hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণ

লেখকঃ শাইখ মুকবিল ইবন হাদী আল ওয়াদি‘য়ী

২২
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণের মধ্যে, একদল লোক সম্পর্কে তাঁর সংবাদ দেওয়া যে, তারা জান্নাতী। যাদের সম্পর্কে তিনি সংবাদ দিয়েছেন তাদের কেউ পরিবর্তন বা বেঈমান হয়েছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ افْتَقَدَ ثَابِتَ بْنَ قَيْسٍ، فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَا أَعْلَمُ لَكَ عِلْمَهُ، فَأَتَاهُ فَوَجَدَهُ جَالِسًا فِي بَيْتِهِ، مُنَكِّسًا رَأْسَهُ، فَقَالَ لَهُ : مَا شَأْنُكَ؟ فَقَالَ : شَرٌّ، كَانَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَأَتَى الرَّجُلُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ أَنَّهُ قَالَ كَذَا وَكَذَا، فَقَالَ مُوسَى : فَرَجَعَ إِلَيْهِ المَرَّةَ الآخِرَةَ بِبِشَارَةٍ عَظِيمَةٍ، فَقَالَ : " اذْهَبْ إِلَيْهِ فَقُلْ لَهُ : إِنَّكَ لَسْتَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، وَلَكِنَّكَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ ".

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবিত ইবন কায়েস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে (কয়েকদিন) তাঁর মজলিসে অনুপস্থিত পেলেন। তখন এক সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি তার সম্পর্কে জানি। তিনি গিয়ে দেখলেন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর ঘরে নত মস্তকে (গভীর চিন্তায়মগ্ন অবস্থায়) বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে সাবিত, কি অবস্থা তোমার? তিনি বললেন, অত্যন্ত করুণ। বস্তুতঃ তার গলার স্বর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গলার স্বর থেকে উঁচু হয়েছিল। কাজেই (কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী) তাঁর সব নেক আমল বরবাদ হয়ে গেছে। সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। ঐ ব্যক্তি ফিরে এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালেন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু এমন এমন বলেছে। মূসা ইবন আনাস (রহ.) (একজন রাবী) বলেন, ঐ সাহাবী পুনরায় এ মর্মে এক মহাসুসংবাদ নিয়ে হাজির হলেন (সাবিতের খেদমতে) যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি যাও সাবিতকে বল, নিশ্চয়ই তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত নও বরং তুমি জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। [বুখারী, হাদীস নং ৪৮৪৬।]

عن أبُى مُوسَى الأَشْعَرِي، أَنَّهُ تَوَضَّأَ فِي بَيْتِهِ، ثُمَّ خَرَجَ، فَقُلْتُ : لَأَلْزَمَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَأَكُونَنَّ مَعَهُ يَوْمِي هَذَا، قَالَ : فَجَاءَ المَسْجِدَ فَسَأَلَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا : خَرَجَ وَوَجَّهَ هَا هُنَا، فَخَرَجْتُ عَلَى إِثْرِهِ أَسْأَلُ عَنْهُ حَتَّى دَخَلَ بِئْرَ أَرِيسٍ، فَجَلَسْتُ عِنْدَ البَابِ، وَبَابُهَا مِنْ جَرِيدٍ حَتَّى قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاجَتَهُ فَتَوَضَّأَ، فَقُمْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ عَلَى بِئْرِ أَرِيسٍ وَتَوَسَّطَ قُفَّهَا، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ ثُمَّ انْصَرَفْتُ فَجَلَسْتُ عِنْدَ البَابِ، فَقُلْتُ لَأَكُونَنَّ بَوَّابَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اليَوْمَ، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَدَفَعَ البَابَ، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ : أَبُو بَكْرٍ، فَقُلْتُ : عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ ذَهَبْتُ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذَا أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ؟ فَقَالَ : «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» . فَأَقْبَلْتُ حَتَّى قُلْتُ لِأَبِي بَكْرٍ : ادْخُلْ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَشِّرُكَ بِالْجَنَّةِ، فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ فَجَلَسَ عَنْ يَمِينِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُ فِي القُفِّ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي البِئْرِ كَمَا صَنَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، وَقَدْ تَرَكْتُ أَخِي يَتَوَضَّأُ وَيَلْحَقُنِي، فَقُلْتُ : إِنْ يُرِدِ اللَّهُ بِفُلاَنٍ خَيْرًا - يُرِيدُ أَخَاهُ - يَأْتِ بِهِ، فَإِذَا إِنْسَانٌ يُحَرِّكُ البَابَ، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ : عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، فَقُلْتُ عَلَى رِسْلِكَ، ثُمَّ جِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَقُلْتُ : هَذَا عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ يَسْتَأْذِنُ؟ فَقَالَ : «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ»، فَجِئْتُ فَقُلْتُ : ادْخُلْ، وَبَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ، فَدَخَلَ فَجَلَسَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي القُفِّ عَنْ يَسَارِهِ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي البِئْرِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، فَقُلْتُ : إِنْ يُرِدِ اللَّهُ بِفُلاَنٍ خَيْرًا يَأْتِ بِهِ، فَجَاءَ إِنْسَانٌ يُحَرِّكُ البَابَ، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ : عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ، فَقُلْتُ : عَلَى رِسْلِكَ، فَجِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ : «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ، عَلَى بَلْوَى تُصِيبُهُ» فَجِئْتُهُ فَقُلْتُ لَهُ : ادْخُلْ، وَبَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ عَلَى بَلْوَى تُصِيبُكَ، فَدَخَلَ فَوَجَدَ القُفَّ قَدْ مُلِئَ فَجَلَسَ وِجَاهَهُ مِنَ الشَّقِّ الآخَرِ قَالَ شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ «فَأَوَّلْتُهَا قُبُورَهُمْ» .

আবূ মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত যে, তিনি একদিন ঘরে অজু করে বের হলেন এবং (মনে মনে স্থির করলেন) আমি আজ সারাদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কাটাব, তার থেকে পৃথক হব না। তিনি মসজিদে গিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খবর নিলেন, সাহাবীগণ বললেন, তিনি এদিকে বেরিয়ে গেছেন। আমিও ঐ পথ ধরে তাঁর গমন করলাম। তাঁর খুঁজে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলাম। তিনি শেষ পর্যন্ত আরীস কূপের নিকট গিয়ে পৌছলেন। আমি (কূপে প্রবেশের) দরজার নিকট বসে পড়লাম। দরজাটি খেজুরের শাখা দিয়ে তৈরী ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর প্রয়োজন (ইস্তিঞ্জা) সেরে অযু করলেন। তখন আমি তাঁর নিকটে দাঁড়ালাম এবং দেখতে পেলাম তিনি আরীস কূপের কিনারার বাঁধের মাঝখানে বসে হাঁটু পর্যন্ত পা দু’টি খুলে কূপের ভিতরে ঝুলিয়ে রেখেছেন, আমি তাঁকে সালাম করলাম এবং ফিরে এসে দরজায় বসে রইলাম এবং মনে মনে স্থির করে নিলাম যে, আজ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দারোয়ানরূপে (পাহারাদারের) দায়িত্ব পালন করব। এ সময় আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে দরজায় ধাক্কা দিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আবূ বকর! আমি বললাম থামুন, (আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি) আমি গিয়ে বললাম, ইয়া সাসূলুল্লাহ! আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ভিতরে আসার অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, ভিতরে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি ফিরে এসে আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললাম, ভিতরে আসুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ভিতরে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডানপাশে কূপের কিনারায় বসে দু’পায়ের কাপড় হাটু পর্যন্ত উঠায়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ন্যায় কূপের ভিতর ভাগে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে পড়েন। আমি ফিরে এসে (দরজার পাশে) বসে পড়লাম। আমি (ঘর হতে বের হওয়ার সময়) আমার ভাইকে অযু করছে অবস্থায় রেখে এসেছিলাম। তারও আমার সাথে মিলিত হওয়ার কথা ছিল। তাই আমি (মনে মনে) বলতে লাগলাম, আল্লাহ যদি তার (ভাইয়ের) মঙ্গল চান তবে তাকে নিয়ে আসুন। এমন সময় এক ব্যক্তি দরজা নাড়তে লাগল। আমি বললাম, কে? তিনি বললেন, আমি উমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু। আমি বললাম, অপেক্ষা করুন, (আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে সালাম পেশ করে আরয করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! উমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু (ভিতরে আসার) অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন তাকে ভিতরে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি এসে তাকে বললাম, ভিতরে আসুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। তিনি ভিতরে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বামপাশে হাঁটু পর্যন্ত কাপড় উঠায়ে কূপের ভিতর দিকে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে গেলেন। আমি আবার ফিরে আসলাম এবং বলতে থাকলাম আল্লাহ যদি আমার ভাইয়ের মঙ্গল চান, তবে যেন তাকে নিয়ে আসেন। এরপর আর এক ব্যক্তি এসে দরজা নাড়তে লাগল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কে? তিনি বললেন, আমি উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু। আমি বললাম, থামুন (আমি অনুমতি নিয়ে আসছি) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে দিয়ে জানালাম। তিনি বললেন, তাকে ভিতরে আসতে বল এবং তাকেও জান্নাতের সু-সংবাদ দিয়ে দাও। তবে (দুনিয়াতে তার উপর) কঠিন পরীক্ষা হবে। আমি এসে বললাম, ভিতরে আসুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সু-সংবাদ দিচ্ছেন; তবে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবেন। তিনি ভিতরে এসে দেখলেন, কূপের কিনারায় খালি জায়গা নাই। তাই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে অপর এক স্থানে বসে পড়লেন। শরীক (রহ.) বলেন, সাঈদ ইবন মুসাইয়্যাব (রহ.) বলেছেন, আমি এর দ্বারা (পরবর্তী কালে) তাদের কবর এরূপ হবে এই অর্থ করছি। [বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৪, মুসলিম, হাদীস নং ২৪০৩।]

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " رَأَيْتُنِي دَخَلْتُ الجَنَّةَ، فَإِذَا أَنَا بِالرُّمَيْصَاءِ، امْرَأَةِ أَبِي طَلْحَةَ، وَسَمِعْتُ خَشَفَةً، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ : هَذَا بِلاَلٌ، وَرَأَيْتُ قَصْرًا بِفِنَائِهِ جَارِيَةٌ، فَقُلْتُ : لِمَنْ هَذَا؟ فَقَالَ : لِعُمَرَ، فَأَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَهُ فَأَنْظُرَ إِلَيْهِ، فَذَكَرْتُ غَيْرَتَكَ " فَقَالَ عُمَرُ : بِأَبِي وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعَلَيْكَ أَغَارُ .

জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি স্বপ্নে আমাকে দেখতে পেলাম যে, আমি জান্নাতে প্রবেশ করছি। হঠাৎ আবূ তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী রুমায়সাকে দেখতে পেলাম এবং আমি পদচারণার শব্দও শুনতে পেলাম। তখণ আমি বললা, এই ব্যক্তি কে? এক ব্যক্তি বলল, তিনি বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু। আমি একটি প্রাসাদও দেখতে পেলাম যার আঙ্গিনায় এক মহিলা রয়েছে। আমি বললাম, ঐ প্রাসাদটি কার? এক ব্যক্তি বলল, প্রাসাদটি উমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর। আমি প্রাসাদটিতে প্রবেশ করে (সব কিছু) দেখার ইচ্ছা করলাম। তখন তোমার (উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর) সূক্ষ্ম মর্যাদাবোধের কথা স্মরণ করলাম। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু (এ কথা শুনে) বললেন, আমার বাপ-মা আপনার উপর কুরবান, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার কাছেও কি মর্যাদাবোধ প্রকাশ করতে পারি? [বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৯, মুসলিম, হাদীস নং ২৩৯৫।]

عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ : " دَخَلْتُ الْجَنَّةَ فَسَمِعْتُ خَشْفَةً، فَقُلْتُ : مَنْ هَذَا؟ قَالُوا : هَذِهِ الْغُمَيْصَاءُ بِنْتُ مِلْحَانَ أُمُّ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ".

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি জান্নাতে গেলাম, সেখানে আমি কারও চলার শব্দ পেলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কে? লোকেরা বললো, তিনি শুমায়সা বিনত মিলহান রাদিয়াল্লাহু আনহা, আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর মা। [মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫৬।]

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : «أُرِيتُ الْجَنَّةَ فَرَأَيْتُ امْرَأَةَ أَبِي طَلْحَةَ، ثُمَّ سَمِعْتُ خَشْخَشَةً أَمَامِي فَإِذَا بِلَالٌ» .

জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে জান্নাত দেখানো হয়েছে যে, আমি আবু তালহার স্ত্রীকে দেখলাম। অতঃপর আমার সামনে পদধ্বনি শুনতে পেলাম তাকিয়ে দেখি বিলাল। [মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫৭।]

عَنْ أَنَس بْن مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَعِدَ أُحُدًا، وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، وَعُثْمَانُ فَرَجَفَ بِهِمْ، فَقَالَ : «اثْبُتْ أُحُدُ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ نَبِيٌّ، وَصِدِّيقٌ، وَشَهِيدَانِ» .

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, (একবার) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর, উমর, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু ওহুদ পাহাড়ে আরোহণ করেন। পাহাড়টি (তাঁদেরকে ধারণ করে আনন্দে) নড়ে উঠল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে ওহুদ, স্থির হও। তোমার উপর একজন নবী, একজন সিদ্দীক ও দু’জন শহীদ রয়েছেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৫।] 

عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حِينَ حُوصِرَ أَشْرَفَ عَلَيْهِمْ، وَقَالَ : أَنْشُدُكُمُ اللَّهَ، وَلاَ أَنْشُدُ إِلَّا أَصْحَابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَلَسْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : «مَنْ حَفَرَ رُومَةَ فَلَهُ الجَنَّةُ»؟ فَحَفَرْتُهَا، أَلَسْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنَّهُ قَالَ : «مَنْ جَهَّزَ جَيْشَ العُسْرَةِ فَلَهُ الجَنَّةُ»؟ فَجَهَّزْتُهُمْ، قَالَ : فَصَدَّقُوهُ بِمَا قَالَ وَقَالَ عُمَرُ فِي وَقْفِهِ : «لاَ جُنَاحَ عَلَى مَنْ وَلِيَهُ أَنْ يَأْكُلَ وَقَدْ يَلِيهِ الوَاقِفُ وَغَيْرُهُ فَهُوَ وَاسِعٌ لِكُلٍّ» .

আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু অবরুদ্ধ হলে তিনি উপর থেকে সাহাবীদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে বললেন, আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আর আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদেরকেই আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আপনারা কি জানেন না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যে ব্যক্তি রূমার কূপটি খনন করে দিবে সে জান্নাতি এবং আমি তা খনন করে দিয়েছি। আপনারা কি জানেন না যে, তিনি বলেছিলেন, যে ব্যক্তি তাবুকের যুদ্ধে সেনাদের সামগ্রী ব্যবস্থা করে দিবে, সে জান্নাতি এবং আমি তা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। [বুখারী, হাদীস নং ২৭৭৮।]

عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ : " مَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ : لِأَحَدٍ يَمْشِي عَلَى الأَرْضِ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، إِلَّا لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ " قَالَ : وَفِيهِ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ { وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى مِثْلِهِ } [ الأحقاف : 10] الآيَةَ، قَالَ : «لاَ أَدْرِي قَالَ مَالِكٌ الآيَةَ أَوْ فِي الحَدِيثِ» .

সা’দ ইবন আবূ ওয়াক্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আবদুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ব্যতীত ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী কারো সম্পর্কে একথাটি বলতে শুনিনি যে, ‘নিশ্চয়ই তিনি জান্নাতবাসী’। সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তাঁরই সম্পর্কে সূরা আহকাফের এ আয়াত নাযিল হয়েছে “এ বিষয়ে বনী ইসরাঈলের মধ্যে থেকেও একজন সাক্ষ্য প্রদান করেছে”। [সূরা আল-আহকাফ: ১০] [বুখারী, হাদীস নং ৩৮১২, মুসলিম, হাদীস নং ২৪৮৩।]

عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ، قَالَ : كُنْتُ جَالِسًا فِي مَسْجِدِ المَدِينَةِ، فَدَخَلَ رَجُلٌ عَلَى وَجْهِهِ أَثَرُ الخُشُوعِ، فَقَالُوا : هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ تَجَوَّزَ فِيهِمَا، ثُمَّ خَرَجَ، وَتَبِعْتُهُ، فَقُلْتُ : إِنَّكَ حِينَ دَخَلْتَ المَسْجِدَ قَالُوا : هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، قَالَ : وَاللَّهِ مَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ مَا لاَ يَعْلَمُ، وَسَأُحَدِّثُكَ لِمَ ذَاكَ : رَأَيْتُ رُؤْيَا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَصَصْتُهَا عَلَيْهِ، وَرَأَيْتُ كَأَنِّي فِي رَوْضَةٍ - ذَكَرَ مِنْ سَعَتِهَا وَخُضْرَتِهَا - وَسْطَهَا عَمُودٌ مِنْ حَدِيدٍ، أَسْفَلُهُ فِي الأَرْضِ، وَأَعْلاَهُ فِي السَّمَاءِ، فِي أَعْلاَهُ عُرْوَةٌ، فَقِيلَ لِي : ارْقَ، قُلْتُ : لاَ أَسْتَطِيعُ، فَأَتَانِي مِنْصَفٌ، فَرَفَعَ ثِيَابِي مِنْ خَلْفِي، فَرَقِيتُ حَتَّى كُنْتُ فِي أَعْلاَهَا، فَأَخَذْتُ بِالعُرْوَةِ، فَقِيلَ لَهُ : اسْتَمْسِكْ فَاسْتَيْقَظْتُ، وَإِنَّهَا لَفِي يَدِي، فَقَصَصْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ : «تِلْكَ الرَّوْضَةُ الإِسْلاَمُ، وَذَلِكَ العَمُودُ عَمُودُ الإِسْلاَمِ، وَتِلْكَ العُرْوَةُ عُرْوَةُ الوُثْقَى، فَأَنْتَ عَلَى الإِسْلاَمِ حَتَّى تَمُوتَ» وَذَاكَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ .

কায়েস ইবন ‘উবাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মদীনায় মসজিদে বসা ছিলাম। তখন এমন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলেন যার চেহারায় বিনয় ও নম্রতার ছাপ ছিল। (তাঁকে দেখে) লোকজন বলতে লাগলেন, এই ব্যক্তি জান্নাতীগণের একজন। তিনি, সংক্ষিপ্তাকারে দু’রাকআত সালাত আদায় করে মসজিদ থেকে বেরিয়ে এলেন। আমি তাঁকে অনুসরণ করলাম এবং তাঁকে বললাম, আপনি যখন মসজিদে প্রবেশ করছিলেন তখন লোকজন বালাবলি করছিল যে, ইনি জান্নাতবাসীগণের একজন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম কারো জন্য এমন কথা বলা উচিৎ নয়, যা সে জানেনা। আমি তোমাকে প্রকৃত ঘটনাটি বলছি কেন ইহা বলা হয়। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় একটি স্বপ্ন দেখে তাঁর নিকট বর্ণনা করলাম। আমি দেখলাম যে, আমি একটি বাগানে অবস্থানরত; বাগানটি বেশ প্রশস্ত, সবুজ, (সুন্দর ও শোভাময়)। বাগানের মধ্যে একটি লোহার স্তম্ভ যার নিম্নভাগ মাটিতে এবং ঊর্ধ্বভাগ আকাশ স্পর্শ করেছে; স্তম্ভের ঊর্ধ্বে একটি শক্তকড়া সংযুক্ত রয়েছে। আমাকে বলা হল, উর্ধ্বে আরোহণ কর। আমি বললাম, ইহাতো আমার সামর্থের বাইরে। তখন একজন খাদিম এসে পিছন দিক থেকে আমার কাপড় সমেত চেপে ধরে আমাকে আরোহণে সাহায্য করলেন। আমি চড়তে লাগলাম এবং উপরে গিয়ে আংটাটি ধরলাম। তখন আমাকে বলা হল, শক্তভাবে আংটাটি আঁকড়ে ধর। তারপর কড়াটি আমার হাতের মোঠায় ধারণ অবস্থায় আমি জেগে গেলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট স্বপ্নটি বললে, তিনি স্বপ্নটির (তা’বীর হিসাবে) বললেন, এ বাগান হল ইসলাম, আর স্তম্ভটি হল ইসলামের খুটিসমূহ (করনীয় মৌলিক বিষয়াদি) কড়াটি হল (কুরআনে উল্লেখিত) “উরুয়াতুল উস্কা” (শক্ত ও অটুট কড়া) এবং তুমি আজীবন ইসলামর উপর অটল থাকবে। (রাবী বলেন) এই ব্যক্তি হলেন, আবদুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু। [বুখারী, হাদীস নং ৩৮১৩।]

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : لاَ رُقْيَةَ إِلَّا مِنْ عَيْنٍ أَوْ حُمَةٍ، فَذَكَرْتُهُ لِسَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، فَقَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " عُرِضَتْ عَلَيَّ الأُمَمُ، فَجَعَلَ النَّبِيُّ وَالنَّبِيَّانِ يَمُرُّونَ مَعَهُمُ الرَّهْطُ، وَالنَّبِيُّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ، حَتَّى رُفِعَ لِي سَوَادٌ عَظِيمٌ، قُلْتُ : مَا هَذَا؟ أُمَّتِي هَذِهِ؟ قِيلَ : بَلْ هَذَا مُوسَى وَقَوْمُهُ، قِيلَ : انْظُرْ إِلَى الأُفُقِ، فَإِذَا سَوَادٌ يَمْلَأُ الأُفُقَ، ثُمَّ قِيلَ لِي : انْظُرْ هَا هُنَا وَهَا هُنَا فِي آفَاقِ السَّمَاءِ، فَإِذَا سَوَادٌ قَدْ مَلَأَ الأُفُقَ، قِيلَ : هَذِهِ أُمَّتُكَ، وَيَدْخُلُ الجَنَّةَ مِنْ هَؤُلاَءِ سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ " ثُمَّ دَخَلَ وَلَمْ يُبَيِّنْ لَهُمْ، فَأَفَاضَ القَوْمُ، وَقَالُوا : نَحْنُ الَّذِينَ آمَنَّا بِاللَّهِ وَاتَّبَعْنَا رَسُولَهُ، فَنَحْنُ هُمْ، أَوْ أَوْلاَدُنَا الَّذِينَ وُلِدُوا فِي الإِسْلاَمِ، فَإِنَّا وُلِدْنَا فِي الجَاهِلِيَّةِ، فَبَلَغَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَ، فَقَالَ : «هُمُ الَّذِينَ لاَ يَسْتَرْقُونَ، وَلاَ يَتَطَيَّرُونَ، وَلاَ يَكْتَوُونَ، وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ» فَقَالَ عُكَاشَةُ بْنُ مِحْصَنٍ : أَمِنْهُمْ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ : «نَعَمْ» فَقَامَ آخَرُ فَقَالَ : أَمِنْهُمْ أَنَا؟ قَالَ : «سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ» .

‘ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদ-নযর কিংবা বিষাক্ত দংশন ব্যতিরেকে অন্য কোনো ব্যাপারে ঝাড়ফুঁক নেই। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর এ হাদীস আমি সাঈদ ইবন জুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, আমাদের নিকট ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সামনে সকল উম্মতকে পেশ করা হয়েছিল। (তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ অতিক্রম করতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাদের সঙ্গে রয়েছে লোক জনের ছোট ছোট দল। কোনো কোন নবী এমনও রয়েছেন যাঁর সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল সমাবেশ। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কি? এ কি আমার উম্মত? উত্তর দেওয়া হল, না, ইনি মূসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে তাঁর কাওম। আমাকে বলা হল, আপনি উর্ধ্বাআকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলাম, বিশাল একটি দল যা দিগমত্মকে ঢেকে রেখেছে। তারপর আমাকে বলা হল, আকাশের এদিক ওদিক দৃষ্টপাত করুন। তখন দেখলাম, বিশাল একটি দল, যা আকাশের দিগমত্মসমূহ ঢেকে দিয়েছে। তখন বলা হল, এরা হল আপনার উম্মত। আর তাদের মধ্যে থেকে সত্তর হাজার ব্যক্তি বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোনো ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। (যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হল। তারা বলল, আমরা আল্লাহর প্রত ঈমান এনেছি এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করে থাকি। সুতরাং আমরাই তাদের অমত্মর্ভুক্ত কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সমত্মান-সন্তুতি যারা ইসলামের জন্ম গ্রহণ করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহেলী যুগে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেন, তারা হলেন সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, বদফালী গ্রহণ করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উককাশা ইবন মিহশান রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বলল, তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেন, উককাশা এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে গেছে। [বুখারী, হাদীস নং ৫৭০৫, মুসলিম, হাদীস নং ২২০।]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَخْنَسِ، أَنَّهُ كَانَ فِي الْمَسْجِدِ فَذَكَرَ رَجُلٌ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَام فَقَامَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ فَقَالَ : أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنِّي سَمِعْتُهُ وَهُوَ يَقُولُ : «عَشْرَةٌ فِي الْجَنَّةِ النَّبِيُّ فِي الْجَنَّةِ، وَأَبُو بَكْرٍ فِي الْجَنَّةِ، وَعُمَرُ فِي الْجَنَّةِ، وَعُثْمَانُ فِي الْجَنَّةِ، وَعَلِيٌّ فِي الْجَنَّةِ، وَطَلْحَةُ فِي الْجَنَّةِ، وَالزُّبَيْرُ بْنُ الْعَوَّامِ فِي الْجَنَّةِ، وَسَعْدُ بْنُ مَالِكٍ فِي الْجَنَّةِ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي الْجَنَّةِ، وَلَوْ شِئْتُ لَسَمَّيْتُ الْعَاشِرَ» قَالَ : فَقَالُوا : مَنْ هُوَ؟ فَسَكَتَ . قَالَ : فَقَالُوا : مَنْ هُوَ؟ فَقَالَ : هُوَ «سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ» .

আবদুর রহমান ইবন আখনাস রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তিনি মসজিদে অবস্থানকালে এক ব্যক্তি আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে আলোচনা করলে, সাঈদ ইবন যায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়িয়ে বলেন, আমি এরূপ সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, দশ ব্যক্তি বিনা হিসাবে বেহেশতে যাবে। তাঁরা হলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতে যাবেন, আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, যুবাইর ইবন ‘আওয়াম রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী সা'আদ ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী, আবদুর রহমান ইবন আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতী। তিনি বলেন, আমি ইচ্ছা করলে দশম ব্যক্তির নামও বলতে পারি। তখন লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, সে লোকটি কে? তিনি কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বললেন, তিনি হলেন - সাঈদ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু, অর্থাৎ তিনি নিজে। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬৪৯। হাদীসটি সহীহ।]

عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ : «مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيجَةَ، هَلَكَتْ قَبْلَ أَنْ يَتَزَوَّجَنِي، لِمَا كُنْتُ أَسْمَعُهُ يَذْكُرُهَا، وَأَمَرَهُ اللَّهُ أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ مِنْ قَصَبٍ، وَإِنْ كَانَ لَيَذْبَحُ الشَّاةَ فَيُهْدِي فِي خَلاَئِلِهَا مِنْهَا مَا يَسَعُهُنَّ» .

‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো সহধর্মিণীর প্রতি এতটুকু অভিমান প্রদর্শন করিনি; যতটুকু খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার প্রতি করেছি। কেননা, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর কথা বারবার আলোচনা করতে শুনেছি, অথচ আমাকে বিবাহ করার পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন। খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জান্নাতে মণি-মুক্তা খচিত একটি প্রাসাদের সু-সংবাদ দেওয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেন। কোনো দিন বকরী যবেহ হলে খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার বান্ধবীদের নিকট তাদের প্রত্যেকের আবশ্যক পরিমাণ গোস্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীয়া স্বরূপ পাঠিয়ে দিতেন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৮১৬।]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ : «مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيجَةَ مِنْ كَثْرَةِ ذِكْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِيَّاهَا»، قَالَتْ : «وَتَزَوَّجَنِي بَعْدَهَا بِثَلاَثِ سِنِينَ، وَأَمَرَهُ رَبُّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَوْ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ فِي الجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ» .

‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্য কোনো সহধর্মিণীর প্র্রতি এতটুকু ঈর্ষা প্রকাশ করিনি, যতটুকু খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার প্রতি করেছি। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আলোচনা অধিক করতেন। তিনি (আরো) বলেন, খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার (ইন্তেকালের) তিন বছর পর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। আল্লাহ স্বয়ং অথবা জিবরীল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করলেন যে, খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জান্নাতে মণি-মুক্তা খচিত একটি প্রাসাদের সু-সংবাদ দিন। [বুখারী, হাদীস নং ৩৮১৭।]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : " أَتَى جِبْرِيلُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ : هَذِهِ خَدِيجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيهِ إِدَامٌ، أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ، فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلاَمَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّي وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لاَ صَخَبَ فِيهِ، وَلاَ نَصَبَ ".

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, জিবরীল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ঐ যে খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহা একটি পাত্র হাতে নিয়ে আসছেন। ঐ পাত্রে তরকারী, অথবা খাবার দ্রব্য অথবা পানীয় ছিল। যখন তিনি পৌছে যাবেন তখন তাঁকে তাঁর রবের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকেও সালাম জানাবেন আর তাঁকে জান্নাতের এমন একটি সুরম্য প্রাসারেদ সু-সংবাদ দিবেন যার ভিতরদেশ ফাঁকা-মুতি দ্বারা তৈরী করা হয়েছে। সেখানে থাকবে না কোনো প্রকার হট্টগোল, না কোনো প্রকার ক্লেশ ও ক্লান্তি। [বুখারী, হাদীস নং ৩৮২০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন