মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণ
লেখকঃ শাইখ মুকবিল ইবন হাদী আল ওয়াদি‘য়ী
৪৮
সাঁইত্রিশতম পরিচ্ছেদ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারীদের কিছু কারামত তাঁর নবুওয়তের প্রমাণের মধ্যে অন্যতম।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/431/48
এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হয়। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ ব্যতীত কাউকে কারামত দান করা হয় না। আর সবচেয়ে বড় কারামত হলো বান্দাহকে কিতাব ও সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করা ও শেষ পরিণাম ভাল হওয়া।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ ব্যক্তিকে গোয়েন্দা হিসাবে সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রেরণ করেন এবং আসিম ইবন সাবিত আল-আনসারীকে তাদের দলপতি নিযুক্ত করেন। যিনি আসিম ইবন উমর ইবন খাত্তাবের মাতামহ ছিলেন। তাঁরা রওয়ানা হয়ে গেলেন, যখন তাঁরা উসফান ও মক্কার মধ্যবর্তী হাদআত নামক স্থানে পৌঁছেন, তখন হুযায়েল গোত্রের একটি প্রশাখা যাদেরকে লেহইয়ান বলা হয় তাদের কাছে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। তারা প্রায় দু’শত তীরন্দাজ ব্যক্তিকে তাদের পশ্চাদপনে প্রেরণ করে। এরা তাঁদের চিহৃ অনুসরণ করে চলতে থাকে। সাহাবীগণ মদীনা থেকে সাথে নিয়ে আসা খেজুর যেখানে বসে খেয়েছিলেন, অবশেষে এরা সে স্থানের সন্ধান পেয়ে গেল, তখন এরা বলল, ইয়াসরিবের খেজুর। এরপর এরা তাঁতের পদচিহৃ অনুসরণ করে চলতে লাগল। যখন আসিম ও এ সাথীগণ তাদের দেখলেন, তখন তাঁর একটি উচু স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করলেন। আর কাফিরগণ তাঁদের ঘিরে ফেলল এবং তাঁদেরকে বলতে লাগল, তোমরা অবতরণ কর ও স্বেচ্ছায় বন্দীত্ব বরণ কর। আমরা তোমাদের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিযে, তোমাদের মধ্য থেকে কাউকে আমরা হতা করব না। তখন গোয়েন্দা দলের নেতা আসিম ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি তো আজ কাফিরদের নিরাপত্তায় অবতরণ করবো না। হে আল্লাহ! আমাদের পক্ষআলতে আপনার নবীকে সংবাদ পৌঁছিয়ে দিন।’ অবশেষে কাফিরগণ তীর নিক্ষপ করতে শুরু করল আর তারা আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহুসহ সাতজনকে শহীদ করল। এরপর অবশিষ্ট তিনজন খুবাইব আনসারী, যায়দ ইবন দাসিনা রাদিয়াল্লাহু আনহু ও অপর একজন তাদের দেয় প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর নির্ভর করে তাদের নিকট অবতরণ করলেন। যখন কাফিররা তাদেরকে আয়ত্বে নিয়ে নিল, তখন তারা তাদের ধনুকের রশি খুলে ফেলে (সেই রশি দিয়ে) তাঁদের বেধে ফেললো। তখন তৃতীয়জন বলে উঠলেন, ‘সূচনাতেই বিশ্বাসঘাতকতা! আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের সাথে যাবো না, আমি তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করব, যারা শাহাদাত বরণ করেছে।’ কাফিরগণ তাঁকে তাদের সঙ্গে টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি যেতে অস্বীকার করেন। তখন তারা তাঁকে শহীদ করে ফেলে এবং তারা খুবাই ও ইবন দাসিনাকে নিয়ে চলে যায়। অবশেষে তাদের উভয়কে মক্কায় বিক্রয় করে ফেলে। এ বদর যুদ্ধের পরবর্তী সময়ের কথা। তখন খুবাইবকে হারিস ইবন আমিরের পুত্রগণ ক্রয় করে নেয়। আর বদর যুদ্ধের দিন খুবাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু হারিস ইবন আমিরকে হত্যা করেছিলেন। খুবাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু কিছু দিন তাদের নিকট বন্দী থাকেন। ইবন শিহাব (রহ.) বলেন, আমাকে উবাইদুল্লাহ ইবন আয়ায অবহিত করেছেন, তাঁকে হারিসের কন্যা জানিয়ে যে, যখন হারিসের পুত্রগণ খুবাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু।কে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিল, তখন তিনি তাঁর নিকট থেকে ক্ষৌর কাট সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে একটা ক্ষুর ধার চাইলেন। তখন হারিসের কন্যা তাকে এক খানা ক্ষুর ধার দির। (সে বলেছে) সে সময় ঘটনাক্রমে আমার এক ছেলে আমার অজ্ঞাতে খুবাইবের নিকট চলে যায় এবং আমি দেখলাম যে, আমার ছেলে খুবাইবের উরুর উপর বসে রয়েছে এবং খুবাইবের হাতে রয়েছে ক্ষুর। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। খুবাইব আমার চেহেরা দেখে বুঝতে পারলেন যে, আমি ভয় পাচ্ছি। তখন তিনি বললেন, তুমি কি এ ভয় করো যে, আমি এ শিশুটিকে হত্যা করে ফেলব? কখনোমি তা করবো না। (হারিসের কন্যা বলল) আল্লাহর কসম! আমি খুবাইবের ন্যায় উত্তম বন্দী কখনো দেখিনি। আল্লাহর শপথ! আমি একদিন দেখলাম, তিনি লোহার শিকলে আবদ্ধ অবস্থায় আঙ্গুর ছড়া থেকে খাচ্ছেন, যা তার হাতেই ছিল। অথচ এ সময় মক্কায় কোনো ফলই পাওয়া যাচ্ছিল না। হারিসের কন্যা বলতো, এ তো ছিল আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে প্রদত্ত জীবিকা, যা তিনি খুবাইবকে দান করেছেন। এরপর তারা খুবাইবকে শহীদ করার উদ্দেশ্যে হেরেম থেকে হিল্লের দিকে নিয়ে বের হয়ে পড়ল, তখন খুবাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাদের বললেন, আমাকে দু’রাকাআত সালাত আদায় করতে দাও। তারা তাঁকে সে অনুমতি দান করল। তিনি দু’রাকাআত সালাত আদায় করে নিলেন। তারপর তিনি বললেন, ‘তোমরা যদি ধারণা না করতে যে, আমি মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছি তবে আমি সালাতকে দীর্ঘায়িত করতাম। হে আল্লাহ! তাদেরকে এক এক করে ধবংশ করুন।’ তারপর তিনি এ কবিতা দু’টি আবৃত্তি করলেন,
‘‘যখন আমি মুসলিম হিসাবে শহীদ হচ্ছি তখন আমি কোনরূপ ভয় করি না। আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমাকে যেখানেই মাটিতে লুটিয়ে ফেলা হোক না কেন, (তাতে আমার কিছু যায় আসে না)। আমার এ মৃত্যু আল্লাহ তা‘আলার জন্যই হচ্ছে। তিনি যদি ইচ্ছা করেন, তবে আমার দেহের প্রতিটি খন্ডিত জোড়াসমূহে বরকত সৃষ্টি করে দিবেন।’’
অবশেষে হারিসের পুত্র তাঁকে শহীদ করে ফেলে। বস্তুত যে মুসলিম বন্দী অবস্থায় শহীদ করা হয় তার জন্য দু’রাকাত সালাত আদায়ের এ রীতি খুবাইব রাদিয়াল্লাহু আনহুই প্রবর্তন করে গেছেন। যেদিন আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহু শাহাদাত বরণ করেছিলেন, সেদিন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দো‘আ কবুল করেছিলেন। সেদিনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবাগণকে তাঁদের সংবাদ ও তাঁদের উপর যা’ যা’ আপতিত হয়েছিল সবই অবহিত করেছিলেন। আর যখন কুরাইশ কাফিরদেরকে এ সংবাদ পৌঁছানে হয় যে, আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শহীদ করা হয়েছে তখন তারা তাঁর নিকট এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করে, যাতে সে ব্যক্তি তাঁর মরদেহ থেকে কিছু অংশ কেটে নিয়োসে। যেন তারা তা দেখে চিনতে পারে। কারণ, বদর যুদ্ধের দিন আসিম রাদিয়াল্লাহু আনহু কুরাইশদের জনৈক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন। আসিমের মরদেহের (হেফাজতের জন্য) মৌমাছির ঝাঁক প্রেরিক হল (এই মৌমাছিরা) তাঁর দেহ আবৃত করে রেখে তাদের ষড়যন্ত্র থেকে হেফাজত করল। ফলে তারা তাঁর দেহে হতে কোনো এক টোকরা গোশত কেটে নিতে সক্ষম হয়নি। [বুখারী, হাদীস নং ৩০৪৫।]
আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উষ্ট্রযুদ্ধের দিন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান গ্রহণ করে আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে বললেন, হে পুত্র! আজকের দিন জালিম অথবা মাজলুম ব্যতীত কেউ নিহত হবে না। আমার মনে হয়, আমি আজ মাজলুম হিসেবে নিহত হব। আর আমি আমার ঋণ সম্পর্কে বেশি চিন্তিত। তুমি কি মনে কর যে, আমার ঋণ আদায় করার পর আমার সম্পদে কিছু অবশিষ্ট থাকবে? তারপর তিনি বললেন, হে পুত্র! আমার সম্পদ বিক্রয় করে আমার ঋন পরিশোধ করে দিও। তিনি এক তৃতীয়াংশের ওসীয়্যাত করেন। আর সেই এক তৃতীয়াংশের এক তৃতীয়াংশ ওসীয়াত করেন তাঁর (আবদুল্লাহ ইবন যুবায়রের) পুত্রদের জন্য তাঁর অর্থাৎ আবদুল্লাহ, তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশকে এক তৃতীয়াংশে বিভক্ত করবে ঋণ পরিশোধ করার পর যদি আমার সম্পদের কিছু উদ্ধৃত্ত থাকে, তবে তার এক তৃতীয়াংশ তোমার পুত্রদের জন্য। হিশাম (রহ.) বলেন, আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কোনো কোন পুত্র যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর পুত্রদের সমবয়সী ছিলেন। যেমন খুবায়েদ ও আববাদ। আর মৃত্যুকালে তাঁর নয় পুত্র ও নয় কন্যা ছিল। আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তিনি আমাকে তাঁর ঋণ সম্পর্কে ওসীয়্যাত করেছিলেন এবং বলেীছলেন, হে পুত্র! যদি এ সবের কোনো বিষয়ে তুমি অক্ষম হও, তবে এ ব্যাপারে আমার মাওলার সাহায্য চাইবে। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! আমি বুঝে উঠতে পারি নি যে, তিনি মাওলা দ্বারা কাকে উদ্দেশ্য করেছেন। অবশেষে আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে পিতা! আপনার মাওলা কে? তিনি উত্তর দিলেন, আল্লাহ। আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আল্লাহর কসম! আমি যখনই তাঁর ঋণ আদায়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, তখনই বলেছি, হে যুবাইরের মাওলা! তাঁর পক্ষ থেকে তাঁর ঋণ আদায় করে দিন। আর তাঁর করয শোধ হয়ে যেত। এরপর যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু শহীদ হলেন এভং তিনি নগদ কোনো দীনার রেখে যাননি আর না কোনো দিরহাম। তিনি কিছু জমি রেখে যান যার মধ্যে একটি হল গাবা। আরো রেখে যান মদীনায় এগারোটি বাড়ী, বসরায় দু’টি, কূফায় একটি ও মিসরে একটি। আবুদল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যুবায়র রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঋণ থাকার কারণ এই ছিল যে, তাঁর নিকট কেউ যখন কোনো মাল আমানত রাখতে আসতো তখন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, না, এভাবে নয়’ তুমি তা আমার কাছে ঋণ হিসাবে রেখে যাও। কেননা, আমি ভয় করছি যে, তোমার মাল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু কখনো কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা বা কর আদায়কারী অথবা অন্য কোনো কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। অবশ্যই তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হয়ে অথবা আবূ বকর, উমর ও উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমের সঙ্গী হয়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তারপর আমি তাঁর ঋণের পরিমাণ হিসাব করলাম এবং দেখলাম তাঁর ঋণের পরিমাণ বাইশ লাখ পেলাম। রাবী বলেন, সাহাবী হাকিম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে সাক্ষাত করে বলেন, হে ভাতিজা। বল তো আমার ভাইয়ের কত ঋণ আছে? তিনি তা প্রকাশ না বললেন, এক লাখ। তখন হাকিম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আল্লাহর কসম! এ সম্পদ দ্বারা এ পরিমাণ ঋণ শোধ হতে পারে, আমি এরূপ মনে করি না। তখন আবুদল্লাহ ইব্ন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বললেন, যদি ঋণের পরিমাণ বাইশ লাখ হয়, তবে কি ধারণা করেন? হাকীম ইবন হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি মনে করি না যে, তোমরা এ সামর্থ রাখ। যদি তোমরা এ বিষয়ে সক্ষম হও, তবে আমার সহযোগীতা গ্রহণ করবে। আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু গাবাস্থিত ভূমিটি এক লাখ সত্তর হাজারে কিনেছিলেন। আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু তা ষোল লাখের বিনিময়ে বিক্রয় করেন। আর দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন, যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট কারা পাওনাদার রয়েছে, তারা আমার সঙ্গে গাবায় এসে মিলিত হবে। তখন আবদুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর নিকট এলেন। যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট তাঁর চার লাখ পাওনা ছিল। তিনি আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, তোমরা চাইলে আমি তা তোমাদের জন্য ছেড়ে দিব। আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, না। আবদুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, যদি তোমরা তা পরে দিতে চাও, তবে তা পরে পরিশোধের অমত্মর্ভুক্ত করতে পার। আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, না। তখন আবদুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তবে আমাকে এক টুকরা ভূমি দাও। আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এখান থেকে ওখান পর্যাপ্ত জমি আপনার। রাবী বলেন, তারপর আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু গাবার জমি থেকে বিক্রয় করে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করেন। তখনও তাঁর নিকট গাবার জমির সাড়ে চার অংশ অবশিষ্ট থেকে যায়। তারপর তিনি মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে এলেন। সে সময় তাঁর কাছে আমরা ইবন উসমান, মুনযির ইবন যুবাইর ও আবদুল্লাহ ইবন যাম‘আ রাদিয়াল্লাহু আনহুম উপস্থিত ছিলেন। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, গাবার মূল্য কত নির্ধারিত হয়েছে? তিনি বললেন, প্রত্যেক অংশ এক লাখ হারে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কত অবশিষ্ট আছে? আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, সাড়ে চার অংশ। তখন মুনযির ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি এক অংশ এক লাখে নিলাম। আমর ইবন উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি একাংশ এক লাখে নিলাম। আর আবদুল্লাহ ইবন যাম‘আ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি একাংশ এক লাখে নিলাম। তখন মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আর কি পরিমাণ অবশিষ্ট আছে? আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, দেড় অংশ অবশিষ্ট রয়েছে। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি তা দেড় লাখে নিলাম। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ ইবন জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর অংশ মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট ছয় লাখে বিক্রয় করেন। তারপর যখন ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতার ঋণ পরিশোধ করে সারলেন, তখন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর পুত্ররা বললেন, আমাদের মীরাস ভাগ করে দিন। তখন আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, না, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের মাঝে ভাগ করব না, যতক্ষণ আমি চারটি হজ্জ মৌসুমে এ ঘোষণা প্রচার না করি যে, যদি কেউ যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে ঋণ পাওনা থাকে, সে যেন আমাদের কাছে আসে, আমরা তা পরিশোধ করব। রাবী বলেন, তিনি প্রতি হজ্জের মৌসুমে ঘোষণা প্রচার করেন। তারপর যখন চার বছর অতিবাহিত হল, তখন তিনি তা তাদের মধ্যে ভাগ করে দিলেন। রাবী বলেন, যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর চার স্ত্রী ছিলেন। এক তৃতীয়াংশ পৃথক করে রাখা হল। প্রত্যেক স্ত্রী বার লাখ করে পেলেন। আর যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর মোট সম্পত্তি পাঁচ কোটি দু’লাখ ছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩১২৯।]
বার’আ ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক সাহাবী (উসায়দ ইবন হুযায়ব রাদিয়াল্লাহু আনহু) (রাত্রি কালে) ‘সূরা আল-কাহফ’ তিলাওয়াত করছিলেন। তাঁর বাড়িতে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। ঘোড়াটি তখন (আতঙ্কিত হয়ে) লাফালাফি করতে লাগল। তখন ঐ সাহাবী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ্র দরবারে দো‘আ করলেন। তারপর তিনি দেখতে পেলেন, একখন্ড মেঘ এসে তাকে ঢেকে ফেলেছে। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে বিষয়টি আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, হে অমুক! তুমি এভাবে তিলাওয়াত করতে থাকবে। ইহা তো সাকীনা (প্রশান্তি) ছিল, যা কুরআন তিলাওয়াতের কারণে নাযিল হয়েছিল। [বুখারী, হাদীস নং ৩৬১৪।]
‘উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি এ বলে দো‘আ করতেন, হে আল্লাহ! আমাকে তোমার পথে শাহাদাত বরন করার সুযোগ দান কর এবং আমার মৃত্যু তোমার রাসূলের শহরে দাও । ইবন যুরায়’ই (রহ.)... হাফসা বিনত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ‘উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অনু্রূপ বর্ণনা করতে শুনেছি। হিশাম (রহ.) বলেন, যাইদ তাঁর পিতার সূত্রে হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি ‘উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি। [বুখারী, হাদীস নং ১৮৯০।]
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন বনী কুরাইযার ইয়াহূদীরা সা‘দ ইবন মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহুর মীমাংসায় দুর্গ থেকে বেরিয়ে আসে, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ডেকে পাঠান। আর তখন তিনি ঘটনাস্থলের নিকটই ছিলেন। তখন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি গাধার পিঠে আরোহণ করে আসলেন। যখন তিনি নিকটবর্তী হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা, তোমাদের নেতার প্রতি দন্ডায়মান হও।’ তিনি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসলেন। তখন তাঁকে বললেন, ‘এরা তোমার মীমাংসায় সম্মত হয়েছে। (কাজেই তুমিই তাদের ব্যাপারে ফয়সালা কর)।’ সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি এই রায় ঘোষণা করছি যে, তাদের মধ্যে থেকে যুদ্ধ করতে সক্ষমদেরকে হত্যা করা হবে এবং মহিলা ও শিশুদের বন্দী করা হবে।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার ফয়সালার অনুরূপ ফয়সালাই করেছ। [বুখারী, হাদীস নং ৩০৪৩।]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু আহত হয়েছিলেন। কুরাইশ গোত্রের হিব্বান ইবন ইরকা নামক এক ব্যক্তি তাঁর উভয় বাহুর মধ্যবর্তী রগে তীর বিদ্ধ করেছিল। কাছে থেকে তার শুশ্রূষা করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে একটি খিমা তৈরি করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খন্দকের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে যখন হাতিয়ার রেখে গোসল সমাপন করলেন তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁর মাথার ধূলোবালি ঝাড়তে ঝাড়তে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, আপনি তো হাতিয়ার রেখে দিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি এখনও তা রেখে দেই নি। চলুন তাঁদের প্রতি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন কোথায়? তিনি বনী কুরায়যা গোত্রের প্রতি ইঙ্গিত করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ কুরায়যার মহল্লায় এলেন। পরিশেষে তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফয়সালা মেনে নিয়ে দুর্গ থেকে নিচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফয়সালার ভার সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপর অর্পণ করলেন। তখন সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এই রায় দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে এবং তাদের ধন-সম্পদ (মুসলিমদের মধ্যে) বন্টন করে দেওয়া হবে। বর্ণনাকারী হিশাম (রহ.) বলেন, আমার পিতা [উরওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু (বনূ কুরায়যার ঘটনার পর) আল্লাহর কাছে এ বলে দো‘আ করছিলেন, হে আল্লাহ্! আপনি তো জানেন, যে সম্প্রদায় আপনার রাসূলকে মিথ্যাবাদী বলেছে এবং দেশ থেকে বের করে দিয়েছে আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোনো কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। হে আল্লাহ্! আমি মনে করি (খন্দক যুদ্ধের পর) আপনি তো আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন তবে এখনো যদি কুরাইশদের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে সে জন্য বাঁচিয়ে রাখুন, যেন আমি আপনার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি। আর যদি যুদ্ধে অবসান ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষতস্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত করুন এবং এতেই আমার মৃত্যু ঘটান। এরপর তাঁর ক্ষত স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রবাহিত হতে লাগল। মসজিদে বনী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হয়ে আসতে দেখে তারা ভীত হয়ে বললেন, হে তাঁবুবাসীগণ আপনাদের দিক থেকে এসব কি আমাদের দিকে বয়ে আসছে? পরে তাঁরা দেখলেন যে, সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহুর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অবশেষে এ জখমের কারণেই মারা যান। [বুখারী, হাদীস নং ৪১২২।]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আনাসের ফুফু রুবাঈ জনৈক বাঁদির সামনের দাঁত ভেঙ্গে ফেলে। এরপর বাঁদির কাছে রুবাঈয়ের লোকেরা ক্ষমা প্রার্থী হলে বাঁদির লোকেরা অস্বীকার করে। তখন তাদের কাছে দীয়াত পেশ করা হল, তখন তা তারা গ্রহণ করল না। অগত্যা তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমীপে এসে ঘটনা জানাল। কিন্তু বাঁদির লোকেরা কিসাস ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করল। রাসূরুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসাসের নির্দেশ দিলেন। তখন আনাস ইবন নযর রাদিয়াল্লাহু আনহু নিবেদন করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! রুবাঈয়ের সামনে দাঁত ভেঙ্গে দেওয়া হবে? না যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্ম দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাঁর শপথ, তাঁর দাঁত ভাঙ্গা হবে না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনাস! আল্লাহর কিতাবই কিসাসের নির্দেশ দেয়। এরপর বাঁদির সম্প্রদায় রাযী হয়ে যায় এবং রুবাঈকে ক্ষমা করে দেয়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যিনি আল্লাহর নামে শপথ করেন, আল্লাহ তা পূরণ করেন। [বুখারী, হাদীস নং ৪৫০০।]
আবদুর-রাহমান ইবন আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আসহাবে সুফফা ছিলেন খুবই দরিদ্র। (একদা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার কাছে দু’জনের আহার আছে সে যেন (তাঁদের থেকে) তৃতীয়জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। আর যার কাছে চারজনের আহারের সংস্থান আছে, সে যেন পঞ্চম বা ষষ্ঠজন সঙ্গে নিয়ে যায়। আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তিনজন সাথে নিয়ে আসেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশজন নিয়ে আসেন। আবদুর রাহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাদের ঘরে এবং আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর ঘরে আমি, আমার পিতা ও মাতা (এই তিনজন সদস্য) ছিলাম। রাবী বলেন, আমি জানি না, তিনি আমার স্ত্রী এবং খাদিম একথা বলেছিলেন কি না? আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরেই রাতের আহার করেন এবং ইশার সালাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। ইশার সালাতের পর তিনি আবার (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরে) ফিরে আসেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের আহার শেষ করা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। আল্লাহ্র ইচ্ছায় কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বাড়ী ফিরলে তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমানদের কাছে আসতে কিসে আপনাকে ব্যস্ত রেখেছিল? কিংবা তিনি বলেছিলেন, (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) মেহমান থেকে। আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এখনও তাদের খাবার দাওনি? তিনি বললেন, আপনি না আসা পর্যন্ত তারা খেতে অস্বীকার করেন। তাদের সামনে হাযির করা হয়েছিল, তবে তারা খেতে সম্মত হননি। তিনি (রাগান্বিত হয়ে) বললেন, ওরে বোকা এবং ভৎসনা করলেন। আর (মেহমানদের) বললেন, খেয়ে নিন। আপনারা অস্বস্তিতে ছিলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি এ কখনই খাব না। আবদুর রাহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা লুকমা উঠিয়ে নিতেই নীচ থেকে তা অধিক পরিমাণে বেড়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, সকলেই পেট ভরে খেলেন। অথচ আগের চাইতে অধিক খাবার রয়ে গেল। আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু খাবারের দিকে তাকিয়ে দেখেতে পেলেন তা আগের সমপরিমাণ কিংবা তার চাইতেও বেশী। তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, হে বনূ ফিরাসের বোন। এ কি? তিনি বললেন, আমার চোখের প্রশান্তির কসম! এতো এখন আগের চাইতে তিনগুন বেশী! আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুও তা থেকে আহার করলেন এবং বললেন, আমার সে শপথ শয়তানের পক্ষ থেকেই হয়েছিল। এরপর তিনি আরও লুকমা মুখে দিলেন এবং অবশিষ্ট খাবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে নিয়ে গেলেন। ভোর পর্যন্ত সে খাদ্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেখানেই ছিল। এদিকে আমাদের ও অন্য একটি গোত্রের মাঝে সে সন্ধি ছিল তার সময়সীমা পূর্ন হয়ে যায়। (এবং তারা মদীনায় আসে) আমরা তাদের বারজনের নেতৃত্বে ভাগ করে দেই। তাদের প্রত্যকের সংগেই কিছু কিছু লোক ছিল। তবে প্রত্যকের সঙ্গে কতজন ছিল তা আল্লাহ্ই জানেন। তারা সকলেই সেই খাদ্য থেকে আহার করেন। (রাবী বলেন) কিংবা আবদুর রাহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু যে ভাবে বর্ণনা করেছেন। [বুখারী, হাদীস নং ৬০২।]
আবু আব্দুল্লাহ ইবন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিংগা ধ্বনি করে লোকদের সালাতের জন্য একত্র করার নির্দেশ প্রদান করেন। তখন একদা আমি স্বপ্নে দেখি যে, এক ব্যক্তি শিংগা হাতে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাকে বলি, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি কি শিংগা বিক্রয় বরবে? সে বলে, তুমি শিংগা দিয়ে কি করবে? আমি বললাম, আমি তার সাহায্যে সালাতের জামা‘আতে লোকদের ডাকব। সে বলল, আমি কি এর চেয়ে উত্তম কোনো সন্ধান তোমাকে দেব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। রাবী বলেন, তখন সে বলল, তুমি এইরূপ শব্দ উচ্চারণ করবে,
অতঃপর ভোর বেলা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে হাযির হয়ে তাঁর নিকট আমার স্বপ্নের বর্ণনা করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এটা অবশ্যই সত্য স্বপ্ন। অতঃপর তিনি বলেন, তুমি বিলালকে ডেকে তোমার সাথে নাও এবং তুমি যেরূপ স্বপ্ন দেখেছ- তদ্রুপ তাকে শিক্ষা দাও যাতে সে (বিলাল) ঐরূপে-আযান দিতে পারে। কেননা তাঁর কন্ঠস্বর তোমার স্বরের চাইতে অধিক উচ্চ। অতঃপর আমি বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়াই এবং তাকে আযানের শব্দগুলি শিক্ষা দিতে থাকি এবং তিনি উচ্চারণ পূর্বক আযান দিতে থাকেন। বিলালের এই আযান ধ্বনি উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ আবাসে বসে শুনতে পান। তা শুনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এত দ্রুত পদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদ্মতে আগমন করেন যে, তাঁর গায়ের চাদর মাটিতে হেচঁড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্হিত হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! যে মহান সত্তা আপনাকে সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন, আমিও ঐরূপ স্বপ্ন দেখেছি যেরূপ অন্যরা দেখেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য- (ইবন মাজাহ, তিরমিযী, মুসলিম)।
ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) বলেন, সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যাব ও আবদুল্লাহ্ ইবন যায়েদের সূত্রে ইমাম যুহুরী (রহ.) হতেও এইরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। যুহরী থেকে ইবন ইসহাকের সূত্রে “আল্লাহু আকবার, চারবার উল্লেখ আছ। যুহরী থেকে মা‘মার ও ইউনুসের সূত্রে “আল্লাহু আকবার” দুই বার উল্লেখ আছে, তাঁরা চারবার উল্লেখ করেননি। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯৯।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/431/48
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।