hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সূরা আত-তাওবার তাফসীর

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

২১
মুশরিকদের জন্য দো’আ করা নিষিদ্ধ:
ইমাম আহমাদ রহ. সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব থেকে তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন: আবু তালেবের মৃত্যুর সময় যখন ঘনিয়ে আসল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট আগমন করেন। এ সময় তার (আবু তালেবের) নিকট আবু জাহাল ও আব্দুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়া ছিল। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু তালেবকে বললেন: হে চাচা! বলুন: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো নেই প্রকৃত উপাস্য)। এর দ্বারা আমি আল্লাহর নিকট আপনার সম্পর্কে ওজুহাত পেশ করব। আবু জাহাল ও আব্দুল্লাহ ইবনে আবু উমাইয়া তখন বলল: হে আবু তালেব! তুমি কি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্মের ব্যাপারে বিরাগ হচ্ছ? (অর্থাৎ তুমি তার ধর্ম ত্যাগ করতে চাচ্ছ।) সে (আবু তালেব) বলল: ‘আমি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্মের উপর রইলাম’। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন: ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাকে নিষেধ করা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার জন্য (আমার রবের নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করেই যাব’। ফলে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন: مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَن يَسۡتَغۡفِرُواْ لِلۡمُشۡرِكِينَ وَلَوۡ كَانُوٓاْ أُوْلِي قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ “কোনো নবী ও মু’মিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও তারা আত্মীয় হয়। তাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয় তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।” তিনি (রাবী) বলেন: এ আয়াতও অবতীর্ণ হয়: ﴿إِنَّكَ لَا تَهۡدِي مَنۡ أَحۡبَبۡتَ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَهۡدِي مَن يَشَآءُۚ ٥٦﴾ [ القصص : ٥٦ ] “আপনি যাকে পছন্দ করেন তাকে সঠিক পথ দেখাতে পারবেন না। তবে আল্লাহ তা’আলা যাকে চান তাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।” [সূরা আল-ক্বাসাস: ৫৬]

ইবনু জারীর সুলাইমান ইবনু বুরাইদা থেকে, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় আগমন করেন (পথিমধ্যে) তিনি একটি কবরের নিকট যান এবং এর পাশে বসে কিছু বলতে থাকেন। অতঃপর অশ্রুসজল নয়নে দাঁড়ান। আমরা বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যা করলেন আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। ফলে তিনি বলেন: আমি আমার রবের নিকট আমার মায়ের কবর যিয়ারতের ব্যাপারে অনুমতি চেয়েছিলাম ফলে তিনি আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। আর আমি তাঁর নিকট আমার মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চেয়েছিলাম; কিন্তু তিনি আমাকে অনুমতি দেন নি। রাবী বলেন: সেদিনের চেয়ে বেশি ক্রন্দন করতে তাকে আর কখনই দেখি নি।

আওফী ইবনে আব্বাস থেকে এ আয়াত সম্পর্কে বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অনুমতি চেয়েছেন; কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে সে ব্যাপারে নিষেধ করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন: ইব্রাহীম খলীল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর পিতার জন্য (আল্লাহর নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন: وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لأَبِيهِ -আলী ইবনে আবু তলহা ইবনে আব্বাস থেকে এ আয়াত সম্পর্কে বলেন: তারা তাদের পৌত্তলিক (আত্মীয়-স্বজনদের) জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়া পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনা করত। অবশেষে যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন তারা তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা থেকে বিরত থাকে; কিন্তু তখনও জীবিতদের জন্য তাদের মৃত্যুবরণ না করা পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আসে নি। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন।

আল্লাহর বাণী: وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لأَبِيهِ ইবনে আব্বাস বলেন: ইব্রাহীম (আলাইহি সালাম) তার পিতার জন্য তার মৃত্যু পর্যন্ত দো’আ করতে থাকেন। অতঃপর যখন তার নিকট এটা প্রকাশ পায় যে সে (তাঁর পিতা) আল্লাহর দুশমন তখন তিনি তা থেকে বিরত হন। অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে: যখন সে (ইব্রাহীমের পিতা) মারা যায়, তখন ইব্রাহীম (আলাইহি সালাম)-এর নিকট প্রকাশিত হয় যে, সে (ইব্রাহীমের পিতা) আল্লাহর দুশমন। এরূপই বর্ণনা করেছেন মুজাহিদ, দাহ্হাক, কাতাদাহ প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। উবাইদ ইবনে ‘উমাইর এবং সা‘ঈদ ইবনে জুবাইর বলেন: তিনি (ইব্রাহীম আলাইহি সালাম) কিয়ামত দিবসে তার পিতা থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। কিন্তু তাঁর পিতার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হবে আর তিনি তাঁর পিতার চেহারায় কালিমা দেখতে পাবেন। অতঃপর সে (তাঁর পিতা) বলবে: হে ইব্রাহীম আমি তোমার বিরুদ্ধাচরণ করেছি আজ আমি তোমার কোনো বিরুদ্ধাচরণ করব না। ফলে তিনি (ইব্রাহীম) বলবেন: হে আমার রব! আপনি কি আমার সাথে অঙ্গিকার করেন নি যে, আপনি পুনরুত্থান দিবসে আমাকে বেইজ্জত করবেন না। আমার পিতার বেইজ্জতির চেয়ে বড় বেইজ্জতি আর কী হতে পারে? বলা হবে: তোমার পেছনে দেখ, তিনি দেখতে পাবেন সেখানে রক্তাক্ত একটি হায়েনা পড়ে আছে। তার পিতাকে তাতে রূপান্তরিত করা হবে। অতঃপর তার পা টান দিয়ে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: لَأَوَّٰهٌ حَلِيمٞ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: الأواه “অতিশয় প্রার্থনাকারী”। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাসের বিভিন্ন বর্ণনার মধ্যে কোনোটিতে বলা হয়েছে: অনুনয়কারী অথবা বলা হয়েছে: দয়াবান অথবা বলা হয়েছে: দৃঢ়-বিশ্বাসী অথবা বলা হয়েছে। পবিত্রতা ঘোষণাকারী। আর কেউ বলেন অন্য কিছু।

﴿وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُضِلَّ قَوۡمَۢا بَعۡدَ إِذۡ هَدَىٰهُمۡ حَتَّىٰ يُبَيِّنَ لَهُم مَّا يَتَّقُونَۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٌ ١١٥ إِنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٖ ١١٦ ﴾ [ التوبة : ١١٥، ١١٦ ]

“১১৫. আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে হিদায়াত দানের পর তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন। যতক্ষণ না তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবেন, যা থেকে তারা সাবধান থাকবে। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে সর্বজ্ঞ। ১১৬. নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর জন্যই আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য না আছে কোনো অভিভাবক, না আছে কোনো সাহায্যকারী।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১১৫-১১৬]

দলীল প্রতিষ্ঠিত হবার পর পাকড়াও:

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সম্মানিত সত্ত্বা ও ন্যায়বিচার সম্পর্কে বলেন যে, তিনি কোনো সম্প্রদায়ের নিকট তার বার্তা পৌঁছানোর পরই তাদেরকে (তা না মানার কারণে) গোমরাহ করেন। যাতে করে তাদের বিরুদ্ধে দলীল প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: وَأَمَّا ثَمُودُ فَهَدَيْنَاهُمْ

মুজাহিদ এ আয়াত সম্পর্কে বলেন: আল্লাহ তা‘আলা মুমিনগণকে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করার ব্যাপারে বিশেষভাবে অবহিত করেন। আর সাধারণভাবে তাঁর অবাধ্যতা থেকে ভীতি প্রদর্শন ও আনুগত্যের ক্ষেত্রে উৎসাহ দিচ্ছেন। কাজেই এটা পালন কর অথবা কষ্ট ভোগ কর। ইবনে জারীর বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আল্লাহ তা‘আলা এমন নন যে, যখন তিনি তোমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন আর যখন তিনি তোমাদেরকে তাঁর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার তাওফিক দিয়েছেন, তখন তোমাদের মুশরিক মৃতদের জন্য তোমাদের প্রার্থনার কারণে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছো বলে তিনি ফায়সালা দিয়ে দিবেন। প্রথমত তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা তোমাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে, যাতে তোমরা তা পরিত্যাগ কর। নিষেধ করে কোনো বিষয়ে ঘৃণিত হওয়া সম্পর্কে তোমাদের জানিয়ে দেওয়ার পূর্বে নিষিদ্ধ বস্তুর ব্যাপারে তোমাদের সীমালঙ্ঘন করার কারণে তিনি তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট বলে গণ্য করবেন না। কেননা আনুগত্য ও অবাধ্যতা তো কেবল আদিষ্ট ও নিষেধকৃত বিষয়েই হয়ে থাকে। আর যাকে নির্দেশ প্রদান অথবা নিষেধ করা হয় নি তাকে সে বিষয়গুলোতে অনুগত অথবা অবাধ্য বলা যায় না।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী: إِنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٖ “নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর জন্যই আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য না আছে কোনো অভিভাবক, না আছে কোনো সাহায্যকারী।” ইবনু জারীর বলেন: এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার মুমিন বান্দাদের প্রতি মুশরিক ও কাফির সর্দারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রেরণাস্বরূপ। আর যেন তারা আল্লাহর সাহায্যের ব্যাপারে আস্থাবান হয় যিনি আসমানসমূহ ও জমিনের মালিক। আর তার শত্রুদের যেন ভয় না পায়। কেননা আল্লাহ ছাড়া তাদের কোনো অভিভাবক নেই, নেই কোন সাহায্যকারী।

﴿لَّقَد تَّابَ ٱللَّهُ عَلَى ٱلنَّبِيِّ وَٱلۡمُهَٰجِرِينَ وَٱلۡأَنصَارِ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ ٱلۡعُسۡرَةِ مِنۢ بَعۡدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٖ مِّنۡهُمۡ ثُمَّ تَابَ عَلَيۡهِمۡۚ إِنَّهُۥ بِهِمۡ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١١٧﴾ [ التوبة : ١١٧ ]

“১১৭. অবশ্যই আল্লাহ নবী, মুহাজির ও আনসারদের তাওবা কবুল করলেন, যারা তার অনুসরণ করেছে সংকটপূর্ণ মুহূর্তে। তাদের মধ্যে এক দলের হৃদয় সত্যচ্যূত হওয়ার উপক্রম হবার পর। তারপর আল্লাহ তাদের তাওবাহ কবূল করলেন। নিশ্চয় তিনি তাদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১১৭]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন