hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হারাম শরীফের দেশ ফজিলত ও আহকাম

লেখকঃ দা‘ওয়াহ ও উসূলুদ্দীন ফ্যাকাল্টি, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়

২৬
নবমত : আরাফাত, মিনা, মুযদালিফা :
হারাম শরীফ ও এর আশে-পাশের যে সকল সম্মানিত স্থানে গিয়ে হজের ফরজ আদায়ের জন্য শরিয়ত প্রণেতা নির্দেশ দিয়েছেন, সে সম্মানিত স্থানসমূহের মধ্যে আরো রয়েছে আরাফাত, মিনা, ও মুযদালিফা। অবশ্য আরাফাত হারামের সীমানার অন্তর্ভুক্ত নয়। শরিয়তের এমন বহু দলিল রয়েছে যা এ সকল স্থানের কথা উল্লেখ করেছে কিংবা এগুলোর ফজিলত ও এসব স্থানে যে সকল আমল, এবাদত ও হজের কাজ করতে হয় তা বর্ণনা করেছে। এসব দলিলের মধ্যে রয়েছে :

لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلًا مِنْ رَبِّكُمْ فَإِذَا أَفَضْتُمْ مِنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُوا اللَّهَ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ وَاذْكُرُوهُ كَمَا هَدَاكُمْ وَإِنْ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلِهِ لَمِنَ الضَّالِّينَ . ثُمَّ أَفِيضُوا مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ ﴿البقرة :198-199﴾

‘‘হজের এ সময়গুলোতে যদি তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করতে গিয়ে কোনো অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাও, তাতে কোনোই দোষ নেই, অতঃপর তোমরা যখন আরাফাতের ময়দান থেকে ফিরে আসবে তখন (মুযদালিফায়) ‘মাশআরে হারাম’ এর কাছে এসে আল্লাহকে স্মরণ করবে। ঠিক যেমনি করে আল্লাহ তাআলা তোমাদের (ডাকার) পথ বাতলে দিয়েছেন, তেমনি করে তাকে স্মরণ করবে। যদিও ইতিপূর্বে তোমরা ভ্রষ্টদের দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলে। তারপর তোমরা সে স্থান থেকে ফিরে এসো যেখান থেকে অন্যান্য (হজ পালনকারী) ব্যক্তিরা ফিরে আসে, আর (নিজেদের ভুল ভ্রান্তির জন্য) আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।’’ [সূরা আল-বাক্বারাহঃ ১৯৮-১৯৯।]

এ আয়াতসমূহে স্পষ্টভাবে আরাফাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং ‘‘যেখান থেকে অন্যান্য হজ পালনকারী ব্যক্তিরা ফিরে আসে’’ একথা দ্বারা আরাফাতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ‘মাশআরুল হারাম’ আরাফাতের দুই সরু পথ ধরে ‘মুহাসসার’এর দিকে যাওয়ার পথে মুযদালিফার দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। [দেখুন, তাফসীরে তাবারী (১/১৬৭)।]

ইবনে কাসীর (রহ:) বলেন, ‘‘আল্লাহ তাআ‘লা এখানে আরাফাতে অবস্থানরত ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করছেন যেন সে মাশআরুল হারামের কাছে গিয়ে আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য মুযদালিফা পানে অগ্রসর হয়। তিনি তাকে এ নির্দেশও প্রদান করছেন যে, আরাফাতের সর্বসাধারণের সাথে তার ‘অকুফ’ (অবস্থান) যেন তেমনি হয় যেমনি সর্বসাধারণ সেখানে ওকুফ করে থাকে।

আর মুশরিক কুরাইশদের মত অকুফ যেন না করা হয়। কেননা তারা হারাম থেকে বের না হয়ে হারামের এক প্রান্তে ‘হিল’ এর নিকটবর্তী স্থানে ওকুফ করত এবং বলত, আমরা আল্লাহর শহরে তারই ঘরে তারই পরিবার ভুক্ত।

ইমাম বুখারি আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণনা করেন :

كَانَتْ قُرَيْشٌ وَمَنْ دَانَ دِينَهَا يَقِفُونَ بِالْمُزْدَلِفَةِ وَكَانُوا يُسَمَّوْنَ الْحُمْسَ وَكَانَ سَائِرُ الْعَرَبِ يَقِفُونَ بِعَرَفَاتٍ فَلَمَّا جَاءَ الْإِسْلاَمُ أَمَرَ اللهُ نَبِيَّهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَأْتِيَ عَرَفَاتٍ ثُمَّ يَقِفَ بِهَا ثُمَّ يُفِيضَ مِنْهَا .

‘‘কুরাইশগণ ও তাদের ধর্মের অনুসারীবৃন্দ মুযদালিফায় অকুফ করত এবং একে তারা নাম দিয়েছিল ‘হুম্স’ বলে। আর আরবের অন্য সকলেই আরাফাতে অকুফ করত। ইসলামের আগমনের পর আল্লাহ তাঁর রাসূল (ﷺ)-কে আরাফাতে এসে ওকুফ করার ও সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন করার নির্দেশ দিলেন। তাঁর এ নির্দেশ হল :

ثُمَّ أَفِيضُواْ مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ النَّاسُ .

‘‘তারপর তোমরা সে স্থান থেকে ফিরে আস, যেখান থেকে অন্যান্য (হজ পালনকারী) ব্যক্তিরা ফিরে আসে।’’ [সহীহ বুখারী- কিতাবুত তাফসীর পরিচ্ছেদ।]

অনুরূপ বলেছেন ইবনে আববাস, মুজাহিদ, আতা, কাতাদাহ, সুদ্দী ও আরো অনেকে এবং ইবনে জারির এমত এখতিয়ার করেছেন এবং এর উপর ইজমা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি বর্ণনা করেছেন।’’ [তাফসীরে ইবনে কাসীর (১/২৪২)।]

সম্মানিত স্থানের বর্ণনায় আরো রয়েছে আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীসমূহ :

وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ لِمَنِ اتَّقَى ﴿البقرة :203﴾

‘‘নির্দিষ্ট (এ কয়টি) নির্দিষ্ট দিনসমূহ আল্লাহকে স্মরণ কর। (হজের পর) যদি কেউ তাড়াহুড়া করে দু’দিনের মধ্যেই (মক্কায় ফিরে আসে) তাতে কোন দোষ নেই। আর যদি কোন ব্যক্তি আরো বিলম্ব করতে চায়, তবে তাতেও কোন দোষ নেই। এ বিধান তার জন্য যে আল্লাহকে ভয় করে।’’ [সূরা আল-বাক্বারাহঃ ২০৩।]

وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ . لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ ﴿27-28﴾

‘‘(তাকে আরো আদেশ দিয়েছিলাম) তুমি মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা প্রচার করে দাও, যাতে তারা তোমার কাছে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার দ্রুতগামী উটের পিঠে আরোহণ করে ছুটে আসে, দূর-দূরান্ত পথ অতিক্রম করে। যাতে করে তারা তাদের নিজেদেরই কল্যাণের জন্য এখানে এসে হাজির হয় এবং (কুরবানির) নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম নেয়, সে সকল পশু কুরবানি করার সময়, যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করেছেন।’’ [সূরা আল-হাজ্জঃ ২৭-২৮।]

এ দু’টো আয়াতে মিনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে্ কেননা فِي أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ বা নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলতে এখানে মিনার ‘আইয়ামে তাশরীক’ কে বুঝানো হয়েছে। কুরতুবী বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে ‘আলেমগণের মধ্যে কোন মতভেদ নেই যে, এ আয়াতে বর্ণিত أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ বা নির্দিষ্ট দিনসমূহ হল মিনার দিনগুলো। আর তা হচ্ছে আইয়ামে তাশরীক।’’ [আল-জামে‘ লিআহকামিল কুরআন (৩/১)]

আর সুরা হজে বর্ণিত أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ বা নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলতে কিছুটা মতভেদের পরিপ্রেক্ষিতে মিনার সবগুলো কিংবা কিছু দিন বুঝানো হয়েছে। ইমাম তবারী أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ এর অর্থ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ব্যাখ্যা কারদের কারো কারো মতানুযায়ী এ দিনগুলো হচ্ছে আইয়ামু তাশরীক, আবার কারো মতে এগুলো যিলহজের প্রথম দশদিন। কেউ বলেন, এগুলো হল কুরবানির দিন ও তাশরীকের দিনসমূহ।’’ [তাফসীর তবারী (১৭/১০৮)।]

ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে মারফু’ পন্থায় মসজিদে খাইফ সম্পর্কে যে হাদিস এসেছে তা মিনার সাথেই সংশ্লিষ্ট। হাদিসটি হলঃ

صلى في مسجد الخيف سبعون نبيا .

‘‘মসজিদুল খাইফে সত্তর জন নবী সালাত আদায় করেছিলেন।’’ [হাদীসটি তবারানী আল-কাবীর গন্থে (৩/১৫৫) ও আল আওসাত গ্রন্থে (১/১১৯) এবং আল আযরুকী আখবারে মাক্কায় (৩৫,৩৮) বর্ণনা করেছেন। মুনযেরী বলেন, এর সনদ হাসান (২/১১৬)। আলবানী তাহযীরুস মাজেদ (পৃঃ ১০৬) গ্রন্থে একে হাসান বলেছেন।]

আবদুর রহমান ইবনে ইয়া’মুর আদ-দাইলি (রাঃ) এ সকল স্থানের প্রত্যেকটির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন :

أَنَّ نَاسًا مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ أَتَوْا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ بِعَرَفَةَ فَسَأَلُوهُ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى الْحَجُّ عَرَفَةُ مَنْ جَاءَ لَيْلَةَ جَمْعٍ قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ فَقَدْ أَدْرَكَ الْحَجَّ أَيَّامُ مِنًى ثَلاَثَةٌ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ

‘‘রাসূল (ﷺ) আরাফাতে অবস্থানকালে নজদবাসী কিছু লোক তার কাছে এসে হজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তিনি এক ঘোষণাকারীকে নির্দেশ দিলে সে ঘোষণা করল : ‘‘আরাফাতে অবস্থানই হজ। যে ব্যক্তি রাতে এসে পরদিন ফজর উদয় হওয়ার আগেই আরাফায় অবস্থান করে, সে হজ করতে পারল। মিনার দিন হচ্ছে তিনটি। যদি কেউ তাড়াহুড়ো করে দু’দিনের মধ্যেই মক্কায় ফিরে আসে, তবে তাতে কোন দোষ নেই। আর যদি কোন ব্যক্তি আরো বিলম্ব করে, তবে তাতেও কোন দোষ নেই।’’ [হাদীসটির শব্দ তিরমিযী থেকে নেয়া হয়েছে। হাদীস নং (৮৮৯)। এটি আরো বর্ণনা করেছেন আবূ দাঊদ হাদীস নং (১৯৪৯), নাসায়ী (৫/২৬৪-২৪৫) ও ইবনে মাজাহ হাদীস নং (৩০১৫)। এ হাদীসের সনদ শুদ্ধ।]

রাসূল (ﷺ) বলেন :

كُلُّ عَرَفَةَ مَوْقِفٌ وَكُلُّ مِنًى مَنْحَرٌ وَكُلُّ الْمُزْدَلِفَةِ مَوْقِفٌ وَكُلُّ فِجَاجِ مَكَّةَ طَرِيقٌ وَمَنْحَرٌ .

‘‘আরাফাতের পুরোটাই অকুফের স্থান, মিনার পুরোটাই কুরবানির স্থান এবং মুযদালিফার পুরোটাই অকুফের স্থান। আর মক্কার সকল প্রান্তরই হল চলাচলের রাস্তা ও কুরবানির স্থান।’’ [আবু দাউদ সহীহ সনদে এ শব্দে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, হাদীস নং (১৯৩৬) ও ইবনে মাজায়ও হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে (৩০৪৮ নং)]

শরিয়তের এ সকল কাওলি (বক্তব্যমূলক) দলিলসমূহ হজের স্থান নির্ধারণ ও হজের শরয়ী কাজ-কর্ম সম্পাদনের জন্য এ সকল স্থানে অবস্থানের ব্যাপারে পেশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি হজ পালনের জন্য নবী (ﷺ)-এর ফে‘ল তথা কর্ম বিষয়টিকে আরো স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। কেননা তিনি কার্যত এ সকল স্থানে অবস্থান করেছেন, আল্লাহকে স্মরণ করেছেন এবং হজের যাবতীয় আমল সম্পাদন করেছেন এবং সাহাবিদের মধ্যে এ ঘোষণা দিয়েছেন যে,

لِتَأْخُذُوْا مَنَاسِكَكُمْ

‘‘তোমরা (আমার কাছ থেকে) হজের হুকুম গ্রহণ কর।’’ [ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন হাজ্জ অধ্যায়, পরিচ্ছেদঃ কুরবানীর দিন জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ মুস্তাহাব, হাদীস নং (১২৯৭) আর নাসায়ী বর্ণনা করেছেন (৫/২৭০) নিম্নোক্ত শব্দেঃ خُذُوْا مَنَا سِكَكُمْ ]

এ সকল স্থানের ফজিলত ও শরিয়ত কর্তৃক এগুলোকে সম্মান প্রদানের বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত প্রদানকারী এই হচ্ছে আমলী দলিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন