hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নবী মুহাম্মদ সা. এর আগমনের প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য, দা‘ওয়াতের পদ্ধতি ও কৌশল

লেখকঃ ড. মো: আবদুল কাদের

১০
সংক্ষিপ্ত জীবনী: জন্ম ও বংশ পরিচয়
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের সুপ্রসিদ্ধ মক্কা নগরীতে ‘আমুল ফীলের’ (মুতাবেক ৫৭০ খৃষ্টাব্দ) রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার দিন (প্রসিদ্ধ মতানুসারে) ১২ তারিখে জন্ম গ্রহণ করেন। [ইবনে হিশাম, আস্ সিরাত আন্ নববীয়াহ, ১ম খন্ড, (কায়রো : দারুল মানার , ১৯৯০), পৃ.১৬৩. এটাই মশহুর বর্ণনা। তবে মিসরের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ মাহমুদ পাশার গবেষণা প্রসুত সিদ্ধান্ত হল: তাঁর জন্ম আসহাবে ফীলের বছর রবিউল আউয়াল মাসের নয় তারিখ মুতাবিক ৫৭১ খৃষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল তারিখে। সাইয়্যেদ সোলায়মান নদভী, সালমান মনসুরপুরীও একই অভিমত ব্যক্ত করেন। ( দ্র. মোহাম্মদ সোলায়মান মনসুরপুরী, রহমাতুল লীল ‘আলামীন, ৩য় খন্ড, (দিল্লী : হানিফ বুক ডিপো, তা.বি), পৃ ৩৯)।] এটি ছিল মানবতার ইতিহাসে সবচেয়ে আলোকজ্জ্বল ও বরকতময় দিন। তাঁর মাতা বলেন ‘‘যখন তিনি জন্ম গ্রহণ করেন তখন দেহ থেকে একটি নূর বের হলো, যার মাধ্যমে শামদেশ উজ্বল হয়ে গেল। [মোহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব নজদী, মোখতাছার সীরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, (দিল্লী: মাতবা‘আ সুন্নত আল-মোহাম্মাদীয়া, ১৩৭৫ হি.), পৃ. ১২ ; মোহাম্মদ ইবন সা’দ, আত্ তাবকাতুল কুবরা, ১ম খন্ড, (মাতবা’আ বেরিল, ১৩২২ হি.), পৃ. ৬৩।] কেসরার রাজপ্রাসাদের চৌদ্দটি পিলার ধসে পড়েছিল। অগ্নি উপসাকদের অগ্নিকুন্ড নিভে গিয়েছিল। [মুহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব নজদী, প্রাগু্ক্ত, পৃ.১২।] তিনি তৎকালীন আরবের শ্রেষ্ঠ বংশ ‘‘বনী হাশিম’’-এ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী থেকে এ মতের সমর্থন পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি বনী আদমের উত্তম যুগে এবং সর্বোত্তম বংশে প্রেরিত হয়েছি।’’ [ইমাম বুখারী, প্রাগুক্ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ. ৫৬৬ ; আল-বায়হাকী, দালায়েলুন নবুওয়্যাহ , ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৭৪-১৭৫।] আল্লাহ তা‘আলা ইসমাঈল আলাইহিস সালাম-এর বংশধর থেকে কিনানা গোত্রকে নির্বাচন করেন ; কিনানা থেকে কুরাইশকে নির্বাচন করেন ; কুরাইশ থেকে বনী হাশিম কে নির্বাচন করেন এবং বনী হাশিম থেকে আমাকে নির্বাচন করেছেন। [মোহাম্মদ ইবন আব্দুল ওহাব নজদী, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৫-২৬।] তাঁর পিতৃকুলের বংশ পরস্পরা হল : মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল মুত্তালিব ইবন হাশিম ইবন আবদ্ মানাফ ইবন কুসাই ইবন কিলাব ইবন মুররাহ ইবন কা‘ব ইবন লুওয়াই ইবন গালিব ইবন ফিহর ইবন মালিক ইবন নাদর ইবন কিনানা ইবন খুযায়মা ইবন মুদারিকা ইবন ইলিয়াছ ইবন মুদার ইবন নাদার ইবন সা‘দ ইবন আদনান। [ইবনুল কাইয়্যুম আল-জাওযিয়া, যাদুল মা’আদ, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ৭১।]

মাতৃকুলের বংশ পরস্পরা কিলাব ইবন মুররাতে গিয়ে পিতার বংশ পরস্পরার সাথে মিলিত হয়। [তাঁর মায়ের বংশ পরিচয় হল : আমিনা বিনত্ ওয়াহাব ইবন যুহরা । (ইবন হাজার আসকালানী, ফাত্হুল বারী, (কিতাবুল মানাকিব ১৪তম খন্ড, পৃ.২২৩০)]

জন্মের পর তাঁর মা তাঁর দাদা আব্দুল মোত্তালেবের কাছে পৌত্রের জন্মের সুসংবাদ দিলেন। তিনি খুব খুশি হলেন এবং সানন্দে তাঁকে কাবাগৃহে নিয়ে আল্লাহর দরবাবে নবজাতকের জন্য দু’আ করেন এবং শুকরিয়া আদায় করলেন। [ইবন হিশাম, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ.১৫৯-১৬০।]

কোনো কোনো বর্ণনা মতে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শুভ জন্মের সপ্তম দিবসেই ‘‘আব্দুল মোত্তালিব” তাঁর নামে আক্বীকা [আক্বীকা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর সুন্নত। তৎকালীন আরব সমাজে ইহার ব্যাপক প্রচলন ছিল। নবজাতকের নামকরণ ও কেশমূন্ডণ উপলক্ষে পশু কুরবানীর নাম ‘আক্বীকা’। (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ১ম খন্ড, ই.ফা.বা, ২য় সংস্করণ, পৃ. ৮)।] দিয়েছিলেন এবং কুরাইশ গোত্রের সকলকে দা‘ওয়াত করেছিলেন। [ইবন কাছীর, আস্-সিরাতুন নবুবিয়্যা, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ২১০ ; মুহাম্মদ ইদ্রিস কান্দাহলবী, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ৬১।] তাঁর মায়ের স্বপ্নে আদিষ্ট নাম সম্পর্কে অবগত হয়ে তাঁর দাদা নাম রাখলেন ‘‘মুহাম্মদ’’। আরবে এ নাম ছিল সম্পুর্ণ অপরিচিত। ফলে লোকেরা এ নাম শ্রবণে বিস্মিত হত। [ইবন হিশাম, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ১৫৯ ; ইবন কাছির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া , ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ২১০ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র নাম ‘‘মুহাম্মদ’’ ইলহামী সূত্রে রাখা হয়েছে। সায়্যিদা আমিনা বর্ণনা করেন, ‘‘আমি যখন তাঁকে গর্ভধারণ করি তখন অদৃশ্য থেকে কেউ আমাকে বলল, নিঃসন্দেহে তুমি এ উম্মতের সরদার গর্ভে ধারন করেছ। সুতরাং তাঁর নাম রাখবে ‘‘মুহাম্মদ’’। (ইবন সায়্যিদিন-নাস, উয়ূনুল আছার ফি ফূনুনিল-মাগাযী ওয়াশ শামাইল ওয়া্স সিয়ার, ১ম খন্ড, (বৈরুত: দারুর মা’রিফা, তা.বি), পৃ. ৩০) আব্দুর রহমান ইবন আব্দুল্লাহ সোহায়লী, আর রউযুল উনুফ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোটা ইতিহাসে শুধু তিনজন লোক এমন পাওয়া যায় যারা কিতাবীদের নিকট থেকে একথা শুনে যে, আরব উপদ্বীপে একজন নবীর আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে যার নাম হবে ‘মুহাম্মদ’ তাদেরকে এও বলা হত যে, তাঁর আবির্ভাবকাল নিকটবর্তী, ফলে তাদের গর্ভবতী স্ত্রীদের ব্যাপারে তারা এরূপ মানত করত যে, যদি পুত্র সন্তান জন্ম হয়, তবে তার নাম ‘মুহাম্মদ’ রাখবে। (দ্র. সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী, নবীয়ে রহমত, অনু: আবু সাইয়েদ মুহাম্মদ ওমর আলী, (ঢাকা ও চট্রগ্রাম: মজলিশে নাশরিয়াতে ইসলাম, ১৯৯৭), পৃ. ১১৪)।পবিত্র কুরআনে তাঁর দু’টি নাম যথাক্রমে ‘‘মুহাম্মদ’’ ও ‘‘আহমদ’’ উল্লেখ রয়েছে। আল-কুরআন, সূরা সফ-৬ ; সূরা আল-ফাতাহ : ২৯। তাঁর ‘‘আহমাদ’’ ও ‘‘মুহাম্মদ’’ নাম দু’টির মধ্যে রয়েছে এক চমৎকার মিল ও অনুপম সাদৃশ্য। ‘‘মুহাম্মদ’’ নামে সকল প্রশংসিত গুলাবলীর আধিক্যের ব্যাপক সমাবেশ ঘটেছে। আর ‘‘আহমাদ’’ নামের মধ্যে নিহিত আছে অন্যান্য সকল গুণাবলীর উপরে একক মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের একচ্ছত্র প্রভাব। ফলে নাম দুটি্একাকার হয়ে গেছে যেমন ঘটে থাকে দেহের সাথে প্রাণের সম্পর্ক। (ইবনুল কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ.৭) এছাড়াও তাঁর অনেক নাম রয়েছে। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে যুবাইর ইবন মুত’ইম (রা.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার পাঁচটি নাম রয়েছে: আমি ‘মুহাম্মদ’, আমি ‘আহমদ’, আমি ‘মাহী’ নিশ্চিহ্নকারী, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কুফরকে নিশ্চিহ্ন করবেন। আমি ‘হাশির’ সমবেতকারী, আমি ‘আকেব’ শেষ আগমনকারী (দ্র. ইবন হাজর আসকালানী, প্রাগুক্ত, ৬ ষ্ঠ খন্ড, পৃ. ৬৪১ হাদীস নং ৩৫৩২ ; ইমাম মুসলিম, প্রাগুক্ত, ১৫শ খন্ড, পৃ. ১০৪-১০৫; আল-বয়হাকী, দালাইলুন নবুওয়্যাহ, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫৫-১৫৬)।]

তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পিতাকে দেখেন নি। তাঁর মমতাময়ী মাতা অন্তঃসত্তা থাকা অবস্থায় আব্দুল্লাহ খেজুর ক্রয়ের জন্য মদিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সেখানে তিনি মামার বাড়ি বনু আদী ইবন নাজ্জার গোত্রে মৃত্যুবরণ করেন। [ইবন সা’দ, আত্ তাবাকাতুল কুবরা, ১ম খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ১১৬ ; ইবনে সা’দ মুহাম্মদ ইবন কা’ব হতে বর্ণনা করেন, তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ সিরিয়ার বাণিজ্য হতে ফেরার পথে পথিমধ্যে ইন্তেকাল করেন।]

তিনি তাঁর দাদা আব্দুল মোত্তালিবের স্নেহ পরশে লালিত পালিত হতে থাকেন। অতএব, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতীম অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। এদিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ أَلَمۡ يَجِدۡكَ يَتِيمٗا فَ‍َٔاوَىٰ ٦ ﴾ [ الضحى : ٦ ]

‘‘তিনি কি আপনাকে এতিম অবস্থায় পাননি? এরপর তিনি আপনাকে আশ্রয় দিয়েছেন।’’ [আল-কুরআন, সূরা আদ্ দুহা : ৬ ।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন