hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সর্বযুগের বিশ্বস্ত নবী

লেখকঃ কামাল উদ্দিন মোল্লা

২০
২। মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা
ইসলাম যে মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছে পৃথিবীর অন্য কোন ব্যবস্থা এ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে নাই। পশ্চিমা গনতন্ত্র ব্যাপকভাবে দাবী করে যে সেই প্রথম মানব অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দাবী দুই দিক থেকে বেজাল দাবী।

১-ইতিহাস: পশ্চিমা গণতন্ত্রের চেয়ে অন্তত ১০০০ এক হাজার বছর এগিয়ে আছে ইসলাম, মানব অধিকার প্রতিষ্ঠায়। যখন ইউরোপ মধ্যযুগীয় অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল এবং ভূস্বামীদের পদাঘাতে দূর্বল ও আসাড় হয়ে পড়েছিল। ভূস্বামীর একক শাসনাধীনে সাধারণের জীবন যাপন করতে হতো দাস হিসাবে কোন মর্যাদা বা সম্মান তাদের ছিলনা। যখন মনে চাইতো তাদের হত্যা করা হতো, থাকতে হতো তাদের অনাহারে অর্ধাহারে, খাটানো হতো বেকার। এহেনে অবস্থায় ইসলামের সুভাগমনে মানুষের সম্মান, সম্পদ ও জীবনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হলো। প্রতিষ্ঠা হলো মানবাধিকার।

২- বাস্তবতা : ইসলাম এসে সমুপযুগী ও বাস্তবভিত্তিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করল। আর ইউরোপ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করল, কাগজে কলমে নথি-পত্রে আন্তর্জাতিক সনদ ও চুক্তি পত্রে। বাস্তব ক্ষেত্রে এর কোন প্রয়োগ নাই। উপনিবেশবাদীরা বিভিন্ন জাতি- গোষ্ঠীর ইজ্জত আব্রু যেখানে কেড়ে নিচ্ছে যেখানে মানবাধিকার কান্না ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা। জাতিগত বিভক্তি সৃষ্টিতে মানবাধিকার কোথায়? যখন কালো মানুষ গুলো শুধু কালো হওয়ার কারণে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়? ফিলিস্তিনে মানবাধিকার কোথায়? আপন ভূমি থেকে যাদের জোর করে নির্ভাসন করা হয়। জোর করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এককভাবে তাদের ভূমি দখলের জন্য। মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলিম নিয়ন্ত্রিত কসাইখানাতে মানবাধিকার কোথায়? যেগুলো মুসলমান হত্যার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে? মানবাধিকার শুধু কাগজে-কলমে, প্রচার মাধ্যমে, বাস্তবে তার কোন ভিত্তি নাই। পশ্চিমা বিশ্বে গণতন্ত্র পন্থী ও তার অনুসারীদের বাহ্যিক আচরণ লক্ষ্যনীয়। তারা ব্যক্তির কাজ, কথা ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার কথা বলে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের কোন হস্তক্ষেপ বৈধ মনে করে না, যদি কিনা সে রাষ্ট্রীয় আইনের বিরোধীতা না করে। এতে কতিপয় নিরাপত্তার বিষয় বলা হয়। বিনা অপরাধে আটক করা যাবেনা। ব্যবস্থা নিতে হলে আইনের আওতায় নিতে হবে। ফায়সালা হবে সংবিধান মত। ব্যক্তির উপর জোর ঘাটানো যাবেনা। এ ব্যাপক স্বাধীনতায় অবকাশ থাকে অশান্তির, অরাজকতার, অবিশ্বাসী- নাস্তিকতার, সকল প্রকার চারিত্রিক অনিষ্টতার। অন্য দিকে তারাই এ স্বাধীনতাকে ব্যাপকভাবে খর্ব করে দেয় পুজিবাদি কোন স্বার্থ সামনে আসলে। নিকটবর্তী অথবা দূরবর্তী বিপদের আশংকায়। অতএব, পুজিবাদ ও গণতন্ত্র কোথাও মানুষকে যথাযথ মর্যাদার স্থানে বসানো হয় না। কমিউনিজম যাকে প্রকৃত গণতন্ত্র মনে করা হতো। তাতে মানুষের কোন মূল্যই নেই। সেখানে রাষ্ট্র অথবা সরকারে থাকা কমিউনিষ্ট পার্টির সমালোচনা করা যায় না ব্যক্তির কোন নিরাপত্তা নেই। এসব কিছু তাদের ধারণা মত ব্যক্তিকে রক্ষা করে ভূস্বামী ও পুজিবাদীদের থেকে। বস্তুত সাম্রাজ্যবাদ ও পুজিবাদ মানব মর্যাদা হানিকর। তবে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ, একনায়কতন্ত্র এটা শোষণের ক্ষেত্রে আরো ভয়াবহ।

পক্ষান্তরে ইসলাম প্রথম থেকেই মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সচেতন। ইসলাম মানুষকে সকল প্রকার বাতিল প্রভুর দাসত্ব থেকেমুক্ত করে। একমাত্র মাবুদের ইবাদত ও পবিত্রতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। অতএব কোন দাসত্ব নয় শাসন কর্তার, কর্তৃত্বের, সম্পদের, প্রভাব- খ্যাতির, বর্ণ বা শ্রেণীর অথবা যে সকল উপায় উপকরণে মানুষের দাসত্ব হতে পারে তার কোনটিই নয়।দাসত্ব শুধু একমাত্র আল্লাহর।

এ পর্যায় ইসলাম বিধান দাতার অধিকার মানুষ থেকে বের করে তার প্রকৃত মালিক আল্লাহর নিকট সমর্পন করে। কারণ মানুষ যদি বিধান তৈয়ার করে সেখানে মানুষের মধ্যে শ্রেণীতে বিভক্তির প্রয়োজন দেখা দেবে। কেউ হবে সাদাহ (বিধান দাতা) আবার কেউ হবে আবিদ (শাসিত) । আর যদি আল্লাহ হোন বিধান দাতা তাহলে সবাই আল্লাহর বান্দা এবং সবাই তারই বন্দেগী করেন এতে শাসক শাসিত ধনী-গরীব থাকবে সমান। কোন শ্রেণী বিভক্তি থাকবে না।

অতঃপর ইসলাম প্রবর্তন করে নিরাপত্তার তা শুধু জীবন ও সম্পদে নয় মানুষের ইজ্জতেরও নিরাপত্তা দেয় ইসলাম। এবং তা শুধু নৈতিক পর্যায় নয় বরং মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার ক্ষেত্রেও। তাই এখানে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে না; অপরকে কটাক্ষ করে, চোখের ইশারাতে উপহাস করে, পরনিন্দা করে অথবা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে।

ইসলাম তা বাস্তবে কার্যকরও করে। আমর বিন আস (রাঃ) এর ছেলে যখন কিবতী সমপ্রদায়ের এক যুবককে দৌড়ে তার আগে চলে যাওয়ার কারণে মারধর করল এবং বলল আমি নেতার ছেলে, যুবকের পিতা ওমর ইবনে খাত্তাবের নিকট বিচার চাইলে ওমর রা. তার হাতে লাঠি দিয়ে বললেন: নেতার ছেলেকে তোমার হাতে প্রহার কর। অতঃপর আমর বিন আসকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে আমর! কবে থেকে মানুষকে দাস বানাতে শিখলে? অথচ তাদের মা তাদেরকে স্বাধীন হিসাবে প্রসব করেছে ?

অধিকার ও দায়বদ্ধতা ছাড়াও ইসলামে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দিক রয়েছে।

এখানে আল্লাহর সন্তান (নাউজুবিল্লাহ) যীশু খৃষ্টের আগমন পূর্ব পর্যন্ত অপরাধ মানুষের গলায় ঝুলে থাকার মত কোন বিধান বলতে কিছু নেই। তিনি এসে শুলীতে নিজের জীবন উৎসর্গের মাধ্যমে মানুষকে অপরাধ থেকে নিস্কৃতি দিবেন এমনও নয়।

বরং আদম আঃ তাওবা ও ক্ষমা তার প্রভুর কাছ থেকে সরাসরি লাভ করেন কোন মাধ্যম ব্যতিরেকে।

فَتَلَقَّى آَدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة :৩৭﴾

অনন্তর আদম স্বীয় প্রতিপালক হতে কতিপয় বাক্য শিক্ষা করলো আল্লাহ তখন তার প্রতি কৃপা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল করুনাময়।

২। এখানে কোন পৌরহিত্যবাদ নেই, যারা মানুষ ও আল্লাহর মধ্যে মধ্যস্থতা করবে, বরং এতে মানুষ সরাসরি তার প্রভুর কাছে যোগাযোগ করতে পারে ইবাদত, দুআ ও ক্ষমা প্রার্থণার মাধ্যমে।

৩। মানুষের কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর নির্ধারিত নিয়তি দুনিয়াতে চলতে থাকে।

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَى قَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُوا مَا بِأَنْفُسِهِمْ ( الأنفال : ৫৩(

কারণ এই যে, আল্লাহ কোন জাতির উপর নিয়ামত দান করে সেই নিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সেই জাতি নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে।

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ ﴿ألروم :৪১﴾

মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে তাদের কে কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান যাতে তারা ফিরে আসে।

অতএব মানুষেই তার গন্তব্য নির্ধারণ করবে কৃত আমলের মাধ্যমে

فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ ﴿৭﴾ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ ﴿৮﴾ الزلزلة : ৭- ৮

কেউ অনুপরিমাণ সৎকর্ম করলে তাও দেখবে এবং কেউ অনুপরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখবে।

يا عبادي إنما هي أعمالكم أحصيها لكم ثم أوفيكم إياها فمن وجد خيرا فليحمد الله ومن وجد شرا ( رواه مسلم (

হে! আমার বান্দাগণ এ হলো তোমাদের কর্ম তা তোমাদেরকে যথাযথভাবে দিব। যে ভালো দেখবে সে যেন আল্লাহর প্রসংশা করে যে মন্দ দেখবে সে যেন নিজেকেই ভৎসনা করে।

৪। ইসলামি দর্শনে মানুষেই সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ, বস্তু অথবা প্রকৃতি নয়। যেমনটি ইতিহাসের বস্তু তাত্বিক ব্যাখ্যায় বলা হয়। অতএব বিশ্ব জগত পুরোটাই আল্লাহর পক্ষ হতে মানবাধীন করা হয়েছে।

وَسَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ( الجاثية : ১৩(

তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করে দিয়েছে আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবীর সব কিছুই নিজ অনুগ্রহে।

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آَدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا ﴿الإسراء : ৭০﴾

আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি তাদের উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং যাদের আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের অনেকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।

৫) ইসলাম প্রচেষ্টা চালায় মানব মর্যাদা বিকাশের,মানুষের মনুষত্বগুলোর উন্নতির মাধ্যমে। তাই তাকে প্রতিপালন করে উচ্চতর মূল্যবোধের ভিত্তিতে নিকৃষ্ট অহংকারের উর্ধ্বে উঠতে, উত্তীর্ণ হতে অপবিত্র কু-প্রবৃত্তি হতে ও জাগতিক ভোগের সামগ্রী হতে। এতে করে সে প্রকৃত মর্যাদাবান হবে, মুক্ত হবে পশুত্বের বন্ধন হতে। যোগ্য হবে তার উপর ফেরেস্তা অবতীর্ণ হওয়ার।

إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا ( فصلت : ৩০(

নিশ্চয় যারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্‌। অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেস্তা অবতীর্ণ হয় এবং বলে তোমরা ভয় করোনা। চিন্তা করোনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন