hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা

লেখকঃ ড. আবদুল করিম জায়দান

২২
পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি
কিন্তু প্রশ্ন হলো, পরামর্শ গ্রহণের কাজ কিভাবে সম্পন্ন হবে?… আর জাতির সব লোকের সাথেই পরামর্শ করা কি রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব, না তাদের মাঝ থেকে বিশেষ এক শ্রেণীর সাথে পরামর্শ করা হবে কিংবা কতিপয় ব্যক্তির সাথে। এসব প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, নবী করীম স. সমগ্র জনগণের সাথে পরামর্শ করতেন এমন সব ব্যাপারে যা সরাসরিভাবে সমগ্র জনতার সাথে সংশ্লিষ্ট, যা সকলের সামগ্রিক ব্যাপার। যেমন উহুদ যুদ্ধে মুশরিকদের সাথে সম্মুখ সমরে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে মদীনা থেকে বাইরে যাওয়ার ব্যাপার নিয়ে তিনি মদীনায় অবস্থিত সমস্ত মুসলিম জনগণের সাথে পরামর্শ করেছেন। তিনি সকলকে লক্ষ করে বললেনঃ তোমরা সবাই আমাকে পরামর্শ দাও।

হাওয়াজিনের যুদ্ধে লব্ধ গণিমতের মাল কি করা হবে, তা নিয়েও তিনি মুসলমানদের সাথে পরামর্শ করেছেন। এ যুদ্ধে যত লোক শরীক হয়েছিলো, গনিমতের ব্যাপারে তাদের সকলেরই মত তিনি জানতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে ইতিহাসে বলা হয়েছে, গনিমতের মালের ব্যাপারে নবী করীম স. যা কিছু করণীয় করেছিলেন, তা সবারই সামনে পেশ করেছিলেন। তখন উপস্থিত সবাই এক বাক্যে বলে উঠেছিলঃ হে রসূল স.! আপনি যা ফায়সালা করেছেন তাতেই আমরা রাজি আছি এবং তা-ই মেনে নিলাম।

তখন নবী করীম স. নেতৃস্থানীয় সাহাবাদের পাঠালেন অনুপস্থিত অন্যান্য মুসলমানদের মত জানার জন্যে। হযরত যায়েদ ইবনে সাবেত আনসারদের কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তারাও সবাই মেনে নিলো। একজন লোকও তাতে কোনো দ্বিমত প্রকাশ করলো না এবং এসব কথা নবী করীম স.-কে জানিয়ে দেয়া হলো। এভাবে পরামর্শ গ্রহণের এ বিরাট ব্যাপারটি সম্পন্ন হলো। (জনগণ নির্বাচিত কিংবা জনগণের আস্থাভাজন নেতৃবৃন্দের সাথে জাতীয় জটিল বিষয়াদির পরামর্শ গ্রহণের নীতিও রসূলে করীম স. কর্তৃক অনুসৃত হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে তার অসংখ্য দৃষ্টান্ত চির সমুজ্জ্বল। এ পর্যায়ে একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যাচ্ছে।

জটিল জাতীয় ব্যাপারসমুহে সমস্ত মুসলমানই ছিলো পরামর্শদাতা। সমস্ত মুসলিম জনগণের কাছেই তিনি পরামর্শ চেয়েছেন। কেননা এ ব্যাপারগুলোই ছিলো সমস্ত জনগণের সাথে সম্পর্কিত।) (ঐ ২৯ পৃ.)।

এসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, নবী করীম স.-এর সময়ে যুদ্ধ ও গনিমতের মাল বণ্টন ইত্যাদি হাওয়াজিন গোত্রের কাছ থেকে পাওয়া ধন-সম্পদ ও যুদ্ধ বন্দীদের ব্যাপারে কি নীতি অবলম্বিত হবে, নবী করীম স. সে বিষয়টি সম্পর্কে স্বীয় প্রস্তাব এক বিরাট জনসমাবেশে জনতার সামনে পেশ করলেন এবং তাদের মতামত জানতে চাইলেন। জবাবে জনতা সোচ্চার হয়ে উঠলো কিন্তু অসংখ্য লোকের একটি সমাবেশে প্রত্যেকটি মাগরিবের মত সুস্পষ্টরূপে শুনতে পাওয়া ও অধিক সংখ্যক লোক কি মত পোষণ করে তা হিসাব ও যাচাই করা এবং তদ্দৃষ্টে কোনো চূড়ান্ত ফায়সালা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব ব্যাপার ছিলো। তাই নবী করীম স. সমবেত জনমণ্ডলীকে সম্বোধন করে বললেনঃ

(আরবী)

তোমাদের কে স্বপক্ষে মত দিয়েছে, আর কে বিপক্ষে তা আমি জানতে পারলাম না। কাজেই তোমরা সবাই ফিরে যাও। পরে তোমাদের নির্বাচিত বা মনোনীত ব্যক্তিরা এসে যেন তোমাদের মত আমাকে জানিয়ে দেয়। এর পর লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের নেতৃস্থানীয় লোকেরা তাদের মতামত জেনে নিলো। তারা এসে রসূলে করীম স.-কে জানিয়ে গেল যে, লোকেরা আপনার প্রস্তাবকে ভালো মনে করেছে ও সমর্থন করেছে।

রসূল স.-এর জীবনের এমন অনেক ঘটনারও উল্লেখ পাওয়া যায়, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিনি সবারই সাথে নয় বিশেষ সাহাবীর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেছেন। বদর যুদ্ধে যেসব কাফের বন্দী হয়েছিল তাদের সম্পর্কে কি নীতি গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে সব সাহাবীদের সাথে পরামর্শ না করে তিনি বিশেষ ও বিশিষ্ট সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করেছেন। মদীনার এক-তৃতীয়াংশ ফসলের ভিত্তিতে গাতফান গোত্রের সাথে সন্ধি করার ব্যাপারে নবী করীম স. কেবলমাত্র গোত্র-সরদার হযরত সায়াদ ইবনে মুয়ায ও সায়াদ ইবনে ওবাদার সাথেই পরামর্শ করেছিলেন। তখন তাঁরা দুজন বলেছিলেনঃ

এ ব্যাপারটি সম্পর্কে আপনি যদি আসমান থেকে নির্দেশ পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি তাই করুন। এ বিষয়ে যদি কোনো নির্দেশ আপনাকে না দেয়া হয়ে থাকে, আর এতে আপনি স্বাধীন হয়ে থাকেন, তাহলেও তা শিরোধার্য। কিন্তু এ যদি শুধু আমাদের মতের ব্যাপার হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের কাছে তাদের জন্যে তরবারি ছাড়া আর কিছু নেই। তখন নবী করীম স. তাঁদের দেয়া পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং গাতফান কবীলার সাথে সন্ধি করার ইচ্ছা ত্যাগ করেন।-আমতাউল আসমা, ২৬৩ পৃ.।

বস্তুত এসব ঘটনা থেকেই রসূলে করীম স. -এর সুন্নত-আদর্শ কর্মনীতি জানা যায়। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলে করীম স.-এর পরামর্শদাতা কখনো হতো সর্বসাধারণ মুসলমান, কখনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত মুসলমানরা, কখনো বিশিষ্ট মুসলমানরা মাত্র। এসবের ভিত্তিতে আমরা অনায়াসে বলতে পারি যে, রাষ্ট্রপ্রধান বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট, বিভিন্ন মানুষের সাথে পরামর্শ করবে। যদি বিষয়টি হয় সর্বসাধারণ মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট, তাহলে সে বিষয়ে সেই সর্বসাধারণ মানুষের সাথেই পরামর্শ করতে হবে। আধুনিক পরিভাষায় তাকে আমরা বলি গণভোট বা (Referendum)। আর তা যদি সম্ভবপর না-ই হয় তাহলে তাদের আস্থাভাজন আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ -এর সাথে পরামর্শ করতে হবে। আর বিষয়টি যদি এমন হয় যা ভালো ও মন্দ দিক-ই শুধু জানতে হবে, তাহলে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করতে হবে। ইমাম কুরতুবী এ দিকে ইংগিত করেই বলেছেনঃ

রাষ্ট্রকর্তারা যেসব বিষয়ে জানে না, সেসব বিষয়ে-ই তাদের পরামর্শ করতে হবে। দীন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে দীনের আলেমদের সাথে, যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে। জনকল্যাণ বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে সাধারণ মানুষের সাথে। আর শহর-নগর নির্মাণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে মন্ত্রী, সেক্রেটারী ও অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে। -তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৪৯-২৫০ পৃষ্ঠা।

আল্লামা কুরতুবী আরো লিখেছেন, শরীয়তী হুকুম-আহকামের ব্যাপারে যাদের সাথে পরামর্শ করতে হবে তাদের হতে হবে আলেম ও দীনদার। তার বৈষয়িক ব্যাপারসূহে যাদের পরামর্শ চাওয়া যেতে পারে তাদের হতে হবে বুদ্ধিমান ও বহুদর্শী দীর্ঘকালীন বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক।

-তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৪৯-২৫০ পৃষ্ঠা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন