মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নবী মুহাম্মদ সা. এর আগমনের প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য, দা‘ওয়াতের পদ্ধতি ও কৌশল
লেখকঃ ড. মো: আবদুল কাদের
১৪
চরিত্র মাধুর্য
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/470/14
বাল্যকালেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় কাওম কর্তৃক ‘আস্ সাদিক’ বা সত্যবাদী উপাধিতে ভূষিত হন। আমানতদার, দৃঢ়তা, সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা, সাধুতা, স্বভাবগত চারিত্রিক মাহাত্ম্য প্রভৃতি গুণে তিনি গুণান্বিত ছিলেন। মহান আল্লাহ তাঁর মর্যাদাকে জাহেলী সমাজেও সুউচ্চ করে দিয়েছেন। [আল-কুরআন, সূরা আশ্ শরাহ : ৪।] জাহিলিয়াতের নাপাক ও খারাপ অভ্যাসসমূহ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থেকে স্বজাতির নিকট সবচেয়ে বেশী প্রশংসনীয় গুণাবলী, উন্নত মনোবল, লাজনম্র ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন তিনি। কিশোর বয়সের সততা, ন্যায়নিষ্ঠা, নম্রতা ও ভদ্রতা, নিঃস্বার্থ মানবপ্রেম ও সত্যিকার কল্যাণ প্রচেষ্টা, চরিত্র মাধুর্য ও অমায়িক ব্যবহারের ফলে আরবগণ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়। অবশেষে আরবগণ তাঁকে আল-আমিন বা বিশ্বস্ত বলে ডাকতে থাকে। ফলে মুহাম্মদ নাম অন্তরালে পড়ে গিয়ে তিনি আল-আমিন নামে খ্যাত হয়ে উঠলেন। নীতিধর্ম বিবর্জিত, ঈর্ষা-বিদ্বেষ কলূষিত, পরশ্রীকাতর দুর্ধর্ষ আরবদের অন্তরে এতখানি স্থান লাভ করা ঐ সময়ে খুবই কঠিন ছিল। অনুপম চরিত্র মাধুর্যের অধিকারী হওয়ার কারণেই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষে তা সম্ভব হয়েছিল। [এ মর্মে সীরাতে ইবন হিশামে বর্ণিত আছে, فشب رسول الله صلى الله عليه و سلم يكلأه و يحفظه و يحوطه من أقذار الجاهلية لما يريد به من كرامة، و رسالة، حتى بلغ، إلى إن كان أفضل قومه مروءة و أحسنهم خلقا و أكرمهم حسبا و أحسنهم حوارا و أعظمهم حلما و اصدقهم حديثا و أعظمهم أمانة و أبعدهم من الفحش و الأخلاق التي دنس الرجال تنزها و تكرما اسمه في قومه الآمين لما جمع الله فيه من الأمور الصالحة . ‘‘অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থায় রয়ঃপ্রাপ্ত হতে লাগলেন যে, স্বয়ং আল্লাহ পাক তাঁকে হেফাজত ও তাঁর প্রতি দৃষ্টি রাখেন এবং জাহিলিয়াতের সমস্ত অনচার থেকে তাঁকে পবিত্র রাখেন। কেননা তাঁকে নবুওয়ত ও রিসালাতের উচ্চ মর্যাদায় আসীন করা ছিল মহান আল্লাহর অভিপ্রায়। ফলে তিনি একজন নম্র, ভদ্র, চরিত্রবান, উত্তম বংশীয়, ধৈর্যশীল, সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যক্তি হিসেবে সমাজে শীর্ষস্থান অধিকার করেন। অশ্লীলতা ও অনৈতিকতা হতে সর্বদা দূরে থাকতেন। এ সকল উত্তম ও নৈতিক গুণাবলীর কারণে স্বজাতির মধ্যে তিনি আল-আমিন খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। (ইবন হিশাম, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ৬২)।] এমন কি তারা বিভিন্ন জটিল বিষয়াদি মীমাংসার ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত কামনা করত। কুরাইশ বংশের সকল গোত্রে কাবাগৃহে হাজারে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে যে তীব্র বিতন্ডা ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আশংকা দেখা দিয়েছিল তাও তিনি যুক্তিপুর্ণ উপায়ে অত্যন্ত বিচক্ষনতা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে মীমাংসা করেছিলেন। [আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারকপুরী, আর রাহীকুল মাখতুম, অনূ: খাদিজা আখতার রেজায়ী, (আল-কুরআন একাডেমী লন্ডন, ১ম সংস্করণ, ২০০৩), পৃ.৭৮।] এভাবে তিনি সর্বজনবিদিত ও নিরপেক্ষ একজন বিচারকের মর্যাদায় আসীন হন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চরিত্র মাধুর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে স্বয়ং মহান আল্লাহ বলেন,
মূলতঃ তাঁর চরিত্র হল পবিত্র কুরআনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। তাঁর গোটা জীবন কাহিনী তথা সীরাত পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তাঁর চরিত্রে ছিল ভীতিজড়িত বিনয়, বীরত্ব ও সাহসিকতা মিশ্রিত লজ্জা, প্রচার বিমুখ দানশীলতা, সর্বজনবিদিত আমানতদারী, বিশ্বস্ততা, কথা ও কাজে সত্য ও সততা, পার্থিব ভোগ বিলাস থেকে সম্পুর্ণ বিমুখতা, নিষ্ঠা, ভাষার বিশুদ্ধতা ও হৃদয়ের দৃঢ়তা, অসাধারণ জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, ছোট-বড় সকলের প্রতি দয়া ও ভালবাসা, নম্র আচরণ, অপরাধীর প্রতি ক্ষমাপ্রিয়তা, বিপদাপদে ধৈর্য ও সত্য বলার দুর্বার সাহসিকতা। তাঁর প্রিয় সহধর্মিনী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর দৃষ্টিতে-
«كان خلقه القرآن»
‘‘পবিত্র কুরআনই ছিল তাঁর চরিত্র।’’ [ইমাম মুসলিম ইবন হাজ্জাজ, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ৭৪৬।]
সমাজের দুর্বল অসহায় ও নির্যাতিতদের অবস্থা দৃষ্টে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত ও বিহ্বল হয়ে পড়তেন; তাদের মুক্তি নিশ্চিত করার নিমিত্তে সারাক্ষণ চিন্তা করতেন। তৎকালীন সমাজে প্রচলিত যাবতীয় অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, পাপাচার, মুর্তিপূজা তাঁকে পীড়া ও মর্মন্তুদ করত। এসব নিরসনকল্পে সমাজে শান্তি ও মুক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি ‘‘হিলফুল ফুযুল’’ [হিলফুল ফুযুল ( حلف الفضول )-এর হিলফ শব্দের অর্থ পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐক্যের অঙ্গীকার। (দ্র.ইবন মানযুর, প্রাগুক্ত, ২য় খন্ড, পৃ. ৯৬৩) সুদুর অতীতে আল-ফাদল নামক কয়েকজন শান্তিপ্রিয় লোকের উদ্যোগে মক্কায় সামাজিক শান্তি-শৃংখলা ও জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিই ইতিহাসে হিলফুল ফুযূল নামে প্রসিদ্ধ। এ সংঘের মাধ্যমে তারা সমাজ হতে যাবতীয় অন্যায় অবিচার দূর করে শান্তি, শৃংখলা ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল। ফলে তাদের অঙ্গীকার ছিল নিন্মরূপ : تحالفوا أن ترد الفضول على أهلها و إلا يغزو ظالمٌ مظلوماً .‘‘তারা (জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়া) ‘ফুদূল’ মাল তার প্রাপককে ফিরিয়ে দিবে এবং শক্তিহীনদের উপর শক্তিমানদের অত্যাচার প্রতিহত করবে।’’ (ইবন হিশাম, সীরাতুন নাবাবিয়্যা, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ১৩৯)।মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নবুওয়ত লাভের বিশ বৎসর পূর্বে যিলকদ মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। (প্রাগুক্ত, পৃ. ১৪০ ; ইবন সা‘দ, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ১২৮) আব্দুল্লাহ ইবন জুদ‘আনের বাড়ীতে এ মহানুভবতামূলক চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তখন তাঁর বয়স হয়েছিল বিশ বছর। নবুওয়তপ্রাপ্তির কোন এক সময়ে তিনি এ সম্পর্কে বলেন, «لقد شهدت مع عمومتي حلفا في دار عبد الله بن جدعان ما احب أن لي به حمر النعم ولو دعيت به في الإسلام لأجبت» . ‘‘আব্দুল্লাহ ইবন জুদ‘আনের গৃহে অনুষ্ঠিত শপথ অনুষ্ঠানে আমি আমার চাচাদের সাথে অংশগ্রহণ করেছি। তার বিনিময়ে আমাকে লালবর্ণের উষ্ট্রী প্রদান করা হলেও আমি সন্তুষ্ট হব না। ইসলামী সমাজেও যদি কেউ আমাকে ইহার জন্য ডাকে তবে আমি অবশ্যই সাড়া দিব।’’ (হাকেম আন্ নিশাপুরী, মুসতাদরাকে হাকেম, ২য় খন্ড, (হায়দারাবাদ: দায়েরাতুল মা’আরেফ আল ওসমানীয়া, তা.বি) পৃ.২২০ ; ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল, মুসনাদে আহমাদ, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ১৯০-১৯৪)।] নামক একটি শান্তি সংঘে যোগ দিয়েছিলেন। নবুওয়ত পাওয়ার পর এ ঘটনার উলেখ করে তিনি বলতেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবন জুদ‘আনের ঘরে এমন চুক্তিতে শরীক ছিলাম, যার বিনিময়ে লাল উটও আমার পছন্দ নয়। ইসলামী যুগে সে চুক্তির জন্যে যদি আমাকে ডাকা হতো তবে আমি অবশ্যই উপস্থিত হতাম। [ইবন হিশাম, প্রাগুক্ত, ১ম খন্ড, পৃ. ১৩৩-১৩৫ ; শেখ আব্দুল্লাহ, মুখতাছারু সিরাত, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩০-৩১ ; মাওলানা আজিজুল হক, বোখারী শরীফ, (বাংলা তরজমা ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা) ৫ম খন্ড, (ঢাকা : তা.বি.), পৃ. ৮২।] সুতরাং তাঁর স্বগোত্রের লোকেরা যে সকল মূর্তির উপাসনায় লিপ্ত ছিল, সেগুলোর প্রতি ছিল তাঁর ঘৃণা এবং সমস্ত বিকৃত আকীদা বিশ্বাস যা সমসাময়িক বিশ্বকে ভ্রান্তির আঁধারে নিমজ্বিত করেছিল তার প্রতি ছিল অশ্রদ্ধা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/470/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।