hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা

লেখকঃ ড. আবদুল করিম জায়দান

১৮
অলী আহাদ নিয়োগ
ফিকাহবিদগণ বলেছেনঃ রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন হতে হবে পূর্ববর্তী খলীফার মনোনয়নে পরবর্তী খলীফা নিয়োগ নীতির ভিত্তিতে। মাওয়ারদী বলেছেনঃ রাষ্ট্রপ্রধান দুভাবে নির্বাচিত হতে পারেঃ এক, আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ-এর নির্বাচনের মাধ্যমে। দুই, পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপ্রধানের মনোনয়নের ভিত্তিতে। আল মাওয়ারদী, ৪ পৃষ্ঠা।

এভাবে অলী আহাদ নিয়োগের রীতি কেমন করে গণতণ্ত্রসম্মত বা গণনির্বাচনের পর্যায়ে গণ্য হতে পারে?-এ একটা প্রশ্ন। এর জবাব এই যে, অলী আহাদ নিয়োগের অধিকারটি মূলত নামের প্রস্তাবনা পর্যায়ের মাত্র। খলীফা নিজের হিসাবে তিনি কাকে পসন্দ করবেন তার নাম প্রস্তাব করবেন মাত্র। কিন্তু তার এ প্রস্তাবই চূড়ান্ত নিয়োগ নয়। খলীফা মৃত্যুর পূর্বে কারোর নাম বলে গেলেই জনগণ তার পরে তাকেই খলীফা মেনে নিতে বাধ্য নয়। এ কারণেই যেখানে যেখানে এরূপ অলী আহাদ নিয়োগ হয়েছে, সেখানেই পরবর্তী সময়ে আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ -এর লোকদের বাইয়াত করতে হয়নি। যদি প্রস্তাবনা-ই খলীফা নিয়োগের জন্যে যথেষ্ট হতো, তাহলে এ বাইয়াতের কোনো প্রয়োজন হতো না। এমনকি এরূপ নাম প্রস্তাবনার পরেও জনগণ তাকে খলীফারূপে মেনে নিতে অস্বীকার করারও অধিকার রাখে।

নবী করীম স.-এর মৃত্যু শয্যায় শায়িত থাকাকালীন একটি কথা থেকেও একথাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়। তিনি তাঁর পরবর্তী ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান কে হবেন, সে চিন্তায় অস্থির পয়ে পড়েছিলেন। তখন হযরত আয়েশা রা.-কে ডেকে একদিন বললেনঃ

(আরবী)

আমি আবু বকর ও তাঁর পুত্রকে ডাকবো ও তাঁর পক্ষে পরবর্তী খলীফা হওয়ার ওয়াদা গ্রহণ করবো। যেন পরে আপত্তিকারীরা আপত্তি না করে কিংবা আশা পোষণকারীরা আশা পোষণ না করে। পরে আমি চিন্তা করলাম যে, আল্লাহ এসব রুখবেন এবং মুসলমানরা তার প্রতিরোধ করবে অথবা অন্য কথায় আল্লাহ প্রতিরোধ করবেন ও মুসলমানরা রুখে দাঁড়াবেন।-বুখারী

এ হাদীসের শব্দ (আরবী) আল-মুমিনুন অকাট্যভাবে প্রমাণ করে যে, খলীফা নির্বাচনের কাজ মুমিন-মুসলমানের স্বাধীন ইচ্ছা ও মতের ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে হবে এবং ইসলামে খলীফা নির্বাচনের উত্তম ও উন্নত আদর্শ হচ্ছে এ নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক পদ্ধতি।

হযরত আলী রা. -কে যখন লোকেরা খিলাফতের বাইয়াত গ্রহণ করতে বললেন, তখন তিনি বললেনঃ

(আরবী)

আমার বাইয়াত গোপনে অনুষ্ঠিত হবেনা এবং তা মুসলিম জনগণের স্বাধীন ইচ্ছা ও মর্জি ছাড়া কিছুতেই হতে পারে না।

এ কারণে কোনো কোনো ফিকাহবিদ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেনঃ

(আরবী)

রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন সম্পূর্ণ হয় জনগণের বাইয়াতের ভিত্তিতে। জন-সমর্থনের মাধ্যমে। পূর্ববর্তী খলীফার মনোনয়নের ভিত্তিতে নয়।

-মিনহাজুস সুন্নাহঃ ইবনে তাইমিয়া, ১ম খণ্ড, ১৪২ পৃ.।

এ হলো জনগণের অধিকারের ব্যাপার। জনগণের আর একটি অধিকার হলো পরামর্শে শরীক হওয়ার। আসলে এ হলো জনগণের খলীফা নির্বাচনের পরবর্তী দায়িত্বের কাজ। জনগণ রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন করবে, রাষ্ট্রপ্রধান হবে জনগণের যাবতীয় জাতীয় ও সামগ্রিক দায়িত্বসম্পন্ন কাজের ভারপ্রাপ্ত। সেই সাথে তার ওপর জাতির অধিকার হলো এই যে, সেসব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে জাতির পরামর্শ গ্রহণ করবে-পরামর্শ চাইবে এবং জাতি যে পরামর্শ দিবে সে তদনুযায়ী কাজ করবে।

যদি প্রশ্ন করা যায় যে, রাষ্ট্রপ্রধান তো স্বতঃ-ই জনগণের আস্থাভাজন ব্যক্তি। তাহলে আবার জনগণের পরামর্শ গ্রহণে তাকে বাধ্য করার অর্থ কি? তাহলে এর দুভাবে জবাব দেয়া যেতে পারেঃ

একঃ রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের আস্থাভাজন ব্যক্তি এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে কোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে, জনগণের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ব্যাপারে তাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া ও তদনুযায়ী কাজ করা কর্তব্য। তাহলে এ পর্যায়ের অনেক ভুল ও মারাত্মক পদক্ষেপের হাত থেকে জাতি রক্ষা পেতে পারে।

দুইঃ জাতি রাষ্ট্রপ্রধানকে জাতীয় কাজের জন্য দায়িত্বসম্পন্ন বানায় বটে, কিন্তু তা শর্তহীন নয়। তার মধ্যে একটি জরুরী শর্ত হলো এই যে, সে জাতির কাছে পরামর্শ চাইবে। কেননা, পরামর্শ চাওয়ার নির্দেশ শরীয়তে স্পষ্ট ভাষায় দেয়া হয়েছে। এ অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সে অধিকার হতে কিছুতেই বঞ্চিত করা যেতে পারে না। কেননা রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষমতা তা শরীয়তের বিধানের শর্তে সীমাবদ্ধ। সে শর্ত পূরণ না হলে রাষ্ট্রপ্রধান তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। নির্বাচনের সময় একথা স্পষ্ট ভাষায় বলা হোক আর না-ই হোক একথা একান্তই অনিবার্য। আর জাতির পরামর্শ পাওয়ারও অধিকার রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানের। এ অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত হতে দেয়া যেতে পারে না।

রাষ্ট্রপ্রধানকে যে জাতির কাছে পরামর্শ চাইতে হবে এ বিষয়ে কুরআনের নির্দেশ স্পষ্ট ও অকাট্য। রসূলে করীম স.-কে রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং সে হিসাবে সব ইসলামিক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের জন্যেই এ নির্দেশ অবশ্য পালনীয়। সে নির্দেশ হলোঃ

(আরবী)

তুমি তাদের ক্ষমা করো, তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত চাও। আর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারসমূহে তাদের সাথে পরামর্শ করো। অনন্তর তুমি যখন কোনো সংকল্প-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তখন আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।-সূরা আলে ইমরানঃ ১৫৯

এ আয়াতটি রাষ্ট্রপ্রধানকে পরামর্শ চাওয়া ও গ্রহণ করার জন্যে স্পষ্ট নির্দেশ দিচ্ছে এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে তা ওয়াজিব। এজন্যে ইমাম ইবনে তাইমিয়া লিখেছেনঃ

(আরবী)

কোনো রাষ্ট্রপ্রধান-ই পরামর্শ চাওয়া ও গ্রহণ করার দায়িত্ব থেকে মুক্ত নয়। কেননা এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে এজন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। -আসসিয়াসাতুশ শারইয়্যা, ১৬৯ পৃষ্ঠা।

আর আল্লামা তাবারী এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তাঁর নবীকে আসহাবগণের সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ সেই পরামর্শ গ্রহণের জন্যে, যে বিষয়ে আল্লাহ তাঁদের প্রশংসা করেছেন যেন তাঁর উম্মতেরা তাদের ওপর অনুরূপ অবস্থা দেখা দিলে তারা তাদের অনুসরণ করে ও পারস্পরিক পরামর্শ করে। -তাফসীরে তাবারী, ৪র্থ খণ্ড, ৯৪ পৃষ্ঠা ও তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৫ পৃষ্ঠা।

আর ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী লিখেছেনঃ

(আরবী)

হাসান বছরী ও সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ বলেছেনঃ আল্লাহ নবী করীম স.-কে পরামর্শ গ্রহণের জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তারা পরামর্শ গ্রহণের ব্যাপারে তাঁর অনুসরণ করে। আর এ নীতি তাঁর উম্মতের মধ্যে সুন্নাহরূপে অনুসৃত হয়। – তাফসীরুল কবীর, ৯ম খণ্ড, ৬৬ পৃষ্ঠা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন