hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কবরের প্রশ্ন ও প্রাসংগিক আলোচনা

লেখকঃ মুহাম্মাদ মুনিরুজ্জামান বিন আশরাফ আলী

১৬
রসূল ﷺ এর আনুগত্য ও অনুসরণের ফলাফল
قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা ৩/আলি ইমরানঃ ৩১)

কেবল মৌখিক দাবী ও মনগড়া তরীকায় আল্লাহর ভালবাসা এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় না। এসব লাভ করার পথ একটাই আর তা হলো শেষ নাবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর ঈমান আনা ও তাঁর নির্দেশ ও সুন্নাহর অনুসরণ করা। এই আয়াতে সমস্ত ভালবাসার দাবীদারদের জন্য একটি পথই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। অতএব আল্লাহর ভালবাসার অনুসন্ধানী ব্যক্তি যদি মুহাম্মাদ ﷺ এর অনুসরণের মাধ্যমে তা অনুসন্ধান করে, তাহলে অবশ্যই সে সফল হবে এবং স্বীয় দাবীতে সত্য প্রমাণিত হবে। অন্যথায় সে মিথ্যুক বলে সাব্যস্ত হবে এবং উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যর্থ হবে। নাবী কারীম ﷺ এর নিজেও বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করল, যে কাজের নির্দেশ আমি দিইনি, তার সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।’’ (বুখারী, মুসলিম) অর্থাৎ রসূল ﷺ এর প্রদর্শিত তরীকা বা পদ্ধতি বহির্ভূত আমল প্রত্যাখ্যাত হবে, তথা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। আর রসূল ﷺ এর অনুসরণে আল্লাহর ভালবাসাও পাওয়া যাবে এবং গুনাহগুলো ক্ষমা হয়ে যাবে। একটি কাজের দুটি পুরস্কার কেবল রসূল ﷺ অনুসরণের মাধ্যমেই পাওয়া যাবে। কেননা রসূল ﷺ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

وَاِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ

নিশ্চয় আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী। (সূরা ৬৮/ক্বলামঃ ৪)

আর এই মহান চরিত্রের অধিকারী হওয়ার কারণ এই যে, রসূল ﷺ নিজে থেকে কিছু বলতেন না। আল্লাহ যা ওহী করতেন সেটাই তিনি মেনে চলতেন ও সেটাই প্রচার করতেন। আল্লাহ বলেন,

كِتَابٌ اُنْزِلَ اِلَيْكَ فَلَا يَكُنْ فِيْ صَدْرِكَ حَرَجٌ مِّنْهُ لِتُنْذِرَ بِه وَذِكْرٰى لِلْمُؤْمِنِيْنَ

এটি কিতাব যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে। সুতরাং তার সম্পর্কে তোমার মনে যেন কোন সংকীর্ণতা না থাকে। যাতে তুমি তার মাধ্যমে সতর্ক করতে পার এবং তা মুমিনদের জন্য উপদেশ। (সূরা ৭/আরাফঃ ২)

اِتَّبِعُوْا مَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوْا مِنْ دُوْنِه ۤ اَوْلِيَآءَؕ قَلِيْلًا مَّا تَذَكَّرُوْنَ

তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না, তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা ৭/আরাফঃ ৩)

يَاۤ اَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَؕ وَاِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهٗؕ وَاللهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ

হে রসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে তা প্রচার কর, আর যদি তুমি তা না কর হবে তুমি রিসালাতের দায়িত্ব পালন করলে না, মানুষের কাছ থেকে তোমাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমার। (সূরা ৫/মায়িদাঃ ৬৭) অতঃপর আল্লাহ বলেন,

وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَالرَسُوْلَ فَاُولٰٓئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِكَ رَفِيْقًا

আর যারা আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য করে তারা তাদের সাথে থাকবে, আল্লাহ যাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন নাবী, সিদ্দিক, শহীদ ও নেককারদের মধ্য থেকে আর সাথী হিসেবে তারা উত্তম। (সূরা ৪/নিসাঃ ৬৯)

اِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللهُ وَرَسُوْلُهٗ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوا الَّذِيْنَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُوْنَ (৫৫) وَمَنْ يَّتَوَلَّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فَاِنَّ حِزْبَ اللهِ هُمُ الْغَالِبُوْنَ

তোমাদের বন্ধু কেবল আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুমিনগণ, যারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত প্রদান করে বিনীত হয়ে। আর যে আল্লাহ, তাঁর রসূল ও মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহর দলই বিজয়ী।

(সূরা ৫/মায়িদাঃ ৫৫-৫৬)

يَا بَنِيْۤ اٰدَمَ اِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ رُسُلٌ مِّنْكُمْ يَقُصُّوْنَ عَلَيْكُمْ اٰيَاتِيْ فَمَنِ اتَّقٰى وَاَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ

হে বানী আদম, যদি তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে রসূলগণ আসে যারা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করবে, তখন যারা সতর্ক হবে এবং (ঈমান-আমল) সংশোধন করবে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সূরা ৭/আরাফঃ ৩৫)

وَلَوْ اَنَّهُمْ رَضُوْا مَاۤ اٰتَاهُمُ اللهُ وَرَسُوْلُهٗ وَقَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ سَيُؤْتِيْنَا اللهُ مِنْ فَضْلِه وَرَسُوْلُهٗۤ اِنَّا اِلَى اللهِ رَاغِبُوْنَ

আর যদি তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকত এবং বলত, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, অচিরেই আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দান করবেন ও তাঁর রসূলও, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর দিকে ধাবিত। (সূরা তওবাঃ ৫৯)

اِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ اِذَا دُعُوْاۤ اِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ اَنْ يَّقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَاَطَعْنَاؕ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ

প্রকৃতপক্ষে মুমিনদের কথাতো হলো সেটাই, যখন তাদেরকে আহবান করা হয় আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি তাদের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য তখন তারা বলে, ‘‘আমরা শুনলাম ও আমরা আনুগত্য/মান্য করলাম’’ আর তারাই হলো সফলকাম। (সূরা ২৪/নূরঃ ৫১)

وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَيَخْشَ اللهَ وَيَتَّقْهِ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْفَآئِزُوْنَ

আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর (শাস্তি হতে বাঁচার জন্য) সতর্ক হয়, অতঃপর তারাই সফলকাম।

(সূরা নূরঃ ৫২)

وَمَنْ يَّقْنُتْ مِنْكُنَّ لِلّٰهِ وَرَسُوْلِه وَتَعْمَلْ صَالِحًا نُّؤْتِهَاۤ اَجْرَهَا مَرَّتَيْنِ وَاَعْتَدْنَا لَهَا رِزْقًا كَرِيْمًا

আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে এবং নেক আমল করবে আমি তাকে দু’বার তার পুরস্কার দান করব এবং আমি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক। (সূরা ৩৩/আহযাবঃ ৩১)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَقُوْلُوْا قَوْلًا سَدِيْدًا (৭০) يُصْلِحْ لَكُمْ اَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيْمًا (৭১)

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল, তাহলে তিনি তোমাদের আমলগুলোকে শুদ্ধ করে দিবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করে, সে অবশ্যই এক মহা সাফল্য অর্জন করল। (সূরা ৩৩/আহযাবঃ ৭০-৭১)

আয়িশা (রদিঃ) কে রসূল ﷺ এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রসূল ﷺ এর চরিত্র ছিল হুবুহু কুরআন।’’ আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে দ্বীন ইসলামের বিশুদ্ধ জ্ঞান অর্জন করে কেবলমাত্র রসূল ﷺ এর সুন্নাহ মোতাবেক ইবাদত করার ও জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

রসূল ﷺ এর আদর্শ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বা রসূল ﷺ অনুসরণ না করা কুফরী ও মুনাফিকের লক্ষণ এবং এর পরিণতি অত্যন্ত মারাত্মক

وَاِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا اِلٰى مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ وَاِلَى الرَّسُوْلِ رَاَيْتَ الْمُنَافِقِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْكَ صُدُوْدًا

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা আস যা আল্লাহ নাযিল করেছেন তার দিকে ও রসূলের দিকে, তখন মুনাফিকদের দেখবে তোমার কাছ থেকে সম্পূর্ণরূপে ফিরে যাচ্ছে। (সূরা ৪/নিসাঃ ৬১)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اَطِيْعُوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَلَا تَوَلَّوْا عَنْهُ وَاَنْتُمْ تَسْمَعُوْنَ

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর এবং তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, যখন তোমরা (আল্লাহর আদেশ) শুনছ।

(সূরা ৮/আনফালঃ ২০)

وَاَطِيْعُوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَلَا تَنَازَعُوْا فَتَفْشَلُوْا وَتَذْهَبَ رِيْحُكُمْ وَاصْبِرُوْاۤؕ اِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ

আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর এবং পরস্পর ঝগড়া করো না, তাহলে তোমরা সাহসহারা হয়ে যাবে এবং তোমাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।

(সূরা আনফালঃ ৪৬)

এখানে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আনুগত্য বর্জন করার পরিণতির কথা তুলে ধরা হয়েছে যে তার পরিণতি অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে। এই জন্য প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এহেন অবস্থায় বরং প্রত্যেক বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করা আবশ্যক। না হলে সেটা মুসলিমদের জন্য লাঞ্ছনার কারণ হতে পারে যা বর্তমানে আমরা দেখতেই পাচ্ছি।

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتّٰى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْۤ اَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا

অতএব না, তোমার রবের কসম, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব করবে না এবং পূর্ণ সম্মতিতে তা মেনে নিবে। (সূরা ৪/নিসাঃ ৬৫)

এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সঠিক কারণ হল, রসূল ﷺ এর ফুফুতো ভাই যুবায়ের (রদিঃ) এবং অপর এক ব্যক্তির মধ্যে জমি সেচার নালা ও পানিকে কেন্দ্র করে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। ব্যাপারটি নাবী ﷺ পর্যন্ত পৌঁছায়। তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ফয়সালা দিলে রায় যুবায়ের (রদিঃ) এর পক্ষে যায়। ফলে দ্বিতীয় ব্যক্তি বলে উঠল যে, রসূল ﷺ এই ফয়সালা এই জন্য দিলেন যে, যুবায়ের (রদিঃ) তার ফুফুতো ভাই। তখন এই আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ বুখারী, তাফসীর সূরা নিসা)। মুসলিমদের জন্য আয়াতের শিক্ষা হলো, রসূল ﷺ এর কোন কথা অথবা কোন ফয়সালার ব্যাপারে বিরোধিতা করা তো দূরের কথা সে ব্যাপারে অন্তরে কোন সামান্য পরিমান দ্বিধা রাখাও ঈমানের পরিপন্থী। কুরআনের এই আয়াত হাদীস অস্বীকারকারীদের জন্যতো বটেই, সেই সাথে অন্যান্য এমন লোকদের জন্যও চিন্তা ও চেতনার দ্বার উদঘাটন করে, যাঁরা তাদের ইমাম, আলেম-ওলামার উক্তির মোকাবেলায় সহীহ হাদীসকে মানতে কেবল সংকোচ বোধই করেন না বরং হয় পরিস্কার ভাষায় তা মানতে অস্বীকার করেন, নতুবা বিষয়ের সাথে সম্পর্কহীন অপব্যাখ্যা করেন, নতুবা বিশ্বস্ত রাবীকে যয়ীফ বা দুর্বল আখ্যা দিয়ে হাদীস প্রত্যাখান করার নিন্দনীয় প্রচেষ্টা চালান।

وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ ۢبَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدٰى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّه مَا تَوَلّٰى وَنُصْلِه جَهَنَّمَؕ وَسَآءَتْ مَصِيْرًا

আর যে রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সেদিকেই ফিরাব এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে আর বাসস্থান হিসেবে তা খুবই মন্দ।

(সূরা ৪/নিসাঃ ১১৫)

ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ شَآقُّوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗۚ وَمَنْ يُّشَاقِقِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَاِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

এটি এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করেছে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করবে তবে নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর। (সূরা ৮/আনফালঃ ১৩)

اَلَمْ يَعْلَمُوْاۤ اَنَّهٗ مَنْ يُّحَادِدِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَاَنَّ لَهٗ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيْهَاؕ ذٰلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيْمُ

তারা কি জানে না, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরোধিতা করে, তবে তার জন্য অবশ্যই জাহান্নাম, তাতে সে চিরকাল থাকবে। এটাই হলো চরম লাঞ্ছনা। (সূরা ৯/তওবাঃ ৬৩)

وَيَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِاللهِ وَبِالرَّسُوْلِ وَاَطَعْنَا ثُمَّ يَتَوَلّٰى فَرِيْقٌ مِّنْهُمْ مِّنْ ۢبَعْدِ ذٰلِكَؕ وَمَاۤ اُولٰٓئِكَ بِالْمُؤْمِنِيْنَ

তারা বলে, আমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি ঈমান এনেছি এবং আমরা আনুগত্য করেছি, তারপর তাদের একটি দল (রসূলের সুন্নাহ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয় আর তারা মুমিন নয়। (সূরা ২৪/নূরঃ ৪৭)

وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلٰى يَدَيْهِ يَقُوْلُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُوْلِ سَبِيْلًا

আর সেদিন যালিমরা (যারা রসূলের সুন্নতের অনুসরণ করেনি) নিজেদের হাত দু’টো কামড়িয়ে বলবে, হায়, আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।

(সূরা ২৫/ফুরকানঃ ২৭)

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّلَا مُؤْمِنَةٍ اِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهٗۤ اَمْرًا اَنْ يَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ اَمْرِهِمْ وَمَنْ يَّعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِيْنًا

আর কোন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন নির্দেশ দেন তখন সে বিষয়ে তার কোন ভিন্ন মত পোষণের অধিকার নেই, আর যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করল সে সুস্পষ্টভাবে পথভ্রষ্ট হবে।

(সূরা আহযাবঃ ৩৬)

يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوْهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُوْلُوْنَ يَا لَيْتَنَاۤ اَطَعْنَا اللهَ وَاَطَعْنَا الرَّسُوْلَا

যেদিন তাদের চেহারাগুলো আগুনে উপুড় করে দেয়া হবে, তারা বলবে, হায়, আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম।

সূরা ৩৩/আহযাবঃ ৬৬)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اَطِيْعُوا اللهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلَا تُبْطِلُوْاۤ اَعْمَالَكُمْ

হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলের আনুগত্য কর, আর তোমাদের আমলগুলো নষ্ট করো না। (সূরা ৪৭/মুহাম্মাদঃ ৩৩)

এই আয়াতের শিক্ষা এটাই যে, রসূল ﷺ নির্দেশ ও তার সুন্নাহর অনুসরণ না করলে উক্ত ব্যক্তির আমলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে তা যত বড় বুযুর্গই করুক আর যত নিষ্ঠার সাথে করুক।

আপনার আমল রসূল ﷺ এর পদ্ধতিতে না হলে কবরের তৃতীয় প্রশ্নের জবাবতো দিতে পারবেনই না বরং আপনার আমলে যদি বিদয়াতী আমল থাকে তবে রসূল ﷺ নিজেই আপনাকে হাউজে কাওসার থেকে তাড়িয়ে দিবেন। সুতরাং সাবধান! কুরআন-হাদীসের দলিল দেখে সুন্নাহ মোতাবেক রসূল ﷺ এর পদ্ধতিতে আমল করুন। অনেক লোক কিয়ামতের দিন অনেক আমল নিয়ে হাজির হবে কিন্তু আমলগুলো রসূল ﷺ এর পদ্ধতিতে না হওয়ায় আল্লাহ তা‘আলা তা কবুল করবেন না। সুতরাং দুনিয়ার জীবনে সকল মত-পথ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র রসূল ﷺ এর আদর্শ বা সুন্নতকে আঁকড়ে ধরলেই কেবল কবরের তৃতীয় প্রশ্নের জবাব সঠিকভাবে দিতে পারবেন ইন-শা-আল্লাহ নতুবা নয়। সুতরাং পীর-মুর্শিদ, মুরুববী-বুযুর্গ, আলেম-ওলামা, বাপ-দাদা, অধিকাংশ লোকের পদ্ধতি, প্রচলিত রীতি-নীতি, দল-মত-পথ-ইজম-মাযহাব সবকিছু বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী রসূল ﷺ এর আদর্শকে অনুসরণ করুন। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকটা বুঝার জন্য ও রসূল ﷺ এর আদর্শ অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

বিঃদ্রঃ- রসূল ﷺ সম্পর্কে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। কিন্তু প্রকৃত মুসলিমদের কর্তব্য হলো রসূল ﷺ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য কুরআন-সুন্নাহ দলিলভিত্তিক সংকলিত ও আমাদের প্রকাশিত ‘‘মুহাম্মদ ﷺ সম্পর্কে ভুল ধারনা’’ কিতাবটি পড়ার অনুরোধ রইল।-সংকলক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন