hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হারাম শরীফের দেশ ফজিলত ও আহকাম

লেখকঃ দা‘ওয়াহ ও উসূলুদ্দীন ফ্যাকাল্টি, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়

১৯
দ্বিতীয়ত: কাল পাথর (আল্-হাজারুল আসওয়াদ)
আল্-হাজারুল আসওয়াদ হচ্ছে ঐ পাথর যা আল্লাহর ঘরের পূর্বদিকে বসানো হয়েছে। ঐ বরাবর থেকে কা‘বা গৃহের তওয়াফ শুরু হয়। নিরাপদ হারাম শরীফে এটা আল্লাহর স্পষ্ট নিদর্শনসমূহের অন্যতম। নিম্নে এ পাথরের মর্যাদা ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট শিষ্টা চার ও বিধি-বিধান প্রদত্ত হলো :

১. হাজরে আসওয়াদের আগমন জান্নাত হতে :

শরঈ দলিল-প্রমাণ দ্বারা এটা প্রমাণিত যে, হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) জান্নাত থেকে এসেছে। এটা দুধের চেয়েও বেশি সাদা ছিল। কিন্তু বাণী আদমের গুনাহ এটাকে কালো করে ফেলেছে। নিম্নে এ বক্তব্যের স্বপক্ষে হাদিস প্রদত্ত হলো :

ইমাম নাসায়ী তাঁর গ্রন্থ সুনানে নাসায়ীতে ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেন :

الْحَجَرُ الأَسْوَدُ مِنْ الْجَنَّةِ .

অর্থাৎ- ‘‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে এসেছে।’’ [সুনানুন নাসায়ীঃ ২২৬/৫, আলবানী উক্ত হাদীসকে বিশুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সহীহ সুনানুন নাসায়ী, হাঃ নং- ২৭৪৮।]

ইমাম তিরমিযী সুনানে তিরমিযীতে ইবনে ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন :

نَزَلَ الْحَجَرُ الأَسْوَدُ مِنْ الْجَنَّةِ وَهُوَ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنْ اللَّبَنِ فَسَوَّدَتْهُ خَطَايَا بَنِي آدَمَ .

অর্থাৎ- ‘‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাত হতে অবতরণ করেছে। এটি দুধের চেয়েও শুভ্র ছিল। বাণী আদমের গুনাহ এটাকে কালো করে দিয়েছে।’’

নির্জীব বস্ত্তর উপর গুনাহের প্রভাব যদি এমনটি হয়, তাহলে অন্তরে তার প্রভাব কেমন হতে পারে?

২. হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন ও স্পর্শ করা এবং তার প্রতি মাথা অবনত করা।

হাজরে আসওয়াদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বৈধ পন্থা আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। যে ব্যক্তি কা‘বা গৃহের তওয়াফ করতে চায়, সে হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করবে। সুন্নাত হচ্ছে সম্ভব হলে পাথরকে চুমু দেয়া। অন্যথায় হাত দিয়ে স্পর্শ করে, হাতকে চুমু দেবে। যদি এটা সম্ভব না হয় তবে লাঠি দিয়ে স্পর্শ করে, লাঠিকে চুমু দেবে। যদি সরাসরি চুম্বন বা স্পর্শ করা সম্ভব না হয়, অথবা চুম্বন ব স্পর্শ করতে গেলে অন্যদের কষ্ট দেয়ার ভয় থাকে, তবে হাত দিয়ে ইশারা করবে। সরাসরি চুম্বন, স্পর্শ বা ইঙ্গিত করার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে, নিম্নে এ সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস প্রদত্ত হলো :

ইমাম বুখারি তাঁর সহীহ বুখারিতে যুবায়র ইবনে ‘আরাবী হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন :

سَأَلَ رَجُلٌ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ اسْتِلاَمِ الْحَجَرِ فَقَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَلِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ قَالَ قُلْتُ أَرَأَيْتَ إِنْ زُحِمْتُ أَرَأَيْتَ إِنْ غُلِبْتُ قَالَ اجْعَلْ أَرَأَيْتَ بِالْيَمَنِ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَلِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ .

অর্থাৎ- ‘জনৈক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমারকে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন দেয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন : আমি রাসূল (ﷺ)-কে এটা স্পর্শ করতে ও চুমু দিতে দেখছি। যুবায়র ইবনে ‘আরবি বলেন, আমি ইবনে ‘উমারকে জিজ্ঞেস করলাম, যদি সেখানে প্রচন্ড ভিড় থাকে? যদি অন্য কোন কারণে অপারগ হয়ে পড়ি, তখন কি করব? উত্তরে তিনি বললেন : এ ধরনের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। (এ ধরনের সমস্যা নাও হতে পারে।) আমি রাসূল (ﷺ)-কে হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করতে এবং চুমু খেতে দেখেছি।’’ [উক্ত হাদীসটি ইমাম তিরমিযী সহীহ হিসাবে বর্ণনা করেছেন- হাঃ নং- ৮৭৭। সহীহ ইবনে খুযাইমাঃ ২১৯০২২০/৪; আলবানী এই হাদীসটিকে সহীহ হিসেবে গ্রহণ করেছেন, সহীহ তিরমিযী, হাঃ নং- ৬৯৪।]

ইমাম মুসলিম নাফে থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন :

رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ يَسْتَلِمُ الْحَجَرَ بِيَدِهِ ثُمَّ قَبَّلَ يَدَهُ وَقَالَ مَا تَرَكْتُهُ مُنْذُ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَفْعَلُهُ .

‘‘আমি ইবনে উমারকে হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করতে, অতঃপর চুমু খেতে দেখেছি। তিনি বলেন : আমি যখন থেকে রাসূল (ﷺ)-কে এ কাজ করতে দেখেছি, তখন থেকে আমি উক্ত কাজটি বর্জন করিনি।’’ [সহীহ বুখারী- অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা, হাদীস নং- ১৬১১।]

ইমাম মুসলিম আবু তুফায়ল (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন :

رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ وَيَسْتَلِمُ الرُّكْنَ بِمِحْجَنٍ مَعَهُ وَيُقَبِّلُ الْمِحْجَنَ .

‘‘আমি রাসূল (ﷺ)-কে কা‘বা শরীফের তওয়াফ, তার নিকট রক্ষিত ছড়ির মাধ্যমে হাজারে আসওয়াদকে স্পর্শ, অতঃপর ছড়ি (লাঠি)-কে চুম্বন করতে দেখেছি।’’ [সহীহ মুসলিম- অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ তওয়াফে শুধু দু’টি রুকনে ইয়ামেনীকে স্পর্শ করা মুস্তাহাব, বাকী দু’টি নয়। হাদীস নং- ১২৬৮।]

ইমাম বুখারি ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:

طَافَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَيْتِ عَلَى بَعِيرٍ كُلَّمَا أَتَى الرُّكْنَ أَشَارَ إِلَيْهِ بِشَيْءٍ كَانَ عِنْدَهُ وَكَبَّر .

‘‘নবী (ﷺ) উটের উপর আরোহণ করে বাইতুল্লাহর তওয়াফ করেন। যখনই তিনি রুকন তথা হাজরে আসওয়াদ বরাবর আসতেন, তাঁর কাছে যা-ই থাকত, তা দিয়ে তিনি সেদিকে ইঙ্গিত করতেন ও ‘আল্লাহ আকবার’ বলে তাকবীর দিতেন।’’ [সহীহ মুসলিম- অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ উট বা এ জাতীয় প্রাণীর উপর আরোহণ করে তওয়াফ করা এবং আরোহীর জন্য ছড়ি বা লাঠি দ্বারা হাজরে আসওয়াদকে স্পর্শ করা বৈধ। হাদীস নং- ১২৭৪।]

ইমাম মুসলিম সুয়াইদ ইবনে ঘাপলা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন:

رَأَيْتُ عُمَرَ قَبَّلَ الْحَجَرَ وَالْتَزَمَهُ وَقَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَ حَفِيًّا .

‘‘আমি ‘উমার ফারূক (রাঃ)-কে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করতে ও তার সাথে লেগে থাকতে দেখেছি এবং তাকে বলতে শুনেছি, হে হাজরে আসওয়াদ! আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে তোমার সম্মান করতে দেখেছি। (তাই আমিও সম্মান প্রদর্শন করলাম)।’’ [সহীহুল বুখারী, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ বরাবর ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি করা। হাদীস নং- ১৬১৩।]

সহীহ ইবনে খুযাইমাতে জা‘ফার ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘‘আমি মুহাম্মাদ ইবনে আববাদ ইবনে জা‘ফারকে হাজরে আসওয়াদকে চুমু দিতে এবং তার তার উপর সিজদা করতে দেখেছি। এরপর তাকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, আমি তোমার মামা ‘আবদুল্লাহ ইবনে আববাসকে চুমু দিতে এবং তার উপর সিজদা করতে দেখেছি। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন : আমি ‘উমার ইবনুল খাত্তাবকে হাজরে আসওয়াদ চুমু দিতে এবং তার উপর সিজদা করতে দেখেছি। ‘উমার ফারূক (রাঃ) বলেন : আমি রাসূল (ﷺ)-কে এমনটি করতে দেখেছি বলে আমিও করলাম।’’ [সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ তওয়াফ করার সময় হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেয়া মুস্তাহাব। হাদীস নং- ১২৭০।]

ইমাম ইবনে হুযাইমা উপরোক্ত হাদিসের নিম্নোক্ত শিরোনামে অনুচ্ছেদ নির্ধারণ করেছেন : ‘‘অন্য মুসলিমকে কষ্ট না দিয়ে তওয়াফকারী যদি হাজরে আসওয়াদের উপর সিজাদ করতে সক্ষম হয় তাই করবে।’’

হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেয়া, স্পর্শ করা এবং এর উপর সিজদা করা একমাত্র আল্লাহরই জন্য। এসব কিছু বৈধ, সুন্নাত এবং শরিয়তের পক্ষ থেকে এ কাজে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এতে অনেক ছাওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে। যে এ কাজটি করবে সে একমাত্র রাসূল (ﷺ)-এর সুন্নাতের অনুসরণ এবং প্রতিশ্রুত প্রতিদান প্রাপ্তির আশা করবে। সে এ ধারণা কখনো করবে না যে, এ পাথর তার উপকার বা ক্ষতি করতে পারে, যেমনটা কিছু কিছু অজ্ঞ মানুষ ভেবে থাকে। এজন্যই খলিফাতুল মুসলিমীন ‘উমার ফারূক হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেয়ার সময় বলেছিলেন :

إِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ .

‘‘(হে হাজরে আসওয়াদ) আমি জানি, তুমি শুধুমাত্র একটি পাথর, মানুষের ক্ষতি বা উপকার কোন কিছুই করার তোমার ক্ষমতা নেই। যদি আমি রাসূল (ﷺ)-কে তোমাকে চুমু দিতে না দেখতাম, তাহলে আমি কখনো তোমাকে চুমু খেতাম না।’’ [সহীহ ইবনে খুযাইমাঃ ২১৩/৪, উক্ত হাদীসের সনদ বিশুদ্ধ।]

৩. হাজরে আসওয়াদের স্পর্শ গুনাহকে কমিয়ে দেয় :

ইমাম নাসায়ী তাঁর সুনানে উবায়দ ইবনে উমায়র থেকে বর্ণনা করেন যে, ‘‘জনৈক ব্যক্তি ইবনে উমারকে বলেন : হে আবূ ‘আবদুর রহমান! তুমি এ দু’টি রুকন ছাড়া অন্য কোন রুকনকে স্পর্শ করছ না, তার পিছনে কি হেতু রয়েছে? জবাবে তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন :

إِنَّ مَسْحَهُمَا يَحُطَّانِ الْخَطِيئَةَ .

‘‘এ দু’টি রুকনের স্পর্শ গুনাহ ও পাপ মোচন করে।’’ [সহীহুল বুখারী, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীস নং- ১৫৯৭।]

যে ব্যক্তি সততা ও নিষ্ঠার সহিত এ এবাদতটি করবে সে অসংখ্য সাওয়াবের ভাগীদার হবে।

৪. যে ন্যায়-সঙ্গতভাবে এ পাথরকে স্পর্শ করবে, কেয়ামত দিবসে এ পাথর তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে :

ইমাম হুযাইমা তাঁর সহীহ গ্রন্থে, ইমাম আহমাদ তাঁর মুসনাদে, হাকিম তার মুসতাদরাকে আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : এ পাথরের জিহবা ও দু’ঠোট রয়েছে। যে ন্যায়সংগতভাবে এ পাথর স্পর্শ করবে, কেয়ামত দিবসে সে তার পক্ষে সুপারিশ করবে। [সুনানুন নাসায়ীঃ ২২১/৪; মুসনাদ আল-ইমাম আহমাদঃ ২২৬/১; মুসতাদরাকুল হাকিমঃ ৪৫৭/১, হাকীম উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন। ইমাম যাহাবী তার সমর্থন করেছেন। আলবানী একে বিশুদ্ধ বলেছেন। সহীহ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২৩৮১।]

সুতরাং হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময় তওয়াফকারীদের কষ্ট দেয়া জায়েয নয়। আর যে এ কাজ করবে সে অন্যায়ভাবে হাজারে আসওয়াদকে স্পর্শ করল। অপরাপর মুসলিমদের কষ্ট ও ক্ষতি করার দরুন সে কোন সাওয়াবই পাবে না। হাদিসে এসেছে যে, নবী (ﷺ) উমার ইবনে খাত্তাবকে এ বলে নির্দেশ দিলেন, ‘‘হে ‘উমার! তুমি শক্তিশালী ব্যক্তি। তুমি দুর্বলকে কষ্ট দিচ্ছ। যখন তুমি নির্জনতা পাবে, হাজারে আসওয়াদকে চুমু দেবে। অন্যথায় ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিয়ে চলে যাবে। [সহীহ ইবনে হুযাইমাঃ ২২১/৪; মুসনাদ আল-ইমাম আহমাদঃ ২২৬/১; মুসতাদরাকুল হাকিমঃ ৪৫৭/১, হাকীম উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন, ইমাম যাহাবী তাঁর সমর্থন করেচেন, আলবানী একে বিশুদ্ধ বলেছেন। সহীহ ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২৩৮১।]

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন : যখন হাজারে আসওয়াদের পার্শ্বে ভিড় পাবে। তখন কাউকে কষ্ট দেবে না এবং নিজেও কষ্ট পাবে না। [‘আবদুর রাজ্জাক তাঁর মুসান্নাফ গ্রন্থে এই হাদীসটি সন্নিবেশিত করেছেন। (৬৫/৫); যারকানী মুয়াত্তার ব্যাখ্যায় উক্ত হাদীস সম্পর্কে বলেনঃ ৪০৭/২; উক্ত হাদীসটি মুরসাল, তার সনদ ভাল। আরনাউত্ব তাঁর তা’লিকুর মুসনাদে এই হাদীসকে হাসান বলে আখ্যায়িত করেছেন, ৩২১/১।] তিনি আরও বলেন : আমি চাই যে হাজারে আসওয়াদের উপর ভিড় করবে সে যেন নিঃস্ব হয়ে পড়ে। [আবদুর রাজ্জাক তাঁর মুসান্নাফ গ্রন্থে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। (৩৬/৫)]

এ নিষেধাজ্ঞাটি মেয়েদের ব্যাপারে আরও প্রবল। বিশেষ করে যখন হাজারে আসওয়াদের পার্শ্বে ভিড় থাকে এবং অপরিচিত পুরুষদের সাথে মিশতে বাধ্য করে। ‘আতা ইবনে রাবাহ জনৈকা মহিলাকে ভিড়ের মধ্যে হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার চেষ্টারত দেখে চিৎকার দিয়ে বললেন : মেয়েদের হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার কোন অধিকার নেই। [প্রাগুক্তঃ ৩৩৪/১।] এ বক্তব্য সে সময়ের জন্য যখন পুরুষদের উপস্থিতি ও ভিড় থাকে।

এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যা করছে তা মোটেও বৈধ নয়। যেমন ইমাম সালাম ফেরাবার পূর্বেই হাজারে আসওয়াদকে চুমু বা স্পর্শ করার জন্য সালাত ছেড়ে দেয়া।

৫. তওয়াফকারীর জন্য সুন্নাত হচ্ছে হাজারে আসওয়াদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকবীর ধ্বনি দেয়া।

তওয়াফের প্রত্যেক চক্করের শুরুতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর দেবে। এমনকি তওয়াফের শেষ চক্কর শেষে যখন হাজরে আসওয়াদ বরাবর আসবে তখন তাকবীর ধ্বনি দেবে। পুরো সাত চক্কর তওয়াফ শেষ করতে তাকবীরের সংখ্যা হবে আট। [ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমাঃ ২২৪-২২৫/১১।]

ইমাম বুখারি তাঁর সহীহুল বুখারিতে ‘আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন :

طَافَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَيْتِ عَلَى بَعِيرٍ كُلَّمَا أَتَى الرُّكْنَ أَشَارَ إِلَيْهِ بِشَيْءٍ كَانَ عِنْدَهُ وَكَبَّرَ .

‘‘নবী (ﷺ) উটের উপর আরোহণ করে বাইতুল্লাহর তওয়াফ করেন। যখন তিনি হাজারে আসওয়াদ বরাবর আসতেন, তখন তিনি তাঁর কাছে যা কিছু থাকত, তা দিয়ে এর প্রতি ইঙ্গিত করতেন এবং তাকবীর ধ্বনি দিতেন।’’ [সহীহুল বুখারী, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ রুকন ইয়ামিনীর নিকটে তাকবীর দেয়া। হাদীস নং- ১৬১৩।]

কতক ঊলামায়ে কেরাম সাত তাকবীরকেই যথাযথ মনে করেন (আট তাকবীরকে নয়), কারণ তাকবীর তো তওয়াফের প্রত্যেক চক্করের শুরুতে হবে, শেষে নয়। [ইবনে উসাইমিন, আশ্-শরহুল মুম্তি, শরহু যাদিন মুসতান কি’ঃ ২৮১/৭।] হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময় তাকবীরের ধরন বিসমিল্লাহ সহ ইবনে উমার থেকে বর্ণিত। এভাবে বলবে: বিসমিল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার। [বাইহাকী উক্ত হাদীসটি সহীহ সনদে আস্-সুনানুল কুবরাতে বর্ণনা করেছেন। (৭৯/৫)]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন