hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সূরা আত-তাওবার তাফসীর

লেখকঃ জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

২৩
মুমিনের ঈমান বাড়ে ও কমে আর মুনাফিকদের সংশয় সন্দেহ বৃদ্ধি পায়:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন: وَإِذَا مَآ أُنزِلَتۡ سُورَةٞ “আর যখনই কোনো সূরা নাযিল করা হয়” মুনাফিকদের মধ্য থেকে فَمِنۡهُم مَّن يَقُولُ أَيُّكُمۡ زَادَتۡهُ هَٰذِهِۦٓ إِيمَٰنٗاۚ “তাদের কিছুসংখ্যক লোক অন্যদের বলে এ সূরা তোমাদের ঈমানের কী বৃদ্ধি করেছে?” এই আয়াত সবচেয়ে বড় প্রমাণ তাদের জন্য যারা বলে ঈমান কমে ও বাড়ে। পূর্ব ও পরবর্তী আলেমগণেরও এই মত। এ ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি এর উপর ঐকমত্য হওয়ার বিষয়টি বর্ণনা করেছেন।

وَأَمَّا ٱلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٞ فَزَادَتۡهُمۡ رِجۡسًا إِلَىٰ رِجۡسِهِمۡ “আর যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, এটি তাদের অপবিত্রতার সাথে অপবিত্রতা বৃদ্ধি করে” অর্থাৎ তাদের সংশয় সন্দেহের সাথে আরও সংশয়-সন্দেহ বেড়ে যায়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ﴿ وَٱلَّذِينَ لَا يُؤۡمِنُونَ فِيٓ ءَاذَانِهِمۡ وَقۡرٞ وَهُوَ عَلَيۡهِمۡ عَمًىۚ﴾ [ فصلت : ٤٤ ] “আর যারা ঈমান আনে না তাদের কানে রয়েছে বধিরতা আর কুরআন তাদের জন্য হবে অন্ধত্ব।” [সূরা ফুস্সিলাত: ৩৩] এটা তাদের দুর্ভাগ্যের সার্বিক আলোচনা যে, যখন তাদের অন্তর সঠিক পথের সন্ধান পায় না তখন সেটা তাদের গোমরাহি ও ধ্বংসের কারণ হিসেবে গণ্য হয়। যেমন কেউ অল্প সময়ের কোনো প্রকার খাদ্যে বিগড়ে যায়, তাহলে তো সে আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে, যখন তা সে আবারও আহার করবে।

﴿أَوَلَا يَرَوۡنَ أَنَّهُمۡ يُفۡتَنُونَ فِي كُلِّ عَامٖ مَّرَّةً أَوۡ مَرَّتَيۡنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمۡ يَذَّكَّرُونَ ١٢٦ وَإِذَا مَآ أُنزِلَتۡ سُورَةٞ نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٍ هَلۡ يَرَىٰكُم مِّنۡ أَحَدٖ ثُمَّ ٱنصَرَفُواْۚ صَرَفَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُم بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَفۡقَهُونَ ١٢٧﴾ [ التوبة : ١٢٦، ١٢٧ ]

“১২৬. তারা কি দেখে না যে, তারা প্রতি বছর এক বার কিংবা দু’বার বিপদগ্রস্ত হয়? এর পরও তারা তাওবাহ করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না। ১২৭. আর যখনই কোনো সূরা নাযিল করা হয়, তারা একে অপরের দিকে তাকায়। (এবং বলে) ‘তোমাদেরকে কি কেউ দেখছে’? অতঃপর তারা (চুপিসারে) প্রস্থান করে। আল্লাহ তাদের হৃদয়কে সত্যবিমুখ করে দেন। এ কারণে যে, তারা বোধশক্তিহীন কওম।” [সুরা আত-তাওবাহ: ১২৬-১২৭]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ঐ সমস্ত মুনাফিকরা কি দেখে না أَنَّهُمۡ يُفۡتَنُونَ “পরীক্ষিত হয়” فِي كُلِّ عَامٖ مَّرَّةً أَوۡ مَرَّتَيۡنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمۡ يَذَّكَّرُونَ “তারা তাদের কৃত পূর্বের গোনাসমূহ থেকে তাওবাহ করে না আর ভবিষ্যতেও উপদেশ গ্রহণ তাদের অবস্থা সমূহ থেকে করে না।” মুজাহিদ বলেন: তারা (মুনাফিকরা) পরীক্ষিত হয় দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধার মাধ্যমে। কাতাদা বলেন, বৎসরে একবার বা দুইবার যুদ্ধ দ্বারা পরীক্ষিত হয়।

এখানে وَإِذَا مَآ أُنزِلَتۡ سُورَةٞ نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٍ মুনাফিকদের সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া হচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর যখন কোনো সূরা অবতীর্ণ হয় তখন نَّظَرَ بَعۡضُهُمۡ إِلَىٰ بَعۡضٍ “একে অপরের দিকে তাকায়।” সত্য থেকে ফিরে যায়। আর এটা দুনিয়াতে তাদের অবস্থা। সত্যের সময় তারা দৃঢ় থাকে না, তারা তা গ্রহণ করে না এবং তারা তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয় না। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী: هَلۡ يَرَىٰكُم مِّنۡ أَحَدٖ ثُمَّ ٱنصَرَفُواْ “ঐ সম্প্রদায়ের কী হল যারা তোমার নিকট থেকে সত্য থেকে পলায়ন করে এবং মিথ্যার উদ্দেশ্যে ডানে ও বামে মুখ ফিরিয়ে চলে যায়।” ﴿فَمَا لَهُمۡ عَنِ ٱلتَّذۡكِرَةِ مُعۡرِضِينَ ٤٩ كَأَنَّهُمۡ حُمُرٞ مُّسۡتَنفِرَةٞ ٥٠﴾ [ المدثر : ٤٩، ٥٠ ] তারা যেন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পলায়নরত বন্য গাধা আর তাদের কী হয়েছে যে, তারা উপদেশ বাণী হতে বিমুখ?” [সূরা আল-মুদ্দাছির: ৪৯-৫০] আর আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ثُمَّ ٱنصَرَفُواْۚ صَرَفَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُم “অতঃপর তারা (চুপিসারে) প্রস্থান করে।” অপর আয়াত ﴿فَلَمَّا زَاغُوٓاْ أَزَاغَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمۡۚ﴾ [ الصف : ٥ ] এর মত। আল্লাহর বাণী بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَفۡقَهُون “তারা আল্লাহর বাণী বুঝে না” আর তারা তা বুঝতে উদ্যোগীও হয় না, তারা তা কামনাও করে না; বরং তা থেকে ব্যস্ততা দেখায় এবং চলে যায়। ফলে এই অবস্থায় তাদের পরিসমাপ্তি ঘটে।

﴿لَقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيصٌ عَلَيۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١٢٨ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَقُلۡ حَسۡبِيَ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُۖ وَهُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِيمِ ١٢٩﴾ [ التوبة : ١٢٨، ١٢٩ ]

“১২৮. নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মু’মিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু। ১২৯. অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহাআরশের রব’।” [সূরা আত-তাওবাহ: ১২৮-১২৯]

আল্লাহ তা’আলা মু’মিনদের প্রতি তাদের নিজেদের থেকে স্বীয় ভাষায় রাসূল প্রেরণ করার কথা বলেন। যেমনটি ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন। বলেন, ﴿رَبَّنَا وَٱبۡعَثۡ فِيهِمۡ رَسُولٗا مِّنۡهُمۡ﴾ [ البقرة : ١٢٩ ] “হে আমার রব! তুমি তাদের থেকে তাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ কর।” [সূরা আল-বাকারা: ১২৯]

﴿لَقَدۡ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ بَعَثَ فِيهِمۡ رَسُولٗا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ﴾ [ ال عمران : ١٦٤ ] “আল্লাহ তা’আলা মু’মিনদের প্রতি দয়া করেছেন -তিনি তাদের থেকে তাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন।” [সূরা আলে ইমরান: ১৬৪]

আল্লাহ বলেন, لَقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ “নিশ্চয় তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন” তোমাদের শ্রেণি থেকে তোমাদের ভাষায়। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ ِ “তার উপর এমন বিষয় কষ্টদায়ক মনে হয় যা তার উম্মতকে ক্ষতি করে এবং তাদের উপর কঠিন হয়।” সহীহ বর্ণনায় আছে নিশ্চয় এই দ্বীন সহজ আর এর শরীয়ত সবটুকুই সম্পূর্ণ সরল ও উদার। আল্লাহ তা‘আলা যার উপর তা সহজ করেন তার উপর তা সহজ। حَرِيصٌ عَلَيۡكُم অর্থাৎ তোমাদের হেদায়াতের এবং তোমাদের প্রতি দুনিয়া ও আখিরাতের উপকার পৌঁছানোর উপর তিনি যত্নবান।

ইমাম আহমাদ রহ. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কোনো বিষয় তখন হারাম করেন যখন তিনি জানেন যে, তা অচিরেই কোনো অবগতকারী তোমাদেরকে অবগত করাবে। মনে রাখবে, আমি তোমাদের কোমর টেনে ধরব, যাতে তোমরা আগুনে ছিটকে না পড় যেভাবে মশা মাছি আগুনে ছিটকে পড়ে।

আল্লাহ তা‘আলার বাণী بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ আল্লাহর অপর বাণী ﴿وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢١٥﴾ [ الشعراء : ٢١٥ ] -এর মতই। আর এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা এ কথারই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলার বাণী: فَإِن تَوَلَّوۡاْ অর্থাৎ যে পূর্ণাঙ্গ পবিত্র ও মহান শরী‘আতসহ তুমি আগমন করেছ তা থেকে তারা ফিরে যায়। فَقُلۡ حَسۡبِيَ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُۖ “তুমি তাদের বল, আল্লাহ যথেষ্ট তিনি ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই, তার উপর আমরা ভরসা করি।” যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ﴿رَّبُّ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ فَٱتَّخِذۡهُ وَكِيلٗا ٩﴾ ( المزمل :٩ “তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের রব, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। সুতরাং তাঁকেই তুমি কার্য সম্পাদনকারীরূপে গ্রহণ কর।” [সূরা আল-মুযযাম্মিল: ৯]

আল্লাহ বলেন, وَهُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِيمِ অর্থাৎ তিনি সকল কিছুর মালিক ও সৃষ্টিকর্তা। কেননা তিনি মহান আরশের রব। যে আরশ সকল সৃষ্টির ছাদ। আসমান ও জমিনসমূহ আর এতদুভয়ের মাঝখানের সকল সৃষ্টজীব আরশের তলদেশে রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতাবলে (এ সবকিছু) পরাস্ত। তাঁর জ্ঞান সকল কিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে। তার ক্ষমতা সকল বিষয়ে সফল। আর তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।

ইমাম আহমাদ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি উবাই ইবনে কা‘ব থেকে, তিনি (উবাই ইবনে কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন: কুরআনের সর্বশেষ এই আয়াতটি সূরার শেষ পর্যন্ত অবতীর্ণ হয়। ইমাম আবু দাউদ আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে হাদিস বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে حَسْبِيَ اللَّهُ، لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ، وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ -এ দো’আটি সাতবার পাঠ করবে, আল্লাহ তা’আলা যাবতীয় দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী দূর করে দেবেন।

সহীহ বর্ণনায় রয়েছে: যায়েদ বলেন: সূরা তাওবার শেষ (অংশ) খুযায়মা ইবনে সাবেত অথবা আবু খুযাইমার নিকট পাই। পূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল সাহাবী তা রাসূলুল্লাহ‌্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উল্লেখ করেছেন যেমন খুযাইমাহ ইবন সাবেত বলেন যখন তিনি তাদের নিকট তা আরম্ভ করেন। আর আল্লাহ তা‘আলা ভালো জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন