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বাবস্থায় তাদের ওপর আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। যেহেতু সমাজের সকলে পূর্ণ একমাস এই ইবাদাতের হিফাযতকারী ও স্বীয় প্রভুর অনুগত হয়ে অতিবাহিত করে। এসব কিছু তাকে আল্লাহর ভয়, আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান এবং এই দৃঢ় বিশ্বাসের দিকে ধাবিত করে যে, আল্লাহ তা‘আলা গোপন বিষয় ও যা লুকিয়ে রাখা হয় সবকিছু জানেন। আর মানুষকে একদিন তার প্রভুর সামনে অবশ্য অবশ্যই দণ্ডায়মান হতে হবে এবং তাকে তার ছোট-বড় সকল কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। [মিফতাহু দারুস সাআদাহ ২য় খণ্ড ৩৮৪ পৃ.]
পঞ্চমত: হজ [আরো দেখুন: একদল উলামা পরিষদ কর্তৃক লিখিত “দালীলুল হাজ্জি ওয়াল মু‘তামির” এবং শাইখ আবদুল্লাহ আযীয ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ লিখিত “আত-তাহকীকু ওয়াল ইযাহু লি কাছীরিন মিনাল হাজ্জি ওয়াল উমরাতি”।]: পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থিত বায়তুল্লাহিল হারাম (আল্লাহর সম্মানিত ঘর) কা‘বার হজব্রত পালন। যারা কা‘বা ঘর পর্যন্ত পরিবহনের ব্যবস্থা অথবা তার পারিশ্রমিক প্রদান এবং সেখানে যাওয়া আসার সময় তার সার্বিক প্রয়োজন মেটাতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা দরকার তার সামর্থ্য রাখে, ঐ সমস্ত প্রত্যেক ক্ষমতাবান, জ্ঞানবান, বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলিম ব্যক্তির ওপর তা ফরয। তবে শর্ত হলো যে, ব্যয়ের এই অর্থ, তার ভরণ পোষণের দায়িত্বে যারা রয়েছে তাদের খাদ্য-খোরাক হতে অতিরিক্ত হতে হবে এবং সে যেন পথে তার জীবনের ব্যাপারে ও তার অনুপস্থিতিতে তার অধীনস্থদের ব্যাপারে আশংকা-মুক্ত হয়। যাদের সে পর্যন্ত (কা‘বা ঘর) যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাদের ওপর জীবনে মাত্র একবারই হজ ফরয।
পাপের কালিমা থেকে আত্মাকে পবিত্র করার নিমিত্তে হজের ইচ্ছা পোষণকারীকে আল্লাহর নিকট তাওবা করা উচিৎ। এরপর সে যখন মক্কা মুকার্রমা এবং হজের পবিত্র স্থানসমূহে পৌঁছবে তখন আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত ও তাঁর সম্মানার্থে হজের কার্যাদি সম্পন্ন করবে। আর জেনে রাখবেন যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কা‘বা ও মাশায়ির অর্থাৎ হজের অন্যান্য পবিত্র জায়গাসমূহ উপাস্য নয়, এগুলোর ইবাদাত করা যাবে না। বরং এগুলো কারো উপকার বা অপকার কিছুই করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা যদি ঐ সমস্ত জায়গাগুলোতে হজের কার্য সম্পাদন করার নির্দেশ না দিতেন, তাহলে সেখানে গিয়ে মুসলিমের জন্য হজ করা বৈধ হত না।
হজে এসে হজ পালনকারী ব্যক্তি একটি সাদা লুঙ্গি ও একটি সাদা চাদর পরিধান করে। অতঃপর সমগ্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসলিমরা একই স্থানে সমবেত হয়ে, একই ধরনের কাপড় পরিধান করে, একই রবের ইবাদাত করেন। যেখানে শাসক ও শাসিত, নেতা ও অধীনস্থ, ধনী ও গরীব এবং সাদা ও কালোর মাঝে কোনো ভেদাভেদ নেই। সকলেই আল্লাহর সৃষ্টজীব ও তাঁর বান্দা। আর এ কারণেই একমাত্র তাকওয়া অর্জন বা আল্লাহভীতি ও সৎ আমল ব্যতীত একজন মুসলিম আরেকজন মুসলিমের ওপর কোনোই প্রাধান্য নেই।
ফলে এক হয়ে হজ পালনের মাধ্যমে মুসলিমদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতা ও পরিচিতির পথ প্রসারিত হয়। এর মাধ্যমে তারা সকলেই ঐ দিনকে স্মরণ করেন, যেদিন আল্লাহ তা‘আলা সকলকে পুনরুত্থিত করবেন এবং হিসাব-নিকাশের জন্য সবাইকে একই স্থানে একত্রিত করবেন। যার কারণে তারা আল্লাহর আনুগত্য করার মাধ্যমে মৃত্যু পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। [প্রাগুক্ত: ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৮৫ এবং দীন আল-হক, পৃ. ৬৮।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/14/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।