hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণ

লেখকঃ শাইখ মুকবিল ইবন হাদী আল ওয়াদি‘য়ী

১১
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
এ পরিচ্ছেদটি আলাদা একটি পূর্ণ অধ্যায়, কিন্তু আমি এখানে কিছু নির্বাচিত হাদীস উল্লেখ করেছি, কেননা এটি নবুওয়তের আলামতের অন্তর্ভুক্ত।

عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ : سَمِعْتُ البَرَاءَ، يَقُولُ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «أَحْسَنَ النَّاسِ وَجْهًا وَأَحْسَنَهُ خَلْقًا، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ البَائِنِ، وَلاَ بِالقَصِيرِ» .

বারা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা মুবারক ছিল মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এবং তিনি ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। তিনি অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন না এবং বেমানান বেঁটেও ছিলেন না। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৪৯।]

عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «مَرْبُوعًا، بَعِيدَ مَا بَيْنَ المَنْكِبَيْنِ، لَهُ شَعَرٌ يَبْلُغُ شَحْمَةَ أُذُنِهِ، رَأَيْتُهُ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ، لَمْ أَرَ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ» قَالَ يُوسُفُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِيهِ : «إِلَى مَنْكِبَيْهِ» .

বারা ইবন ‘আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দুই কানের লতি পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড় চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর কাউকে আমি কখনো দেখিনি। ইউসুফ ইবন আবূ ইসহাক তাঁর পিতা থেকে হাদীস বর্ণনায় বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫১।]

عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ : سُئِلَ البَرَاءُ أَكَانَ وَجْهُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مِثْلَ السَّيْفِ؟ قَالَ : لاَ بَلْ مِثْلَ القَمَرِ ".

আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বারা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা করা হল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা্মের চেহারা মুবারক কি তরবারীর ন্যায় (চকচকে) ছিল? তিনি বলেন, না, বরং চাঁদের মত (স্নিগ্ধ ও মনোরম) ছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫২।]

عَنِ الحَكَمِ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ، قَالَ : «خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالهَاجِرَةِ إِلَى البَطْحَاءِ، فَتَوَضَّأَ ثُمَّ صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَالعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَبَيْنَ يَدَيْهِ عَنَزَةٌ» قَالَ شُعْبَةُ وَزَادَ فِيهِ عَوْنٌ، عَنْ أَبِيهِ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ : «كَانَ يَمُرُّ مِنْ وَرَائِهَا المَرْأَةُ، وَقَامَ النَّاسُ فَجَعَلُوا يَأْخُذُونَ يَدَيْهِ فَيَمْسَحُونَ بِهَا وُجُوهَهُمْ، قَالَ فَأَخَذْتُ بِيَدِهِ فَوَضَعْتُهَا عَلَى وَجْهِي فَإِذَا هِيَ أَبْرَدُ مِنَ الثَّلْجِ وَأَطْيَبُ رَائِحَةً مِنَ المِسْكِ» .

হাকাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি আবূ জুহাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুপুর বেলায় বাতহার দিকে বেরিয়ে গেলেন। সে স্থানে অজু করে যোহরের দু’রাকাত ও আসরের দু’রাকাত সালাত আদায় করেন। তাঁর সম্মুখে একটি বর্শা পোতা ছিল। বর্শার বাহির দিক দিয়ে নারীগণ যাতায়াত করছিল। সালাত শেষে লোকজন দাঁড়িয়ে গেল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উভয় হাত ধরে তারা নিজেদের মাথা ও চেহারায় বুলাতে লাগলেন। আমিও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত মুবারক ধারণ করত, আমার চেহারায় বুলাতে লাগলাম। তাঁর হাত তুষার চেয়ে স্নিগ্ধ শীতল ও কস্তুরীর চেয়ে অধিক সুগন্ধ ছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫৩।]

حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، قَالَ : سَمِعْتُ عَوْنَ بْنَ أَبِي جُحَيْفَةَ، ذَكَرَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ : دُفِعْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ بِالأَبْطَحِ فِي قُبَّةٍ كَانَ بِالهَاجِرَةِ، خَرَجَ بِلاَلٌ فَنَادَى بِالصَّلاَةِ ثُمَّ دَخَلَ، فَأَخْرَجَ فَضْلَ وَضُوءِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَقَعَ النَّاسُ عَلَيْهِ يَأْخُذُونَ مِنْهُ، ثُمَّ دَخَلَ فَأَخْرَجَ العَنَزَةَ وَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ سَاقَيْهِ، فَرَكَزَ العَنَزَةَ ثُمَّ صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَالعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الحِمَارُ وَالمَرْأَةُ» .

আবূ জুহাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, (একদা) আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে নেওয়া হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আবতাহ নামক স্থানে দুপুর বেলায় একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। বেলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁবু থেকে বেরিয়ে এসে যোহরের সালাতের আযান দিলেন এবং (তাঁবুতে) পুনঃপ্রবেশ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অযুর অবশিষ্ট পানি নিয়ে বেরিয়ে এলেন। লোকজন তা নেওয়ার জন্য ঝাপিয়ে পড়ল। অতঃপর তিনি আবার তাঁবুতে ঢুকে একটি ছোট্ট বর্শা নিয়ে বেরিয়ে এলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও (এবার) বেরিয়ে আসলেন। আমি যেন তাঁর পায়ের গোছার ঔজ্জ্বল্য এখনো দেখতে পাচ্ছি। বর্শাটি সম্মুখে পুতে রাখলেন। এরপর যোহরের দু’রাকাত এবং পরে আসরের দু’রাকাত সালাত আদায় করলেন। বর্শার বাহির দিয়ে গাধা ও মহিলা চলাফেরা করছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬৬।]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ : «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدَ النَّاسِ، وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ فَيُدَارِسُهُ القُرْآنَ، فَلَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَجْوَدُ بِالخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ المُرْسَلَةِ» .

ইব্‌ন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ্ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। রমাদানে তিনি আরো বেশী দানশীল হতেন, যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমাদানের প্রতি রাতেই জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁরা পরস্পর কুরআন তেলওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমতের বাতাস থেকেও অধিক দানশীল ছিলেন”। [বুখারী, হাদীস নং ৬, মুসলিম, হাদীস নং ২৩০৮।]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا مَسْرُورًا، تَبْرُقُ أَسَارِيرُ وَجْهِهِ، فَقَالَ : " أَلَمْ تَسْمَعِي مَا قَالَ المُدْلِجِيُّ لِزَيْدٍ، وَأُسَامَةَ، وَرَأَى أَقْدَامَهُمَا : إِنَّ بَعْضَ هَذِهِ الأَقْدَامِ مِنْ بَعْضٍ ".

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত আনন্দিত ও প্রফুল্ল চিত্তে তাঁর কাছে প্রবেশ করলেন। খুশীর আমেজে তাঁর চেহারার খুশীর চিহ্ন ঝলমল করছিল। তিনি তখন আয়েশাকে বললেন, হে আয়েশা! তুমি শুননি, মুদলাজী ব্যক্তিটি (চেহারার ও আকৃতির গননায় পারদর্শী) যায়েদ ও উসামা সম্পর্কে কি বলেছে? পিতা-পুত্রের শুধু পা দেখে (শরীরের বাকী অংশ ঢাকা ছিল) বলল, এ পাগুলো একটা অন্যটির অংশ (অর্থাৎ তাদের সম্পর্ক পিতা-পুত্রের)। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫৫।]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبٍ، قَالَ : سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ، يُحَدِّثُ حِينَ تَخَلَّفَ عَنْ تَبُوكَ، قَالَ : فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُورِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ، حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ، وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ مِنْهُ ".

আবদুল্লাহ ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা’ব ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে তার তাবূক যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার ঘটনা বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম করলাম, খুশী ও আনন্দে তাঁর চেহারা ঝলমল করে উঠলো। তাঁর চেহারা এমনিই খুশী ও আনন্দে ঝলমল করতো। মনে হতো যেন চাদেঁর একটি টুকরা। তাঁর চেহারা মুবারকের এ অবস্থা থেকে আমরা তা বুঝতে সক্ষম হতাম। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫৬।]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : " لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاحِشًا وَلاَ مُتَفَحِّشًا، وَكَانَ يَقُولُ : «إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ أَحْسَنَكُمْ أَخْلاَقًا» .

আবদুল্লাহ ইবন্ আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশ্লীল ভাষী ও অসদাচারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সর্বশ্রেষ্ঠ যে চরিত্রের দিক থেকে সর্বোত্তম। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৫৯।]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ : «مَا خُيِّرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ أَمْرَيْنِ إِلَّا أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا، مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا، فَإِنْ كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ، وَمَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِنَفْسِهِ إِلَّا أَنْ تُنْتَهَكَ حُرْمَةُ اللَّهِ، فَيَنْتَقِمَ لِلَّهِ بِهَا» .

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে (জাগতিক বিষয়ে) যখনই দু’টি জিনিসের একটি গ্রহণের ইখতিয়ার দেওয়া হত, তখন তিনি সহজ সরলটি গ্রহণ করতেন যদি তা গোনাহ না হত। যদি গোনাহ হত তবে তা থেকে তিনি অনেক দূরে সরে থাকতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিগত কারণে কারো থেকে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি। তবে আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করা হলে আল্লাহকে রাযী ও সন্তুষ্ট করার মানসে প্রতিশোধ করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬০।]

عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : «مَا مَسِسْتُ حَرِيرًا وَلاَ دِيبَاجًا أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَلاَ شَمِمْتُ رِيحًا قَطُّ أَوْ عَرْفًا قَطُّ أَطْيَبَ مِنْ رِيحِ أَوْ عَرْفِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» .

আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের তালু অপেক্ষা মোলায়েম কোনো রেশম ও গরদকেও স্পর্শ করি নাই। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীর মোবারকের খুশবু অপেক্ষা অধিকতর সুঘ্রাণ আমি কখনো পাই নি। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬১।]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَشَدَّ حَيَاءً مِنَ العَذْرَاءِ فِي خِدْرِهَا» حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَابْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ مِثْلَهُ، وَإِذَا كَرِهَ شَيْئًا عُرِفَ فِي وَجْهِهِ .

আবূ সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্তপুরবাসিনী পর্দানশীন কুমারীদের চেয়েও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন।

শু‘বা (রহ.) থেকে অনুরূপ রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে (তবে এ বাক্যটি অতিরিক্ত রয়েছে যে,) যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো কিছু অপছন্দ করতেন তখর তাঁর চেহারা মুবারকে তা (বিরক্তি ভাব) দেখা যেত। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬১-৩৫৬২।]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : «مَا عَابَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا قَطُّ، إِنِ اشْتَهَاهُ أَكَلَهُ وَإِلَّا تَرَكَهُ» .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোনো খাদ্যবস্তুকে মন্দ বলতেন না। রুচি হলে খেয়ে নিতেন নতুবা ত্যাগ করতেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬৩।]

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا : كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَمَضَانَ؟ قَالَتْ : مَا كَانَ يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ وَلاَ فِي غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، يُصَلِّي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا، فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ تَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ؟ قَالَ : «تَنَامُ عَيْنِي وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي» .

আবূ সালামাহ ইবন আবদুর রাহমান (রহ.) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা জিজ্ঞাসা করলেন, রমাদান মাসে (রাতে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত কিভাবে ছিল? আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদান মাসে ও অন্যান্য সব মাসের রাতে এগারো রাক‘আতের বেশী সালাত আদায় করতেন না। প্রথমে চার রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। এ চার রাক‘আত আদায়ের সৌন্দর্য ও দৈর্ঘের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না (তা বর্ণনাতীত)। তারপর আরো চার রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। তারপর তিন রাক‘আত (বিতর) আদায় করতেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনি বিতর সালাত আদয়ের পূর্বে ঘুমিয়ে পড়েন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার চক্ষু ঘুমায় তবে আমার অন্তর ঘুমায় না। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৬৯।]

عَنْ طَارِقِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُحَارِبِيِّ، قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سُوقِ ذِي الْمَجَازِ وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، وَهُوَ يَقُولُ : «يَا أَيُّهَا النَّاسُ قُولُوا لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ تُفْلِحُوا» ، وَرَجُلٌ يَتْبَعُهُ يَرْمِيهِ بِالْحِجَارَةِ، وَقَدْ أَدْمَى عُرْقُوبَيْهِ وَكَعْبَيْهِ، وَهُوَ يَقُولُ : يَا أَيُّهَا النَّاسُ، لَا تُطِيعُوهُ، فَإِنَّهُ كَذَّابٌ، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ قِيلَ : هَذَا غُلَامُ بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قُلْتُ : فَمَنْ هَذَا الَّذِي يَتْبَعُهُ يَرْمِيهِ بِالْحِجَارَةِ؟ قَالَ : هَذَا عَبْدُ الْعُزَّى أَبُو لَهَبٍ قَالَ : فَلَمَّا ظَهَرَ الْإِسْلَامُ، خَرَجْنَا فِي ذَلِكَ حَتَّى نَزَلْنَا قَرِيبًا مِنَ الْمَدِينَةِ، وَمَعَنَا ظَعِينَةٌ لَنَا فَبَيْنَا نَحْنُ قُعُودٌ إِذْ أَتَانَا رَجُلٌ عَلَيْهِ ثَوْبَانِ أَبْيَضَانِ، فَسَلَّمَ، وَقَالَ : مِنْ أَيْنَ أَقْبَلَ الْقَوْمُ؟ قُلْنَا : مِنَ الرَّبَذَةِ، قَالَ : وَمَعَنَا جَمَلٌ، قَالَ : أَتَبِيعُونَ هَذَا الْجَمَلَ؟ قُلْنَا : نَعَمْ، قَالَ : بِكَمْ؟ قُلْنَا : بِكَذَا وَكَذَا صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، قَالَ : فَأَخَذَهُ، وَلَمْ يَسْتَنْقِصْنَا، قَالَ : قَدْ أَخَذْتُهُ، ثُمَّ تَوَارَى بِحِيطَانِ الْمَدِينَةِ، فَتَلَاوَمْنَا فِيمَا بَيْنَنَا، فَقُلْنَا : أَعْطَيْتُمْ جَمَلَكُمْ رَجُلًا لَا تَعْرِفُونَهُ؟ قَالَ : فَقَالَتِ الظَّعِينَةُ : لَا تَلَاوَمُوا، فَإِنِّي رَأَيْتُ وَجْهَ رَجُلٍ لَمْ يَكُنْ لِيَحْقِرَكُمْ، مَا رَأَيْتُ شَيْئًا أَشْبَهَ بِالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ مِنْ وَجْهِهِ، قَالَ : فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْعَشِيِّ أَتَانَا رَجُلٌ فَسَلَّمَ عَلَيْنَا، وَقَالَ : أَنَا رَسُولُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : «إِنَّ لَكُمْ أَنْ تَأْكُلُوا حَتَّى تَشْبَعُوا، وَتَكْتَالُوا حَتَّى تَسْتَوْفُوا» قَالَ : فَأَكَلْنَا حَتَّى شَبِعْنَا وَاكْتَلْنَا حَتَّى اسْتَوْفَيْنَا، قَالَ : ثُمَّ قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ مِنَ الْغَدِ، فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمٌ يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ وَهُوَ يَقُولُ : «يَدُ الْمُعْطِي يَدُ الْعُلْيَا، وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ : أُمَّكَ وَأَبَاكَ، أُخْتَكَ وَأَخَاكَ، ثُمَّ أَدْنَاكَ أَدْنَاكَ» ، فَقَامَ رَجُلٌ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَؤُلَاءِ بَنُو ثَعْلَبَةَ بْنِ يَرْبُوعٍ قَتَلُوا فُلَانًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ، فَخُذْ لَنَا بِثَأْرِنَا مِنْهُ، فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ، وَقَالَ : «أَلَا لَا تَجْنِي أُمٌّ عَلَى وَلَدٍ، أَلَا لَا تَجْنِي أُمٌّ عَلَى وَلَدٍ»

তারিক ইবন আব্দুল্লাহ আল-মুহারেবী বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যিল মাজায বাজারে দেখেছি, তার গায়ে ছিল লাল পোষাক, তিনি বলছিলেন, ‘হে মানুষগণ তোমরা বল, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ তথা আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো মা‘বুদ নেই, এতে তোমরা সফলকাম হবে’। আর একজন ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করে পাথর নিক্ষেপ করছে এবং এতে তার পায়ের গোড়ালি ও হাটুর পিছন দিক রক্তাক্ত হয়ে গেছে; সে বলছিল, ‘হে মানুষ, তোমরা তার অনুসরণ কর না; সে মিথ্যাবাদী। আমি বললাম: কে সে? বলা হলো, ‘এটি বনু আব্দুল মুত্তালিবের একজন ছেলে। আমি বললাম, ‘তবে যে লোকটি তাকে অনুসরণ করে পাথর নিক্ষেপ করছে সে কে? বলা হলো, ‘এটি তার চাচা আব্দুল উয্‌যা আবু লাহাব। অতঃপর যখন আল্লাহ ইসলামকে সমুন্নত করলেন তখন আমরা একটি যাত্রী দল হিসেবে বের হলাম এবং মদিনার নিকটবর্তী স্থানে নামলাম আর আমাদের সাথে ছিল এক আরোহী মহিলা। আমরা যখন বসা ছিলাম তখন আমাদের কাছে দুটি সাদা চাদর পরিহিত একজন লোক আসলেন এবং সালাম দিলেন ও বললেন, ‘কোথা থেকে সম্প্রদায়ের আগমন?’ আমরা বললাম, ‘রাবযা থেকে’। তিনি (বর্ণনাকারী) আরও বলেন, আমাদের সাথে ছিল একটি উট। তিনি বললেন, তোমরা কি এ উট বিক্রি করবে? আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ’। তিনি বললেন, ‘কত দামে?’ আমরা বললাম, ‘এত এত সা‘ খেজুরের পরিবর্তে। তিনি বললেন, ‘তিনি তা নিলেন এবং আমাদেরকে কমালেন না। তিনি বললেন, ‘আমি নিয়েছি।’ এরপর তিনি মদিনার দেয়ালসমূহের পিছনে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তখন আমরা পরস্পরকে দোষারোপ করতে লাগলাম এবং বলতে লাগলাম যে এমন এক লোককে উট দিলে যাকে তোমরা কেউ চিন না? তখন আমাদের সে আরোহী বলতে লাগল ‘তোমরা পরস্পরকে দোষারোপ কর না কেননা আমি এমন ব্যক্তির মুখ দেখেছি যে তোমাদের সাথে ওয়াদা ভঙ্গ করবে না; পূর্ণিমার রাতের চাঁদের সাথে তার মুখের সাদৃশ্যের দিক থেকে আমি আর কাউকে বেশি দেখি নি। তিনি (রাবী) বলেন, অতঃপর যখন রাত হয়ে এলো তখন এক ব্যক্তি আমাদের কাছে এসে সালাম দিলেন এবং বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিনিধি। তোমরা ক্ষুধা মেটা পর্যন্ত খাও এবং পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেপে নাও। তিনি (রাবী) বলেন, আমরা ক্ষুধা মেটা পর্যন্ত খেলাম এবং পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেপে নিলাম। অতঃপর আমরা মদিনায় পরের দিন আসলাম তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন, ‘দানকারীর হাত উর্ধ্বে; আর আত্মীয়দের দ্বারা শুরু কর —তোমার মা, বাবা, বোন, ভাই অতঃপর তোমার নিকটজন। তখন একজন লোক দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, এরা হলো বনু সা‘লাবা ইবন ইয়ারবু যারা জাহেলিয়াতে আমাদের লোকদের হত্যা করেছে; সুতরাং আপনি তাদের থেকে আমাদের জন্য প্রতিশোধ নিন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু’হাত উপরে উঠালেন এমনটি আমরা তার দু’বগলের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, সাবধান! কোনো মা তার সন্তানের উপর অপরাধ করবে না, সাবধান! কোনো মা তার সন্তানের উপর অপরাধ করবে না”।

আর এ হাদীসটি হাসান।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : «هَلْ تَرَوْنَ قِبْلَتِي هَا هُنَا، فَوَاللَّهِ مَا يَخْفَى عَلَيَّ خُشُوعُكُمْ وَلاَ رُكُوعُكُمْ، إِنِّي لَأَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي» .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা কি মনে কর যে, আল্লাহর দৃষ্টি কেবল কিবলার দিকে? আল্লাহর কসম! আমার কাছে তোমাদের খুশূ (বিনয়) ও রুকু কিছুই গোপন থাকে না। অবশ্যই আমি আমার পেছন থেকেও তোমাদের দেখি। [বুখারী, হাদীস নং ৪১৮।]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " أَقِيمُوا الرُّكُوعَ، وَالسُّجُودَ فَوَاللهِ، إِنِّي لَأَرَاكُمْ مِنْ بَعْدِي - وَرُبَّمَا قَالَ : مِنْ بَعْدِ ظَهْرِي - إِذَا رَكَعْتُمْ وَسَجَدْتُمْ ".

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের রুকু এবং সিজদা যথাযথভাবে আদায় করবে। আল্লাহর শপথ! তোমরা যখন রুকু-সিজদা কর, তখন তা আমি পিছন দিক হতে (রাবী কখনও বলেছেন) আমি পৃষ্ঠদেশের দিক হতে দেখে থাকি। [মুসলিম, হাদীস নং ৪২৫।]

ইমাম নাওয়াওয়ী রহ. বলেন, আলেমগণ বলেছেন, এ হাদীসের অর্থ হলো আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিঠে এমন শক্তি দিয়েছেন যে, তিনি তাঁর পিছনের দিক দেখতে পেতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর চেয়েও আশ্চর্যজনক মু‘জিযা আছে। এমনটা হওয়া বিবেক ও শরি‘য়াত নিষেধ করে না। বরং শরি‘য়াতে সরাসরি এটাকে সমর্থন করে, অতএব, এভাবেই বলা ওয়াজিব। কাদী ‘ইয়াদ রহ. বলেছেন, ইমাম আহমদ রহ. বলেন: জমহুর আলেম এ দেখাকে প্রকৃত চোখে দেখা বলেছেন।

عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ رَجُلٌ لِلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : أَفَرَرْتُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ؟ قَالَ : لَكِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَفِرَّ ، إِنَّ هَوَازِنَ كَانُوا قَوْمًا رُمَاةً، وَإِنَّا لَمَّا لَقِينَاهُمْ حَمَلْنَا عَلَيْهِمْ، فَانْهَزَمُوا فَأَقْبَلَ المُسْلِمُونَ عَلَى الغَنَائِمِ، وَاسْتَقْبَلُونَا بِالسِّهَامِ، فَأَمَّا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يَفِرَّ، فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ وَإِنَّهُ لَعَلَى بَغْلَتِهِ البَيْضَاءِ، وَإِنَّ أَبَا سُفْيَانَ آخِذٌ بِلِجَامِهَا، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : «أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ، أَنَا ابْنُ عَبْدِ المُطَّلِبْ» .

আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলল, আপনারা কি হুনাইনের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ময়দানে রেখে পলায়ন করেছিলেন? বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পলায়ন করেননি। হাওয়াযিনরা ছিল সুদক্ষ তীরন্দাজ। আমরা সামনা সামনি যুদ্ধে তাদেরকে পরাস্ত করলে তারা পালিয়ে যেতে লাগল। এমতাবস্থায় মুসলিমরা তাদের পিছু ধাওয়া না করে গনীমাতের মাল সংগ্রহে মনোনিবেশ করল। এই সুযোগ শত্রুরা তীর বর্ষনের মাধ্যমে আমাদের আক্রমন করে বসল। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থান ত্যাগ করেননি। আমি তাঁকে তাঁর সাদা খচ্চরটির উপর উপবিষ্ট অবস্থায় দেখেছি। আবূ সুফিয়ান তাঁর বাহনের লাগাম ধরে টানছেন; আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন, ‘আমি নবী তা মিথ্যা নয়, আমি আব্দুল মুত্তালিবের বংশধর। [বুখারী, হাদীস নং ২৮৬৪, মুসলিম, হাদীস নং ১৭৭৬।]

قَالَ عَبَّاسٌ : شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ، فَلَزِمْتُ أَنَا وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ نُفَارِقْهُ، وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى بَغْلَةٍ لَهُ بَيْضَاءَ أَهْدَاهَا لَهُ فَرْوَةُ بْنُ نُفَاثَةَ الْجُذَامِيُّ، فَلَمَّا الْتَقَى الْمُسْلِمُونَ وَالْكُفَّارُ وَلَّى الْمُسْلِمُونَ مُدْبِرِينَ، فَطَفِقَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْكُضُ بَغْلَتَهُ قِبَلَ الْكُفَّارِ، قَالَ عَبَّاسٌ : وَأَنَا آخِذٌ بِلِجَامِ بَغْلَةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكُفُّهَا إِرَادَةَ أَنْ لَا تُسْرِعَ، وَأَبُو سُفْيَانَ آخِذٌ بِرِكَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «أَيْ عَبَّاسُ، نَادِ أَصْحَابَ السَّمُرَةِ»، فَقَالَ عَبَّاسٌ : وَكَانَ رَجُلًا صَيِّتًا، فَقُلْتُ بِأَعْلَى صَوْتِي : أَيْنَ أَصْحَابُ السَّمُرَةِ؟ قَالَ : فَوَاللهِ، لَكَأَنَّ عَطْفَتَهُمْ حِينَ سَمِعُوا صَوْتِي عَطْفَةُ الْبَقَرِ عَلَى أَوْلَادِهَا، فَقَالُوا : يَا لَبَّيْكَ، يَا لَبَّيْكَ، قَالَ : فَاقْتَتَلُوا وَالْكُفَّارَ، وَالدَّعْوَةُ فِي الْأَنْصَارِ يَقُولُونَ : يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ، يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ، قَالَ : ثُمَّ قُصِرَتِ الدَّعْوَةُ عَلَى بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ، فَقَالُوا : يَا بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ، يَا بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ، فَنَظَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ كَالْمُتَطَاوِلِ عَلَيْهَا إِلَى قِتَالِهِمْ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «هَذَا حِينَ حَمِيَ الْوَطِيسُ» قَالَ : ثُمَّ أَخَذَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَصَيَاتٍ فَرَمَى بِهِنَّ وُجُوهَ الْكُفَّارِ، ثُمَّ قَالَ : «انْهَزَمُوا وَرَبِّ مُحَمَّدٍ» قَالَ : فَذَهَبْتُ أَنْظُرُ فَإِذَا الْقِتَالُ عَلَى هَيْئَتِهِ فِيمَا أَرَى، قَالَ : فَوَاللهِ، مَا هُوَ إِلَّا أَنْ رَمَاهُمْ بِحَصَيَاتِهِ فَمَا زِلْتُ أَرَى حَدَّهُمْ كَلِيلًا، وَأَمْرَهُمْ مُدْبِرًا .

আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হুনাইনের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। আমি এবং আবু সুফিয়ান ইবন হারেস ইবন আবদুল মুত্তালিব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একেবারে সঙ্গেই ছিলাম। আমরা কখনও তাঁর থেকে পৃথক হইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সাদা বর্ণের খচ্চরের উপর আরোহণ করেছিলেন। সে খচ্চরটি ফারওয়া ইবন নূফাসা আল-জুযামী তাঁকে হাদিয়াস্বরূপ দিয়েছিলেন। যখন মুসলিম এবং কাফির পরস্পর সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হল তখন মুসলিমগণ (যুদ্ধের এক পর্যায়ে) পশ্চাৎ-দিকে পলায়ন করতে লাগলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পায়ের গোড়ালী দিয়ে নিজের খচ্চরকে আঘাত করে কাফিরদের দিকে ধাবিত করছিলেন। আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি তার খচ্চরের লাগাম ধরে রেখেছিলাম এবং একে থামিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলাম যেন দ্রুত গতিতে অগ্রসর হতে না পারে। আর আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর খচ্চরের ‘রেকাব’ (হাউদাজের বন্ধনের পটি) ধরে রেখেছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আব্বাস! আসহাবে সামুরাকে (হুদায়বিয়ার গাছের নীচে বাই‘আতকারী লোকদেরকে) আহ্বান কর। আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আর তিনি ছিলেন উচ্চ কণ্ঠের অধিকারী ব্যক্তি। তখন আমি উচ্চস্বরে আওয়াজ দিয়ে বললাম, হে আসহাবে সামুরা! তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! তা শোনামাত্র তাঁরা এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করতে) শুরু করলেন যেমনভাবে গাভী তার বাচ্চার আওয়াজ শুনে দ্রুত দৌড়ে আসে এবং তারা বলতে লাগলো, আমরা আপনার নিকট হাযির, আমরা আপনার নিকট হাযির। রাবী বলেন, এরপর তারা কাফিরদের সাথে পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হন। তিনি আনসারদেরকেও এমনিভাবে আহ্বান করলেন যে, হে আনসারগণ! রাবী বলেন, এরপর আহ্বান সমাপ্ত করা হল বনী হারেস ইবন খাযরাযের মাধ্যমে (তাঁরা আহ্বান করলেন, হে বনী হারেস ইবনুল খাযরাজ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় খচ্চরের উপর আরোহণ অবস্থায় আপন গর্দান উচু করে তাদের যুদ্ধের অবস্থা অবলোকন করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটাই হল যুদ্ধের উত্তেজনাপূর্ণ চরম মুহূর্ত। রাবী বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি পাথরের টুকরা হাতে নিলেন এবং এগুলি তিনি বিধর্মীদের মুখের উপর ছুড়ে মারলেন। এরপর বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রবের কসম! তারা পরাজিত হয়েছে। আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধের অবস্থান পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখলাম যে, যথারীতি যুদ্ধ চলছে। এমন সময় তিনি পাথরের টুকরোগুলো নিক্ষেপ করলেন। আল্লাহর শপথ! তখন হঠাৎ দেখি যে, কাফিরদের শক্তি নিস্তেজ হয়ে গেল এবং তাদের যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল। [মুসলিম, হাদীস নং ১৭৭৫।]

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ، وَأَجْوَدَ النَّاسِ، وَأَشْجَعَ النَّاسِ، وَلَقَدْ فَزِعَ أَهْلُ المَدِينَةِ ذَاتَ لَيْلَةٍ، فَانْطَلَقَ النَّاسُ قِبَلَ الصَّوْتِ، فَاسْتَقْبَلَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ سَبَقَ النَّاسَ إِلَى الصَّوْتِ، وَهُوَ يَقُولُ : «لَنْ تُرَاعُوا لَنْ تُرَاعُوا» وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لِأَبِي طَلْحَةَ عُرْيٍ مَا عَلَيْهِ سَرْجٌ، فِي عُنُقِهِ سَيْفٌ، فَقَالَ : " لَقَدْ وَجَدْتُهُ بَحْرًا . أَوْ : إِنَّهُ لَبَحْرٌ ".

আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, সবার চাইতে অধিক দানশীল এবং লোকদের মধ্যে সর্বাধিক সাহসী ছিলেন। একদা রাতের বেলায় (একটি বিকট আওয়ায শুনে) মদীনাবাসীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই লোকেরা সেই শব্দের দিকে রওয়ানা হয়। তখন তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সামনা সামনি পেলেন, তিনি সেই আওয়াযের দিকে লোকদের আগেই বের হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলতে লাগলেন, তোমরা ঘাবড়িওনা, তোমরা ঘাবড়িওনা, (আমি দেখে এসেছি, কিছুই নেই)। এ সময় তিনি আবূ তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর জিন বিহীন ঘোড়ার উপর সওয়ার ছিলেন। আর তাঁর কাঁধে একখানা তলোয়ার ঝুলছিল। এরপর তিনি বললেন, অবশ্য এ ঘোড়াটিকে আমি সমুদ্রের মত (দ্রুতগামী) পেয়েছি। অথবা বললেন, এ ঘোড়াটিতো একটি সমুদ্র। [বুখারী, হাদীস নং ৬০৩৩।]

عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ، وَأَشْجَعَ النَّاسِ، وَلَقَدْ فَزِعَ أَهْلُ المَدِينَةِ لَيْلَةً، فَخَرَجُوا نَحْوَ الصَّوْتِ، فَاسْتَقْبَلَهُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ اسْتَبْرَأَ الخَبَرَ، وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لِأَبِي طَلْحَةَ عُرْيٍ، وَفِي عُنُقِهِ السَّيْفُ، وَهُوَ يَقُولُ : «لَمْ تُرَاعُوا، لَمْ تُرَاعُوا» ثُمَّ قَالَ : «وَجَدْنَاهُ بَحْرًا» أَوْ قَالَ : «إِنَّهُ لَبَحْرٌ» .

আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল লোকের চাইতে সুন্দর ও সাহসী ছিলেন। একরাতে মদীনার লোকেরা আতংকিত হয়ে উত্থিত শব্দের দিকে বের হলো। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সামনে এলেন এমন অবস্থায় যে, তিনি শব্দের যথার্থতা অন্বেষণ করে ফেলেছেন। তিনি আবূ তালহার জিনবিহীন ঘোড়ার পিঠে সাওযার ছিলেন এবং তার কাঁধে তরবারী ঝুলানো ছিল। তিনি বলছিলেন, তোমরা ভীত হয়ো না। তারপর তিনি বললেন, আমি ঘোড়াটিকে সমুদ্রের ন্যায় গতিশীল পেয়েছি, অথবা তিনি বললেন, এটি সমুদ্র অর্থাৎ অতি বেগবান। [বুখারী, হাদীস নং ২৯০৮।]

عَنْ سَهْلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ جُرْحِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ أُحُدٍ، فَقَالَ : «جُرِحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ، وَهُشِمَتِ البَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ، فَكَانَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلاَمُ، تَغْسِلُ الدَّمَ وَعَلِيٌّ يُمْسِكُ، فَلَمَّا رَأَتْ أَنَّ الدَّمَ لاَ يَزِيدُ إِلَّا كَثْرَةً، أَخَذَتْ حَصِيرًا فَأَحْرَقَتْهُ حَتَّى صَارَ رَمَادًا، ثُمَّ أَلْزَقَتْهُ فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ» .

সাহল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, তাকে উহুদের দিনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আঘাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মূখমন্ডল আহত হল এবং তাঁর সামনের দু’টি দাঁত ভেঙ্গে গেল, তাঁর মাথার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে গেল। ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা রক্ত ধুইতে ছিলেন আর আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। তিনি যখন দেখতে পেলেন যে, রক্তক্ষরণ বাড়ছেই, তখন একটি চাটাই নিয়ে তা পুড়িয়ে ছাই করলেন এবং তা ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিলেন। তারপর রক্তক্ষরণ বন্ধ হল। [বুখারী, হাদীস নং ২৯১১, মুসলিম, হাদীস নং ১৭৯০।]

عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، قَالَ : سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ : شَهِدْتُ مِنَ المِقْدَادِ بْنِ الأَسْوَدِ مَشْهَدًا، لَأَنْ أَكُونَ صَاحِبَهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا عُدِلَ بِهِ، أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَدْعُو عَلَى المُشْرِكِينَ، فَقَالَ : لاَ نَقُولُ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوسَى : ﴿ فَٱذۡهَبۡ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَٰتِلَآ ٢٤ ﴾ [ المائ‍دة : ٢٤ ] ، وَلَكِنَّا نُقَاتِلُ عَنْ يَمِينِكَ، وَعَنْ شِمَالِكَ، وَبَيْنَ يَدَيْكَ وَخَلْفَكَ «فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشْرَقَ وَجْهُهُ وَسَرَّهُ» يَعْنِي : قَوْلَهُ .

ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মিকদাদ ইবন আসওয়াদকে এমন একটি ভূমিকায় পেয়েছি যে, সে ভূমিকায় যদি আমি হতাম, তবে যা দুনিয়ার সব কিছুর তুলনায় আমার নিকট প্রিয় হত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলেন, তখন তিনি মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু’আ করছিলেন। এতে তিনি (মিকদাদ ইবন আসওয়াদ) বললেন, মূসা আলাইহিস সালামের কাওম যেমন বলেছিল যে,

﴿ فَٱذۡهَبۡ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَٰتِلَآ ٢٤ ﴾ [ المائ‍دة : ٢٤ ]

“তুমি (মূসা) আর তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর”। [সূরা মায়েদা : ২৪] আমরা তেমন বলব না, বরং আমরাতো আপনার ডানে, বামে, সম্মুখে, পেছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করব। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি দেখলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখমন্ডল উজ্জ্বল হয়ে উঠল এবং (একথা) তাঁকে খুব আনন্দিত করল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৯৫২।]

عَنْ أَنَس بْن مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ : جَاءَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ إِلَى بُيُوتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا أُخْبِرُوا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوهَا، فَقَالُوا : وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ، قَالَ أَحَدُهُمْ : أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا، وَقَالَ آخَرُ : أَنَا أَصُومُ الدَّهْرَ وَلاَ أُفْطِرُ، وَقَالَ آخَرُ : أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلاَ أَتَزَوَّجُ أَبَدًا، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ، فَقَالَ : «أَنْتُمُ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا، أَمَا وَاللَّهِ إِنِّي لَأَخْشَاكُمْ لِلَّهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ، لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ، وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ، وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي» .

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনজনের একটি দল রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিবিগণের গৃহে আগমন করল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হলো, তখন তারা এ ইবাদতের পরিমাণ যেন কম মনে করল এবং বলল, আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমকক্ষ হতে পারি না। কারণ, তার আগে ও পরের সব গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতে সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সারা বছর সাওম পালন করব এবং কখনও বিরতি দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী বিবর্জিত থাকব-কখনও শাদী করব না। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা ঐ সকল ব্যক্তি যারা এরূপ কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি আমি বেশ আনুগত্যশীল; অথচ আমি সাওম পালন করি, আবার সাওম থেকে বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং ঘুমাই ও বিয়ে-শাদী করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নতের প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়। [বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৩।]

عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ : أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جُبَيْرٍ، قَالَ : أَخْبَرَنِي جُبَيْرُ بْنُ مُطْعِمٍ، أَنَّهُ بَيْنَا هُوَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهُ النَّاسُ، مُقْبِلًا مِنْ حُنَيْنٍ، عَلِقَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الأَعْرَابُ يَسْأَلُونَهُ حَتَّى اضْطَرُّوهُ إِلَى سَمُرَةٍ، فَخَطِفَتْ رِدَاءَهُ، فَوَقَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : «أَعْطُونِي رِدَائِي، فَلَوْ كَانَ عَدَدُ هَذِهِ العِضَاهِ نَعَمًا، لَقَسَمْتُهُ بَيْنَكُمْ، ثُمَّ لاَ تَجِدُونِي بَخِيلًا، وَلاَ كَذُوبًا، وَلاَ جَبَانًا» .

জুবাইর ইবন মুত‘য়ীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলেন, আর তখন তাঁর সঙ্গে আরো লোক ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন হুনাইন থেকে আসছিলেন। বেদুঈন লোকেরা তাঁর কাছে গনীমতের মাল চাইতে এসে তাঁকে আঁকড়ে ধরল। এমনকি তারা তাঁকে একটি বাবলা গাছের সাথে ঠেকিয়ে দিল এবং কাঁটা তার চাঁদরটাকে ধরল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থামলেন। তারপর বললেন, ‘আমার চাঁদরখানি দাও। আমার নিকট যদি এ সব কাঁটাদার বন্য বৃক্ষের সমপরিমাণ পশু থাকত, তবে সেগুলো তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম। এরপরও আমাকে তোমরা কখনো কৃপণ, মিথ্যাবাদী এবং দুর্বল চিত্ত পাবে না।’ [বুখারী, হাদীস নং ৩১৪৮।]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : كُنْتُ أَمْشِي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ بُرْدٌ نَجْرَانِيٌّ غَلِيظُ الحَاشِيَةِ، فَأَدْرَكَهُ أَعْرَابِيٌّ فَجَذَبَهُ جَذْبَةً شَدِيدَةً، حَتَّى نَظَرْتُ إِلَى صَفْحَةِ عَاتِقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أَثَّرَتْ بِهِ حَاشِيَةُ الرِّدَاءِ مِنْ شِدَّةِ جَذْبَتِهِ، ثُمَّ قَالَ : مُرْ لِي مِنْ مَالِ اللَّهِ الَّذِي عِنْدَكَ، فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ فَضَحِكَ، ثُمَّ «أَمَرَ لَهُ بِعَطَاءٍ» .

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে রাস্তায় চলছিলাম। তখন তিনি মোটা পাড়ের নাজরানে প্রস্তুত চাঁদর পরিহিত ছিলেন। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে খুব জোড়ে টেনে ধরল। অবশেষে আমি লক্ষ্য করলাম, তার জোরে টানার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাঁধে চাঁদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈন বলল, ‘আল্লাহর যে সম্পদ আপনার নিকট রয়েছে তা থেকে আমাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দিন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকিয়ে একটি মুচকি হাসি দিলেন, আর তাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩১৪৯। এ হাদীসটি ইমাম বুখারী রহ. বাব আদদিহক ওয়াতাবাসসুম অধ্যয়ে উল্লেখ করেছেন, হাদীস নং ৬০৮৮। মুসলিম, হাদীস নং ১০৫৭।]

عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ، آثَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُنَاسًا فِي القِسْمَةِ، فَأَعْطَى الأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ، وَأَعْطَى عُيَيْنَةَ مِثْلَ ذَلِكَ، وَأَعْطَى أُنَاسًا مِنْ أَشْرَافِ العَرَبِ فَآثَرَهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي القِسْمَةِ، قَالَ رَجُلٌ : وَاللَّهِ إِنَّ هَذِهِ القِسْمَةَ مَا عُدِلَ فِيهَا، وَمَا أُرِيدَ بِهَا وَجْهُ اللَّهِ، فَقُلْتُ : وَاللَّهِ لَأُخْبِرَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَيْتُهُ، فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ : «فَمَنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ يَعْدِلِ اللَّهُ وَرَسُولُهُ، رَحِمَ اللَّهُ مُوسَى قَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ» .

আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনাইনের দিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো কোন লোককে বন্টনে অন্যদের উপর প্রাধান্য দেন। তিনি আকরা‘ ইবন হাসিবকে একশ’ উট দিলেন। উয়াইনাকেও এ পরিমাণ দেন। সম্ভ্রান্ত আরব ব্যক্তিদের দিলেন। এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম। এখানে সুবিচার করা হয়নি। অথবা সে বলল, এতে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। (রাবী বলেন), তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবশ্যই জানিয়ে দিব। তখন আমি তাঁর কাছে এলাম এবং তাঁকে একথা জানিয়ে দিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি সুবিচার না করেন, তবে কে সুবিচার করবে? আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর প্রতি রহমত নাযিল করুন, তাঁকে এর চাইতেও অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি সবর করেছেন।’ [বুখারী, হাদীস নং ৩১৫০, মুসলিম, হাদীস নং ১০৬২।]

عَنْ سَلْمَانَ بْنِ رَبِيعَةَ، قَالَ : قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ : قَسَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَسْمًا، فَقُلْتُ : وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ، لَغَيْرُ هَؤُلَاءِ كَانَ أَحَقَّ بِهِ مِنْهُمْ، قَالَ : «إِنَّهُمْ خَيَّرُونِي أَنْ يَسْأَلُونِي بِالْفُحْشِ أَوْ يُبَخِّلُونِي، فَلَسْتُ بِبَاخِلٍ» .

সালমান ইবন রাবি‘আহ রহ. থেকে বর্ণিত, উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ ক্ষেত্রে বন্টন করলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এদের ছাড়া অন্যেরা এদের চাইতে অধিক হকদার ছিল। তিনি বললেন, এরা দু’টি কাজের একটির মধ্যে পতিত হতে আমাকে বাধ্য করেছে। এরা হয় খারাপ শব্দ প্রয়োগ করে আমার কাছে চাইবে অথবা আমার প্রতি কৃপণতার অভিযোগ আনবে। অথচ আমি কৃপণ হতে রাজী নই। [মুসলিম, হাদীস নং ১০৫৬।]

عَنْ زِيَادٍ، قَالَ : سَمِعْتُ المُغِيرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ : إِنْ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيَقُومُ لِيُصَلِّيَ حَتَّى تَرِمُ قَدَمَاهُ - أَوْ سَاقَاهُ - فَيُقَالُ لَهُ فَيَقُولُ : «أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا» .

মুগীরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রি জাগরণ করতেন অথবা রাবী বলেছেন, সালাত আদায় করতেন; এমনকি তাঁর পদযুগল অথবা তাঁর দু’পায়ের গোছা ফুলে যেত। তখন এ ব্যাপারে তাঁকে বলা হল, এত কষ্ট কেন করছেন? তিনি বলতেন, তাই বলে আমি কি একজন শুকর আদায়কারী বান্দা হব না? [বুখারী, হাদীস নং ১১৩০, মুসলিম, হাদীস নং ২৮১৯।]

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ : صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ بَعْدَ ثَمَانِي سِنِينَ، كَالْمُوَدِّعِ لِلْأَحْيَاءِ وَالأَمْوَاتِ، ثُمَّ طَلَعَ المِنْبَرَ فَقَالَ : «إِنِّي بَيْنَ أَيْدِيكُمْ فَرَطٌ، وَأَنَا عَلَيْكُمْ شَهِيدٌ، وَإِنَّ مَوْعِدَكُمُ الحَوْضُ، وَإِنِّي لَأَنْظُرُ إِلَيْهِ مِنْ مَقَامِي هَذَا، وَإِنِّي لَسْتُ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا، وَلَكِنِّي أَخْشَى عَلَيْكُمُ الدُّنْيَا أَنْ تَنَافَسُوهَا»، قَالَ : فَكَانَتْ آخِرَ نَظْرَةٍ نَظَرْتُهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .

‘উকবা ইবন ‘আমির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আট বছর পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ যুদ্ধের শহীদদের জন্য (কবরস্থানে গিয়ে) এমনভাবে দো‘আ করলেন যেমন কোনো বিদায় গ্রহনকারী জীবিত ও মৃতদের জন্য দো‘আ করেন। তারপর তিনি (সেখান থেকে ফিরে এসে) মিম্বরে উঠে বললেন, আমি তোমাদের অগ্রে প্রেরিত এবং আমিই তোমাদের সাক্ষীদাতা। এরপর হাউযে কাউসারের পাড়ে তোমাদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হবে। আমার এ জায়গা থেকেই আমি হাউযের স্থান দেখতে পাচ্ছি। তোমরা শির্কে লিপ্ত হয়ে যাবে আমি এ আশংকা করি না। তবে আমার আশংকা হয় যে, তোমরা দুনিয়াদার হবে, তাতে প্রতিযোহগিতায় লিপ্ত হবে।

বর্ণনাকারী বলেন, আমার এ দেখাই ছিল রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষবারের মত দেখা। [বুখারী, হাদীস নং ৪০৪২, মুসলিম, হাদীস নং ২২৯৬।]

عَنْ زُرَارَةَ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ هِشَامِ بْنِ عَامِرٍ، أَرَادَ أَنْ يَغْزُوَ فِي سَبِيلِ اللهِ، فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ، فَأَرَادَ أَنْ يَبِيعَ عَقَارًا لَهُ بِهَا فَيَجْعَلَهُ فِي السِّلَاحِ وَالْكُرَاعِ، وَيُجَاهِدَ الرُّومَ حَتَّى يَمُوتَ، فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ لَقِيَ أُنَاسًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ، فَنَهَوْهُ عَنْ ذَلِكَ، وَأَخْبَرُوهُ أَنَّ رَهْطًا سِتَّةً أَرَادُوا ذَلِكَ فِي حَيَاةِ نَبِيِّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَهَاهُمْ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَالَ : «أَلَيْسَ لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ؟» فَلَمَّا حَدَّثُوهُ بِذَلِكَ رَاجَعَ امْرَأَتَهُ، وَقَدْ كَانَ طَلَّقَهَا وَأَشْهَدَ عَلَى رَجْعَتِهَا، فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ، فَسَأَلَهُ عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى أَعْلَمِ أَهْلِ الْأَرْضِ بِوِتْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ : مَنْ؟ قَالَ : عَائِشَةُ، فَأْتِهَا، فَاسْأَلْهَا، ثُمَّ ائْتِنِي فَأَخْبِرْنِي بِرَدِّهَا عَلَيْكَ، فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهَا، فَأَتَيْتُ عَلَى حَكِيمِ بْنِ أَفْلَحَ، فَاسْتَلْحَقْتُهُ إِلَيْهَا، فَقَالَ : مَا أَنَا بِقَارِبِهَا، لِأَنِّي نَهَيْتُهَا أَنْ تَقُولَ فِي هَاتَيْنِ الشِّيعَتَيْنِ شَيْئًا، فَأَبَتْ فِيهِمَا إِلَّا مُضِيًّا، قَالَ : فَأَقْسَمْتُ عَلَيْهِ، فَجَاءَ فَانْطَلَقْنَا إِلَى عَائِشَةَ، فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهَا، فَأَذِنَتْ لَنَا، فَدَخَلْنَا عَلَيْهَا، فَقَالَتْ : «أَحَكِيمٌ؟» فَعَرَفَتْهُ، فَقَالَ : نَعَمْ، فَقَالَتْ : «مَنْ مَعَكَ؟» قَالَ : سَعْدُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَتْ : «مَنْ هِشَامٌ؟» قَالَ : ابْنُ عَامِرٍ، فَتَرَحَّمَتْ عَلَيْهِ، وَقَالَتْ خَيْرًا - قَالَ قَتَادَةُ : وَكَانَ أُصِيبَ يَوْمَ أُحُدٍ - فَقُلْتُ : يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ خُلُقِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ : «أَلَسْتَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ؟» قُلْتُ : بَلَى، قَالَتْ : «فَإِنَّ خُلُقَ نَبِيِّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ الْقُرْآنَ»، قَالَ : فَهَمَمْتُ أَنْ أَقُومَ وَلَا أَسْأَلَ أَحَدًا عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أَمُوتَ، ثُمَّ بَدَا لِي، فَقُلْتُ : أَنْبِئِينِي عَنْ قِيَامِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ : «أَلَسْتَ تَقْرَأُ يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ؟» قُلْتُ : بَلَى، قَالَتْ : «فَإِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ افْتَرَضَ قِيَامَ اللَّيْلِ فِي أَوَّلِ هَذِهِ السُّورَةِ، فَقَامَ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ حَوْلًا، وَأَمْسَكَ اللهُ خَاتِمَتَهَا اثْنَيْ عَشَرَ شَهْرًا فِي السَّمَاءِ، حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ فِي آخِرِ هَذِهِ السُّورَةِ التَّخْفِيفَ، فَصَارَ قِيَامُ اللَّيْلِ تَطَوُّعًا بَعْدَ فَرِيضَةٍ» قَالَ : قُلْتُ : يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْبِئِينِي عَنْ وِتْرِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ : " كُنَّا نُعِدُّ لَهُ سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ، فَيَبْعَثُهُ اللهُ مَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ، فَيَتَسَوَّكُ، وَيَتَوَضَّأُ، وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لَا يَجْلِسُ فِيهَا إِلَّا فِي الثَّامِنَةِ، فَيَذْكُرُ اللهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ، ثُمَّ يَنْهَضُ وَلَا يُسَلِّمُ، ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّ التَّاسِعَةَ، ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ، ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا، ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَتِلْكَ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يَا بُنَيَّ، فَلَمَّا أَسَنَّ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَخَذَهُ اللَّحْمُ أَوْتَرَ بِسَبْعٍ، وَصَنَعَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِثْلَ صَنِيعِهِ الْأَوَّلِ، فَتِلْكَ تِسْعٌ يَا بُنَيَّ، وَكَانَ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا صَلَّى صَلَاةً أَحَبَّ أَنْ يُدَاوِمَ عَلَيْهَا، وَكَانَ إِذَا غَلَبَهُ نَوْمٌ، أَوْ وَجَعٌ عَنْ قِيَامِ اللَّيْلِ صَلَّى مِنَ النَّهَارِ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً، وَلَا أَعْلَمُ نَبِيَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَرَأَ الْقُرْآنَ كُلَّهُ فِي لَيْلَةٍ، وَلَا صَلَّى لَيْلَةً إِلَى الصُّبْحِ، وَلَا صَامَ شَهْرًا كَامِلًا غَيْرَ رَمَضَانَ، قَالَ : فَانْطَلَقْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَحَدَّثْتُهُ بِحَدِيثِهَا، فَقَالَ : صَدَقَتْ لَوْ كُنْتُ أَقْرَبُهَا، أَوْ أَدْخُلُ عَلَيْهَا لَأَتَيْتُهَا حَتَّى تُشَافِهَنِي بِهِ، قَالَ : قُلْتُ لَوْ عَلِمْتُ أَنَّكَ لَا تَدْخُلُ عَلَيْهَا مَا حَدَّثْتُكَ حَدِيثَهَا .

যুরারা (রহ.) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, সা‘দ ইবন হিশাম ইবন আমির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার ইচ্ছা করে মদীনায় এলেন এবং সেখানে তাঁর একটি সম্পত্তি বিক্রি করে তা যুদ্ধাস্ত্র ও ঘোড়া সংগ্রহে ব্যয় করার এবং মৃত্যু পর্যন্ত রোমানদের বিরুদ্ধে জিহাদে আত্মনিয়োগ করার সংকল্প করলেন। মদীনায় আসার পর মদীনাবাসী কিছু লোকের সাথে সাক্ষাৎ হলে তাঁরা ঐ কাজ করতে নিষেধ করলেন এবং তাঁকে জানালেন যে, ছয় জনের একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় এরূপ ইচ্ছা করেছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিষেধ করেন এবং বলেন, “আমার মধ্যে তোমাদের জন্য কি কোনো আদর্শ নেই”? মদীনাবাসীরা তাঁকে এ ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি নিজের স্ত্রীর সাথে রাজ‘আত (পুনরায় স্ত্রীকে বরণ) করলেন। কেননা তিনি তাঁকে তালাক দিয়েছিলেন এবং তিনি তাঁর এ রাজ‘আতের ব্যাপারে সাক্ষীও রাখলেন। এরপর তিনি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে গিয়ে তাঁকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়িতর সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়িতর সম্পর্কে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক বিজ্ঞ ব্যক্তি সম্পর্কে কি তোমাকে বলে দিব না? তিনি বললেন, তিনি কে? ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, তিনি আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা, তাঁর কাছে গিয়ে তুমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করবে পরে আমার কাছে এসে তোমাকে দেওয়া তার জবাব সম্পর্কে অবহিত করবে। আমি তখন তাঁর কাছে রওয়ানা হলাম। আর হাকীম ইবন আফলাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে গিয়ে আমার সঙ্গে আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কাছে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। তিনি বললেন, আমি তো তাঁর নিকট যাই না। কেননা (বিবাদমান) দু’দল সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে আমি তাকে নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি তাতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করেন। সা‘আদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তখন আমি তাঁকে কসম দিলাম। তখন তিনি তৈয়ার হলেন। আমরা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার উদ্দেশ্যে চললাম এবং তাঁর কাছে গিয়ে অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাদের অনুমতি দিলেন। আমরা তাঁর ঘরে প্রবেশ করলে তিনি বললেন, হাকীম না কি? তিনি তাঁকে চিনে ফেলেছিলেন। উত্তরে হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হ্যাঁ। আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, তোমার সঙ্গে কে? হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, সা‘দ ইবন হিশাম। আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, কোন হিশাম? হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ইবন আমির। তখন আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর জন্য রহমতের দো‘আ করলেন এবং তাঁর সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করলেন। রাবী কাতাদা (রহ.) বলেছেন, আমির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। আমি (সা‘দ) বললাম, হে, উম্মুল মু’মিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আখলাক সস্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি কুরআন পাঠ কর না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্র তো ছিল আল-কুরআনই। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তখন আমার ইচ্ছে ছিল যে, উঠে যাই এবং মৃত্যু পর্যন্ত কাউকে কোনো বিষয় জিজ্ঞাসা করব না। পরে আবার মনে হল (আরো কিছু জিজ্ঞাসা করি) তাই আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের ইবাদত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন! তিনি বললেন, তুমি কি সূরা “ইয়া আয়্যুহাল মুযযামিল পড় না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ এ সূরার প্রথমাংশ (ইবাদত) রাত্রি জাগরণ ফরয করে দিয়েছিলেন। তখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ এক বছর যাবত (তাহাজ্জুদের জন্য) রাত্রি জাগরণ করলেন। আর আল্লাহ তা‘আলা এ সূরার শেষ অংশ বার মাস পর্যন্ত আসমানে রুখে রাখেন। অবশেষে এ সূরার শেষ অংশ নাযিল করে সহজ করে দিলেন। ফলে রাত্রি জাগরণ ফরয হওয়ার পরে নফলে পরিণত হয়। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, হে উম্মুল মুমিনীন! আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়িতর সালাত সম্পর্কে অবহিত করুন! তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্য তাঁর মিসওয়াক ও অযুর পানি প্রস্তুত রাখতাম। রাতের যে সময় আল্লাহর ইচ্ছা হত তাকে জাগিয়ে দিতেন। তিনি তখন মিসওয়াক ও অযু করতেন এবং নয় রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। তিনি এর মাঝে আর বসতেন না, অষ্টম রাক‘আত ব্যতীত। তখন তিনি আল্লাহর যিকর করতেন, তাঁর হামদ করতেন এবং তাঁর কাছে দো‘আ করতেন। তারপর সালাম না করেই উঠে পড়তেন এবং নবম রাক‘আত আদায় করে বসতেন এবং আল্লাহর যিকির ও তাঁর হামদ ও তাঁর কাছে দো‘আ করতেন। পরে এমনভাবে সালাম করতেন যা আমরা শুনতে পেতাম। সালাম করার পরে বসে দু’রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। বৎস, এ হল মোট এগার রাক‘আত। পরে যখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বয়োঃবৃদ্ধ হয়ে গেলেন এবং তিনি স্থুলদেহী হয়ে গেলেন, তখন সাত রাক‘আত দিয়ে বিতর আদায় করতেন। আর শেষ দু’ রাক‘আতে তাঁর আগের আমলের অনুরূপ আমল করতেন। বৎস, এভাবে হল নয় রাক‘আত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো সালাত আদায় করতেন তখন তাতে স্থায়িত্ব রক্ষা করা পছন্দ করতেন। আর কখনো নিদ্রা বা কোন ব্যাধি তাঁর রাত জেগে ইবাদতের ব্যাপারে তাঁকে সংঘাত ঘটালে দিনের বেলা বার রাক‘আত সালাত আদায় করে নিতেন। আর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই রাতে পূর্ণ কুরআন পড়েছেন বলে আমার জানা নেই এবং তিনি ভোর পর্যন্ত সারা রাত সালাত আদায় করেন নি এবং রমাদান ব্যতীত অন্য কোনো পূর্ণ মাস সাওম পালন করেন নি। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, পরে আমি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে গেলাম এবং আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার বর্ণিত হাদীস তাঁর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, ঠিকই বলেছেন। আমি যদি তাঁর নিকটবর্তী হতাম, অথবা বললেন, আমি যদি তাঁর সঙ্গে যেতাম তাহলে অবশ্যই আমি তাঁর কাছে গিয়ে সরাসরি তার মুখে এ হাদীস শুনতাম। সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, আমি যদি জানতাম যে, তাঁর কাছে যান না, তবে তাঁর হাদীস আমি আপনাকে শোনাতাম না। [মুসলিম, হাদীস নং ৭৪৬।]

عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَبِثَ عَشْرَ سِنِينَ يَتَّبِعُ الْحَاجَّ فِي مَنَازِلِهِمْ فِي الْمَوْسِمِ وَبِمَجَنَّةٍ وَبِعُكَاظٍ، وَبِمَنَازِلِهِمْ بِمِنًى يَقُولُ : " مَنْ يُؤْوِينِي، مَنْ يَنْصُرُنِي حَتَّى أُبَلِّغَ رِسَالَاتِ رَبِّي وَلَهُ الْجَنَّةُ؟ " ، فَلَا يَجِدُ أَحَدًا يَنْصُرُهُ وَيُؤْوِيهِ، حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ يَرْحَلُ مِنْ مُضَرَ، أَوْ مِنَ الْيَمَنِ، إِلَى ذِي رَحِمِهِ، فَيَأْتِيهِ قَوْمُهُ، فَيَقُولُونَ : احْذَرْ غُلَامَ قُرَيْشٍ لَا يَفْتِنُكَ، وَيَمْشِي بَيْنَ رِحَالِهِمْ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ يُشِيرُونَ إِلَيْهِ بِالْأَصَابِعِ، حَتَّى بَعَثَنَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ مِنْ يَثْرِبَ، فَيَأْتِيهِ الرَّجُلُ فَيُؤْمِنُ بِهِ، فَيُقْرِئُهُ الْقُرْآنَ، فَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ، فَيُسْلِمُونَ بِإِسْلَامِهِ، حَتَّى لَمْ يَبْقَ دَارٌ مِنْ دُورِ يَثْرِبَ إِلَّا فِيهَا رَهْطٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يُظْهِرُونَ الْإِسْلَامَ، ثُمَّ بَعَثَنَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ، فَأْتَمَرْنَا، وَاجْتَمَعْنَا سَبْعُونَ رَجُلًا مِنَّا، فَقُلْنَا : حَتَّى مَتَى نَذَرُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُطْرَدُ فِي جِبَالِ مَكَّةَ، وَيَخَافُ، فَرَحَلْنَا حَتَّى قَدِمْنَا عَلَيْهِ فِي الْمَوْسِمِ، فَوَاعَدْنَاهُ شِعْبَ الْعَقَبَةِ، فَقَالَ عَمُّهُ الْعَبَّاسُ : يَا ابْنَ أَخِي، إِنِّي لَا أَدْرِي مَا هَؤُلَاءِ الْقَوْمُ الَّذِينَ جَاءُوكَ؟ إِنِّي ذُو مَعْرِفَةٍ بِأَهْلِ يَثْرِبَ، فَاجْتَمَعْنَا عِنْدَهُ مِنْ رَجُلٍ وَرَجُلَيْنِ، فَلَمَّا نَظَرَ الْعَبَّاسُ فِي وُجُوهِنَا، قَالَ : هَؤُلَاءِ قَوْمٌ لَا أَعْرِفُهُمْ، هَؤُلَاءِ أَحْدَاثٌ، فَقُلْنَا : يَا رَسُولَ اللهِ، عَلَامَ نُبَايِعُكَ؟ قَالَ : " تُبَايِعُونِي عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي النَّشَاطِ وَالْكَسَلِ، وَعَلَى النَّفَقَةِ فِي الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ، وَعَلَى الْأَمْرِ بِالْمَعْرُوفِ، وَالنَّهْيِ عَنِ الْمُنْكَرِ، وَعَلَى أَنْ تَقُولُوا فِي اللهِ لَا تَأْخُذُكُمْ فِيهِ لَوْمَةُ لَائِمٍ، وَعَلَى أَنْ تَنْصُرُونِي إِذَا قَدِمْتُ يَثْرِبَ، فَتَمْنَعُونِي مِمَّا تَمْنَعُونَ مِنْهُ أَنْفُسَكُمْ وَأَزْوَاجَكُمْ وَأَبْنَاءَكُمْ وَلَكُمُ الْجَنَّةُ " ، فَقُمْنَا نُبَايِعُهُ، فَأَخَذَ بِيَدِهِ أَسْعَدُ بْنُ زُرَارَةَ وَهُوَ أَصْغَرُ السَّبْعِينَ، فَقَالَ : رُوَيْدًا يَا أَهْلَ يَثْرِبَ، إِنَّا لَمْ نَضْرِبْ إِلَيْهِ أَكْبَادَ الْمَطِيِّ إِلَّا وَنَحْنُ نَعْلَمُ أَنَّهُ رَسُولُ اللهِ .

আবু যোবায়ের রহ. থেকে বর্ণিত, জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে এ হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ বছর মক্কায় হজ্জের মৌসুমে মক্কার অলিতে গলিতে, ওকাযমেলা ও মিনায় হাজীদের সাথে দেখা করতেন এবং তাদেরকে বলতেন, কে আমাকে সাহায্য করবে? কে আমাকে সহযোগিতা করবে যাতে আমি আমার রবের রিসালাত পৌঁছাতে পারি, বিনিময়ে তাঁর জন্য রয়েছে জান্নাত। তিনি কাউকেই তাঁর সাহায্যকারী পাননি। এমনকি মুদার, ইয়ামেন ও যুর সামাদ প্রভৃতি অঞ্চল থেকে লোকজন আসত তারা জাতির কাছে ফিরে গিয়ে বলত, তোমরা কুরাইশের এক যুবক থেকে সাবধান হও, তাঁর দিকে ফিরেও তাকাবে না। তিনি হজ্জযাত্রীদের মাঝে ঘুরে বেড়াতেন ও তাদেরকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিতেন, কিন্তু লোকজন তাঁর দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে উপহাস করত। পরে আল্লাহ ইয়াসরিব (মদিনা) থেকে আমাদেরকে পাঠালেন, ফলে তার কাছে মদীনার কোনো লোক আসত এবং ইসলাম গ্রহণ করতো। তাকে কুরআন পড়ে শোনানো হতো, সে তার জাতির কাছে গিয়ে ইসলামের দাওয়াত দিত, তারা তার ইসলামের কারণে ইসলাম গ্রহণ করে নিতো, ফলে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, মদীনায় এমন কোনো ঘর বাকী ছিল না যেখানে একদল ইসলাম গ্রহণ করে নি (অর্থাৎ বিরাট সংখ্যক লোক ইসলাম গ্রহণ করল)। অতঃপর আমাদেরকে আল্লাহ পাঠালেন, আমরা পরস্পর পরামর্শ করলাম, আর আমাদের মধ্য থেকে সত্তরজন লোক শি‘আবে ‘আকাবাতে একত্রিত হলাম এবং বললাম, আর কতদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মক্কার মানুষদের দ্বারা তাদের পাহাড়সমূহে নিগৃহীত হতে ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় ছেড়ে রাখব? সুতরাং আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে প্রবেশ করলাম, হজ মওসুমে তাই আমরা তার কাছে আসলাম। তাকে আমরা আকাবার পাহাড়ে পেলাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চাচা আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে ভাতিজা আমি জানিনা কারা তোমার কাছে এসেছে? আমি তো ইয়াসরিবের লোকদেরকে জানি। ফলে আমরা একজন দু’জন করে একত্রিত হলাম। অতঃপর আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদের দেখে বললেন, এদেরকে আমি চিনি না। এরা নতুন লোক। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমরা কিসের উপর বাই‘আত গ্রহণ করব? তিনি বললেন, তোমরা বাই‘আত গ্রহণ করবে যে, সর্বাবস্থায় আমার কথা শোনবে, আনুগত্য করবে, সুখে দুঃখে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে, আল্লাহর ব্যাপারে নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না এবং আমি ইয়াসরেবে আগমন করলে আমাকে সাহায্য করবে, আমার পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করবে যেভাবে তোমাদের পরিবার-পরিজন থেকে প্রতিরোধ করে থাক। বিনিময়ে তোমাদের জন্য জান্নাত থাকবে। তখন আমরা তাঁর হাত ধরলাম বাই‘আত করার জন্য, তখন আমাদের সত্তরজনের মধ্যকার ছোটজন আস‘আদ ইবন যুরারা তাঁর হাত ধরলেন এবং বললেন, থাম, হে ইয়াসরিববাসী আমরা উট চালিয়ে এখানে এসেছে এটা ভালো করেই জেনে যে তিনি আল্লাহর রাসূল। আজ তাকে নিয়ে বের হয়ে আসার অর্থ হচ্ছে তোমাদের সকল আরবদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, তাদের উত্তম লোকদের হত্যা করা, আর তোমরা তরবারীর দ্বারা কর্তিত হওয়া। এমতাবস্থায় হয় তোমরা যখন তরবারীর সম্মুখীন হবে তখন তাতে ধৈর্য ধারণ করবে, তোমাদের উত্তম লোকদের মৃত্যু মেনে নিবে, সকল আরবদের বিপক্ষে দাঁড়াবে, সুতরাং সেটা তোমরা গ্রহণ করতে পার, আর তার প্রতিদান তোমরা আল্লাহর কাছে পাবে, নতুবা তোমরা নিজেদের ব্যাপারে ভীত এক জাতিতে পরিণত হয়ে তাকে ছেড়ে দিতে পার, আর তা আল্লাহর কাছে ওযর পেশ করার সুযোগ হিসেবে গ্রহণীয় হবে। তখন তার সাথীরা বলল, হে আস‘আদ ইবন যুরারা, তোমার হাত সরাও, আল্লাহর শপথ, আমরা এ বাই‘আত কখনো পরিত্যাগ করবো না, তা থেকে মুক্তিও চাইবো না, তখন আমরা একজন একজন করে আব্বাসের পাহারায় তার হাতে বাই‘আত নিয়েছলাম আর তিনি তার জন্য আমাদের জান্নাত দিচ্ছিলেন [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১৪৬৫৩। আর হাদীসটি বাইহাকী তার দালায়েলুন নাবুওয়াত গ্রন্থে বর্ণনা করেন, (২/৪৩২)।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন