hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের প্রমাণ

লেখকঃ শাইখ মুকবিল ইবন হাদী আল ওয়াদি‘য়ী

পরিচ্ছেদ : কুরআনের মু‘জিযার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে
কুরআনের বিস্ময়ের মধ্যে আরেকটি হলো পূর্ববর্তী উম্মত সম্পর্কে একজন নিরক্ষর নবী কর্তৃক সংবাদ দেওয়া যিনি আক্ষরিক লেখা পড়া জানতেন না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلطُّورِ إِذۡ نَادَيۡنَا وَلَٰكِن رَّحۡمَةٗ مِّن رَّبِّكَ لِتُنذِرَ قَوۡمٗا مَّآ أَتَىٰهُم مِّن نَّذِيرٖ مِّن قَبۡلِكَ لَعَلَّهُمۡ يَتَذَكَّرُونَ ٤٦ ﴾ [ القصص : ٤٦ ]

“আর যখন আমি (মূসাকে) ডেকেছিলাম তখন তুমি তূর পর্বতের পাশে উপস্থিত ছিলে না। কিন্তু তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ জানানো হয়েছে, যাতে তুমি এমন কওমকে সতর্ক করতে পার, যাদের কাছে তোমার পূর্বে কোনো সতর্ককারী আসেনি। সম্ভবত তারা উপদেশ গ্রহণ করবে”। [সূরা আল্-কাসাস: ৪৬]

আল্লাহ আরো তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَمَا كُنتَ لَدَيۡهِمۡ إِذۡ يُلۡقُونَ أَقۡلَٰمَهُمۡ أَيُّهُمۡ يَكۡفُلُ مَرۡيَمَ وَمَا كُنتَ لَدَيۡهِمۡ إِذۡ يَخۡتَصِمُونَ ٤٤ ﴾ [ ال عمران : ٤٤ ]

“আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের দায়িত্ব নেবে? আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা বিতর্ক করছিল”। [আলে ইমরান: ৪৪]

আল্লাহ আরো তা‘আলা বলেছেন,

﴿ ذَٰلِكَ مِنۡ أَنۢبَآءِ ٱلۡغَيۡبِ نُوحِيهِ إِلَيۡكَۖ وَمَا كُنتَ لَدَيۡهِمۡ إِذۡ أَجۡمَعُوٓاْ أَمۡرَهُمۡ وَهُمۡ يَمۡكُرُونَ ١٠٢ ﴾ [ يوسف : ١٠٢ ]

“এগুলো গায়েবের সংবাদ, যা আমি তোমার কাছে ওহী করছি। তুমি তো তাদের নিকট ছিলে না যখন তারা তাদের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছিল অথচ তারা ষড়যন্ত্র করছিল”। [সূরা: ইউসুফ: ১০২]

আল্লাহ আরো তা‘আলা বলেছেন,

﴿ لَقَدۡ كَانَ فِي قَصَصِهِمۡ عِبۡرَةٞ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِۗ ١١١ ﴾ [ يوسف : ١١١ ]

“তাদের এ কাহিনীগুলোতে অবশ্যই বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষা”। [সূরা: ইউসুফ: ১১১]

এমনিভাবে আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টি, শয়তানের সাথে তার ঘটনা, স্বজাতির সাথে নবীগণের ঘটনা, মূসা আলাইহিস সালামের ঘটনা, খিজির, আসহাবে কাহাফ, জুল ক্বারনাইন, লুকমান আলাইহিস সালাম ও তার ছেলের ঘটনা ও তাওরাতের নানা বিধিবিধান সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আল্লাহ বলেছেন,

﴿ قُلۡ فَأۡتُواْ بِٱلتَّوۡرَىٰةِ فَٱتۡلُوهَآ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ ٩٣ ﴾ [ ال عمران : ٩٣ ]

“বলুন, ‘তাহলে তোমরা তাওরাত নিয়ে আস, অতঃপর তা তিলাওয়াত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও”। [আলে ইমরান: ৯৩]

আল্লাহ আরো বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ قَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمۡ كَثِيرٗا مِّمَّا كُنتُمۡ تُخۡفُونَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَيَعۡفُواْ عَن كَثِيرٖۚ ١٥ ﴾ [ المائ‍دة : ١٥ ]

“হে কিতাবীগণ, তোমাদের নিকট আমার রাসূল এসেছে, কিতাব থেকে যা তোমরা গোপন করতে, তার অনেক কিছু তোমাদের নিকট সে প্রকাশ করছে এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিয়েছে”। [আল-মায়েদা: ১৫]

বরং আহলে কিতাবদের মধ্যে যাদেরকে আল্লাহ হিদায়েত দিয়েছেন তাদের সম্পর্কে তিনি বলেছেন,

﴿ وَشَهِدَ شَاهِدٞ مِّنۢ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ مِثۡلِهِۦ فَ‍َٔامَنَ وَٱسۡتَكۡبَرۡتُمۡۚ ١٠ ﴾ [ الاحقاف : ١٠ ]

“অথচ বনী ইসরাঈলের একজন সাক্ষী এ ব্যাপারে অনুরূপ সাক্ষ্য দিল। অতঃপর সে ঈমান আনল আর তোমরা অহঙ্কার করলে”। [সূরা আল্-আহকাফ: ১০]

এ উম্মী নবী তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করেন, কিন্তু তারা এর জবাব দিতে পারে নি। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَمَا كُنتَ تَتۡلُواْ مِن قَبۡلِهِۦ مِن كِتَٰبٖ وَلَا تَخُطُّهُۥ بِيَمِينِكَۖ إِذٗا لَّٱرۡتَابَ ٱلۡمُبۡطِلُونَ ٤٨ ﴾ [ العنكبوت : ٤٨ ]

“আর তুমি তো এর পূর্বে কোনো কিতাব তিলাওয়াত করনি এবং তোমার নিজের হাতে তা লিখনি যে, বাতিলপন্থীরা এতে সন্দেহ পোষণ করবে”। [সূরা আল্-আনকাবূত: ৪৮]

আল্লাহ আরো বলেছেন,

﴿ ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِيَّ ٱلۡأُمِّيَّ ٱلَّذِي يَجِدُونَهُۥ مَكۡتُوبًا عِندَهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنۡهُمۡ إِصۡرَهُمۡ وَٱلۡأَغۡلَٰلَ ٱلَّتِي كَانَتۡ عَلَيۡهِمۡۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواْ ٱلنُّورَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٥٧ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۖ فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨ ﴾ [ الاعراف : ١٥٧، ١٥٨ ]

“যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃংখল- যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম। বল, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যার রয়েছে আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব। তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন ও তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখে। আর তোমরা তার অনুসরণ কর, আশা করা যায়, তোমরা হিদায়াত লাভ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ: ১৫৭-১৫৮]

কুরআনের মু‘জিযার মধ্যে আরেকটি হলো ভবিষ্যৎকালের নানা বিষয়ে সংবাদ দিয়েছে এবং আল্লাহ যেভাবে বলেছেন তা সেভাবেই সংঘটিত হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন,

﴿لَتَدۡخُلُنَّ ٱلۡمَسۡجِدَ ٱلۡحَرَامَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ ٢٧ ﴾ [ الفتح : ٢٧ ]

“তোমরা ইনশাআল্লাহ নিরাপদে নির্ভয়ে আল-মাসজিদুল হারামে অবশ্যই প্রবেশ করবে”। [সূরা আল-ফাতহ: ২৭]

﴿ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرۡضَىٰ وَءَاخَرُونَ يَضۡرِبُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ يَبۡتَغُونَ مِن فَضۡلِ ٱللَّهِ وَءَاخَرُونَ يُقَٰتِلُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۖ ٢٠ ﴾ [ المزمل : ٢٠ ]

“তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে। আর কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে পৃথিবীতে ভ্রমণ করবে, আর কেউ কেউ আল্লাহর পথে লড়াই করবে”। [সূরা আল্-মুয্যাম্মিল: ২০]

এটা ছিল জিহাদ ফরয হওয়ার আগে। কেননা এটি মক্কী সূরা। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ سَيُهۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ ٤٥ ﴾ [ القمر : ٤٥ ]

“সংঘবদ্ধ দলটি শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পিঠ দেখিয়ে পালাবে”। [সূরা আল্-কামার: ৪৫]

কাফিররা বদরের দিনে পরাজিত হয়েছিল।

﴿ إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا ٱلذِّكۡرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ٩ ﴾ [ الحجر : ٩ ]

“নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই তার হেফাযতকারী”। [সূরা: আল-হিজর: ৯]

কত নাস্তিকেরা কুরআনকে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা কখনও সফল হবে না। কেননা স্বয়ং মহান আল্লাহ কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। কুরআনের সম্মুখ ও পশ্চাৎ দিয়ে বাতিল আসতে পারবে না, এটা প্রজ্ঞাময় ও প্রশংসিত মহান আল্লাহর তরফ থেকে নাযিলকৃত।

কুরআনের আরেক মু‘জিযা হলো শ্রবণকারীর মধ্যে প্রভাব ফেলা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন,

﴿ لَوۡ أَنزَلۡنَا هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ عَلَىٰ جَبَلٖ لَّرَأَيۡتَهُۥ خَٰشِعٗا مُّتَصَدِّعٗا مِّنۡ خَشۡيَةِ ٱللَّهِۚ ٢١ ﴾ [ الحشر : ٢١ ]

“এ কুরআনকে যদি আমি পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তবে তুমি অবশ্যই তাকে দেখতে, আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ”। [সূরা আল্-হাশর: ২১]

আল্লাহ আরো বলেছেন,

﴿ تَقۡشَعِرُّ مِنۡهُ جُلُودُ ٱلَّذِينَ يَخۡشَوۡنَ رَبَّهُمۡ ثُمَّ تَلِينُ جُلُودُهُمۡ وَقُلُوبُهُمۡ إِلَىٰ ذِكۡرِ ٱللَّهِۚ ٢٣ ﴾ [ الزمر : ٢٣ ]

“যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের গা এতে শিহরিত হয়, তারপর তাদের দেহ ও মন আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়ে যায়”। [সূরা আয্-যুমার: ২৩]

কুরআন শ্রবণ জিনজাতির মাঝে যে প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

﴿ قُلۡ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ ٱسۡتَمَعَ نَفَرٞ مِّنَ ٱلۡجِنِّ فَقَالُوٓاْ إِنَّا سَمِعۡنَا قُرۡءَانًا عَجَبٗا ١ يَهۡدِيٓ إِلَى ٱلرُّشۡدِ فَ‍َٔامَنَّا بِهِۦۖ وَلَن نُّشۡرِكَ بِرَبِّنَآ أَحَدٗا ٢ ﴾ [ الجن : ١، ٢ ]

“বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে। অতঃপর বলেছে, ‘আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, যা সত্যের দিকে হিদায়াত করে; অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি। আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরীক করব না”। [সূরা আল্-জিন: ১-২]

বুখারী রহ. বলেছেন,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ : " انْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ، وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ، فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ، فَقَالُوا : مَا لَكُمْ؟ فَقَالُوا : حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ، قَالُوا : مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلَّا شَيْءٌ حَدَثَ، فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا، فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ بِنَخْلَةَ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ، وَهُوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الفَجْرِ، فَلَمَّا سَمِعُوا القُرْآنَ اسْتَمَعُوا لَهُ، فَقَالُوا : هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، فَهُنَالِكَ حِينَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ، وَقَالُوا : يَا قَوْمَنَا : { إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا، يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ، فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا } [ الجن : 2] ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : { قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِنَ الجِنِّ } [ الجن : 1] وَإِنَّمَا أُوحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الجِنِّ ".

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। আর দুষ্ট জিনদের উর্ধলোকের সংবাদ সংগ্রহের পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় এবং তাদের দিকে অগ্নিপিন্ড নিক্ষিপ্ত হয়। কাজেই শয়তানরা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসে। তারা জিজ্ঞাসা করল, তোমাদের কি হয়েছে? তারা বলল, আমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে এবং আমাদের দিকে অগ্নিপিন্ড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ একটা কিছু ঘটছে বলেই তোমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম অঞ্চল পর্যন্ত বিচরণ করে দেখ, কি কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহরে মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে? তাই তাদের যে দলটি তিহামার দিকে গিয়েছিল, তারা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে অগ্রসর হল। তিনি তখন উকায বাজারের পথে ‘নাখলা’ নামক স্থানে সাহাবীগণকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। তারা যখন কুরআন শুনতে পেল, তখন সেদিকে মনোনিবেশ করল। তারপর তারা বলে উঠল, আল্লাহর শপথ! এটিই তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এমন সময় যখন তারা সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসল এবং বলল যে,

إِنَّا سَمِعۡنَا قُرۡءَانًا عَجَبٗا ١ يَهۡدِيٓ إِلَى ٱلرُّشۡدِ فَ‍َٔامَنَّا بِهِۦۖ وَلَن نُّشۡرِكَ بِرَبِّنَآ أَحَدٗا ٢ ﴾ [ الجن : ١، ٢ ]

“বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে। অতঃপর বলেছে, ‘আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, যা সত্যের দিকে হিদায়াত করে; অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি। আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরীক করব না”। [সূরা আল্-জিন: ১-২] এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সূরা নাযিল করেন,

قُلۡ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ ٱسۡتَمَعَ نَفَرٞ مِّنَ ٱلۡجِنِّ

“বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে”।[সূরা আল্-জিন: ১] মূলত তাঁর নিকট জিনদের বক্তব্যই ওহীরূপে নাযিল করা হয়েছে”। [বুখারী, হাদীস নং ৭৭৩, মুসলিম, হাদীস নং ৪৪৯।]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَإِذۡ صَرَفۡنَآ إِلَيۡكَ نَفَرٗا مِّنَ ٱلۡجِنِّ يَسۡتَمِعُونَ ٱلۡقُرۡءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاْ أَنصِتُواْۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوۡاْ إِلَىٰ قَوۡمِهِم مُّنذِرِينَ ٢٩ قَالُواْ يَٰقَوۡمَنَآ إِنَّا سَمِعۡنَا كِتَٰبًا أُنزِلَ مِنۢ بَعۡدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ يَهۡدِيٓ إِلَى ٱلۡحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٖ مُّسۡتَقِيمٖ ٣٠ يَٰقَوۡمَنَآ أَجِيبُواْ دَاعِيَ ٱللَّهِ وَءَامِنُواْ بِهِۦ يَغۡفِرۡ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمۡ وَيُجِرۡكُم مِّنۡ عَذَابٍ أَلِيمٖ ٣١ وَمَن لَّا يُجِبۡ دَاعِيَ ٱللَّهِ فَلَيۡسَ بِمُعۡجِزٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَلَيۡسَ لَهُۥ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءُۚ أُوْلَٰٓئِكَ فِي ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ ٣٢ ﴾ [ الاحقاف : ٢٩، ٣٢ ]

“আর স্মরণ কর, যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তারা কুরআন পাঠ শুনছিল। যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল, তখণ তারা বলল, ‘চুপ করে শোন। তারপর যখন পাঠ শেষ হল তখন তারা তাদের কওমের কাছে সতর্ককারী হিসেবে ফিরে গেল। তারা বলল, ‘হে আমাদের কওম, আমরা তো এক কিতাবের বাণী শুনেছি, যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাবকে সত্যায়ন করে আর সত্য ও সরল পথের প্রতি হিদায়াত করে’। হে আমাদের কওম, আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবেন’। আর যে আল্লাহর দিকে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না সে যমীনে তাকে অপারগকারী নয়। আর আল্লাহ ছাড়া তার কোনো অভিভাবক নেই। এরাই স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে”। [সূরা আল্-আহকাফ: ২৯-৩২]

ইমাম হাকিম রহ. বলেন,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ : " هَبَطُوا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ بِبَطْنِ نَخْلَةَ فَلَمَّا سَمِعُوهُ قَالُوا : أَنْصِتُوا . قَالُوا : صَهٍ . وَكَانُوا تِسْعَةً أَحَدُهُمْ زَوْبَعَةُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { وَإِذۡ صَرَفۡنَآ إِلَيۡكَ نَفَرٗا مِّنَ ٱلۡجِنِّ يَسۡتَمِعُونَ ٱلۡقُرۡءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاْ أَنصِتُواْۖ } [ الأحقاف : 29] الْآيَةُ إِلَى { ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ }.

আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “জিনেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসল, তখন তিনি ‘নাখলা’ নামক স্থানে কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। তারা যখন কুরআন শ্রবণ করল তখন বলল, তোমরা চুপ করো, মনোযোগ সহকারে শোন। তারা নয়জন ছিল। তাদের একজন ছিল ‘ঝাওবা‘আহ’ বা ঘূর্ণিঝড়। তখন মহান আল্লাহ নাযিল করেন,

{ وَإِذۡ صَرَفۡنَآ إِلَيۡكَ نَفَرٗا مِّنَ ٱلۡجِنِّ يَسۡتَمِعُونَ ٱلۡقُرۡءَانَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوٓاْ أَنصِتُواْۖ }

“আর স্মরণ কর, যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তারা কুরআন পাঠ শুনছিল। যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল, তখণ তারা বলল, ‘চুপ করে শোন”। থেকে ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ পর্যন্ত নাযিল হয়”। [সূরা আল্-আহকাফ: ২৯-৩২] [মুসতাদরাক লিলহাকিম, হাদীস নং ৩৭০১। তিনি বলেন, সনদটি সহীহ, ইমাম বুখারী ও মুসলিম উল্লেখ করন নি। ইমাম যাহাবী রহ. এটাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে এটা হাসান হাদীস। কেননা এতে ‘আসিম ইবন আবী নুজুদ আছে, তিনি হাসানুল হাদীস। দেখুন ‘আল-মিজান’ গ্রন্থে।]

অনুরূপভাবে নাসারাদেরকে আল-কুরআন প্রভাবান্বিত করেছে। এর উদাহরণ হলো আল্লাহর বাণী:

﴿ وَإِذَا سَمِعُواْ مَآ أُنزِلَ إِلَى ٱلرَّسُولِ تَرَىٰٓ أَعۡيُنَهُمۡ تَفِيضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ مِمَّا عَرَفُواْ مِنَ ٱلۡحَقِّۖ يَقُولُونَ رَبَّنَآ ءَامَنَّا فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّٰهِدِينَ ٨٣ وَمَا لَنَا لَا نُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَا جَآءَنَا مِنَ ٱلۡحَقِّ وَنَطۡمَعُ أَن يُدۡخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلصَّٰلِحِينَ ٨٤ فَأَثَٰبَهُمُ ٱللَّهُ بِمَا قَالُواْ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ وَذَٰلِكَ جَزَآءُ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٨٥ ﴾ [ المائ‍دة : ٨٣، ٨٥ ]

“আর রাসূলের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে যখন তারা তা শুনে, তুমি দেখবে তাদের চক্ষু অশ্রুতে ভেসে যাচ্ছে, কারণ তারা সত্য হতে জেনেছে। তারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আমরা ঈমান এনেছি। সুতরাং আপনি আমাদেরকে সাক্ষ্য দানকারীদের সঙ্গে লিপিবদ্ধ করুন’। আর আমাদের কী হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে তার প্রতি ঈমান আনব না? আর আমরা আশা করব না যে, আমাদের রব আমাদেরকে প্রবেশ করাবেন নেককার সম্প্রদায়ের সাথে’। সুতরাং তারা যা বলেছে এর কারণে আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কার দেবেন জান্নাতসমূহ, যার নীচে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা হল সৎকর্মপরায়ণদের প্রতিদান”। [আল-মায়েদা: ৮৩-৮৫]

তদ্রূপ কুরাইশ কাফিরদেরকে কুরআন যে প্রভাবান্বিত করেছে এর উদাহরণ হলো, বুখারীতে আছে,

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ : " سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي المَغْرِبِ بِالطُّورِ، فَلَمَّا بَلَغَ هَذِهِ الآيَةَ : ﴿ أَمۡ خُلِقُواْ مِنۡ غَيۡرِ شَيۡءٍ أَمۡ هُمُ ٱلۡخَٰلِقُونَ ٣٥ أَمۡ خَلَقُواْ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ ٣٦ أَمۡ عِندَهُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمۡ هُمُ ٱلۡمُصَۜيۡطِرُونَ ٣٧ ﴾ [ الطور : ٣٥، ٣٧ ] " قَالَ : كَادَ قَلْبِي أَنْ يَطِيرَ، قَالَ سُفْيَانُ : فَأَمَّا أَنَا، فَإِنَّمَا سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ يُحَدِّثُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقْرَأُ فِي المَغْرِبِ بِالطُّورِ وَلَمْ أَسْمَعْهُ زَادَ الَّذِي قَالُوا لِي .

জুবায়র ইবন মুত’ইম রহ. তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবে সূরা তূর পাঠ করতে শুনেছি। যখন তিনি এ আয়াত পর্যন্ত পৌছেন:

﴿ أَمۡ خُلِقُواْ مِنۡ غَيۡرِ شَيۡءٍ أَمۡ هُمُ ٱلۡخَٰلِقُونَ ٣٥ أَمۡ خَلَقُواْ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ ٣٦ أَمۡ عِندَهُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمۡ هُمُ ٱلۡمُصَۜيۡطِرُونَ ٣٧ ﴾ [ الطور : ٣٥، ٣٧ ]

“তারা কি স্রষ্টা ব্যতীত সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা ? আসমান-যমীন কি তারাই সৃষ্টি করেছে? আসলে তারা অবিশ্বাসী। আমার প্রতিপালকের ধনভাণ্ডার কি তাদের কাছে রয়েছে, না তারাই এ সমুদয়ের নিয়ন্ত্রা?” [সূরা আত্বতূর : ৩৫-৩৭] তখন আমার অন্তর প্রায় উড়ে যাবার অবস্থা হয়েছিল। সুফিয়ান (রহ) বলেন, আমি যুহরীকে মুহাম্মদ ইবন জুবায়ির ইবন মুত’ইমকে তার পিতার বর্ণনা করতে শুনেছি, যা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবে সূরা তূর পাঠ করতে শুনেছি। কিন্তু এর অতিরিক্ত আমি শুনেনি, যা তাঁরা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। [বুখারী, হাদীস নং ৪৮৫৪।]

ইমাম বুখারী আল-মাগাযী অধ্যয়ে বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে মা‘মার হতে ঝুহরী রহ. এর সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। বা এতে আরো আছে “আর তা-ই আমার অন্তরে প্রথম ঈমানের সঞ্চার করলো’’।

অনুরূপভাবে কুরআনের আরও মু‘জিযা হচ্ছে, আল্লাহর নিন্মোক্ত বাণীতে:

﴿ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَيَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ كَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِينَهُمُ ٱلَّذِي ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡنٗاۚ يَعۡبُدُونَنِي لَا يُشۡرِكُونَ بِي شَيۡ‍ٔٗاۚ وَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡفَٰسِقُونَ ٥٥ ﴾ [ النور : ٥٥ ]

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে এ মর্মে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি নিশ্চিতভাবে তাদেরকে যমীনের প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তিনি তাদের ভয়-ভীতি শান্তি-নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন। তারা আমারই ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোনো কিছুকে শরীক করবে না। আর এরপর যারা কুফরী করবে তারাই ফাসিক”। [সূরা আন্-নূর: ৫৫]

কারণ উম্মতের অবস্থা ততক্ষণ সঠিক ছিল যতক্ষণ তাদের মধ্যে শির্ক, মৃত ব্যক্তির কবরে গম্বুজ তৈরি, কবরকে সজ্জিত করা ও পাকা করা, গম্বুজ তৈরী করা ইত্যাদির প্রসার না ঘটেছিল; বস্তুত এর মাধ্যমে শির্ককে সহযোগিতা করা হয়েছিল। এমনকি এমন কিছু গনক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে যারা মনে করে যে, তারা গায়েব সম্পর্কে অবগত। পূর্বের অনেক রাজা বাদশাহরা গনকদের উপর নির্ভর করত।

এসব কুসংস্কার অনেকের কাছে পুরাতন হলেও বর্তমানে এক নতুন শির্কের আবিস্কার হয়েছে, আর তা হলো গণতন্ত্র, যার অর্থ হলো জনগণের দ্বারা জনগনের শাসন। অর্থাৎ জনগণ নিজেরাই নিজেদের শাসন করবে। এমনিভাবে ইসলামের শত্রুদের থেকে কুরআন হাদীস বিরোধী আইন আমদানি করা। এ সব আইনের দ্বারা শাসন কার্য পরিচালনা করা শির্ক। আল্লাহ বলেন,

﴿ أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ ٢١ ﴾ [ الشورى : ٢١ ]

“তাদের জন্য কি এমন কিছু শরীক আছে, যারা তাদের জন্য দীনের বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?” [সূরা আশ্-শূরা: ২১]

এর চেয়েও মারাত্মক হলো বর্তমানের মুসলিমগণ দুটি শিবিরে বিভক্ত, একভাগ রাশিয়ার অনুসারী, আরেকভাগ আমেরিকার অনুসারী।

বরং এর চেয়েও মারাত্মক অবস্থা হলো মুসলিম শাসকেরা আমেরিকা ও রাশিয়ার তাবেদার হয়ে তাদের মিশন বাস্তবায়ন করেন। কিন্তু আল্লহর রহমতে কিছু মুসলিম শাসক ও সাধারণ মুসলিম এ সব ভয়ঙ্কর মিশন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। মুসলিম যুবকেরা উপকারী ইলম ও ঈমানী শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা কুরআন ও সুন্নহের দিকে ফিরে আসছে। তারা তাদের সে সব শাসকদেরকে ইসলামের শত্রুদের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যারা মনে করেন তাদের ভাগ্য আমেরিকা ও রাশিয়ার হাতে, অথচ তারা নিজেরাই ব্যর্থ ও নানা সমস্যায় জর্জরিত, যেমনটি ছিল সমাজতন্ত্রের অবস্থা। আলহামদু লিল্লাহ রাব্বিল ‘আলামিন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন