মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মাওলানা আহমাদ আলীর জীবনটাই ছিল মূলতঃ দাওয়াতী জীবন। তাঁর জালসাগুলিতে দলমত নির্বিশেষে সকল ধরনের মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ত। তাঁর মিষ্টভাষী বক্তৃতা, মধুকণ্ঠের হাম্দ ও ছানা, নাহমাদুহূ... সূরের অপূর্ব মূর্চ্ছনা, ‘মুহাম্মাদ মোছতফা নবী শাফীউল্লেল মোযনাবীনো, হাশরে কান্ডারী হয়ে ভক্তগণে তরাবে গো’ ধ্বনির অনুরণন আজও প্রবীণ ভক্তদের মুখে শোনা যায়। শ্রোতাদের মধ্যে খুব কমই থাকত, যাদের চোখ বেয়ে পানি ঝরতো না। সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, বাগেরহাট, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় তিনি বেশীর ভাগ সময় দাওয়াতী সফরে কাটাতেন।
খুলনার দক্ষিণাঞ্চল ছিল আজকের মত তৎকালীন যুগেও একটি অবহেলিত এলাকা। এই এলাকার মানুষ গোরপূজা, পীরপূজা প্রভৃতি রকমারি শিরক ও বিদ‘আতী রসম-রেওয়াজে হাবুডুবু খাচ্ছিল। মাওলানা আহমাদ আলী এ এলাকায় তাঁর দাওয়াতী অভিযান চালিয়ে যান। ফলে আশাশুনি, পাইকগাছা, কয়রা উপযেলার বহু এলাকা আহলেহাদীছ আন্দোলনের পতাকাতলে সমবেত হয়। দক্ষিণ খুলনা ছাড়াও খুলনা সদর, বাগেরহাট, মোল্লাহাট ও তেরখাদা অঞ্চলের শত শত মানুষ তাঁর দাওয়াতে ইসলাম কবুল করে ও আহলেহাদীছ হয়।
তাঁর নিঃস্বার্থ তাবলীগী সফরের কারণে আজ শিবসা নদীর তীরবর্তী সুন্দরবনের সর্বশেষ মুসলিম জনপদ নলিয়ান, সুতারখালী ও কালাবগীতে আহলেহাদীছ-এর সন্ধান পাওয়া যায়। গত ২০০৯ সালের ১লা জুন সোমবারে ঘুর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ‘আইলা’ দুর্গত এই এলাকায় ত্রাণসাহায্য নিয়ে গেলে দক্ষিণ কালাবগীর মনছূর রহমান খান (৭৫), মিশকাত শেখ (৬৫), আহমাদ আলী শেখ (৭০) প্রমুখ বয়োবৃদ্ধ সমাজ নেতাগণ মাওলানার কনিষ্ঠ পুত্র ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার আববাই আমাদেরকে প্রথম ‘মুসলমান’ বানিয়েছেন। মেশকাত শেখ বলেন, আমার ছোট দাদা নঈমুদ্দীন শেখ আপনার আববার হাতে বায়‘আত করে ‘আহলেহাদীছ’ হন। আশপাশের বিদ‘আতী মৌলবীরা তাঁর সঙ্গে বাহাছ করে সর্বদা পরাজিত হ’ত। যার ফলে আজ নলিয়ান, সুতারখালি ও কালাবগীর অধিকাংশ মানুষ আহলেহাদীছ মুসলমান হিসাবে জীবন যাপনের সৌভাগ্য লাভ করেছে। দক্ষিণ কালাবগীর আমীনুল ইসলাম সানা সরাসরি বলেন, গত ২১/০৩/২০০৯ ইং তারিখে খুলনার হাদীছ পার্কে আপনার ভাষণ শুনে আমি আহলেহাদীছ হয়েছি। উল্লেখ্য যে, মাওলানার কনিষ্ঠ পুত্রের উদ্যোগে উত্তর কালাবগীতে ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথম কুয়েতী দাতা সংস্থার মাধ্যমে মোজাইক করা পাকা মসজিদ করা হয় এবং মিঠা পানির জন্য পুকুর কাটা হয়।
পরের দিন ২রা জুন একই উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপযেলাধীন বিছট-গরালী এলাকায় গেলে গরালীর জনৈক প্যারালাইসিসে আক্রান্ত নবতিপর অতিবৃদ্ধ মুরববী তাঁর ছেলে ও পোতাদের সাহায্যে মসজিদের কাছে এসে রাস্তায় বসে মাওলানার কনিষ্ঠ পুত্রের গায়ে হাত বুলিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাওলানার স্মৃতিচারণ করে তাঁর প্রশংসায় বহু কথা বলেন। তাঁর সফরসঙ্গী মেজ পুত্র আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীবের হাত দু’টি বুকের মধ্যে নিয়ে বলেন, হায় আমার কি সৌভাগ্য যে, আমার উস্তাদের ছেলে ও পোতাকে এক সাথে দেখতে পেয়েছি, বলে তিনি প্রাণভরে দো‘আ করেন। উল্লেখ্য যে, মাওলানার কনিষ্ঠ পুত্র কুয়েতী দাতা সংস্থার মাধ্যমে অত্রাঞ্চলের গরালী (১৯৮৯), রাজাপুর-পূর্বপাড়া (১৯৯০), কয়রার মহারাজপুর মধ্যপাড়া (১৯৯৫), বিছট (১৯৯৬), লাঙ্গলদাড়িয়া (১৯৯৯) প্রভৃতি গ্রামে পাকা মসজিদ করেন। অতঃপর ২০০৯ সালে কয়রা, শ্যামনগর, আশাশুনির ‘আইলা’ দুর্গত এলাকায় ত্রাণসাহায্য ছাড়াও তার সংগঠনের মাধ্যমে ৩৫টি গভীর নলকূপ বসানো হয়। মূলতঃ এসবই মরহূম মাওলানা আহমাদ আলীর তৈরী করা জমিতে আবাদ করা মাত্র।
গরালী-বিছট এলাকা ছিল সেযুগে ডুবো এলাকা। প্রধানতঃ মাছ ধরাই ছিল অধিকাংশ লোকের পেশা। ধর্মীয় দিক দিয়ে মানুষ ছিল অন্ধকারে। মাওলানা তখন এ অঞ্চলে এসে মানুষকে তাওহীদের দাওয়াত দেন ও তাদেরকে শিরক ও বিদ‘আত থেকে মুক্ত করেন। ফলে আশপাশের ৫/৭টি গ্রাম আহলেহাদীছ হয়ে যায়। বহু হিন্দু মুসলমান হয়। লোনা পানির এলাকা শুকনা মওসুমে ছোট ছোট খাল ও নালায় বিভক্ত থাকত। মাওলানা এ সময় গামছা পরে এই সব খাল পার হ’তেন। সঙ্গে লবণ থাকত। কেননা বড় বড় শাপনা ঘাসের মধ্যে নানা সাইজের জোঁক বাসা বেঁধে থাকত। এরা নিঃসাড়ে দু’পায়ে কামড়ে ধরে রক্ত চুষে খেত। সমস্ত রক্ত চুষে জোঁকগুলো মোটা হয়ে ঝুলে থাকত। অতঃপর দু’হাতে লবণ মাখিয়ে সেগুলো সরিয়ে দেবার সময় সমস্ত পা রক্তে লাল হয়ে যেত। এভাবে কাদা-পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে সাতক্ষীরা থেকে বিছট, গরালী, নাকনা, রাজাপুর, কলিমাখালি, লাঙ্গলদাড়িয়া, একশরা প্রভৃতি এলাকায় তিনি যেতেন ও পথভোলা মানুষকে দ্বীনের পথে ডাকতেন। আজ তাঁরই চাষ করা এই সব এলাকা বিরাট সংখ্যক ‘আহলেহাদীছ এলাকা’ হিসাবে সুপরিচিত। বর্তমানে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্রের সাংগঠনিক ও সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমের ফলে দাওয়াতের পরিধি আশাশুনি ছাড়িয়ে শ্যামনগরের বিরাট এলাকায় প্রসারিত হয়েছে। কালিগঞ্জ উপযেলাতেও কার্যক্রম ব্যাপ্তি লাভ করেছে।
কুয়েতী দাতাসংস্থার সাহায্যে ইংরেজী ১৯৮৯ সালে গরালীতে করা পাকা মসজিদ উদ্বোধন করার উদ্দেশ্যে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র গরালী গেলে মসজিদের প্রতিবেশী এক বাড়ীতে নাশতার দাওয়াত দিলেন এক বৃদ্ধা মহিলা। তিনি গিয়ে মাটির ঘরের বারান্দায় বসলেন। মাদুরের উপর কাঁথা বিছানো। একটু দূরে বসা বৃদ্ধা এবার তার স্মৃতিচারণ করতে শুরু করলেন। বললেন, আপনার আববা এতদঞ্চলে সকলের উস্তাদ। কিন্তু আমার নিকট তিনি ছিলেন পিতৃতুল্য। তিনি আমাকে মেয়ের মত করে ‘মা’ বলে ডাকতেন। এই বারান্দায় এভাবেই তিনি বসতেন। মাদুরের উপর কাঁথা না বিছানো থাকলে তিনি বসতেন না। মেয়ের মতই তিনি আমাকে স্নেহ করতেন। আবার বকাঝকা করতেন। এখানে আমার কাছেই তিনি খেতেন। তিনি কি কি পসন্দ করতেন, আমি জানতাম ও সেভাবেই রান্না করতাম। একদিন মাছ ঝোলে ভুলক্রমে লবণ বেশী হয়ে গেল। আববা এমন ক্ষেপে গেলেন যে, মাছ সমেত কাঁসার বাটি বারান্দা থেকে উঠানে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। আমি আজও সেই কাঁসার বাটিটা স্মৃতি হিসাবে রেখে দিয়েছি। ওটা আমার জন্য পিতার আশীর্বাদ স্বরূপ। ওটা দেখে আমি তাঁর স্নেহ অনুভব করি। আজ আপনি এসেছেন শুনে অতি যতনে তুলে রাখা সেই বাটি বের করেছি এবং আপনাকে সেই বাটিতে করে মাছ ঝোল দিয়েছি। আপনি খেলে আমি হৃদয়ে শান্তি পাব। বলেই তিনি হু হু করে কাঁদতে লাগলেন।
আহলেহাদীছ জামা‘আতের তৃণমূল পর্যায়ে মাওলানা কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, উক্ত ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/449/23
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।