hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হারাম শরীফের দেশ ফজিলত ও আহকাম

লেখকঃ দা‘ওয়াহ ও উসূলুদ্দীন ফ্যাকাল্টি, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়

২৩
ষষ্ঠত: মাকামে ইব্রাহীম
হারাম শরীফের প্রকাশ্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে মাকামে ইব্রাহীম। হাদিসের বর্ণনানুযায়ী মাকামে ইব্রাহীম হচ্ছে ঐ পাথর যার উপর দাঁড়িয়ে ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ কা‘বা গৃহের নির্মাণ কাজ আঞ্জাম দিয়েছিলেন যখন এর নির্মাণ কাজ স্বাভাবিকভাবে হাতের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। অতঃপর নির্মাণ কাজ শেষে ঐ পাথরের উপর দাঁড়িয়ে তিনি সারা বিশ্বের মানুষকে হজের আহবান জানিয়েছিলেন। [আল্-ফাসী শিফাউল গারামঃ ২০৩/১।]

ইমাম বুখারির ভাষায় কা‘বার নির্মাণ সংক্রান্ত সংবাদ ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এতে এসেছে : তারা [ইব্রাহীম ও ইসমাইল (আঃ)] কা‘বা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিলেন, ইসমাইল পাথর বহন করে নিয়ে আসতেন, আর ইব্রাহীম নির্মাণ কাজ করতেন। যখন নির্মাণ কাজ উপরের দিকে উঠতে লাগল, তখন তিনি (ইসমাইল) এ পাথর নিয়ে এসে ইবরাহীমের পার্শ্বে রাখলেন। ইব্রাহীম (‘আলাইহিস সালাম) পাথরের উপর দাঁড়িয়ে নির্মাণ কাজ করতে লাগলেন। আর ইসমাইল (আঃ) তাঁকে পাথর দিচ্ছিলেন। আর দু’জনেই এ দু‘আ পড়ছিলেন:

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة :127﴾

‘‘হে আমাদের রব! আমাদের থেকে (এ মহৎ কর্মটি) কবুল কর। নিশ্চয়ই, তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।’’ [সূরা আল-বাকারা ১২৭।]

আল্লাহ (তাআলা) আল-কুরআনে মাকামে ইব্রাহীমের কথা উল্লেখ করেছেন এবং তাকে হারাম শরীফের স্পষ্ট নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এরশাদ হচ্ছে :

فِيهِ آَيَاتٌ بَيِّنَاتٌ مَقَامُ إِبْرَاهِيمَ وَمَنْ دَخَلَهُ كَانَ آَمِنًا ﴿آل عمران :97﴾

‘‘এতে রয়েছে মাকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে লোক এর ভিতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। [সূরা আলে-ইমরানঃ ৯৭।]

ইবনে জারির এ আয়াতের তাফসীরে বলেন : নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে বরকতময় এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হিদায়াত স্বরূপ নির্মাণ করা হয়েছে, তা বাক্কায় অবস্থিত, এতে আল্লাহর কুদরতের স্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে এবং তাঁর বন্ধু ইব্রাহীম (আঃ)-এর নিদর্শন বিদ্যমান। তন্মধ্যে একটি হলো ঐ পাথরের উপর ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ পদচিহ্ন, যার উপর (কা‘বা নির্মাণের সময়) তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। [তাফসীর ইবনে জারীর তাবারীঃ ৯/৪। ইবনে হাজার আস্কালানী ফাত্হুল বারীতে এ বক্তব্যটি ইবনেুল জাওযী থেকে নকল করেছেন। ১৬৯/৮; তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ৩৮৪/১।]

ইবনুল জাওযী বলেন : ইব্রাহীম (আঃ)-এর পদচিহ্ন এখন পর্যন্ত মাকামে ইব্রাহীমে বিদ্যমান। হারাম বাসীদের নিকট এটি খুবই পরিচিত। আবূ তালিব তার প্রসিদ্ধ কাব্যে এ প্রসঙ্গে বলেন :

কা‘বাগৃহ নির্মাণের সময় খালি পায়ে জুতোবিহীন ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ যে পাথরের উপর দাঁড়িয়েছিলেন, সেথায় তাঁর দু’ পদচিহ্ন এখনও তরতাজা বিদ্যমান। [ইবনে হাজার আস্কালানী ফাত্হুল বারীতে এ বক্তব্যটি ইবনেুল জাওযী থেকে নকল করেছেন। ১৬৯/৮; তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ৩৮৪/১।]

মাকামে ইব্রাহীমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিম্নে প্রদত্ত হলো :

(ক) আল্লাহ (তাআলা) কা‘বাগৃহের তওয়াফকারীকে মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাবার নির্দেশ প্রদান করেছেন। এরশাদ হচ্ছে :

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ﴿البقرة :125﴾

‘‘তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের জায়গা বানাও।’’ [সূরা আল-বাক্বারাঃ ১২৫।]

ইমাম বুখারি তাঁর সহীহ বুখারিতে আনাস ও ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেন :

وَافَقْتُ اللهَ فِي ثَلاَثٍ أَوْ وَافَقَنِي رَبِّي فِي ثَلاَثٍ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ اتَّخَذْتَ مَقَامَ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى .... الحديث .

‘‘তিনটি বিষয়ে আমি আল্লাহ (তাআলা)-র সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছি অথবা আমার প্রভু তিনটি বিষয়ে আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান হিসাবে গ্রহণ করতেন.....।’’ [সহীহুল বুখারী, অধ্যায়ঃ সলাত, অনুচ্ছেদঃ কিবলা সম্পর্কে এবং যারা মনে করেন, ভুলবশতঃ কেউ যদি সঠিক কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় না করেন, তাকে সালাত পুনরায় আদায় করতে হবে না। হাঃ নং- ৪০২।]

তওয়াফের পরে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে সালাত আদায় আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সুন্নাত। ইমাম নাসাঈ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন :

قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَطَافَ بِالْبَيْتِ سَبْعًا ثُمَّ صَلَّى خَلْفَ الْمَقَامِ رَكْعَتَيْنِ وَطَافَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ .

‘‘নবী (ﷺ) কা‘বাগৃহে এসে বাইতুল্লায় সাত চক্কর তওয়াফ করেন। মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত‘আত সালাত আদায় করেন এবং সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝে সা‘য়ী করেন।’’

তিনি বলেন :

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ ﴿الأحزاب :21﴾

‘‘তোমাদের জন্য নবী রাসূলুল্লাহর জীবনে উত্তম আদর্শ রয়েছে।’’ (সূরা আল-আহযাব : ২১) [সহীহুল বুখারী, অধ্যায়ঃ সলাত, অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণী- তোমরা মাকামু ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাও। হাঃ নং- ৩৯৫। সহীহ মুসলিমে অনুরূপ শব্দে বর্ণিত হয়েছে, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি হাজ্জের ইহরাম বেঁধে মাক্কায় আসে, তাকে তওয়াফ ও সা‘য়ী সহ যা করতে হবে। হাঃ নং- ১২৩৪।]

জাবির (রাঃ) বলেন : ... রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে আমরা যখন বাইতুল্লাহতে পৌঁছলাম, তখন তিনি রুকন (হাজরে আসওয়াদ)-কে স্পর্শ করেন। (প্রথম তিন চক্করে) তিনি রামল (বীরত্বের সহিত দৌড়ানো) করেন। অতঃপর অবশিষ্ট চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হাঁটেন। তারপর তিনি মাকামে ইব্রাহীম তাঁর ও বাইতুল্লাহর মাঝে রেখে এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন,

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ﴿البقرة :125﴾

‘‘তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাও।’’ [নবী (ﷺ)-এর হাজ্জের বর্ণনায় জাব্রি থেকে বর্ণিত নম্বর হাদীসের এটি অংশ। সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ হাজ্জ, অনুচ্ছেদঃ নবী (ﷺ)-এর হাজ্জ, হাঃ নং- ১২১৮।]

একটি বিষয় জেনে রাখা উচিত যে, ভিড়ের কারণে মাকামু ইব্রাহীমের পিছনে সালাত আদায় যার জন্য সহজসাধ্য, সে মসজিদে হারামের যে কোন স্থানে পড়তে পারে।

শায়খ ‘আবদুল আজীজ বিন বাজ বলেন : মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত‘আত সালাত আদায় করা তওয়াফকারীর জন্য জরুরি নয়। হ্যাঁ, কোন কষ্ট ছাড়া যদি এটা সম্ভব হয় তবে এখানে সালাত আদায় তার জন্য বৈধ। কোন ব্যক্তি যদি এ দু’রাকাত‘আত সালাত মসজিদ হারাম অথবা গোটা হারামের যে কোন এক স্থানে আদায় করে তবে এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে। মাকামে ইব্রাহীমের আশেপাশে সালাত আদায় করার লক্ষ্যে অপরাপর তওয়াফকারীদের সাথে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কোন অবস্থাতেই বৈধ নয়। বরং তার উচিত ভিড়াভিড়ি থেকে দূরে থেকে মসজিদে হারামের যে কোন স্থানে সালাত আদায় করে নেয়া। কারণ ‘উমার (রাঃ) তাঁর জীবনের কোন কোন তওয়াফে দু’রাকাত‘আত সালাত যু তুওয়া নামক স্থানে পড়েছিলেন। আর ঐ স্থানটি হারাম শরীফের ভিতরে ও মসজিদে হারামের বাইরে।

অনুরূপভাবে উম্মু সালামাহ (রাঃ) বিদায়ি তওয়াফের দু’রাকাত‘আত সালাত মসজিদে হারামের বাইরে পড়েছেন। এর দ্বারা এটা প্রতীয়মান হয় যে, তিনি ভিড়ের কারণে এমনটি করেছিলেন অথবা তিনি এ বিষয়ে শরিয়তের উদারতা বুঝাতে চেয়েছিলেন। [মাজমু ফাতাওয়া ওয়া মাকালাত মুতানাওয়া’ঃ ২২৮/১৮।]

মাকামে ইব্রাহীমের কাছে এটাই হলো একমাত্র শরিয়ত সম্মত আমল যে, দূরে হলেও তার পিছনে সালাত আদায় করা। মাকামে ইব্রাহীমকে স্পর্শ করা, তার থেকে বরকত নেয়া এবং একে চুমু দেয়া, এর কোনটাই রাসূল (ﷺ) করেননি। এটা মুসলিম উম্মাহকে জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর বাণী :

وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ﴿البقرة :125﴾

এর ব্যাখ্যায় কাতাদা বলেন : মাকামে ইব্রাহীমের পাশে সালাত আদায়ের জন্য তারা আদিষ্ট হয়েছে, এটা স্পর্শ বা তার থেকে বরকত নেয়ার জন্য নয়। [ইবনে জারীর এ হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন, ৪২২/১; আযরাকী, ফী আখবারে মাক্কা, ২৯/২; তারতুশী, আল-হাওয়াদেস ওয়ালবিদা’।]

(খ) মাকামে, যেখানে দাঁড়িয়ে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম হজের ঘোষণা প্রদান করেছিলেন :

মাকামে ইবরাহীমের ফজিলত এই যে, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বায়তুল্লাহর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার পর মহান আল্লাহ তাকে মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা প্রদান করার নির্দেশ দেন, যেন তারা তালবিয়া পাঠ করতে করতে হজ পালনের জন্য উদ্দেশে তাদের প্রভুর ঘরের দিকে ছুটে আসে। যেমন কুরআনুল কারীমে আল্লাহ (তাআলা) বলেছেন,

وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ ﴿الحج :27﴾

‘‘(তাকে আরো আদেশ দিয়েছিলাম) তুমি মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা প্রচার করে দাও, যাতে করে তারা তোমার কাছে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার দ্রুতগামী উটের পিটে আরোহণ করে ছুটে আসে, দূর-দূরান্ত পথ অতিক্রম করে।’’ [সূরা হাজ্জঃ ২৭।]

ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মাকামে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা প্রদান করলেন।

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘‘ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) প্রস্তরটির উপর দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে মানবমন্ডলী তোমাদের উপর হজ ফরজ করা হয়েছে। ঘোষণাটি তিনি সে অনাগত প্রজন্মকেও শুনিয়ে দিলেন, যারা ছিল তখনও পুরুষের মেরুদন্ডে এবং নারীদের গর্ভে। যারা ঈমান এনেছিলেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা হজ করবেন বলে আল্লাহ জানতেন তারা এ ঘোষণায় সাড়া দিয়ে বললেন : ‘‘লাববাইক আল্লাহুম্মা লাববাইক’’। [ইবনে হাজার ফাতহুল বারী গ্রন্থে (৬৬৮) হাদীসের সনদ সহীহ বলে বর্ণনা করেছেন।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন