hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হারাম শরীফের দেশ ফজিলত ও আহকাম

লেখকঃ দা‘ওয়াহ ও উসূলুদ্দীন ফ্যাকাল্টি, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়

১৩
৯. মক্কাবাসীদের কষ্ট দেয়া ও সেখানে যুদ্ধ-বিগ্রহ করা নিষিদ্ধ :
সংশ্লিষ্ট বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। বরং এ সম্মানিত নগরীর পবিত্রতা রক্ষার সাথে বিষয়টি জড়িত। ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর ঘরটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করর পর এ শহর ও শহরটির অধিবাসীদের জন্য আল্লাহর নিকট কিছু বরকতময় দু‘আ করেছিলেন, কয়েকটি দু‘আর উদ্ধৃতি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। বায়তুল্লাহিল হারাম সম্পর্কিত সেই আয়াতগুলো আমাদেরকে নবী ইবরাহীম খালীল (আঃ)-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আল্লাহ (তাআলা) বলেন :

وَقَالُوا إِنْ نَتَّبِعِ الْهُدَى مَعَكَ نُتَخَطَّفْ مِنْ أَرْضِنَا أَوَلَمْ نُمَكِّنْ لَهُمْ حَرَمًا آَمِنًا يُجْبَى إِلَيْهِ ثَمَرَاتُ كُلِّ شَيْءٍ رِزْقًا مِنْ لَدُنَّا وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴿57﴾

‘‘তারা বলে, আমরা যদি তোমার দীনের অনুসরণ করি তাহলে আমাদের ভূমি থেকে আমাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে। অথচ আমি কি তাদের জন্য নিরাপদ স্থান হারাম শরীফে দেইনি। যেখানে রিজিক হিসেবে সর্বপ্রকারের ফলমূল আমদানী হয়; কিন্তু তাদের অধিকাংশ জানে না।’’ [সূরা কাসাস ৫৮।]

আল্লাহ (তাআলা) আরো এরশাদ করেন :

وَإِذْ جَعَلْنَا الْبَيْتَ مَثَابَةً لِلنَّاسِ وَأَمْنًا

‘‘যখন আমি কা‘বা ঘরকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র এবং শান্তির আলোয় করলাম।’’ [সূরা বাকারা ১২৫।]

তিনি বলেন :

وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ ﴿1﴾ وَطُورِ سِينِينَ ﴿2﴾ وَهَذَا الْبَلَدِ الْأَمِينِ ﴿3﴾

‘‘তীন, যাইতুন, তূর পর্বত এবং এ নিরাপদ শহরের শপথ।’’ [সূরা তীন ১-৪।] আল্লাহ (তাআলা) আরো বলেন—

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا جَعَلْنَا حَرَمًا آَمِنًا وَيُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنْ حَوْلِهِمْ أَفَبِالْبَاطِلِ يُؤْمِنُونَ وَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَكْفُرُونَ ﴿67﴾

‘‘তারা কি দেখে না যে, আমি হারামকে একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি, অথচ এর চারপাশে যারা আছে, তাদের উপর আক্রমণ করা হয়।’’ [সূরা আনকাবূত ৬৭।]

ইমাম কুরতুবী (রহ.) মক্কা মুকাররমার বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, এ শহরটি সার্বক্ষণিক পবিত্র। বড় বড় জালিম-স্বৈরাচারের অধীনস্থ, ভূমিধস, ভূমিকম্প সহ বিভিন্ন বিপর্যয় থেকে এ ঘর এখনও সংরক্ষিত ও পবিত্র অবস্থায়। [তাফসীর কুরতুবী ২/১১৭ পৃঃ।]

এ কারণেই মক্কা নগরীতে বিনা প্রয়োজনে অস্ত্র ধারণ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইমাম মুসলিম জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে আমি বলতে শুনেছি যে, মক্কা নগরীতে যে কোন ধরনের অস্ত্র বহন করা তোমাদের কারো জন্য বৈধ নয়। [মুসলিম হাঃ ১৩৫৬।]

ক্বাযী আয়াদ (রহ.) বলেন, মুহাদ্দিসীনের দৃষ্টিতে হাদিসটি মক্কায় ইবনো কারণে অস্ত্র বহন করা নিষিদ্ধ করণের সাথে সম্পৃক্ত, তবে প্রয়োজন হলে তা হবে বৈধ। ইমাম মালিক, শাফেয়ি এবং আতা’ (রহ.) এ মত ব্যক্ত করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে হাসান বসরী (রহ.) হাদিসের বাহ্যিক দৃষ্টিতে যে কোন অবস্থায় অস্ত্র ধারণ করাকে মাকরূহ মনে করেন। [ইমাম নাবাবী কৃত মুসলিমের শারাহ ৯/১৩০ পৃঃ।]

বাকি রইল লড়াই বা কিতাল করা। আল্লাহর নবী (ﷺ) হারাম শরীফে যুদ্ধবিগ্রহ সম্পর্কে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন এবং এটা হারাম হওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন। ইমাম বুখারি (রহ.) এ বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় রচনা করেছেন, যার শিরোনাম হচ্ছে, মক্কায় যুদ্ধবিগ্রহ অবৈধ। কাজী আবূ শুরাইহ (রাঃ) নবী (ﷺ) হতে হাদিস বর্ণনা করেন যে, মক্কায় রক্তপাত করা যাবে না। অতঃপর তিনি ইবনে আববাস (রাঃ)-এর পূর্বোল্লিখিত হাদীসটি বর্ণনা করেন, যেখানে আল্লাহর নবী (ﷺ) এরশাদ করেছেন :

وَإِنَّ هَذَا بَلَدٌ حَرَّمَ اللهُ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ وَهُوَ حَرَامٌ بِحُرْمَةِ اللهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ

অর্থাৎ-‘‘এটা এমন একটি নগরী, আল্লাহ যাকে আসমান-জমিনের সৃষ্টি লগ্ন হতে হারাম করেছেন। অতএব আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত করার কারণে শহরটি কিয়ামত পর্যন্ত হারাম থাকবে।’’ [বুখারী হাঃ ১৮৩৪।]

আল্লাহ (তাআলা) তাঁর রাসূল (ﷺ) মুমিনদেরকে কাফিররা আগে হামলা না করলে মক্কায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ও হত্যাকান্ড ঘটানোর অনুমতি দেননি। আল্লাহ (তাআলা) বলেন—

وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّى يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ فَإِنْ قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ كَذَلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ ﴿191﴾

‘‘তোমরা কাবা ঘরের পাশে কখনো তাদের (কাফেরদের) সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ো না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সেখানে তোমাদের আক্রমণ না করে। তারা যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরাও তাদের সাথে যুদ্ধ কর। এভাবেই কাফেরদেরকে শাস্তি দেয়া হয়। [সূরা আল-বাকারা ১৯১।]

আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমল করেছেন। যারা অস্ত্র সমর্পণ করেছে তাদেরকে তিনি নিরাপত্তা প্রদান করেছেন। মক্কা বিজয়ের দিন মুশরিকদের যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি তাদেরকেও নিরাপত্তা দান করেছেন। তিনি একজন ঘোষক প্রেরণ করেন যে ঘোষণা দেয়, যারা মসজিদুল হারামে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ। যারা স্ব গৃহে দরজা বন্ধ করে অবস্থান করবে তারা নিরাপদ। যারা আবূ সুফিয়ানের গৃহে আশ্রয় নেবে তারা নিরাপদ। তিনি সাহাবিগণকে যুদ্ধের অনুমতি দেননি। তবে যারা তাদের (মুসলিম) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং অস্ত্র ব্যবহার করবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইর অনুমতি দেন।

অতএব হারাম শরীফে অবস্থানকারী ও আগমনকারী সকলকে সাবধান থাকতে হবে য, হারাম শরীফের পবিত্রতা নষ্ট করা যাবে না, আর না এখানকার কোন লোককে কষ্ট দেয়া যাবে। এমনকি কোন ধরনের ভীতি প্রদর্শন ও অবৈধ। কেননা এগুলো জঘন্য অপরাধের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ (তাআলা) বলেন :

فِيهِ آَيَاتٌ بَيِّنَاتٌ مَقَامُ إِبْرَاهِيمَ وَمَنْ دَخَلَهُ كَانَ آَمِنًا

‘‘এখানে অসংখ্য নিদর্শন বিদ্যমান, যার মধ্যে ‘মাকামে ইবরাহীম’ একটি। অতএব যে এ নগরীতে প্রবেশ করবে, সে নিরাপত্তা পাবে।’’ [সূরা আলে-ইমরান ৯৭।]

অর্থাৎ যে এখানে প্রবেশ করল তাকে নিরাপত্তা দেয়া উচিত। তাকে যেন কোন কষ্ট দেয়া না দেয়া হয়। ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, কোন ভীত-সন্ত্রস্ত লোক মক্কায় হারাম নগরীতে প্রবেশ করে সব ধরনের অনিষ্ট থেকে যে নিরাপত্তা পাবে। জাহেলী যুগে এখানকার নিরাপত্তা অনুরূপ ছিল। [তাফসীর ইবনে কাসীর ১/৩৮৪ পৃঃ।]

শেখ আবদুল আযীয ইবনে বায (রহ.) উল্লেখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, প্রতিটি প্রবেশকারীকে নিরাপত্তা দেয়া জরুরি। তবে এর অর্থ এটা নয় যে, এখানে কাউকে কষ্ট দেয়া হয় না বা খুনের ঘটনা ঘটে না, এরূপ ঘটনা ঘটাও স্বাভাবিক। বরং আয়াতের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে হারাম শরীফে প্রবেশকারীকে অবশ্য নিরাপত্তা দিতে হবে, তার সাথে কোন অন্যায় আচরণ করা যাবে না। জাহেলী যুগে এ মানের নিরাপত্তাই বুঝা যেত। যেমন কেউ যদি হারামের সীমানার ভেতরে নিজের পিতা বা ভাইয়ের হত্যাকারীকে কাছে পেত, তাকে কিছু করত না। যতক্ষণ না সে সীমানার বাইরে বেরিয়ে আসত। [ফাতাওয়াঃ ইবনে বায, ১/৩৮৪ পৃঃ।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন