hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে বিনয়ী হওয়ার তেত্রিশ উপায়

লেখকঃ মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জেদ

২২
১৪- আল্লাহর নিকট শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা:
শয়তান আমাদের পরম দুশমন। শয়তানের শত্রুতা হল, সে একজন মুসল্লিকে তার সালাতের মধ্যে কু-মন্ত্রণা ও ওয়াস-ওয়াসা দেয়; যাতে তার খুশু‘ চলে যায়, আর এভাবেই সে তার সালাতে বিভ্রান্তি তৈরী করে।

“প্রত্যেক ব্যক্তি যখনই আল্লাহর যিকির বা কোনো ইবাদতের দিক মনোযোগ দেয়, তখনই শয়তান তাকে বিভিন্ন ধরনের কু-মন্ত্রণা দিতে থাকে। সুতরাং একজন বান্দার জন্য জরুরী হল, সে ইবাদতে ধৈর্য ধারণ করবে, অটল ও অবিচল থাকবে এবং ইবাদত, যিকির ও সালাতে সর্বদা নিমগ্ন থাকবে, কোনো প্রকার অস্বস্তি প্রকাশ করবে না। কারণ, ইবাদতে লেগে থাকার মাধ্যমে শয়তানের ষড়যন্ত্র তার থেকে দূরে সরে যাবে।

﴿إِنَّ كَيۡدَ ٱلشَّيۡطَٰنِ كَانَ ضَعِيفًا ٧٦﴾ [ النساء : ٧٦ ]

“নিশ্চয় শয়তানের ষড়যন্ত্র দুর্বল”। [সূরা নিসা, আয়াত: ৭৬।]

আর যখনই একজন বান্দা অন্তর দ্বারা আল্লাহর প্রতি মনোযোগী হতে চায়, তখন অন্য কোন বিষয় তার সামনে এসে তাকে কু-মন্ত্রণা দিতে থাকে। শয়তান হল, ছিনতাইকারী ও ডাকাতের মত। যখন কোনো বান্দা আল্লাহর দিকে রওয়ানা করে, শয়তান তখন তাকে হাইজ্যাক করতে চায়। এ কারণে কোনো পূর্বতম মনিষী (সালাফ)কে বলা হল, ইয়াহূদী ও নাসারারা বলে, “তাদের শয়তান কু-মন্ত্রণা দেয় না। তিনি বললেন, সত্য কথাই বলছে। নষ্ট ঘরে শয়তান প্রবেশ করে লাভ কি।” [মাজমু‘ ফাতাওয়া ২২/৬০৮]

এ বিষয়টিকে সুন্দর একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝানো হল, তিনটি ঘর: একটি বাদশাহর ঘর তার মধ্যে রয়েছে, বাদশাহর ধন-ভাণ্ডার, খাজানা ও মণিমুক্তা। অপর ঘর একজন দাসের ঘর, তাতে রয়েছে, দাসের ধন-ভাণ্ডার, খাজানা ও মণিমুক্তা, তবে তা বাদশাহর ধন-সম্পদের সাথে তুলনীয় নয়। আরেকটি ঘর তা একেবারেই খালি, তাতে কিছুই নেই। যখন চোর আসবে, সে কোন ঘরে প্রবেশ করবে এবং কোন ঘর থেকে চুরি করবে?। [আল ওয়াবিলুস সাইয়্যেব: ৪৩]

“যখন বান্দা সালাতে দাড়ায় তখন তার উপর শয়তানের ঈর্ষা-হিংসা ও দ্বেষ চলতে থাকে। কারণ, তখন বান্দা একটি মহান ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের স্থানে দাঁড়িয়েছে এবং শয়তানের জন্য সবচেয়ে অধিক কষ্টদায়ক ও কঠিন স্থানে অবস্থান করছে। একজন বান্দা যাতে সালাতকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে না পারে, সে জন্য শয়তান যাবতীয় চেষ্টাই করতে থাকে। তাকে বিভিন্ন ধরনের আশা দেয়, প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সালাতকে ভুলিয়ে দিতে সব চেষ্টাই সে করে। শয়তান একজন বান্দাকে সালাত থেকে বিরত রাখার জন্য হাতি-ঘোড়াসহ তার সব ধরনের সৈন্যকে ব্যবহার করে এবং আরও যা যা ব্যয় করা দরকার তার সবই সে ব্যয় করতে থাকে, যাতে বান্দাটি সালাতকে গুরুত্বহীন মনে করে এবং সালাতের প্রতি যত্নবান ও মনোযোগী না হয়। শয়তানের এ ধরনের টানা-হেঁচড়া ও যুদ্ধ ঘোষণা করার কারণে বান্দা অনেক সময় সালাতকে গুরুত্বহীন মনে করে এবং সে সালাত আদায় করা ছেড়ে দেয়। আর যখন শয়তান কোনো বান্দার ক্ষেত্রে অক্ষম হয় এবং বান্দা শয়তানের বশ্যতা স্বীকার না করে, আর সালাতে দাঁড়িয়ে (আল্লাহর নৈকট্য লাভের) এ মহান অবস্থানে পৌঁছে যায়, তখন আল্লাহর দুশমন একজন বান্দার মাঝে ও তার অন্তরের মাঝে অবস্থান করে এবং বান্দার মাঝে ও অন্তরের মাঝে সালাতে যাতে মনোযোগী হতে না পারে সে জন্য দেয়াল তৈরি করে। তারপর সে সালাতে বান্দাকে এমন সব কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা সালাত আরম্ভ করার পূর্বে স্মরণ করানো হয় নি। এমনকি দেখা যায়, কোনো বিষয় ও প্রয়োজন এমন আছে, যা বান্দা একেবারে ভুলে গেছে এবং তা হতে সে নিরাশ হয়ে গেছে, এ ধরনের বিষয়গুলো শয়তান সালাতের মধ্যে তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যাতে তার অন্তরকে সালাত থেকে ফিরিয়ে নেয়া যায় এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখা যায়। ফলে সে সালাতে নিষ্প্রাণ হয়ে (আল্লাহর সামনে) দাঁড়ায়। আল্লাহকে সামনে রেখে মনোযোগ সহকারে সালাত আদায়কারী যেভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও সাওয়াব হাসিল করে, সে তার কোন কিছুই লাভ করতে পারে না। ফলে সে যেভাবে খালি হাতে সালাতে দাড়িয়ে ছিল, সেভাবে খালি হাতেই সালাত থেকে গুনাহের বোঝা নিয়ে বের হয়ে আসে। সালাত আদায়ের কারণে তার গুনাহের বোঝা একটুও হালকা হয় না। কারণ, সালাত ঐ ব্যক্তির গুনাহগুলো দূর করে, যে সালাতের হক আদায় করে, সালাতকে মনোযোগ সহকারে আদায় করে, সালাতে খুশুকে পরিপূর্ণ করে এবং সালাত আদায় করার সময় আল্লাহর সামনে মনোযোগ সহকারে দাড়ায়। [আল ওয়াবিলুস সাইয়্যেব: ৩৬।]

শয়তানের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা ও শয়তানের কুমন্ত্রণাকে দূর করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্ন লিখিত চিকিৎসার প্রতি দিক নির্দেশনা দেন। আবুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

يا رسول الله إن الشيطان قد حال بيني وبين صلاتي وقراءتي يلبِّسها عليّ ، فقال رسول الله صلى عليه وسلم : «ذاك شيطان يُقال له خنزب فإذا أحسسته فتعوّذ بالله منه واتفل على يسارك ثلاثا» . قال : ففعلت ذلك فأذهبه الله عني .

“হে আল্লাহর রাসূল! শয়তান আমার ও আমার সালাতের মাঝে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এবং আমার কেরাআত পড়ার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি শয়তান, এর নাম ‘খানযাব’। যখন তুমি তা অনুভব করবে, তখন আল্লাহর নিকট শয়তান হতে আশ্রয় চাও এবং তোমার বাম দিকে তিনবার থুতু ফেল। তিনি বলেন, আমি কাজটি করলে, আল্লাহ তা‘আলা আমার থেকে তা দূর করে দেন”। [মুসলিম: ২২০৩।]

সালাত আদায়কারীকে শয়তানের ধোঁকা দেয়া ও তার চিকিৎসা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানিয়েছেন এবং তিনি বলেন,

«إن أحدكم إذا قام يصلي جاء الشيطان فلبس عليه - يعني خلط عليه صلاته وشككه فيها - حتى لا يدري كم صلى . فإذا وجد ذلك أحدكم فليسجد سجدتين وهو جالس»

“যখন তোমাদের মধ্য হতে কোন ব্যক্তি সালাতে দাড়ায়, শয়তান এসে তাকে বিপাকে ফেলে। অর্থাৎ তার সালাতকে এলোমেলো করে দেয় এবং সালাতের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করে। ফলে সে কত রাকাত সালাত আদায় করল, তা ভুলে যায়। যখন তোমাদের এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তখন বসা অবস্থায় তোমরা দুটি সেজদা করে নিবে”। [বুখারি, সেজদা সাহু অধ্যায়: নফল ও ফরয সালাতে সেজদা সাহুর করার আলোচনা।]

অনুরূপভাবে শয়তানের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বলে আমাদের আরও সংবাদ দেন যে,

«إذا كان أحدكم في الصلاة فوجد حركة في دبره أحدث أو لم يحدث ، فأشكل عليه ، فلا ينصرف حتى يسمع صوتا أو يجد ريحا»

“যখন তোমাদের কেউ সালাতে থাকা অবস্থায় তার পায়ু পথে নড়-চড় অনুভব করে এবং ওজু ভঙ্গ হল কি হল না সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌছতে পারছে না, সে যেন যতক্ষণ পর্যন্ত কোন আওয়াজ না শোনে বা হাওয়া না বের হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সালাত না ছাড়ে”। [মুসলিম, হাদিস: ৩৮৯।]

বরং শয়তানের ষড়যন্ত্র অনেক সময় আশ্চর্য রূপ ধারণ করে। যেমনটি এ হাদিস তা স্পষ্ট করে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل عن الرجل يخيّل إليه في صلاته أنه أحدث ولم يُحدِث ، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «إن الشيطان يأتي أحدكم وهو في صلاته حتى يفتح مقعدته فيخيل إليه أنه أحدث ولم يُحدث ، فإذا وجد أحدكم ذلك فلا ينصرفن حتى يسمع صوت ذلك بأذنه أو يجد ريح ذلك بأنفه»

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সে ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, যার মনে হচ্ছে যে, সালাতে তার বায়ু বের হয়ে ওজু ভঙ্গ হয়েছে অথচ তার ওজু ভঙ্গ হয় নি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “শয়তান তোমাদের সালাতে উপস্থিত হয়ে তার পায়ু পথ খোলে দেয়, ফলে সে মনে করে তার ওজু নষ্ট হয়ে গেছে অথচ তার ওজু নষ্ট হয় নি। সুতরাং যখন তোমাদের কেউ এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন সে যে সালাত থেকে ফিরে না যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজ কানে পায়ুর আওয়াজ শুনতে না পায় অথবা নাকে তার দুর্গন্ধ অনুভব না করে”। [তাবরানী, খণ্ড ১১, পৃ: ২২২, হাদিস: ১১৫৫৬; মাজমায়ুয যাওয়েদ ১/২৪২ গ্রন্থে বলা হয়েছে, হাদিসটির বর্ণনাকারীগণ সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারী।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন