hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহিত্যিক মাওলানা আহমাদ আলী

লেখকঃ হাদীছ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ

জমিদার রফী মাহমূদ :
মাওলানা সৈয়দ শাহ নযীর আলীর চতুর্থ অধঃস্তন পুরুষ রফী মাহমূদ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে বর্তমান সাতক্ষীরার আলীপুর অঞ্চলে আগমন করেন। এলাকায় তখন পুষ্পকাটির হিন্দু জমিদারদের শাসন-শোষণ চলছিল। তারা পশ্চাদপদ মুসলিম সমাজকে হেয় জ্ঞান করত ও তাদের প্রতি যদৃচ্ছ আচরণ করত। তিনি এখানে এসে মুসলমানদের অধিকার সচেতন করে তোলেন এবং শোষিত মুসলিম ও হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে জমিদারকে খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এভাবে তিনি পুষ্পকাটির জমিদারদের বিরুদ্ধে নিজেকে স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনীর সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর জন্য সুন্দরবন নিকটবর্তী এলাকার ছিন্নমূল মুসলমানদের এনে বর্তমান বুলারাটি ও তার পার্শ্ববর্তী নিজ জমিদারী এলাকায় বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। লোকেরা জমি-জমার খাজনা তাঁকেই দিত। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর জমিদারী উচ্ছেদের ফলে এরা বর্তমানে স্ব স্ব দখলী জমির স্থায়ী মালিকানা লাভ করেছে।

বুলারাটি ও মাহমূদপুর নামকরণ : তখন এলাকা নিম্নভূমি ছিল এবং এখানে ‘বুলা’ নামক দেড়-দু’হাত লম্বা বাঁশ জাতীয় একপ্রকার ডাল-পালাহীন গুল্ম জন্মাতো। যা শুকিয়ে আটি করে খড়ি হিসাবে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত এলাকার সাধারণ লোকেরা। তখন থেকে এই গ্রামটি বুলারআটি বা ‘বুলারাটি’ নামে পরিচিত হয়। অত্রাঞ্চলের লোকেরা রফী মাহমূদকে ‘জমিদার’ হিসাবে গ্রহণ করলেও তিনি বা তাঁর পরবর্তীগণ কখনোই নিজেদেরকে ‘জমিদার’ হিসাবে বলতেন না। এলাকার সকল শালিশ-বিচার তিনিই করতেন। ইংরেজ আদালতে কোন মামলা যেতনা। তাঁর সুবিচারের খ্যাতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে দূর-দারায থেকে বহু মানুষ এখানে এসে বসতি স্থাপন করে। রফী মাহমূদের নামানুসারে বর্তমান ‘মাহমূদপুর’ গ্রামটি আজও তাঁর প্রতি এলাকার মানুষের অগাধ ভক্তির স্মৃতি বহন করছে। বংশ পরম্পরায় বিচার-শালিশের এ সিলসিলা জারি ছিল। এমনকি ৬ষ্ঠ অধঃস্তন পুরুষ মুনশী যীনাতুল্লাহ ২২ গ্রামের সর্দার বলে পরিচিত ছিলেন এবং ইনিই ছিলেন মাওলানা আহমাদ আলীর বুযর্গ পিতা। ইসলামী শরী‘আতের একনিষ্ঠ অনুসারী হওয়ার কারণে এই বংশ স্থানীয়ভাবে ‘শরাওয়ালা’ বংশ, মৌলভী বংশ বা মন্ডল বংশ হিসাবে পরিচিত ছিল। মাওলানা আহমাদ আলীর বাড়ী ‘মৌলবী বাড়ী’ হিসাবে আজও পরিচিত। আল্লাহর রহমতে এই বংশের চিরকালীন উচ্চ সম্মান ও মর্যাদা লাভের একমাত্র উৎস ছিল একনিষ্ঠভাবে শরী‘আতের অনুশাসন প্রতিপালন। যদিও যুগের হাওয়ায় বর্তমানে তা অনেকটা শিথিল হয়ে গেছে।

মুনশী যীনাতুল্লাহর আমলে গ্রামের সামাজিক শাসন কেমন ছিল, এ বিষয়ে মাওলানা আহমাদ আলী বলতেন, আববাজান প্রায়ই নিজ গ্রামে ও পার্শ্ববর্তী গ্রামে ঘুরতে যেতেন। যেখানেই ইসলাম বিরোধী কিছু দেখতেন, ঠিক করে দিতেন। কলাগাছের শুকনা পাতা, যাকে গ্রামের ভাষায় ‘বাস্না’ বলা হ’ত, তাই দিয়ে বাড়ীর চারপাশে ঘিরে পর্দা করতে বলতেন। তিনি আসছেন, জানতে পারলে গ্রামের সবাই হুঁশিয়ার হয়ে যেত। হাটবারের দিন মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে যারা হাটে যেত, তাদের জিজ্ঞেস করতেন, ‘আছর’ পড়েছে কি-না। নইলে মসজিদে ছালাত আদায়ের জন্য বাধ্য করতেন। মসজিদে বা মসজিদের সামনে কদবেল তলার ‘ধরাতে’ বসা মুরববীদের সালাম করে সবাই রাস্তা অতিক্রম করত। মসজিদে কোন আলেম বা মুসাফির এলে তিনিই খাওয়াতেন ও মেহমানদারী করতেন। তাদের জন্য আলাদা লেপ-তোষক, কাঁথা-বালিশ প্রস্ত্তত থাকত। মেহমান বেশী হ’লে প্রতিবেশীদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। মেহমানদের জন্য মসজিদে খাবার আনতে হ’ত। মেহমান কারু বাড়ীতে যাওয়াটা অসম্মানজনক মনে করা হ’ত। কেননা তিনি আল্লাহর মেহমান। তাকে মর্যাদা দেওয়া সবার জন্য কর্তব্য। মসজিদের সাপ্তাহিক কৌটা আদায়ের পয়সায় হাত দেওয়াকে জাহান্নামের আগুনে হাত দেওয়া বলে মনে করা হ’ত। এমনকি সেগুলি দিয়ে বড় টাকা বানানোও নিষিদ্ধ ছিল। কনিষ্ঠ পুত্র ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, তিনি তাঁর মাকে একই নিয়ম অনুসরণ করতে দেখেছেন।

মুনশী যীনাতুল্লাহর সময়ে তাঁর প্রভাবিত সকল গ্রামে ফিৎরা, কুরবানী, ওশর-যাকাত মুতাওয়াল্লীর নিকট মসজিদে জমা হ’ত। তিনি একটি ছোট কমিটির পরামর্শ মতে সারা বছর তা থেকে গ্রামের দুস্থদের বিপদাপদে সাহায্য করতেন। ধনী-গরীব সবার কাছ থেকে ফিৎরা আদায় করতেন। পরে গরীবদের দ্বিগুণ ফেরৎ দিতেন। কুরবানীর গোশত তিনভাগের একভাগ মসজিদের পাশে মক্তবের সামনে জমা নিতেন। অতঃপর যারা কুরবানী করতে পারেনি, তাদের তালিকা করে তাদের বাড়ীতে মাথা হিসাব করে গোশত পোঁছে দিতেন। এ ব্যবস্থা আজও চালু আছে। গ্রামের বিবাহ-শাদীতে সবাই মুতাওয়াল্লীর অনুমোদন ও দো‘আ নিত। বিয়ের ক্ষেত্রে দ্বীন ও বংশ মর্যাদাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হ’ত। গরীবদের বিয়েতে পাড়ার সবাই সাহায্য করত। কেউ চাষাবাদ বা ধান কাটায় অক্ষম হ’লে পাড়ার যুবকরা স্বেচ্ছাশ্রমে তাকে সাহায্য করত। একে ‘বেগার দেওয়া’ বলা হ’ত। এভাবে গ্রামে পারস্পরিক সহানুভূতি ও ভালোবাসার পরিবেশ বজায় রাখা হ’ত। গ্রামে কেউ মারা গেলে তার প্রতিবেশীরা ঐ বাড়ীর সবাইকে তিন দিন খাওয়াতো। আত্মীয়-স্বজন ও লোকসংখ্যা বেশী হ’লে পাড়ার সবাই মিলে তাদের খাওয়াতো। এ সুন্নাতী রেওয়াজ এখনো অন্তত: একদিন চালু আছে। এছাড়া রামাযান মাসে সবাইকে মসজিদে ইফতার পাঠানো এবং রোযাদারদের বাড়ীতে দাওয়াত করে ভাত খাওয়ানোর রেওয়াজ ছিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন