hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কবরের প্রশ্ন ও প্রাসংগিক আলোচনা

লেখকঃ মুহাম্মাদ মুনিরুজ্জামান বিন আশরাফ আলী

ভূমিকা
সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য যিনি বিশ্ব জাহানের রব। অসংখ্য অগণিত দরূদ ও সালাম প্রেরণ করছি আমাদের প্রিয় নাবী, প্রিয় রসূল মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি, যাকে আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন। যাকে আল্লাহ তা‘আলা অজ্ঞতার অন্ধকার ঘুচিয়ে ওহীর আলোতে উদ্ভাসিত করে বিশ্বের সকল মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সঠিক পথে চলার পথ দেখিয়ে দেয়ার জন্য রিসালাতের দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন এবং তিনি সেই দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। যাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যেই রয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ এবং দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত সফলতা। যাকে অনুসরণ করা আল্লাহ তা‘আলা সকলের জন্যই ফরজ করে দিয়েছেন- যদিও মানুষেরা বিভিন্ন দল, মত, পথ ইত্যাদি দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলছে। আমাদের সেই প্রিয় নাবী, প্রিয় রসূল, একমাত্র আদর্শ কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি রইল অগণিত দরূদ ও সালাম।

অতঃপর ‘‘কবরের প্রশ্ন ও প্রাসংগিক আলোচনা’’ কিতাবখানী প্রকাশ করতে পেরে মহান আল্লাহর কাছে অগণিত শুকরিয়া প্রকাশ করছি- আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা মেহেরবাণী করে তৌফিক না দিলে আমার মত নগন্য বান্দার পক্ষে এই কিতাব সংকলন করা কিছুতেই সম্ভব হতো না। আরো শুকরিয়া জানাচ্ছি যে, তিনি আমাকে মুসলিম পরিবারে জন্ম দিয়েছেন, কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানের দিকে ধাবিত করেছেন এবং সরকারী চাকুরী থেকে অবসরের পর-পরই আমাকে হজ্জ্ব সম্পন্ন করার তৌফিক দিয়েছেন। কারণ অর্থ সব সময় হাতে থাকে না, আয়ুও ফুরিয়ে যেতে পারে, শরীরও অসুস্থ্য হয়ে যেতে পারে। অনেকেই অর্থ থাকতে হজ্জ করেননি আর এখন টাকা নেই বা বিভিন্ন কারণে হজ্জে যেতে পারছেন না। আবার অনেকেই হজ্জে গেলেও যথাযথভাবে জ্ঞান অর্জন না করে যাওয়ায় গতানুগতিকভাবে হজ্জ করে আসছেন। ফলে হজ্জ থেকে খুব একটা ভাল ফায়দা আনতে পারছেন না। হজ্জের আগেও যে জীবন ছিল, হজ্জের পরেও সেই জীবনই আছে। কিন্তু আমাকে আল্লাহ হজ্জে যাওয়ার আগেই কুরআন-সুন্নাহ থেকে কিছু জ্ঞান অর্জনের তৌফিক দিয়েছেন এবং জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাই ২০১৬ সালে হজ্জ পালনের সময় আমি মক্কার বায়তুল্লায় হজ্জের কার্যক্রম, সালাত আদায়, তওয়াফ, কুরআন পাঠ এবং মদীনাতে মাসজিদে নববীতে সালাত আদায় ও কুরআন পাঠের পাশাপাশি মক্তবে বসে কিতাবাদি পাঠ করে, বিভিন্ন পুস্তকাদি ও লিফলেট সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন শায়খদের সাথে কথা বলে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করেছি। সেসময় মক্কাতে বায়তুল্লাহর দায়ীদের কাছ থেকে একদিন “Understand the deen from Quran and Sunnah” (দ্বীন শিখুন কুরআন ও সুন্নাহ থেকে) শিরোনামে একটি লিফলেট পেলাম যার বিষয় ছিল “Questions in the Grave for Muslims and Non-Muslims” (মুসলিম ও অমুসলিমের জন্য কবরের/আলমে বারযাখের প্রশ্নসমূহ)।

লিফলেটের শিরোনাম ও বিষয় দুটোই আমার খুব ভাল লাগলো। মনোযোগ সহকারে পড়লাম। যেখানে বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ ও মিশকাতে সংকলিত আবু হুরায়রা (রদিঃ), আনাস ইবনে মালিক (রদিঃ) ও বারা ইবনে আযীব (রদিঃ) এর বর্ণনা করা কবরের সওয়াল জওয়াব সংক্রান্ত হাদীসগুলো একত্র করে বর্ণনা করা হয়েছে যে, মুসলিম বা অমুসলিম যে-ই হোক তাকে মৃত্যুর পর কবর দেওয়া/সমাহিত করা বা দগ্ধ করার পর-পরই কবরে বা আলমে বারযাখে দু’জন মালাইকা তাদেরকে প্রশ্ন করবেন (আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজ ও আল্লাহ এটা কিভাবে করবেন তিনিই ভাল জানেন, এর উপর মুসলিমদের ঈমান রাখা ফরজ) তা হলো- ১. তোমার রব কে? ২. তোমার দ্বীন কি ছিল? ৩. তিনি কে যাকে তোমাদের মাঝে প্রেরণ করা হয়েছিল? এবং যে ব্যক্তি যথাযথভাবে জবাব দিতে পারবেন তাকে আর একটি প্রশ্ন করা হবে, ৪. তুমি এটা কিভাবে জানলে? অর্থাৎ যে ব্যক্তি প্রথম তিনটি প্রশ্নের জবাবে বলবে, আমার রব হলেন আল্লাহ, আমার দ্বীন ছিল ইসলাম আর তিনি হলেন মুহাম্মাদ ﷺ (প্রকৃত মুসলিম ছাড়া কেউ এসব জবাব দিতে পারবে না) তাকে আরেকটি প্রশ্ন করা হবে, একথা তুমি কিভাবে জানলে? তখন সে জবাবে বলবে, ‘‘আমি আল্লাহর কিতাব পড়ে জেনেছি, অতঃপর সেটাকে বিশ্বাস করেছিলাম এবং সত্য বলে গ্রহণ করেছিলাম।’’ সেই দাওয়াত পত্রে ধারণা দেয়া হয়েছে যে, উল্লেখিত প্রশ্নের জবাব মুসলিম দাবীদার সবাই দিতে পারবে বা মুখস্ত করে গেলেই দিতে পারবে ব্যাপারটা এমন নয়। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যারা দুনিয়ার জীবনে কুরআন পড়ে তাদের রব, দ্বীন ও রসূল সম্পর্কে জেনে নিবে এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করবে তারাই যথাযথভাবে জবাব দিতে পারবে এবং কবর থেকেই শান্তির জীবন উপভোগ করতে শুরু করবে। আর দুনিয়ার জীবনে যারা নিজেরা কুরআন পড়বে না, বুঝবে না ও সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে না তারা কবরে যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হবে এবং কবর থেকেই তাদের শাস্তির জীবন শুরু হয়ে যাবে। আর কবর হলো আখেরাতের ঘাটি সমূহের প্রথম ঘাটি, এখানে যে মুক্তি পাবে সে সব জায়গা থেকে মুক্তি পাবে আর এখানে যে মুক্তি পাবে না পরবর্তী ঘাটিগুলো (হাশর, মিজান, পুলসিরাত) তার জন্য আরো অনেক কঠিন হবে। অতঃপর সে পুলসিরাত পার হতে গিয়ে পার হতে না পেরে ভয়াবহ আযাবের স্থান আগুনে ভরা জাহান্নামে পরে যাবে। আর যারা কবরে মুক্তি পেয়ে যাবে তারা পরবর্তী ঘাটিগুলোতে মুক্তি পেয়ে অবশেষে চিরসুখের স্থান অফুরন্ত নিয়ামত ভরা জান্নাত লাভ করবে।

হজ্জ থেকে দেশে ফিরে এসে হাদীসগুলো ভালভাবে নিজের ভাষাতে বুঝে বুঝে পড়লাম এবং মৃত্যুর পরে কবরে প্রশ্নগুলোর জবাব যেন যথাযথভাবে দিতে পারি ইন-শা-আল্লাহ সেজন্য কুরআন-সুন্নাহ থেকে আমার রব, দ্বীন ও রসূল সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। সাথে সাথে প্রসংগিক বিষয় হিসেবে আমার পরিচয় ও দায়িত্ব-কর্তব্য কি হবে সেটাও জানার চেষ্টা করেছি। তবে বিষয়গুলোর পরিধি এত ব্যাপক যে, এ ধরনের ক্ষুদ্র কিতাবে সবকিছু বর্ণনা করা সম্ভব নয়। মূলত আল্লাহ এই তিনটি বিষয় দিয়েই পুরো কুরআনকে সাজিয়েছেন। তাছাড়া সূরা কাহাফের ১০৯ আয়াত ও সূরা লুকমানের ২৭ আয়াতে আল্লাহ নিজেই বলেছেন যে, তাঁর কথাগুলো লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। এজন্য তিনি দয়া ও করুণা করে তার প্রিয় বান্দাদের জন্য তার নৈকট্য লাভের উপায়গুলো সহজ করে দিয়ে বলেছেন যে, আমি তোমাদের জন্য পথ নির্দেশিকা (কুরআন) পাঠালাম এবং তোমাদের মধ্য থেকেই একজন মানুষকে রসূল করে পাঠালাম- যিনি তোমাদের মত ঘর-সংসারও করবেন আবার রবের বিধানও মেনে চলবেন। এখন আমাদের কাজ হলো কুরআন-সুন্নাহ থেকে জ্ঞানার্জন করা, বিশুদ্ধ ঈমানের ভিত্তিতে আমলে সালেহ করা এবং রবের সাথে কাউকে শরীক না করা। তাই প্রতিটি মুসলিমকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করতেই হবে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি তা শুধুমাত্র আল্লাহর করুণা ও দয়া আর সেটুকুই জ্ঞান পিপাসুদের জ্ঞানের পিপাসা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য কেবলমাত্র এক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তা কিতাব আকারে প্রকাশ করলাম যাতে আগ্রহী ব্যক্তিগত পড়েও উপকৃত হতে পারেন এবং মাসজিদে, বাসায়, বিভিন্ন বক্তৃতায়, সম্মেলনে, দাওয়াতী ও তালিমী মাজলিসে অন্যদেরকেও পড়ে শুনানোর মাধ্যমে ও কিতাবখানী সাধ্যমত সদকায়ে জারিয়ার নিয়তে দাওয়াতী কাজের জন্য ক্রয় করে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে উপহার/পড়তে দিয়েও অনেকে সওয়াব অর্জন করতে পারেন। তাছাড়া এ কিতাবের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা‘আলার কুরআনের কিছু আয়াত ও রসূল ﷺ এর কিছু হাদীস আপনাদের কাছে পৌঁছাতে পারলাম এজন্যও অসংখ্য শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি, আলহামদুলিল্লাহ।

যারা কুরআন পড়তে পারেন না তারাও বাংলা অনুবাদগুলো বুঝে বুঝে পড়ুন, তাতেও কুরআন-হাদীসের কিছু জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আরবী শিখার চেষ্টা করুন। কিতাবটি পড়ার আগে আপনার নিয়ত ঠিক করে নিন। কেননা প্রতিটি কাজই নিয়তের উপর নির্ভর করবে (বুখারী ১)। আর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হলে এবং রসূলের পদ্ধতিতে না হলে কোন আমলই আল্লাহ কবুল করবেন না। তাই কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দ্বীন ইসলামের জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে কিতাবখানী পড়ুন। সবশেষে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ, আল্লাহ যেন আমাদেরকে তাঁর বিধান ও রসূলের আদর্শ কুরআন-সুন্নাহ থেকে বুঝে নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার, মৃত্যুর পর কবরের সওয়াল জওয়াব সঠিকভাবে দিয়ে শান্তি-সুখের জীবন লাভের তৌফিক দান করেন এবং পরবর্তী ঘাঁটিগুলোও নিরাপদে পার হয়ে চিরসুখের জান্নাত লাভের তৌফিক দান করেন। আমিন।

আল্লাহর অনুগ্রহের একান্ত মুখাপেক্ষী

মুহাম্মাদ মুনিরুজ্জামান বিন আশরাফ আলী

গৌরীপুর, শেরপুর সদর, শেরপুর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন