hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের মৌলিক নীতিমালা

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম

১৯
রাসূলগণের দা‘ওয়াতের মূলনীতি
সমস্ত নবী ও রাসূল সম্মিলিত কতিপয় মৌলিক নীতিমালার প্রতি আহ্বানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন। [এ মূলনীতিগুলোর দিক ইঙ্গিত রয়েছে, সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৮৫, ২৮৬; সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫১, ১৫৩; সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৩৩; সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩, ৩৭।] যেমন- আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি এবং তকদীরের ভালো ও মন্দের প্রতি ঈমান স্থাপন করা। তেমনি একমাত্র আল্লাহর ইবাদাতের আদেশ করা, যার কোনো অংশীদার নেই। আর তাঁর পথ অনুসরণ করা এবং অন্য পথসমূহের অনুসরণ না করা। চার প্রকার জিনিসকে হারাম করা, যথা: প্রকাশ্য ও গোপনীয় সকল প্রকার অশ্লীলতা ও গুনাহ, অন্যায়ভাবে যুলুম করা, আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন এবং প্রতিমা ও মূর্তিপূজা করা। আর আল্লাহ তা‘আলার স্ত্রী, সন্তান, অংশীদার, সমকক্ষ ও সাদৃশ্য আছে ইত্যাদি থেকে এবং তাঁর বিরুদ্ধে অসত্য বলা থেকে তাঁকে পবিত্র করা। তেমনি সন্তানাদি ও অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করাকে হারাম মেনে নেওয়া। সুদ ও ইয়াতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা হতে নিষিদ্ধ করা। অঙ্গীকারসমূহ, পরিমাপ ও ওজন পূর্ণভাবে প্রদান করা, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার, মানুষের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা এবং কথা ও কাজে সততা অবলম্বনের আদেশ করা। অনুরূপভাবে অপচয় ও অহংকার করা হতে এবং অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ ভক্ষণ করা হতে নিষেধ করা।

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম [তিনি হচ্ছেন, মুহাম্মাদ ইবন আবু বকর ইবন আইয়্যুব আয-যার‘ঈ। জন্ম ৬৯১ হিজরী, মৃত্যু ৭৫১ হিজরী। ইসলামের বড় আলেমগণের একজন। তাঁর অনেক গ্রহণযোগ্য রচনা রয়েছে।] রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “মৌলিক বিষয়সমূহে সকল শরী‘আত এক ও অভিন্ন, যদিও তা ভিন্ন ভিন্ন শরী‘আত হিসেবে পরিগণিত। যার সৌন্দর্য অন্তরের মাঝে সুপ্রতিষ্ঠিত। আর যদি তা যার ওপর প্রতিষ্ঠিত, তা ব্যতীত অন্য কিছু হয়ে যায় তবে তা হিকমাত, কল্যাণ ও রহমত হতে বেরিয়ে যাবে। বরং শরী‘আত যা নিয়ে এসেছে তার বিপরীতে তা আসবে এটা অসম্ভব।” আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَوِ ٱتَّبَعَ ٱلۡحَقُّ أَهۡوَآءَهُمۡ لَفَسَدَتِ ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِيهِنَّۚ﴾ [ المؤمنون : ٧١ ]

“সত্য যদি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করতো, তবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মাঝখানে যা কিছু রয়েছে সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়তো।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ৭১]

আর বিবেকসম্পন্ন ব্যক্তি এটা কীভাবে মেনে নিতে পারে যে, মহা প্রশাসক (আল্লাহ) কর্তৃক প্রদত্ত শরী‘আতে যা এসেছে তা বাদ দিয়ে সেটার বিপরীত জিনিস নিয়ে আসবে? [মিফতাহু দারুস্ সা‘আদাহ, ২য় খণ্ড, ৩৮৩ নং পৃষ্ঠা এবং দেখুন: “আল জওয়াবুস সহীহ লিমান বাদ্দালা দীনাল মাসীহ” ৪র্থ খণ্ড, ৩২২ নং পৃষ্ঠা ও শাইখ সাফারিনীর “লাওয়ামিউল আনওয়ার” ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৩।]

আর এ কারণেই সকল নবীগণের দীন ছিল এক ও অভিন্ন, যিমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلرُّسُلُ كُلُواْ مِنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَٱعۡمَلُواْ صَٰلِحًاۖ إِنِّي بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِيمٞ ٥١ وَإِنَّ هَٰذِهِۦٓ أُمَّتُكُمۡ أُمَّةٗ وَٰحِدَةٗ وَأَنَا۠ رَبُّكُمۡ فَٱتَّقُونِ ٥٢﴾ [ المؤمنون : ٥١، ٥٢ ]

“হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকর্ম কর; তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি পূর্ণ অবগত। আর তোমাদের এই জাতি একই জাতি এবং আমিই তোমাদের রব; অতএব তোমরা আমাকে ভয় কর”। [সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত: ৫১, ৫২] মহান আল্লাহ আরও বলেন,

﴿شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ﴾ [ الشورى : ١٣ ]

“তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহ্কে, আর যা আমরা অহী করেছি আপনাকে এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ‘ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে বিভেদ সৃষ্টি কর না।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১৩ ]

বরং দীনের উদ্দেশ্য হলো: বান্দাগণ যেন যে জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে পৌঁছে যায়। আর তা হচ্ছে- একমাত্র তাদের রবের ইবাদাত করা, যার কোনো অংশীদার নেই [ইবন তাইমিয়্যাহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৬।]। সুতরাং দীন তাদের ওপর এমন কিছু কর্তব্য বিধিবদ্ধ করে দেয় যা তাকে পালন করতেই হবে, আর তাদের জন্যও কিছু কর্তব্যের নিশ্চয়তা প্রদান করে, আবার তাদেরকে এমন সব মাধ্যম দিয়েও সাহায্য করে, যা তাদেরকে এই লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছে দিবে। যাতে করে আল্লাহর পন্থা মোতাবেক তাদের জন্য তাঁর সন্তুষ্টি ও উভয় জগতের কল্যাণ বাস্তবায়ন হয়, যা বান্দাকে সম্পূর্ণভাবে ছিন্ন ভিন্ন করবে না এবং এমন কঠিন কষ্টকর রোগ দ্বারা তার ব্যক্তিত্বে আঘাত করবে না, যা তাকে তার স্বভাব, তার আত্মা এবং তার চতুঃপার্শ্বের জগতের মাঝে সংঘাত লাগিয়ে দিবে।

সুতরাং রাসূলগণ আল্লাহর এমন এক দীনের দিকে আহ্বান করেন, যা মানবজাতির সামনে উদ্দেশ্যে আকীদাহ-বিশ্বাসের মূল বুনিয়াদ পেশ করে, যার প্রতি তাকে বিশ্বাস স্থাপন করে নিতে হয় এবং এমন এক শরী‘আত পেশ করে, যার ওপর তাকে সারা জীবন চলতে হয়। সেজন্য তাওরাতে আকীদাহ ও শরী‘আহ ছিল এবং তার অনুসারীদেরকে এর মাধ্যমে মীমাংসা নিষ্পত্তির চাপ দেয়া হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَا ٱلتَّوۡرَىٰةَ فِيهَا هُدٗى وَنُورٞۚ يَحۡكُمُ بِهَا ٱلنَّبِيُّونَ ٱلَّذِينَ أَسۡلَمُواْ لِلَّذِينَ هَادُواْ وَٱلرَّبَّٰنِيُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ ٤٤﴾ [ المائ‍دة : ٤٤ ]

“নিশ্চয় আমরা তাওরাত অবতীর্ণ করেছি, যাতে হিদায়াত ও আলো ছিল, আল্লাহর অনুগত নবীগণ তা অনুযায়ী ইয়াহূদীদেরকে আদেশ করতেন, আর আল্লাহ ওয়ালাগণ এবং আলেমগণও।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৪]

অতঃপর ‘ঈসা মাসীহ ‘আলাইহিস সালাম ইঞ্জিল নিয়ে আসেন, যাতে ছিল হিদায়াত ও আলো আর তার পূর্বে যে তাওরাত ছিল তার সত্যায়নকারী। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَقَفَّيۡنَا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم بِعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِۖ وَءَاتَيۡنَٰهُ ٱلۡإِنجِيلَ فِيهِ هُدٗى وَنُورٞ وَمُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَهُدٗى وَمَوۡعِظَةٗ لِّلۡمُتَّقِينَ ٤٦﴾ [ المائ‍دة : ٤٦ ]

“আর আমরা তাদের পর ‘ঈসা ইবন মারিয়ামকে এ অবস্থায় প্রেরণ করেছিলাম যে, সে তার পূর্ববর্তী কিতাব অর্থাৎ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন এবং আমরা তাকে ইঞ্জিল প্রদান করেছি, যাতে হিদায়াত এবং আলো ছিল।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৪৬ ]

অতঃপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ পূর্ণ শরী‘আত ও পূর্ণাঙ্গ দীন নিয়ে আগমন করেন, যা পূর্ববর্তী সকল শরী‘আতের তত্ত্বাবধায়ক এবং রহিতকারী। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে আল-কুরআন দেন, যা তাঁর পূর্বের সকল আসমানী কিতাবের সত্যায়নকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ ٤٨﴾ [ المائ‍دة : ٤٨ ]

“আর আমরা এ কিতাব (কুরআন) কে আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি হকের সাথে, যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী এবং ঐসব কিতাবের সংরক্ষকও; অতএব আপনি তাদের মাঝে আল্লাহর অবতারিত এ কিতাব অনুযায়ী মীমাংসা করুন, যা আপনি প্রাপ্ত হয়েছেন, তা থেকে বিরত হয়ে তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করবেন না।” [সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৪৮ ]

আর আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাথে মুমিনগণও এর প্রতি ঈমান রাখে, যেমন তাঁর পূর্বেকার সকল নবী ও রাসূলগণ এর প্রতি ঈমান রাখে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ ٢٨٥﴾ [ البقرة : ٢٨٥ ]

“রাসূল তার প্রভুর পক্ষ থেকে যা তার কাছে নাযিল করা হয়েছে তার ওপর ঈমান এনেছেন এবং মুমিনগণও। প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহর ওপর, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের ওপর। আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে: আমরা শুনেছি ও মেনে নিয়েছি। হে আমাদের রব! আপনার ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৮৫]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন