মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে বর্ণিত, (আমার পিতা) আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন হারাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ঋনী অবস্থায় মারা যান। পাওনাদারেরা যেন তাঁর কিছু ঋন ছেড়ে দেয়, এজন্য আমি রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সাহায্য চাইলাম। রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে কিছু ঋন ছেড়ে দিতে বললে, তারা তা করলনা। তখন রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যাও, তোমার প্রত্যেক ধরনের খেজুরকে আলাদা আলাদা কর রাখ। আজওয়া আলাদা এবং আযকা যায়দ আলাদা করে রাখ। পরে আমাকে খবর দিও। [জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন] আমি তা করে রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খবর দিলাম। তিঁনি এসে খেজুরের (স্তুপ এর) উপরে বা তার মাঝখানে বসলেন। তারপর বললেন, পাওনাদারদের মেপে দাও। আমি তাদের মেপে দিতে লাগলাম, এমনকি তাদের পাওনা পুরোপুরী দিয়ে দিলাম। আর আমার খেজুর এরূপ থেকে গেল, যেন এ থেকে কিছুই কমেনি। ফিরাস (রহ.) শা’বী (রহ.) সূত্রে জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ পর্যন্ত মেপে দিতে থাকলেন যে, তাদের ঋন পরিশোধ করে দিলেন। হিশাম (রহ.) ওহাব (রহ.) সূত্রে জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন গাছ থেকে খেজুর কেটে নাও এবং পুরোপুরী আদায় করে দাও। [বুখারী, হাদীস নং ২১২৭।]
জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা একজন ইয়াহুদীর কাছে থেকে নেওয়া ত্রিশ ওসাক (খেজুর) ঋণ রেখে ইন্তিকাল করেন। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার নিকট (ঋণ পরিশোধের জন্য) সময় চান। কিন্তু সে সময় দিতে অস্বীকার করে। জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে কথা বললেন, যেন তিনি তার জন্য ইয়াহূদীর কাছে সুপারিশ করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং ইয়াহূদীর সাথে কথা বলেন, ঋণের বদলে সে যেন তার খেজুর গাছের ফল নিয়ে নেয়। কিন্তু সে তা অস্বীকার করল। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগানে প্রবেশ করে সেখানে গাছের (চারদিক) হাঁটা চলা করলেন। তারপর তিনি জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন, ফল পেড়ে তার সম্পূর্ণ প্রাপ্য আদায় করে দাও। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসার পর তিনি ফল পাড়লেন এবং তাকে এরপর পূর্ণ ত্রিশ ওসাক (খেজুর) দিয়ে দিলেন এবং সতর ওসাক (খেজুর) অতিরিক্ত রয়ে গেল। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য আসলেন। তিনি তাঁকে আসরের সালাত আদায় করা অবস্থায় পেলেন। তিনি সালাত শেষ করলে তাঁকে অতিরিক্ত খেজুরের কথা অবহিত করলেন। তিনি বললেন- খবরটি ইবন খাত্তাব (উমর) কে পৌঁছাও। জাবির (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে গিয়ে খবরটি পৌঁছালেন। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাগানে প্রবেশ করে হাঁটাচলা করলেন, তখনই আমি বুঝতে পারছিলাম যে, নিশ্চয় এতে বরকত দান করা হবে। [বুখারী, হাদীস নং ২৩৯৬।]
আব্দুর রহমান ইবন আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোন এক সফরে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমরা একশ ত্রিশজন লোক ছিলাম। সে সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কারো সাথে কি খাবার আছে? দেখা গেল, এক ব্যক্তির সংগে এক সা কিংবা তার কমবেশী পরিমান খাদ্য (আটা) আছে। সে আটা গোলানো হল। তারপর দীর্ঘ দেহী এলোমেলো চুল বিশিষ্ট এক মুশরিক এক পাল বকরী হাকিয়ে নিয়ে এল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন। বিক্রি করবে, না, উপহার দিবে? সে বলল না, বরং বিক্রি করব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা কাছ থেকে একটা বকরী কিনে নিলেন। একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই কলিজার কিছু কিছু করে দিলেন। যে উপস্থিত ছিল, তাকে হাতে দিলেন; আর অনুপস্থিত ছিলো। তার জন্য তুলে রাখলেন। তারপর দু’টি পাত্রে তিন গোশত ভাগ করে রাখলেন। সবাই তৃপ্তির সাথে খেলেন। আর উভয় পাত্রে কিছু উদ্বৃত্ত থেকে গেল। সেগুলো আমরা উটের পিঠে উঠিয়ে নিলাম। অথবা রাবী যা বললেন। [বুখারী, হাদীস নং ২৬১৮, মুসলিম, হাদীস নং ২০৫৬।]
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তদীয় (পত্নী) উম্মে সুলাইমকে বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্ঠস্বর দুর্বল শুনেছি। আমি তাঁর মধ্যে ক্ষুদা বুঝতে পেরেছি। তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ আছে। এই বলে তিনি কয়েকটা যবের রুটি বের করলেন। তারপর তাঁর একখানা ওড়না বের করে এর কিয়দংশ দিয়ে রুটিগুলো মুড়ে আমার হাতে গোপন করে রেখে দিলেন ও ওড়নার উপর অংশ আমার শরীর জড়িয়ে দিলেন এবং আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে পাঠালেন। রাবী আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি তাঁর নিকট গেলাম। ঐ সময় তিনি কতিপয় লোকসহ মসজিদে অবস্থান করছিলেন। আমি গিয়ে তাদের সম্মুখে দাঁড়ালাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখে বললেন, তোমাকে আবু তালহা পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সঙ্গীদেরকে বললেন, চলো, আবু তালহা আমাদেরকে দাওয়াত করেছে। আমি তাঁদের আগেই চলে গিয়ে আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন বার্তা শুনালাম। ইহা শুনে আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, হে উম্মে সুলাইম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসছেন। তাঁদেরকে খাওয়ানোর মত কিছু আমাদের নিকট নেই। উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বাড়ী হতে কিছুদূর অগ্রসর হলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাৎ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহাকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ঘরে আসলেন, আর বললেন, হে উম্মে সুলাইম, তোমার নিকট যা কিছু আছে নিয়ে এসো। তিনি যবের ঐ রুটিগুলো হাযির করলেন এবং তাঁর নির্দেশে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করা হল। উম্মে সুলাইম ঘিয়ের পাত্র ঝেড়ে মুছে কিছু ঘি বের করে তা তরকারী স্বরূপ পেশ করলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু পাঠ করে তাতে ফুঁ দিলেন, এরপর দশজনকে নিয়ে আসতে বললেন। তাঁরা দশজন আসলেন এবং রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন। তারপর আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তাঁরাও আসলেন এবং পেটভরে খেয়ে নিলেন। অনুরূপভাবে সমবেত সকলেই রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হলেন। লোকজন সর্বমোট সত্তর বা আশিজন ছিলেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৫৭৮, মুসলিম, হাদীস নং ২০৪০।]
আয়মান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট গেলে তিনি বললেন, খন্দক যুদ্ধের দিন আমরা পরিখা খনন করেছিলাম। এ সময় একখন্ড কঠিন পাথর বেরিয়ে আসলে (যা ভাঙ্গা যাচ্ছিল না) সকলেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, খন্দকের মাঝে একখন্ড শক্ত পাথর বেরিয়েছে (আমরা তা ভাংতে পারছি না)। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমি নিজে খন্দকে অবতরণ করব। এরপর তিনি দাঁড়ালেন। এ সময় তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরাও তিন দিন পর্যন্ত অনাহারী ছিলাম। কোনো কিছুর স্বাদও গ্রহণ করিনি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একখানা কোদাল হাতে নিয়ে প্রস্তরখন্ডে আঘাত করলেন। ফলে তৎক্ষণাৎ তা চূর্ণ হয়ে বালুকারাশিতে পরিণত হল। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুমতি দিন। (তিনি অনুমতি দিলে বাড়ি পৌঁছে) আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে আমি এমন কিছু দেখলাম যা আমি সহ্য করতে পারছি না। তোমার নিকট কোনো খাবার আছে কি? সে বলল, আমার কাছে কিছু যব ও একটি বকরীর বাচ্চা আছে। তখন বকরীর বাচ্চাটি আমি যবেহ করলাম। এবং সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। এরপর গোশত ডেকচিতে দিয়ে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম। এ সময় আটা খামির হচ্ছিল এবং ডেকচি চুলার উপর ছিল ও গোশত প্রায় রান্না হয়ে আসছিল। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার (বাড়িতে) সামান্য কিছু খাবার আছে। আপনি একজন বা দুইজন সাথে নিয়ে চলুন। তিনি বললেন, কি পরিমাণ খাবার আছে? আমি তার নিকট সব খুলে বললে তিনি বললেন, এ তো অনেক উত্তম। এরপর তিনি আমাকে ডেকে বললেন, তুমি তোমার স্ত্রীকে গিয়ে বল, সে যেন আমি না আসা পর্যন্ত উনান থেকে ডেকচি ও রুটি না নামায়। এরপর তিনি বললেন, উঠ! (জাবির তোমাদের খাবার দাওয়াত দিয়েছে) মুহাজিরগণ উঠলেন (এবং চলতে লাগলেন)। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বললেন, তোমার সর্বনাশ হোক! (এখন কি হবে?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো মুহাজির, আনসার এবং তাঁদের অন্য সাথীদের নিয়ে চলে আসছেন। তিনি (জাবিরের স্ত্রী) বললেন, তিনি কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (উপস্থিত হয়ে) বললেন, তোমরা সকলেই প্রবেশ কর এবং ভিড় করোনা। এ বলে তিনি রুটি টুকরো করে এরপর গোশত তিনি সাহাবীগণের নিকট তা বিতরণ করতে শুরু করলেন। (এগুলো পরিবেশন করার সময়) তিনি ডেকচি এবং উনান ঢেকে রেখেছিলেন। এমনি করে তিনি রুটি টুকরো করে হাত ভরে বিতরণ করতে লাগলেন। এতে সকলে পেট ভরে খাবার পরেও কিছু বাকী রয়ে গেল। তাই তিনি (জাবিরের স্ত্রীকে) বললেন, এ তুমি খাও এবং অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা লোকদেরও ক্ষুধা পেয়েছে। [বুখারী, হাদীস নং ৪১০১।]
জাবির ইবন আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন পরিখা খনন করা হচ্ছিল তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন আমি আমার স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কাছে কোনো কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দারুণ ক্ষুধার্ত দেখেছি। (এ কথা শুনে) তিনি একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা পরিমাণ যব বের করে দিলেন। আমাদের গৃহপালিত একটি বকরীর বাচ্চা ছিল। আমি সেটি যবেহ করলাম এবং গোশত কেটে কেটে ডেকচিতে ভরলাম। আর সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। আমি আমার কাজ শেষ করে চললাম। তখন সে (স্ত্রী) বলল, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের নিকট লজ্জিত করবেন না। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে চুপে চুপে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমরা আমাদের একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি এবং আমাদের ঘরে এক সা যব ছিল। তা আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আসুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চ স্বরে সবাইকে বললেন, হে পরিখা খননকারীগণ! জাবির খানার ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সকলেই চল। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার আসার পূর্বে তোমাদের ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও তৈরি করবে না। আমি (বাড়িতে) আসলাম এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে নিয়ে আসলেন, এরপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট আসলে সে বলল, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। (তুমি এ কি করলে? এতগুলো লোক নিয়ে আসলে? অথচ খাদ্য একেবারে নগন্য) আমি বললাম, তুমি যা বলেছ আমি তাই করেছি। এরপর সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে আটার খামির বের করে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন এবং বরকতের জন্য দো‘আ করলেন। এরপর তিনি ডেকচির দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তাতে মুখের লালা মিশিয়ে এর জন্য বরকতের দো‘আ করলেন। তারপর বললেন, (হে জাবির) রুটি প্রস্তুতকারিনীকে ডাকো। সে আমার কাছে বসে রুটি প্রস্তুত করুক এবং ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে গোশত পরিবেশন করুক। তবে চুলা থেকে ডেকচি নামাবে না। তাঁরা (আগন্তুক সাহাবীরা) ছিলেন সংখ্যায় এক হাজার। আমি আল্লাহ্র কসম করে বলছি, তাঁরা সকলেই তৃপ্তিসহকারে খেয়ে অবশিষ্ট খাদ্য রেখে চলে গেলেন। অথচ আমাদের ডেকচি পূর্বের ন্যায় তখনও টগবগ করছিল এবং আমাদের আটার খামির থেকেও পূর্বের মত রুটি তৈরি হচ্ছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৪১০২, মুসলিম, হাদীস নং ২০৩৯।]
আবু উসমান রহ. বলেন, একদিন আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আমাদের বনী রিফা‘আর মসজিদের নিকট গমনকালে তাকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, যখনই উম্মে সুলাইমের নিকট দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেতেন, তাঁকে সালাম দিতেন। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আরো বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যখন যয়নাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার সাথে শাদী হয়, তখন উম্মে সুলাইম আমাকে বললেন, চল আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কিছু হাদীয়া পাঠাই। আমি তাকে বললাম, হ্যাঁ, এ ব্যবস্থা করুন। তখন তিনি খেজুর, মাখন ও পনির এক সাথে মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে একটি ডেকচিতে করে আমার মারফত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পাঠালেন। আমি সেসব নিয়ে তাঁর খিদমতে উপস্থিত হলে তিনি এগুলো রেখে দিতে বলেন, এবং আমাকে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে ডেকে আনার আদেশ করলেন। আরো বললেন, যার সাথে দেখা হয় তাকেও দাওয়াত দিবে। তিনি যেভাবে আমাকে হুকুম করলেন, আমি সেইভাবে কাজ করলাম। যখন আমি ফিরে এলাম, তখন ঘরে অনেক লোক দেখতে পেলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন হালুয়া (হাইশা) পাত্রের মধ্যে হাত রাখা অবস্থায় ছিলেন এবং আল্লাহ তা‘আলার মর্জি মোতাবেক কিছু কথা বললেন। তারপর তিনি দশ দশ জন করে লোক খাবারের জন্য ডাকলেন এবং বললেন, তোমরা ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু কর এবং প্রত্যেকে পাত্রের নিজ নিজ দিক হতে খাও। যখন তাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হল তাদের মধ্য থেকে অনেকেই চলে গেল এবং কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তা বলতে থাকল। যা দেখে আমি বিরক্তি বোধ করলাম। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে বের হয়ে অন্য ঘরে গেলেন। আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি বললাম, তারাও চলে গেছে তখন তিনি নিজের কক্ষে ফিরে এলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তিনি তাঁর কক্ষে থাকলেন এবং এই আয়াত পাঠ করলেন,
“হে মু’মিনগণ, তোমাদেরকে অনুমতি না দেওয়া হলে তোমরা খাবার তৈরির অপেক্ষা না করে নবীগৃহে খাবার জন্য প্রবেশ করো না। তবে যদি তোমাদেরকে ডাকা হয় তাহলে প্রবেশ কর এবং খাওয়া শেষ করে চলে যাবে। তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না এবং তোমাদের এরূপ আচরণ নবীর মনে কষ্ট হয়। তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করেন, কিন্তু আল্লাহ তা’আলা সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না”। [সূরা আল-আহযাব: ৫৩]
আবু উসমান (রহ.) বলেন, আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন যে, তিনি দশ বছর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমত করেছেন। [বুখারী, হাদীস নং ৫১৬৩।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলতেন, আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই, আমি ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটকে মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কোনো সময় ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি ক্ষুধার যন্ত্রনায় বাধ্য হয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীগণের বের হওয়ার পথে বসে থাকলাম। আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যেতে লাগলে আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি তাহলে আমাকে পরিতৃপ্ত করে কিছু খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছু করলেন না, কিছুক্ষন পর উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যাচ্ছিলেন, আমি তাকে কুরআনের একটা আয়াত সম্বন্ধে প্রশ্ন করলাম। এই সময়ও আমি প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন, কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আমার কোনো ব্যবস্থা করলেন না। তার পরক্ষনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন এবং আমার প্রাণে কি অস্থিরতা বিরাজমান এবং আমার চেহারার অবস্থা থেকে তিনি তা আঁচ করতে পারলেন। তারপর বললেন, হে আবূ হির! আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি হাযির আছি। তিনি বললেন, তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমি ও তার অনুসরন করলাম। তিনি ঘরে ঢুকবার অনুমতি চাইলেন এবং আমাকে ঢুকবার অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটা পেয়ালার মধ্যে কিছু পরিমান দুধ পেলেন। তিনি বললেন, এ দুধ কোথা থেকে এসেছে? তাঁরা বললেন, এটা আপনাকে অমুক পুরুষ অথবা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন, হে আবূ হির! আমি বললাম লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তুমি সুফফাবাসীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। রাবী বলেন, সুফফাবাসীরা ইসলামের মেহমান ছিলেন। তাদের কোনো পরিবার ছিল না এবং তাদের কোনো সম্পদ ছিল না এবং তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ার ও সুযোগ ছিলনা। যখন কোনো সাদাকা আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর যখন কোনো হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং এর থেকে নিজেও কিছু রাখতেন, এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমার মনে কিছুটা হতাশা এল, মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সুফফাবাসীদের কি হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমি শরীরে কিছু শক্তি পেতাম। এরপর যখন তারা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমিই যেন তা তাদেরকে দেই, আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব, কিন্তু আল্লাহ্ ও রাসূলের নির্দেশ না মেনে কোনো উপায় নেই। তাই তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম। তাঁরা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তারা এসে ঘরে আসন গ্রহণ করলেন। তিনি বললেন, হে আবূ হির! আমি বললাম আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বললেন তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফেরত দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমনকি আমি এরূপে দিতে দিতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌছালাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হয়েছিলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। আর বললেন, হে আবূ হির! আমি বললাম আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বললেন, এখন তো আমি আর তুমি আছি। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি ঠিক বলছেন। তিনি বললেন, এখন তুমি বসে পান কর। তখন আমি বসে কিছু পান করলাম। তিনি বললেন, তুমি আরও পান করো। আমি আরও পান করলাম। তিনি বারবার আমাকে পান করার নির্দেশ দিতে লাগলেন। এমন কি আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম! (আমার পেটে) আর পান করার মতো জায়গা আমি পাচ্ছি না। তিনি বললেন, তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিয়ে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ্ বলে বাকীটা পান করলেন। [বুখারী, হাদীস নং ৬৪৫২।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একটি সফরে ছিলাম। এক পর্যায়ে দলের রসদপত্র নিঃশেষ হয়ে গেল। পরিশেষে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কিছু সংখ্যক উট যবেহ করার মনস্থ করলেনত। রাবী বলেন যে, এতে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি সকলের রসদ সামগ্রী একত্র করে আল্লাহর কাছে দো‘আ করতেন, তবে ভাল হতো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই করলেন। যার কাছে গম ছিল সে গম এবং যার কাছে খেজুর ছিল সে খেজুর নিয়ে হাযির হলো, (তালহা ইবন মুসাররিফ বলেন) মুজাহিদ আরো বর্ণনা করেন যে, যার কাছে খেজুরের আটি ছিল, সে তাই নিয়ে হাযির হলো। আমি (তালহা) আরয করলাম, আটি দিয়ে কি করতেন? তিনি বললেন, তা চুষে পানি পান করতেন বর্ণনাকারী বললেন, তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংগৃহীত খাদ্য সামগ্রীর উপর দো‘আ করলেন। রাবী বলেন, অবশেষে লোকেরা রসদে নিজেদের পাত্র পূর্ণ করে নিল। রাবী বলেন যে, তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যে এ দুটি বিষয়ের প্রতি সন্দেহাতীত বিশ্বাস রেখে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [মুসলিম, হাদীস নং ২৭।]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অথবা আবু সাঈদ খূদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, (সন্দেহ রাবী ‘আমাশের) তাবুকের যুদ্ধের সময়ে লোকেরা দারুণ খাদ্যাভাবে পতিত হলো । তারা আরয করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের উটগুলো যবেহ করে তার গোশত খাই এবং আর চর্বি ব্যবহার করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যবেহ করতে পার। রাবী বলেন, ইত্যবসরে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আসলেন এবং আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি এরূপ করা হয়, তাহলে বাহন কমে যাবে বরং আপনি লোকদেরকে তাদের উদ্বৃত্ত রসদ নিয়ে উপস্হিত হতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে বরকতের দো‘আ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দিবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ- ঠিক আছে। একটি দস্তরখান আনতে বললেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের উদ্বৃত্ত রসদ চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ একমুঠো গম নিয়ে হাযির হলো, কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে হাযির হলো, কেউ এক টুকরা রুটি নিয়ে আসল, এভাবে কিছু পরিমাণ রসদ-সামগ্রী দস্তরখানায় জমা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দো‘আ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রে রসদপত্র ভর্তি করে নাও। সকলেই নিজ নিজ পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোনো পাত্রই আর অপূর্ণ রইল না। এরপর সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করলেন। কিছু উদ্বৃত্তও রয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-যে ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে এ কথা দু’টির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে, সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে না। [মুসলিম, হাদীস নং ২৭।]
আব্দুর রহমান ইবন আবী ‘আমরাহ আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর পিতার থেকে বর্ণনা করেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এক যুদ্ধে (তাবুকের যুদ্ধে) ছিলাম। তখন লোকেরা দারুণ খাদ্যাভাবে পতিত হলো। তারা আরয করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের কিছু উটগুলো যবেহ করে তার গোশত খাই এবং আর চর্বি ব্যবহার করি। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন দেখলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে, যবেহ করতে অনুমতি দিতে ইচ্ছা পোষণ করেছেন, তখন তিনি আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি এরূপ করা হয়, তাহলে বাহন কমে যাবে, আগামীকাল আমরা শত্রুর মোকাবলা করব ক্ষুধার্তাবস্থায় বরং আপনি লোকদেরকে তাদের উদ্বৃত্ত রসদ নিয়ে উপস্হিত হতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে বরকতের দো‘আ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দিবেন। অথবা রাবী বলেন, অচিরেই আল্লাহ আপনার দু‘আর বরকতে আমাদেরকে বরকত দিবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, ঠিক আছে। একটি দস্তরখান আনতে বললেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের উদ্বৃত্ত রসদ চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ একমুঠো গম নিয়ে হাযির হলো, কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে হাযির হলো, কেউ এক টুকরা রুটি নিয়ে আসল, এভাবে কিছু পরিমাণ রসদ-সামগ্রী দস্তরখানায় জমা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দো‘আ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রে রসদপত্র ভর্তি করে নাও। সকলেই নিজ নিজ পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোনো পাত্রই আর অপূর্ণ রইল না। এরপর সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করলেন। কিছু উদ্বৃত্তও রয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এবং তাঁর চোয়ালের দাঁত বের হয়েছিল। তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-যে ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে এ কথা দু’টির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে, কিয়ামতের দিন সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১৫৪৪৯। হাদীসটি সহীহ, এর সনদের বর্ণনাকারীরা সিকাহ।]
সামুরাহ ইবন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটি পাত্র থেকে দশজন দশজন করে আহার করতাম। একদল উঠে গেলে আরেক দল এসে বসত। আমরা নিজেরা বললাম, এটা কখনও খালি হবে না। সাহাবী রাবীকে বলেন, তুমি কিসে আশ্চর্য হচ্ছ? সেটা খালি হলেই এখান থেকে পূর্ণ হয়ে যেত, তিনি তাঁর হাত দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করলেন। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬২৫, ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ ই‘য়ালার নাম হলো ইয়াযীদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন শিখখীর।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/431/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।