hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা

লেখকঃ ড. আবদুল করিম জায়দান

৫৭
প্রথমতঃ আনুগত্য পাওয়ার অধিকার
এ পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন:

(আরবী)

“ হে ঈমানদার লোকেরা !তোমরা আনুগত্য স্বীকার করো আল্লাহর অনুগত হয়ে চলো রাসুলের এবং তোমাদের মাঝে দায়িত্বশীলদের ও”সূরা নিসা: ৫৯ আয়াতে উল্লেখিত ‘উলুল আমর’অর্থ রাষ্ট্রীয় দায়িত্বসম্পন্ন ব্যক্তিরা। অথবা ইসলামী আইন বিধানে পারদর্শী ব্যক্তিরা ”আহকামুল কুরআন লিল তাফসীরে কুরতুবী, ৫ম খন্ড, ২৫৯ পৃ.হাদিসে উদ্বৃত্ত হয়েছে, নবী করিম সা: ইরশাদ করেছেন

(আরবী)

“মুসলিম নাগরিককে রাষ্ট্রের আনুগত্য অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, তার আদেশ-নিষেধ অবশ্যই মেনে চলতে হবে সব ব্যাপারেই, তাই তারা পসন্দ করুক আর নাই করুক-যতক্ষণ না তাদের কোনো গুনাহ ও নাফরমানীর আদেশ করা হয়। শরহে সহীহ বোখারী, আল অসকালানী, ৩য় খন্ড ১০০ পৃ.

অতএব জনগণের রাষ্ট্রানুগত্য প্রতিফলিত হবে প্রশাসকদের যাবতীয় আদেশ নিষেধ পালনের মাধ্যমে। জনগণের ওপর রাষ্ট্রের এ অধিকার শরীয়ত সম্মত এবং রাষ্ট্রের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ জনকল্যাণ বিধানে কায়েম করা সংগঠনও প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়মশৃংখলা রক্ষা করা জনগণের কর্তব্য জনগণের রাষ্ট্রানুগত্য স্বেচ্ছামুলুক হওয়া বাঞ্ছনীয় এ জিনিষ জনগণের অন্তর থেকে ফুটে ওঠা উচিত। এজন্যে যেন রাষ্ট্রকে জোর –জবরদস্তি বা শক্তি প্রয়োগ করতে না হয় ত-ই শরীয়তের কাম্য। রাষ্ট্রীয় অনানুগত্যের ফলে রাষ্ট্রীয় জীবনে মহা অশান্তি-দুঃখ নেমে আসে। আনুগত্যহীন এ লোকদেরকে দমন ও বশ করার জন্যে রাষ্ট্রকে অকারণে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়;বিদ্রোহীদের মূলোৎপাটনে রাষ্ট্রকে শক্তি ব্যয় করতে হয়। আর এ কাজে যে শক্তি ক্ষয় হয়, তা জনগণের কোন ইতিবাচক কল্যাণ সাধন করতে পারে না। এ ছাড়া ও অনানুগত্য ও বিদ্রোহের ভাবধারা জনগণের একাংশে দেখা দিলে তা গোটা জনসমাজে বিষ বাষ্পের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সমাজে দেখা দেয় উচ্ছৃঙ্খলতা, অশান্তি ও বিপর্যয়। রাষ্ট্রের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হয়। রাষ্ট্র যদি জনগণের ওপর এ জন্যে বলপ্রয়োগ করে তাহলে জনগণের মনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমুলক ভাবধারা জেগে ওঠে। আর রাষ্ট্রও প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্য পূর্ণ শক্তিতে জেনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে যে রাষ্ট্র জনকল্যাণে নিযুক্ত থাকার উদ্দেশ্য গঠিত তা-ই গনবিরোধী ও দুর্ধর্ষ অত্যাচারী রাষ্ট্রর রূপ পরিগ্রহ করে বসে। এর ফলে রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যই সম্পূর্ণ ব্যাহত হয়, নিষ্ফল, অর্থহীন হয়ে যায় যাবতীয় শক্তিও ক্ষমতা। আর শেষ পর্যন্ত তা ধ্বংস হতে ও বাধ্য হয়।

উপরোক্ত হাদিস থেকে একথাও প্রমাণিত হয় যে, জনগণকে সব ব্যাপারেই রাষ্ট্রের আনুগত্য করতে হবে—জনগণ পসন্দ করুক আর না-ই করুক। এ পর্যায়ে আর ও একটি হাদিস উল্লেখ্য। রাসূল সা: ইরশাদ করেছেনঃ “মুসলিম নাগরিকদের কর্তব্য হলো রাষ্ট্রের আনুগত্য করা –শুনা ও মেনে চলা। সব ব্যাপারে –তা তাদের পসন্দ হোক আর না-ই হোক”

রাষ্ট্র দেশের সব মানুষকে একই সময় খুশী করতে পারবেনা। সকলের মত সমর্থন নিয়ে কাজ করার ও রাষ্ট্রের সব সময় সম্ভবপর হয় না। আইন ও শাসনকার্য সকল ব্যক্তির মর্জীর উপর নির্ভরশীল হলে কোনো রাষ্ট্র কাজ করতে পারে না। রাষ্ট্রের সব কাজে প্রত্যেকটি ব্যক্তি সন্তুষ্ট হবে এমন কথা বলা যায় না। বরং দেখা যায়, একটি কাজে কিছু লোক সন্তুষ্ট হলে ও অপর কিছু লোক তাতে নিশ্চয়ই অসন্তুষ্ট হয়েছে। তাই সবাইকে খুশি ও রাজী করা রাষ্ট্রের কাজ নয়। সঠিকভাবে সমস্ত মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্যই রাষ্ট্রকে কাজ করতে হবে। আইন ও শাসন চালাতে হবে। অতএব রাষ্ট্রীয় কাজ কর্মকে খামখেয়ালীর মানদণ্ডে বিচার করা উচিত হবে না কখনো। আর মনমতো কাজ করাও রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের পূর্ব শর্ত হওয়া উচিত হতে পারে না?জনগণ ইচ্ছা হলে রাষ্ট্রের আনুগত্য করবে, না হলে করবে না এরূপ মনোভাব কোনো রাষ্ট্রই চলতে পারে না। জনগণের ইচ্ছামূলক আনুগত্য রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনের অনুকূলে নয়, বরং তা তার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বস্তুত রাষ্ট্রের অধীন সব মানুষকেই আনুগত্য স্বীকার করতে হবে। অনুগত হয়ে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেয়া যেতে পারে না।

অতএব রাষ্ট্রের আনুগত্য আন্তরিকতা ও ঔকান্তিক নিষ্ঠা সহকারই হতে হবে। তাকে মনে করতে হবে যে, রাষ্ট্রর আনুগত্য করে সে আল্লাহ এবং তার রাসূল সা: এরই আনুগত্য করেছে। কেননা আল্লাই নাগরিকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য তা আল্লাহ ও রাসূল স: এর আনুগত্যের ওপর ভিত্তিশীল, রাষ্ট্রকে এজন্যে আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তাহলে জনগণ যেমন নামাজে ইমামের আনুগত্য করে থাকে, রাষ্ট্রীয় ব্যাপারেও তেমনি তারা মেনে চলবে রাষ্ট্র পরিচালক তথা প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে।

মনে রাখতে হবে, ইসলামে এ রাষ্ট্রানুগত্য শর্তহীন নয়। হাদিসে সে জন্যে একটি মাত্র শর্তেরই উল্লেখ করা হয়েছে। সে শর্ত হলো, রাষ্ট্র এমন কাজ করার আদেশ দিতে পারবে না যা পালন করলে আল্লাহ ও তার রাসূল স: এর নাফরমানী করা হয়। এরূপ কোন কাজের নির্দেশ দিলে জনগণ তা করতে বাধ্য হবে না। কেননা, হারাম কাজে রাষ্ট্রের আনুগত্য কারাও হারাম। হাদিসে এ সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

কোনো নাফরমানীমূলক কাজের আদেশ করা হলে জনগণ তা ও শুনবে না, পালন করবে না।

প্রথমোক্ত আয়াতে তাফসীরে মুফাসসিরগণ একথাই বলেছেন স্পষ্ট ভাষায়। আল্লামা ইবনে কাসীর বলেছেনঃ

(আরবী)

“ রাষ্ট্রীয় দায়িত্বসম্পন্ন লোকদের আনুগত্য করতে হবে সে সব কাজে যা করলে আল্লাহর আনুগত্য হবে। আল্লাহর নাফরমানীর কাজে কোনা আনুগত্য করা চলে না। কেননা আল্লাহর নাফরমাণীমুলক কাজে সৃষ্টির আনুগত্য করা যেতে পারে না। ” মু’মিন মহিলাদের ‘বায়আত’গ্রহনের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা রাসূলে করীম স: কে সম্বোধন করে এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

হে নবী তোমার কাছে মুমিন মহিলারা যখন বায়আত গ্রহণের জন্যে আসবে তখন তুমি বায়আত গ্রহন করবে একথার ওপর যে তারা শরীক করবে না কোন কিছুকে আল্লাহর সাথে তারা চুরি করবে না তারা ব্যভিচার করবে না তারা তাদের সন্তানদের হত্যা করবে না তার মিথ্যা-মিথ্যে ও প্রকাশ্যে নির্লজ্জভাবে কারোর ওপর অকারণে দোষারোপ করবে না। এবং তারা ন্যায়সঙ্গত কাজে –হে নবী ! তোমরা নাফরমানী করবে না। এসব শর্তেতুমি তাদের কাছ থেকে বায়আত গ্রহন করলে তাদের জন্যে অআল্লাহর কাছে মাগফিরাত চাইবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান। সুরা আলমুমতাহিনাঃ ১২

রাসূলে করীম স: নিশ্চয়ই কখনো খারাপ কাজের নির্দেশ দিতেন না আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজ করতে বলতেন না। একথা সুস্পষ্ট কিন্তু তা সত্বেও কুরআনের পূর্বোদ্ধৃত মারূফ বা ন্যায়সঙ্গত কাজের শর্তের কথা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে এক সাথে দুটি কথা প্রমাণিত হয়ঃ আনুগত্য শর্তহীন হতে পারে না এবং আল্লাহ ও রাসূল স: এর নাফরমানীর আনুগত্য করা যেতে পারে না।

আল্লাহর নাফরমানীর আদেশ পালন করা যেতে পারে না তা করা হলে শরীয়তের সীমালঙ্ঘন করা হবে। সে জন্যে আদেশদাতা ও আদেশ পালন কারী উভয়কেই কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। নবী করীম স: জনৈক আনছারীর নেতৃত্বে একটি সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছিলেন। লোকদেরকে সে আনসারীর আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিদেশে থাকাকালে সেনাধ্যক্ষ সাথের লোকদের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাদের কাষ্ঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়। তা দিয়ে অগ্নিকুন্ড জ্বালানো হলে সবাইকে তাতে ঝাঁপ দেয়ার নির্দেশ দেয়। পরে এ ঘটনা রাসূল স: এর কাছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ

(আরবী)

লোকেরা যদি সে অগ্নিকান্ডে ঝাঁপিয়ে পড়তো তাহলে তারা চিরদিন জাহান্নামী হতো। আসলে ন্যায় সংগত কাজেই নেতার আদেশের আনুগত্য করতে হবে নাফরমানী ও অন্যায় কাজে নয়। সহীহ বোখারী ১ম খন্ড ১১৩-১১৪ পৃ.

অন্যায়কারী অনাচারী ও অত্যাচারী রাষ্ট্র শাসকদের আনুগত্য স্বীকার করা এবং তাদের শরীয়ত বিরোধী কাজকর্মে মেনে নেয়া ও সমর্থন করার পরিণাম। অত্যন্ত মারাত্মক। দুনিয়া ও যেমন সে জন্যে দুঃখ ও লাঞ্ছনার সম্মুখীন হতে হয় তেমনি পরকালেও নিমজ্জিত হতে হবে কঠিন আযাবে। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদে কিয়ামতের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে।

(আরবী)

লোকরা বলবে হে আমাদের রব আমরা দুনিয়া তোমাদের নেতৃবৃন্দের ও বড়দের আনুগত্য করেছি। ফলে তারা আমাদের গোমরাহ করেছে। অতএব হে রব তুমি আজ আমাদের দ্বিগুণ আযাব দাও এবং তোমর রহমত থেকে তাদের বহুদূর সরিয়ে দাও। সুরা আল আহযাবঃ৬৭-৬৮

অপর আয়াতে বলা হয়েছে

(আরবী)

আল্লাহ যখন শাস্তি দিবেন তখন এরূপ অবস্থা দেখা দিবে যে দুনিয়াতে যে সব নেতা ও প্রধান ব্যক্তির অনুসরণ করা হতো তারা নিজ নিজ অনুসারীদের সাথে সকল সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা ঘোষণা করবে। কিন্তু তা সত্বেও তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে এবং তাদের সকল উপায়-উপাদানের সম্পর্ক ও কার্যকারণ ধারা ছিন্ন হয়ে যাবে। আর দুনিয়ায় যারা তাদের অনুসরণ করতো তারা বলবে হায় আমাদের যদি আবার সুযোগ দেয়া হতো তাহলে আজ এরা যেমন আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিজেদের দায়িত্বহীন থাকার কথা প্রকাশ করেছে আমরা ও তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেখিয়ে দিতাম। আল্লাহ অবশ্যই তাদের সকল কাজ-যাকিছু তারা দুনিয়াতে করেছে—তাদের সামনে এমনভাবে উপস্থিত করবেন যে তারা শুধু লজ্জিত হবে ও দুঃখ করবে। কিন্তু জাহান্নামের গর্ত থেকে বের হবার কোন পথই তারা খুঁজে পাবে না। সুরা আল বাকারাঃ১৬৬-১৬৭

অর্থাৎ শরীয়তে আনুগত্যের সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। মুসলিম উম্মত সে অনুগত্যের সীমাকে কখনোই এবং কিছুতেই লঙ্ঘন করতে পারে না করলে সে জন্যে আল্লাহর কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন