মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তারা বলেন, ইসলামী শরী‘য়াহর বাস্তবায়ন অমুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে, মানুষের অন্তরে সাম্প্রদায়িক হিংসা বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাবে, যা জাতিকে নানা দলে বিচ্ছিন্ন করবে। জাতির জন্য কল্যাণকর ও এ ব্যাধি থেকে বাঁচার উপায় হলো মানব রচিত সংবিধান অনুযায়ী সমাজ পরিচালনা করা, যেখানে আক্বিদা বা দ্বীনের কোনো সম্পর্ক নেই। যেখানে মানুষ নানা মত পোষণ করবে। [শুবহাত হাওলাল ইসলাম, লেখক মুহাম্মদ কুতুব, পৃষ্ঠা ১৭৬।]
তারা ইসলামী শরী‘য়াহর ব্যাপারে অপবাদ দেয় যে, এটা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করে না। তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে, তাদেরকে মানুষ হিসেবে সম্মানজনক ভাবে বেঁচে থাকার মানবাধিকার চর্চা করতে দেয় না। কিন্তু তারা একথা নিশ্চিতভাবেই জানে যে, এটা শুধুই মিথ্যা অপবাদ। ইতিহাস তাদের এ অপবাদ মিথ্যা সাব্যস্ত করে, যখন থেকে মুসলমানরা বিভিন্ন রাষ্ট্র বিজয় করেছে তাতে সংখ্যালঘু ছিল। বরং তাদের মধ্যে যারা ন্যায়নীতিবান, গোঁড়ামির কারণে ইসলামকে অপবাদ দেয় না তারাও এ সব অপবাদ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেন।
আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াত তাদের এ অপবাদ মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“দ্বীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হিদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে”। [সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৫৬]
যেখানে অন্যান্য ধর্মের প্রধানরা তাদের অনুসারীদেরকে মানুষকে তাদের ধর্মে দীক্ষিত করতে জোরালো নির্দেশ দেয়, সেখানে আমরা দেখি ইসলাম কাউকে এ ধর্মে দীক্ষিত হতে জবরদস্তি করে না। বরং ইসলাম তার ছায়াতলে অন্যান্য মানুষকে তাদের আক্বিদা নিয়ে স্বাধীনভাবে থাকতে আহ্বান করে। [উজুবু তাতবিক্ক আশ-শারী‘য়াহ আল-ইসলামীয়াহ, পৃষ্ঠা ২৩০।]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেছেন,
“আর যদি তোমার রব চাইতেন, তবে যমীনের সকলেই ঈমান আনত। তবে কি তুমি মানুষকে বাধ্য করবে, যাতে তারা মুমিন হয় ?” [সূরা ইউনুস: ৯৯]
আল্লাহর কোনো নবী রাসূল মানুষকে জোর করে ঈমান আনতে বলেননি, এটা করা তাদের কাজও না। রিসালাতের কাজ এটা নয় যে, তারা জবরদস্তি করে মানুষকে ঈমানের পথে আনবে। ইসলামে জবরদস্তি করা নিষিদ্ধ, কেননা এতে কোনো ফল হয় না। ইসলামে তাদের স্বাধীনতার অন্যতম নিদর্শন হলো আহলে কিতাব ইয়াহুদি ও নাসারাদের সাথে সংলাপ করতে যে শিষ্টাচারসমূহ প্রবর্তন করেছে তাই এক্ষেত্রে নমুনা হিসেবে কাজ করে, আর এর ভিত্তি হলো আকল বা বিবেক এবং তাদেরকে যুক্তির মাধ্যমে পরিতুষ্ট করা, তবে তা অবশ্যই উত্তম পন্থায় হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবদের সাথে বিতর্ক করো না। তবে তাদের মধ্যে ওরা ছাড়া, যারা যুলুম করেছে। আর তোমরা বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে এবং তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি এবং আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ তো একই। আর আমরা তাঁরই সমীপে আত্মসমর্পণকারী’”। [সূরা আল্-আনকাবূত: ৪৬]
যদিও কাফির আত্মীয়ের সাথে মুসলমানের সম্পর্ক ছিন্ন করা ও তাদেরকে ভালবাসতে নিষেধ করা হয়েছে, তথাপি আল-কুরআন তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস করতে নির্দেশ দিয়েছে, যদিও তারা মুসলমানদের ধর্ম অস্বীকার করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“আর যদি তারা তোমাকে আমার সাথে শিরক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। আর অনুসরণ কর তার পথ, যে আমার অভিমুখী হয়। তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে”। [সূরা লুকমান: ১৬]
এটা হলো ব্যক্তি পর্যায়ে, আর সমষ্টিগতভাবে ইসলাম তাদের সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের প্রতি ইহসান করতে নিষেধ করে নি। তবে শর্ত হলো তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না এবং মুসলিম শাসকের ছত্রছায়ায় থাকতে স্বীকৃতি জানাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদেরকে ভালবাসেন”। [সূরা আল-মুমতাহিনাহ: ৮]
যতদিন আহলে কিতাবরা ইসলামী শাসনের অধীনে ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাথে উত্তম আচরণ করেছেন, তাদেরকে ধর্মীয় ও মানবিক সব ধরনের অধিকার দিয়েছেন। তাদের সাথে কৃত সব অঙ্গিকার ও চুক্তি পূর্ণ করেছেন। তাদের কল্যাণ কামনা করেছেন ও তাদেরকে ভাল উপদেশ দিয়েছেন। রাসূলের সাহাবী, তাবেঈ‘, তাবে তাবেঈ‘ ও অন্যান্য সব মুসলিম বিজয়ী শাসকেরা বিজিত অঞ্চলের অমুসলিমদের সাথে ওয়াদা ও চুক্তি পূরণ এবং তাদের সাথে নম্র ও উদার আচরণ করার ব্যাপারে খুবই সতর্ক ছিলেন। যে ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান রাখে সে জানে যে, যে সব মুসলমান তাদের সাথে বসবাস করেছে তারা কিভাবে তাদের অধিকার প্রদান করেছে। [পূর্বসূত্র, পৃষ্ঠা: ২৩৪।]
ইমাম আবু ইউসুফ ইমাম মাকহুল আশ-শামী থেকে বর্ণনা করেন, আবু ‘উবাইদা ইবন আল-জাররা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সিরিয়ার জিম্মিদের সাথে চুক্তি করেছিলেন যে, তারা যখন সেখানে প্রবেশ করবে তখন তাদের গির্জা ও বেচাকেনার জায়গা ছেড়ে দিবেন। তারা মুসলমানদের কাছে বছরে একটি দিন চাইলেন যে দিন তারা ক্রুশ পড়ে বিনা চিহ্নে বের হবে, এটা তাদের ঈদের দিন। তিনি তাদের এ অনুরোধে সাড়া দেন এবং মুসলমানগণ তাদেরকৃত এ শর্ত পূরণ করেন। [আল-খিরাজ, লেখক আবু ইউসুফ, পৃষ্ঠা: ১৩৮।]
অমুসলিমদের অন্যান্য অধিকার হলো:
তাদের সাথে কোনো চুক্তি করলে তা পূরণ করা। তাদের সঙ্গে কৃত অঙ্গিকার ও চুক্তি পূরণে কার্পণ্য না করা। আবু দাউদ রহ. তাঁর সনদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
قد روى أبو داود بسنده عن رسول الله أنه قال : «أَلَا مَنْ ظَلَمَ مُعَاهَدًا أَوِ انْتَقَصَهُ أَوْ كَلَّفَهُ فَوْقَ طَاقَتِهِ، أَوْ أَخَذَ مِنْهُ شَيْئًا بِغَيْرِ طِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ، فَأَنَا حَجِيجُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
“যে ব্যক্তি কোন (অমুসলিম) চুক্তিবদ্ধ কারো উপর যুলুম করবে বা চুক্তি ভঙ্গ করবে, বা তাঁর সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দিবে, বা তার সন্তুষ্টি ছাড়া বেশী নিবে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবো”। [সুনান আবু দাউদ: হাদীস নং ৩০৫২।]
“আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জিম্মায় থাকা কোন (অমুসলিম) চুক্তিবদ্ধ কাউকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। জান্নাতের ঘ্রাণ সত্তর বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়”। [সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৬৮৭।]
“বকর ইবন ওয়াইল গোত্রের এক লোক ‘উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর যুগে এক জিম্মিকে হিরা নামক স্থানে হত্যা করলে তিনি তাকে নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেন। তারা তাকে (হত্যাকারীকে) তাদের হাতে তুলে দিলে তারা (নিহতের অভিভাবকরা) তাকে হত্যা করে ফেলে”। [উজুবু তাতবিক আশ-শারী‘য়াহ আল-ইসলামীয়াহ, পৃষ্ঠা: ২৪৩।]
মুসলমানরা বিজয়ী এলাকায় অমুসলিমদের সাথে এ চমৎকার আচরণ করায় কিছু ন্যায়পরায়ণ খৃস্টান চিন্তাবিদরা এ বাস্তবতা অকপটে স্বীকার করেছেন। তারা মুসলমানদের এ চমৎকার উদার আচরণকে জোরালো ভাবে স্বীকার করেছেন।
ক্যান্ট হ্যানরী ক্যাস্টো “আল-ইসলাম খাওয়াতের ওয়া সাওয়ানেহ” বইয়ে বলেছেন, “আমি ইসলামী দেশের খৃস্টানদের ইতিহাস পড়েছি, এতে আমি এক চমৎকার বাস্তবতা দেখতে পেয়েছি, তা হলো: খৃস্টানদের সাথে মুসলমানরা কোমল আচরণ করতেন, তাদের সাথে কঠোরতা পরিহার করতেন, সদাচরণ ও নম্র ব্যবহার করত”।
ইসলামের ন্যায়পরায়ণতা ও সব মানুষের সাথে ঐক্যের বিধান মতে মুসলমানরা অমুসলিমদের সাথে আচরণ করত। এ সুন্নতে মুহাম্মদী আজও বিদ্যমান আছে। এ আচরণ আল্লাহর পথে দাওয়াতের ভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। দ্বীনের পথের দা‘য়ীরা এ আচরণ ভুলে যাওয়া উচিত না। তাদের উচিত মুসলিম অমুসলিম সবার সাথে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করা। তবে প্রকৃত বন্ধুত্বতো শুধু আল্লাহ, তাঁর দ্বীন, রাসূল ও মু’মিনদের সাথেই হবে।
যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না তাদের সাথে ইসলাম সদাচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে, আহলে কিতাবদের সাথে উদার আচরণ করতে আহ্বান করেছে, এ সবের পিছনে কারণ হলো তাদের মন জয় করা ও ইসলামের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ানো। [পূর্বসূত্র, পৃষ্ঠা নং ২৪৮-২৫১।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/371/27
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।