hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে বিনয়ী হওয়ার তেত্রিশ উপায়

লেখকঃ মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জেদ

২৪
১৫- সালাফে সালেহীনদের সালাতের অবস্থা কেমন ছিল, সে বিষয়ে চিন্তা করা:
সালাফে সালেহীনের সালাত বিষয়ে চিন্তা করা দ্বারা সালাতে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং তাদের অনুসরণের দিক ধাবিত করে। তাদের কাউকে যখন সালাত আরম্ভ করতে দেখতে এবং তারা যখন মেহরাবে দাড়িয়ে সালাত আদায় করতে গিয়ে তাদের রবের সাথে কথা বলতে শুরু করত, তখন তাদের অন্তরে এ অনুভূতি জাগ্রত হত যে, এটি এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হয়, তাদের অন্তর খুলে যাওয়ার উপক্রম হতো এবং বিবেক-বুদ্ধি অবশ হয়ে যেতো”। [আল্লামা ইবনে রজবের কিতাব, আল-খুশু ফিস সালাত, পৃ: ২২।]

আল্লামা মুজাহিদ রহ. বলেন, সালাফরা যখন সালাতে দাঁড়াতেন, তখন আল্লাহকে এমন ভয় করতেন যে, যতক্ষণ সালাতে থাকতেন ততক্ষণ কোনো কিছুর প্রতি তাকাতে বা এদিক সেদিক দৃষ্টিপাত করতে, অথবা সালাতে পাথর সরাতে অথবা কোন কিছু অনর্থক কাজ করতে, অথবা মনের মধ্যে দুনিয়াবি কোন কিছু চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতেন। তবে ভুলবশত কিছু সংঘটিত হলে, সেটি ভিন্ন কথা। [তা‘যীমু কাদরিস সালাত: ১/১৮৮।]

আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর যখন সালাতে দাঁড়াতেন, তখন তিনি বিনয়ে কাঠ হয়ে যেতেন। তিনি সেজদারত ছিলেন, এমন সময় কামানের একটি গোলা এসে তার কাপড়ের একাংশ ছিঁড়ে নিয়ে যায়, তিনি সালাতেই থাকলেন, মাথা উঠালেন না। মাসলামা ইবন বাশ্‌শার মসজিদে সালাত আদায় করছিলেন, তখন কিছু মানুষের উপর মসজিদের কিছু অংশ ভেঙ্গে পড়ল, লোকেরা সালাত ছেড়ে দিল, কিন্তু তিনি সালাতে রয়ে গেলেন, তার কোনো খবরই হলো না। সালাফদের বিষয়ে আমাদের নিকট আরও সংবাদ পৌঁছেছে যে, তাদের কাউকে দেখা যেত, যখন তিনি সালাতে দাঁড়াতেন, তখন তিনি পতিত কাপড়ের মত হয়ে যেতেন, অর্থাৎ কোনো প্রকার নড়া-চড়া থাকত না। আবার তাদের কেউ কেউ যখন সালাত আদায় শেষ করতেন, তখন আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর কারণে তার চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে যেত। আবার কেউ কেউ এমন ছিল যে, তিনি যখন সালাতে দাঁড়াতেন, তার ডানে বামে কে দাঁড়াল, তা চিনতে পারতেন না। কাউকে দেখা যেত, যখন সালাতের অজু করতেন, তখন তার চেহারার রং হলুদ হয়ে যেত। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, কি ব্যাপার আমরা আপনাকে দেখি যখন সালাতের ওজু করেন, তখন আপনার অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যায়? তখন তিনি বলেন, আমি জানি আমি এখন কার সামনে দাঁড়াব। আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ যখন সালাতে উপস্থিত হতেন, তখন তার দেহে কম্পন দেখা যেত এবং চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেত। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনার কি হয়েছে? তখন তিনি বলতেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমানত আদায়ের সময় এসেছে, যে আমানতকে আল্লাহ আসমান, যমীন ও পাহাড়কে গ্রহণ করার জন্য পেশ করলে, তারা তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং তারা ভয় করে, আর আমি তা গ্রহণ করেছি। সাঈদ আত-তানুখী রহ. যখন সালাত আদায় করা আরম্ভ করতেন, তখন তার চোখের পানি চেহারা দিয়ে দাড়ি পর্যন্ত গড়াত। কোন কোন তাবেঈ সম্পর্কে বর্ণিত, যখন তিনি সালাতে দাঁড়াতেন, তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেত এবং তিনি বলতেন, তোমরা কি জান কার সামনে আমি দাঁড়াবো এবং কার সাথে কথা বলব? তোমাদের মধ্যে কে আছে, যার অন্তরে আল্লাহর জন্য এ ধরনের ভয় আছে?। [সালাহুল ইয়াকজান লি তারদিশ-শাইতান: আব্দুল আজিজ আস-সালমান: ২০০।]

লোকেরা আমের ইবন আব্দুল কাইসকে জিজ্ঞেস করে বলেন, আপনি কি সালাতে মনে মনে কথা বলেন? তখন তিনি বলেন, সালাত থেকে আর কোনো কিছু আমার কাছে কি প্রিয় আছে যাতে আমি কথা বলব? তারা বলল, আমরা সালাতে মনে মনে কথা বলি। তিনি বললেন, তোমরা কি তাহলে জান্নাত ও তার হূর ইত্যাদি সম্পর্কে কথা বল? তারা বলল, না, কিন্তু আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন ও ধন সম্পদ বিষয়ে মনে মনে কথা বলি। তখন তিনি বললেন, সালাতে দুনিয়া বিষয়ে কথা বলা হতে তীরের আঘাতে আমার দেহ রক্তাক্ত হওয়া আমার নিকট অধিক প্রিয়।

সা‘আদ ইবন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ বলেন, আমার মধ্যে তিনটি চরিত্র এমন আছে, যদি আমি আমার সকল অবস্থায় এ রকম থাকতে পারতাম, তবে আমি হয়ে যেতাম আমার মত। যখন আমি সালাতে মগ্ন থাকি তখন সালাত ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে আমি চিন্তা করি না। আর যখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কোনো হাদিস শুনি, তখন হাদিসটি সত্য হওয়ার বিষয়ে আমার মধ্যে কোনো সন্দেহ থাকে না। আর যখন আমি কোনো জানাযায় উপস্থিত হই, তখন আর জানাযা কি বলে এবং জানাযা সম্পর্কে কি বলা হয় তাছাড়া আর কোনো বিষয়ে কথা বলি না। [ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. এর মাজমু‘ ফাতাওয়া: ২২/৬০৫।]

হাতেম রহ. বলেন, আমি (সালাতে) আল্লাহর নির্দেশ পালন করার জন্য দণ্ডায়মান হই, আল্লাহর ভয় নিয়ে চলি, নিয়ত সহকারে সালাতে প্রবেশ করি, বড়ত্ব সহকারে তাকবীর বলি, তারতীল ও তাফকীরের সাথে কিরাত পড়ি, বিনয়াবনত হয়ে রুকু করি, বিনয় ও দীনতার সাথে সেজদা করি, পরিপূর্ণভাবে তাশাহ্‌হুদ পড়ার জন্য বসি। নিয়তের সাথে সালাম দেই এবং আল্লাহর জন্য নিষ্ঠা বা ইখলাসের সাথে সালাতকে শেষ করি। আর সালাত থেকে এ ভয় নিয়ে ফিরে যাই, না জানি আমার থেকে আমার সালাতকে কবুল করা না হয়। আর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা করে এগুলোর হেফাযত করি। [আল-খুশু ফিস সালাত, ২৭-২৮।]

আবু বকর আস-সাবগী রহ. বলেন, আমি দু’জন ইমামকে পেয়েছি যাদের থেকে হাদিস শোনার তাওফীক আমার হয়নি। তারা হলেন, আবু হাতেম আর-রাযি রহ. ও মুহাম্মাদ ইবন নসর আল-মারওয়াযি রহ.। তন্মধ্যে ইবনু নসর, তার চেয়ে সুন্দর সালাত আদায়কারী আর কাউকে আমি দেখি নি। তার সম্পর্কে আমাকে জানানো হলো যে, একটি ভোলতা তার কপালের উপর বসলে, তার চেহারার উপর রক্ত প্রবাহিত হতে আরম্ভ করল। কিন্তু তিনি একটুও নড়া-চড়া করলেন না। মুহাম্মাদ ইবন ইয়াকুব আল-আখরম থেকে বর্ণিত, আমি মুহাম্মদ ইবন নসর থেকে বেশি সুন্দর সালাত আদায়কারী আর কাউকে দেখি নি। মাছি তার কানের উপর বসত, কিন্তু তিনি তা তাড়াতেন না। আমরা তার সালাতে খুশু, সালাতের সৌন্দর্য ও ভীতি দেখে আশ্চর্য হতাম। তিনি সালাতে তার থুতনিকে তার বুকের উপর ঝুঁকিয়ে দিতেন, এভাবে তিনি হয়ে যেতেন যেন একটি খাড়া কাঠ। [তা‘যীমু কাদরিস সালাত, ১/৫৮।] শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. যখন সালাতে দাখিল হতেন, তার দেহে কম্পন শুরু হত, ফলে তিনি ডানে-বামে ঝুঁকে পড়তেন। [আল-কাওয়াকিবুদ দুররিয়্যাহ ফী মানাকিবিল মুজতাহিদ ইবন তাইমিয়্যাহ, লি মার‘য়ী আল-কারামী, পৃ. ৮৩। দারুল গারবিল ইসলামী।]

তাদের সালাত আর বর্তমানে আমাদের সালাতের অবস্থার তুলনা করে দেখুন, বর্তমানে আমাদের কেউ কেউ সালাতে একবার ঘড়ির দিকে তাকায়, আবার কেউ কাপড় ঠিক করে, কেউ আবার নাক খোঁচায়, আবার কেউ কেউ আছে, সালাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের হিসাব-নিকাশ মিলায়, হয়ত টাকাও গোনে। কাউকে দেখা যায়, সে জায়নামাযের নকশীগুলো দেখতে থাকে মসজিদের দেয়াল বা ছাদে যে সব লেখা আছে, তা দেখতে থাকে। আবার দেখা যায় তার দু’ পাশে কে কে দাঁড়ালো তা লক্ষ্য করতে থাকে।

চিন্তা করার বিষয়, তাদের কেউ যদি দুনিয়ার কোনো ক্ষমতাশীল ব্যক্তির সামনে দাঁড়াত, তাহলে কি তারা এ ধরনের কোন কাজ করার সাহস পেত? নিশ্চয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন